প্রশ্নঃ চন্দ্রে কোনো বস্তুর ওজন পৃথিবীর ওজনের-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
চাঁদে কোনো বস্তুর ওজন পৃথিবীর ওজনের এক-ষষ্ঠাংশ (১/৬)।
একটি বস্তুর ওজন নির্ভর করে তার ভর এবং যে মহাজাগতিক বস্তুর (যেমন পৃথিবী বা চাঁদ) মহাকর্ষীয় বলের উপর। চাঁদের ভর এবং ব্যাসার্ধ পৃথিবীর তুলনায় অনেক কম, যার ফলস্বরূপ চাঁদের মহাকর্ষীয় টান পৃথিবীর তুলনায় দুর্বল।
নির্দিষ্টভাবে, চাঁদের পৃষ্ঠে মহাকর্ষীয় ত্বরণ (g) পৃথিবীর পৃষ্ঠের মহাকর্ষীয় ত্বরণের প্রায় ১/৬ গুণ। যেহেতু ওজন = ভর × মহাকর্ষীয় ত্বরণ, তাই চাঁদে যেকোনো বস্তুর ওজন পৃথিবীতে তার ওজনের প্রায় ১/৬ গুণ হবে।
উদাহরণস্বরূপ, যদি পৃথিবীতে আপনার ওজন ৬০ কেজি হয়, তাহলে চাঁদে আপনার ওজন হবে প্রায় ১০ কেজি। তবে বস্তুর ভর কিন্তু অপরিবর্তিত থাকে।
প্রশ্নঃ বস্তুর ওজন কোথায় সবচেয়ে বেশি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ব্যাখ্যা:
একটি বস্তুর ওজন (Weight) তার ভর (mass) এবং অভিকর্ষজ ত্বরণ (acceleration due to gravity,
পৃথিবীর আকৃতির কারণে অভিকর্ষজ ত্বরণ (
১. পৃথিবীর আকৃতি: পৃথিবী পুরোপুরি গোলাকার নয়, এটি মেরুতে কিছুটা চাপা এবং বিষুবরেখায় কিছুটা স্ফীত। এর ফলে, মেরু অঞ্চল পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে বিষুব অঞ্চলের তুলনায় সামান্য কাছে থাকে।
২. দূরত্ব ও অভিকর্ষজ ত্বরণ: অভিকর্ষজ ত্বরণ (
৩. আবর্তন গতি: পৃথিবী তার অক্ষের চারপাশে আবর্তন করছে। এই আবর্তনের কারণে একটি কেন্দ্রবিমুখী বল (centrifugal force) তৈরি হয় যা বিষুবরেখায় সবচেয়ে বেশি এবং মেরুতে প্রায় শূন্য। এই কেন্দ্রবিমুখী বল ওজনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, অর্থাৎ এটি ওজনকে কিছুটা কমিয়ে দেয়। মেরুতে এই বলের প্রভাব না থাকায় ওজন সর্বাধিক থাকে।
এই দুটি কারণের (পৃথিবীর চাপা আকৃতি এবং আবর্তন গতির প্রভাব) সম্মিলিত ফলস্বরূপ, বস্তুর ওজন মেরু অঞ্চলে সর্বাধিক হয় এবং বিষুবরেখায় সর্বনিম্ন হয়।
প্রশ্নঃ বস্তুর ওজন কোথায় সবচেয়ে বেশি?
[ বিসিএস ২৬তম ]
অভিকর্ষজ ত্বরণ (g) -এর প্রভাবে মেরু অঞ্চলে বস্তুর ওজন সবচেয়ে বেশি, বিষুবীয় অঞ্চলে মেরু অঞ্চলের তুলনায় কম, খনি বা পাহাড়ের উপরও মেরু অঞ্চলের তুলনায় কম এবং পৃথিবীর কেন্দ্রে বস্তুর ওজন শূন্য।
প্রশ্নঃ কোনো বস্তুর ওজন কোথায় সবচেয়ে বেশি?
[ বিসিএস ২৩তম ]
কোনো বস্তুর ওজন সবচেয়ে বেশি হয় পৃথিবীর মেরু অঞ্চলে।
ওজন এবং অভিকর্ষজ ত্বরণ:
কোনো বস্তুর ওজন নির্ভর করে পৃথিবীর অভিকর্ষজ ত্বরণের (g) উপর।
যেখানে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান বেশি, সেখানে বস্তুর ওজনও বেশি হয়।
মেরু অঞ্চলে বেশি কেন?
পৃথিবীর আকৃতি পুরোপুরি গোল নয়, এটি কিছুটা উপবৃত্তাকার।
মেরু অঞ্চল পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে তুলনামূলকভাবে কাছে অবস্থিত।
এই কারণে মেরু অঞ্চলে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান সবচেয়ে বেশি থাকে।
বিষুব অঞ্চলে ওজন কম কেন?
বিষুব অঞ্চল পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে তুলনামূলকভাবে দূরে অবস্থিত।
এই কারণে বিষুব অঞ্চলে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান কম থাকে।
পৃথিবীর কেন্দ্রে ওজন:
পৃথিবীর কেন্দ্রে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান শূন্য।
* তাই পৃথিবীর কেন্দ্রে কোনো বস্তুর ওজনও শূন্য হবে।
সুতরাং, কোনো বস্তুর ওজন সবচেয়ে বেশি হয় পৃথিবীর মেরু অঞ্চলে।
প্রশ্নঃ মাধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণ সর্বোচ্চ কোথায়?
[ বিসিএস ২১তম ]
মাধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণ বা অভিকর্ষজ ত্বরণ ভূপৃষ্ঠে সর্বোচ্চ থাকে। এর কারণ হলো, পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে ভূপৃষ্ঠের দূরত্ব সবচেয়ে কম। অভিকর্ষজ ত্বরণ পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে বস্তুকে টানে, তাই কেন্দ্র যত কাছে হবে, ত্বরণও তত বেশি হবে।
ভূপৃষ্ঠে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান প্রায় 9.8 m/s² (মিটার প্রতি সেকেন্ড স্কয়ার)। এই মানটি স্থানভেদে সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে, কারণ পৃথিবীর আকৃতি পুরোপুরি গোল নয় এবং এর বিভিন্ন অংশে ঘনত্বের পার্থক্য রয়েছে। তবে, সাধারণভাবে ভূপৃষ্ঠেই অভিকর্ষজ ত্বরণের মান সর্বোচ্চ থাকে।
প্রশ্নঃ কোনো স্থানে মাধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণ ৯ গুণ বাড়লে সেখানে একটি সরল দোলকের দোলনকাল কতগুণ বাড়বে বা কমবে?
[ বিসিএস ১৩তম ]
-
-
-
যদি মাধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণ ৯ গুণ বৃদ্ধি পায়, তাহলে নতুন ত্বরণ
নতুন দোলনকাল (
প্রশ্নঃ প্রবল জোয়ারের কারণ, এ সময়-
[ বিসিএস ১২তম ]
পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় সূর্য, চন্দ্র ও পৃথিবী একই সরল রেখায় এলে পৃথিবীর উপর প্রবল আকর্ষণ অনুভূত হওয়ার ফলে যে প্রবল জোয়ার হয় তাকে তেজ কটাল বলে। ফলে এ দুই সময়ে জোয়ারের পানি খুব বেশি ফুলে উঠে।
প্রশ্নঃ পৃথিবীর ঘূর্ণনের ফলে আমরা ছিটকিয়ে পড়ি না–
[ বিসিএস ১০তম ]
যে বল দ্বারা পৃথিবী সবকিছুকেই তার কেন্দ্রের দিকে টানে, তাকে মাধ্যাকর্ষণ বল বলে। এই মাধ্যাকর্ষণের জন্যে সবকিছু পৃথিবীর সঙ্গে লেগে থাকে এবং ছিটকে মহাশূন্যে যায় না।
প্রশ্নঃ জোয়ার-ভাটার প্রধান কারণ-
[ প্রা.বি.স.শি. 31-05-2019 ]
জোয়ার-ভাটার প্রধান কারণ হলো চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষীয় আকর্ষণ।
এই আকর্ষণ বলের ভিন্নতার কারণেই পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা পর্যায়ক্রমে বাড়ে (জোয়ার) এবং কমে (ভাটা)।
মূল কারণের বিস্তারিত ব্যাখ্যা:
-
চাঁদের প্রভাব: চাঁদ পৃথিবীর নিকটতম জ্যোতিষ্ক হওয়ায় এর মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বলের প্রভাব সবচেয়ে বেশি।
- প্রত্যক্ষ জোয়ার: পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে, সেখানে চাঁদের আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি হয়। এই আকর্ষণের কারণে সেই অংশের পানি চাঁদের দিকে স্ফীত হয়ে ওঠে, ফলে সেখানে জোয়ার হয়। একে প্রত্যক্ষ জোয়ার বলা হয়।
- পরোক্ষ জোয়ার: একই সময়ে পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের বিপরীত দিকে থাকে, সেখানে চাঁদের আকর্ষণ বল তুলনামূলকভাবে কম হয়। এই অংশে পৃথিবীর ওপর চাঁদের টান কেন্দ্রের তুলনায় কম হওয়ায়, পৃথিবীর কেন্দ্র ওই অংশের পানিকে চাঁদ থেকে কিছুটা দূরে ঠেলে দেয়। এর ফলে সেই অংশেও পানি স্ফীত হয়ে ওঠে এবং জোয়ার সৃষ্টি হয়। একে পরোক্ষ জোয়ার বলা হয়।
- পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে একই স্থানে দিনে সাধারণত দুবার জোয়ার ও দুবার ভাটা হয়।
-
সূর্যের প্রভাব: সূর্য চাঁদের চেয়ে অনেক বড় হলেও পৃথিবী থেকে অনেক দূরে অবস্থিত হওয়ায় এর মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বলের প্রভাব চাঁদের তুলনায় কম। তবে, চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ যখন একই দিকে বা একে অপরের বিপরীতে কাজ করে, তখন জোয়ার-ভাটার তীব্রতা বৃদ্ধি পায়।
-
কেন্দ্রাতিগ শক্তি: পৃথিবী তার অক্ষের ওপর ঘুরতে থাকায় এক ধরনের কেন্দ্রাতিগ শক্তি (centrifugal force) সৃষ্টি হয়। এই শক্তিও জোয়ার-ভাটার সৃষ্টিতে কিছুটা ভূমিকা রাখে, বিশেষ করে পরোক্ষ জোয়ারের ক্ষেত্রে। তবে, এটি চাঁদের মহাকর্ষীয় আকর্ষণের গৌণ ফল।
বিশেষ জোয়ার-ভাটা:
- ভরা কটাল (Spring Tide): অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করে। এ সময় চাঁদ ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণে জোয়ারের তীব্রতা অনেক বৃদ্ধি পায়, যাকে ভরা কটাল বা তেজ কটাল বলে।
- মরা কটাল (Neap Tide): শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবী সমকোণে অবস্থান করে। এ সময় চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ একে অপরের বিপরীত দিকে কাজ করায় জোয়ারের তীব্রতা কমে যায় এবং ভাটা প্রবল হয়, যাকে মরা কটাল বলে।
সংক্ষেপে, চাঁদ ও সূর্যের সম্মিলিত মহাকর্ষীয় আকর্ষণই জোয়ার-ভাটার প্রধান কারণ।