প্রশ্নঃ কোনটি আলোর প্রাথমিক রং হিসাবে বিবেচনা করা হয় না?
[ বিসিএস ৪৬তম ]
আলোর প্রাথমিক রং হিসেবে হলুদ কে বিবেচনা করা হয় না।
আলোর প্রাথমিক রং হলো লাল (Red), সবুজ (Green), এবং নীল (Blue)। এই তিনটি রংকে বিভিন্ন অনুপাতে মেশালে অন্যান্য সকল রং তৈরি করা যায়। এই কারণে এদেরকে RGB (Red, Green, Blue) বলা হয়।
হলুদ রং লাল এবং সবুজ রঙের মিশ্রণে তৈরি হয়। তাই এটি মৌলিক বা প্রাথমিক রং নয়, বরং একটি যৌগিক রং।
প্রশ্নঃ আকাশে রংধনু সৃষ্টির কারণ-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
আকাশে রংধনু সৃষ্টির প্রধান কারণ হলো আলোর প্রতিসরণ (Refraction), প্রতিফলন (Reflection) এবং বিচ্ছুরণ (Dispersion) - এই তিনটি ঘটনার সম্মিলিত ফল, যা বৃষ্টির কণার (জলবিন্দু) মধ্যে ঘটে।
এখানে প্রতিটি ঘটনার ভূমিকা বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো:
১. প্রতিসরণ (Refraction):
- যখন সূর্যের আলো বায়ুমণ্ডলে ভাসমান অসংখ্য ছোট ছোট বৃষ্টির কণার (জলবিন্দু) উপর পড়ে, তখন আলো এক মাধ্যম (বায়ু) থেকে অন্য মাধ্যমে (জল) প্রবেশ করে।
- আলোকরশ্মি যখন বায়ু থেকে জলকণার মধ্যে প্রবেশ করে, তখন এটি দিক পরিবর্তন করে বেঁকে যায়। এই বেঁকে যাওয়াকে প্রতিসরণ বলে।
২. বিচ্ছুরণ (Dispersion):
- সূর্যের সাদা আলো প্রকৃতপক্ষে সাতটি ভিন্ন রঙের আলোর (বেগুনি, নীল, আকাশি, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল - সংক্ষেপে VIBGYOR বা বেনীআসহকলা) সমষ্টি।
- জলকণার মধ্যে প্রবেশ করার সময়, আলোর প্রতিটি রঙ ভিন্ন ভিন্ন কোণে প্রতিসরিত হয়। বেগুনি আলোর প্রতিসরণ কোণ সবচেয়ে বেশি এবং লাল আলোর প্রতিসরণ কোণ সবচেয়ে কম হয়।
- এই কারণে সাদা আলো তার উপাদান রঙে ভেঙে যায় বা ছড়িয়ে পড়ে। একে আলোর বিচ্ছুরণ বলে।
৩. প্রতিফলন (Reflection):
- প্রতিসরিত এবং বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মিগুলো যখন জলকণার ভেতরের পেছনের পৃষ্ঠে পৌঁছায়, তখন তারা জলকণার ভেতর থেকে বাইরের দিকে না গিয়ে সম্পূর্ণভাবে প্রতিফলিত হয়ে আবার জলকণার সামনের দিকে ফিরে আসে। একে অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলন বলে।
৪. দ্বিতীয় প্রতিসরণ ও দৃশ্যমানতা:
- প্রতিফলিত আলোকরশ্মিগুলো যখন আবার জলকণা থেকে বাইরের বায়ুমণ্ডলে আসে, তখন তারা দ্বিতীয়বার প্রতিসরিত হয়।
- এই দ্বিতীয় প্রতিসরণের কারণে, আলোর বিভিন্ন রঙ (যেমন: লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল, আকাশি, বেগুনি) নির্দিষ্ট কোণে দর্শকের চোখের দিকে আসে।
- বৃষ্টির কণাগুলো প্রিজমের মতো কাজ করে, যেখানে প্রতিটি কণা সাদা আলোকে তার উপাদান রঙে বিচ্ছুরিত করে।
- দর্শক যখন সূর্যের বিপরীত দিকে মুখ করে দাঁড়ান এবং আকাশে বৃষ্টি বা জলকণা থাকে, তখন তারা অসংখ্য জলকণা থেকে আসা এই বিচ্ছুরিত ও প্রতিসরিত আলো দেখতে পান, যা একটি অর্ধ-বৃত্তাকার বা পূর্ণ বৃত্তাকার বর্ণালীর (রংধনু) সৃষ্টি করে।
সংক্ষেপে: সূর্যের আলো যখন বৃষ্টির ফোঁটার মধ্যে দিয়ে যায়, তখন প্রথমে প্রতিসরিত ও বিচ্ছুরিত হয়, তারপর ফোঁটার পেছনের পৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত হয় এবং অবশেষে ফোঁটা থেকে বেরিয়ে আসার সময় আবার প্রতিসরিত হয়। এই সম্মিলিত প্রক্রিয়াই আকাশে বর্ণিল রংধনু তৈরি করে।
প্রশ্নঃ কোন রং বেশি দূর থেকে দেখা যায়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সবচেয়ে বেশি দূর থেকে দেখা যায় এমন রং হলো লাল (Red)।
এর কারণগুলো হলো:
১. দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্য: আলোর বর্ণালীতে লালের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি। এর ফলে এটি বায়ুমণ্ডলে কম বিক্ষিপ্ত হয়। ২. কম বিচ্ছুরণ: বায়ুমণ্ডলের কণা দ্বারা নীল বা বেগুনি আলোর মতো লাল আলো সহজে ছড়িয়ে পড়ে না বা বিক্ষিপ্ত হয় না। এর ফলে লাল আলো অনেক দূর পর্যন্ত প্রায় সোজা পথে যেতে পারে। ৩. চোখের সংবেদনশীলতা: মানুষের চোখ লাল রঙের প্রতি বিশেষভাবে সংবেদনশীল, বিশেষ করে সতর্কতা বা বিপদের প্রতীক হিসেবে।
এই কারণে ট্র্যাফিক লাইট, জরুরি অবস্থার সংকেত এবং সতর্কতা চিহ্ন হিসেবে লাল রং ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্নঃ হীরক উজ্জ্বল দেখার কারণ–
[ বিসিএস ৩১তম ]
হীরকের বিভিন্ন ধারগুলো এমনভাবে কাটা থাকে যে, তার কোনো এক পৃষ্ঠ দিয়ে আলোকরশ্মি ভেতরে প্রবেশ করলে প্রতিসরাঙ্ক (২.৪২) বেশি হওয়ার কারণে বেশ কয়েকটি পৃষ্ঠে তার পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন ঘটে এবং দু একটি পৃষ্ঠ দিয়ে আলোকরশ্মি ভেতর থেকে বের হয়ে যায়। হীরকে প্রবিষ্ট আলোকরশ্মি এই বারবার পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের জন্যই তা এত উজ্জ্বল দেখায়।
প্রশ্নঃ চাঁদ দিগন্তের কাছে অনেক বড় দেখায় কেন?
[ বিসিএস ২৯তম ]
চাঁদ থেকে আলোক রশ্মি পৃথিবীপৃষ্ঠে আসার সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আলোর প্রতিসরণ ঘটে অর্থাৎ আলোক রশ্মি বেঁকে যায়। চাঁদ যখন দিগন্তের কাছে থাকে তখন আলোক রশ্মি তুলনামূলকভাবে অধিক পরিমাণে বেঁকে যায়। এ কারণে দিগন্তের নিকটে চাঁদ ও সূর্যকে ডিম্বাকৃতি এবং তুলনামূলকভাবে বড় দেখা যায়।
আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত যে অসংখ্য রঙের বস্তু দেখতে পাই, সেই রঙগুলোর প্রতিটিই তিনটি মূল বা মৌলিক রঙ দ্বারা সৃষ্ট। এ রঙ তিনটি হচ্ছে : লাল, সবুজ ও নীল এবং এ তিনটি রঙকে বিভিন্ন অনুপাতে মিশিয়ে আমাদের চারপাশে দৃশ্যমান সকল রঙই তৈরি করা সম্ভব। এজন্যই টেলিভিশনে বিভিন্ন রঙের রঙিন ছবি উৎপাদনের জন্য এই তিনটি মৌলিক রঙ ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্নঃ যে মসৃণতলে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে তাকে কি বলে?
[ বিসিএস ২০তম ]
কোনো মসৃণতলে আলো আপতিত হয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী কোনো দিকে চললে ঐ আপতন তলকে বলা হয় দর্পণ। বক্রপৃষ্ঠ স্বচ্ছ মাধ্যমের সাধারণ নাম লেন্স।
প্রশ্নঃ সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে কতক্ষণ সময় লাগে?
[ বিসিএস ১৮তম ]
• সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব ৯ কোটি ৩০ লক্ষ মাইল। • আলোর গতি প্রতি সেকেন্ডে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল। • সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগে ৫০০ সেকেন্ড বা ৮ মিনিট ২০ সেকেন্ড বা ৮.৩২ মিনিট।
প্রশ্নঃ আকাশ নীল দেখায় কেন?
[ বিসিএস ১৫তম ]
যে আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য যতো কম সে আলোর বিক্ষেপণ ততো বেশি। নীল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কম বলে এর বিক্ষেপণ বেশি। যার ফলে বায়ুমণ্ডলের ধূলিকণায় বিক্ষিপ্ত নীল আলো ছড়ায় বলে আকাশ নীল দেখায়।
প্রশ্নঃ দৃশ্যমান বর্ণালির ক্ষুদ্রতম তরঙ্গদৈর্ঘ্য কোন রঙের আলোর?
[ বিসিএস ১৪তম ]
আলো | তরঙ্গদৈর্ঘ্য |
---|---|
বেগুনি | 380 - 424 nm |
নীল | 424 - 450 nm |
আসমানি | 450 - 500 nm |
সবুজ | 500 - 575 nm |
হলুদ | 575 - 590 nm |
কমলা | 590 - 647 nm |
লাল | 647 - 780 nm |
প্রশ্নঃ পানিতে নৌকার বৈঠা বাঁকা দেখা যাওয়ার কারণ, আলোর-
[ বিসিএস ১২তম ]
মাধ্যম পরিবর্তনে আলোক রশ্মি অভিমুখ বদলায়। এর নাম প্রতিসরণ। প্রতিসরণের ফলে লঘু মাধ্যম (বায়ু) থেকে ঘনতর (পানি) মাধ্যমে গেলে প্রতিসৃত রশ্মি আপতন বিন্দুতে অঙ্কিত অভিলম্বের দিকে সরে আসবে। আপতন কোণ প্রতিসরণ কোণের চেয়ে বড় হবে। ঘন মাধ্যম থেকে লঘুতর মাধ্যমে গেলে আপতন কোণ প্রতিসরণ কোণ থেকে ছোট হবে। আর প্রতিসরণের জন্যেই বৈঠা বাঁকা দেখায়।
প্রশ্নঃ রংধনু সৃষ্টির বেলায় পানির কণাগুলো–
[ বিসিএস ১১তম ]
সাদা রশ্মি প্রিজমের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় বিভিন্ন বর্ণের রশ্মিতে ভেঙে যায় ও বর্ণালি সৃষ্টি হয়। পানির কণাগুলো রংধনু সৃষ্টির সময় প্রিজমের কাজ করে।
তিনটি মৌলিক রং হচ্ছে লাল, নীল (আসমানী) ও সবুজ। এই রংগুলোর সমন্বয়ে গঠিত হয় অন্যান্য রং।