প্রশ্নঃ যে কারণে শৈশব-অন্ধত্ব হতে পারে তা হলো –
[ বিসিএস ৪৪তম ]
সঠিক উত্তর হলো গঃ হাম।
হাম (Measles) একটি ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ যা শিশুদের মধ্যে অন্ধত্বের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হতে পারে। হামের জটিলতা হিসেবে চোখের কর্ণিয়ায় প্রদাহ (কেরাটাইটিস) এবং ভিটামিন এ-এর অভাব দেখা দিতে পারে, যা স্থায়ী দৃষ্টিশক্তি হ্রাস বা অন্ধত্বের দিকে ধাবিত করতে পারে।
অন্যান্য বিকল্পগুলো শৈশব-অন্ধত্বের সরাসরি কারণ হিসেবে ততটা উল্লেখযোগ্য নয়:
- এইচআইভি/এইডস (ক): এইচআইভি/এইডস শিশুদের শরীরে অন্যান্য রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় এবং পরোক্ষভাবে চোখের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, তবে এটি শৈশব-অন্ধত্বের প্রধান কারণ নয়।
- ম্যালেরিয়া (খ): ম্যালেরিয়া সাধারণত চোখের সরাসরি ক্ষতি করে না, তবে গুরুতর ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের ম্যালেরিয়া হলে অন্যান্য জটিলতার সাথে দৃষ্টি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- যক্ষা (ঘ): যক্ষা সাধারণত ফুসফুসকে আক্রমণ করে, তবে বিরল ক্ষেত্রে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়লে চোখের সমস্যা হতে পারে, কিন্তু এটি শৈশব-অন্ধত্বের প্রধান কারণ নয়।
সুতরাং, হাম একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ যা শৈশবে অন্ধত্ব সৃষ্টি করতে পারে।
প্রশ্নঃ মস্তিষ্কের ডোপামিন তৈরির কোষগুলো নষ্ট হলে কি রোগ হয়?
[ বিসিএস ৩৮তম ]
মস্তিষ্কের যে কোষগুলো ডোপামিন তৈরি করে, সেগুলো নষ্ট হয়ে গেলে পারকিনসন রোগ (Parkinson's Disease) হয়।
ব্যাখ্যা:
পারকিনসন রোগ একটি প্রগতিশীল স্নায়বিক রোগ। মস্তিষ্কের সাবস্ট্যানশিয়া নিগ্রা (Substantia Nigra) নামক অংশের ডোপামিন উৎপাদনকারী নিউরন বা কোষগুলো যখন ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে শুরু করে বা মারা যায়, তখন এই রোগ দেখা দেয়। ডোপামিন হলো একটি নিউরোট্রান্সমিটার যা মস্তিষ্কে সংকেত প্রেরণে সাহায্য করে এবং মানুষের নড়াচড়া, মেজাজ, ঘুম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কার্য নিয়ন্ত্রণ করে।
ডোপামিনের ঘাটতির ফলে মস্তিষ্কের বার্তা প্রেরণে ব্যাঘাত ঘটে, যার কারণে পারকিনসন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন মোটর (নড়াচড়া সংক্রান্ত) এবং নন-মোটর লক্ষণ অনুভব করেন।
পারকিনসন রোগের প্রধান লক্ষণগুলো হলো:
- কম্পন (Tremor): সাধারণত বিশ্রামরত অবস্থায় হাত, পা, আঙুল বা মাথায় কাঁপুনি।
- পেশীর অনমনীয়তা (Rigidity): অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও মাংসপেশী শক্ত হয়ে যাওয়া, যা নড়াচড়া কঠিন করে তোলে এবং ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
- নড়াচড়ার ধীরগতি (Bradykinesia): স্বেচ্ছামূলক নড়াচড়া ধীর হয়ে যায়। হাঁটা শুরু করা বা স্বাভাবিক কাজগুলো করা কঠিন হয়ে পড়ে।
- ভারসাম্যহীনতা (Postural Instability): ভঙ্গিতে অস্থিরতা এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে অসুবিধা, যার ফলে পড়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
এছাড়াও, বিষণ্নতা, ঘুমের সমস্যা, কথা বলায় অসুবিধা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ঘ্রাণশক্তি কমে যাওয়া এবং ডিমেনশিয়া (স্মৃতিভ্রংশ) এর মতো নন-মোটর লক্ষণও দেখা দিতে পারে।
পারকিনসন রোগের কোনো স্থায়ী প্রতিকার নেই, তবে ওষুধ, ফিজিওথেরাপি এবং কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করা যায়।
প্রশ্নঃ মা-এর রক্তে হেপাটাইটিস-বি (Hepatitis-B) ভাইরাস থাকলে নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কি হওয়া উচিত?
[ বিসিএস ৩৮তম ]
মা-এর রক্তে হেপাটাইটিস-বি (Hepatitis-B) ভাইরাস থাকলে নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো নেওয়া অত্যন্ত জরুরি:
১. জন্মের ১২ ঘন্টার মধ্যে ভ্যাকসিন ও এইচবিআইজি (HBIG) শট: নবজাতকের জন্মের ১২ ঘন্টার মধ্যে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের টিকা (Hepatitis B vaccine) এর প্রথম ডোজ এবং হেপাটাইটিস বি ইমিউনোগ্লোবুলিন (Hepatitis B Immune Globulin - HBIG) এর একটি শট দিতে হবে। এই দুটি একসাথে দিলে নবজাতকের শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য দ্রুত অ্যান্টিবডি তৈরি হয় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
২. পরবর্তী টিকার ডোজ: হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিনের পরবর্তী ডোজগুলো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়সূচী মেনে দিতে হবে। সাধারণত, মোট ৩ বা ৪টি ডোজের একটি সিরিজ সম্পন্ন করতে হয় (যেমন: জন্মকালীন, ১ মাস, ৬ মাস বা জন্মকালীন, ১ মাস, ২ মাস, ৬ মাস)।
৩. পরীক্ষা-নিরীক্ষা: নবজাতকের সম্পূর্ণ টিকাদান প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে তার শরীরে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কিনা এবং সে নিজে সংক্রমিত হয়েছে কিনা।
৪. বুকের দুধ পান: হেপাটাইটিস-বি আক্রান্ত মা নবজাতককে বুকের দুধ পান করাতে পারেন। বুকের দুধের মাধ্যমে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস শিশুর শরীরে ছড়ায় না, তবে জন্মকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করার পর এটি করা উচিত।
এই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করলে, হেপাটাইটিস-বি আক্রান্ত মা থেকে শিশুর শরীরে ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি ৯০% এরও বেশি কমানো সম্ভব। এই রোগের দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা, যেমন লিভার সিরোসিস বা লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধে এই পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্নঃ ডেঙ্গু রোগ ছড়ায়-
[ বিসিএস ৩৮তম ]
ডেঙ্গু রোগ মূলত এডিস মশার (Aedes mosquito) মাধ্যমে ছড়ায়।
এর সংক্রমণের পদ্ধতিটি নিম্নরূপ:
১. ভাইরাস বহনকারী মশার কামড়: ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তিকে যখন এডিস মশা (বিশেষ করে স্ত্রী এডিস ইজিপ্টি - Aedes aegypti এবং কিছু ক্ষেত্রে Aedes albopictus) কামড়ায়, তখন ভাইরাস মশার শরীরে প্রবেশ করে এবং বংশবৃদ্ধি করে। ২. ভাইরাসের ইনকিউবেশন পিরিয়ড: মশার শরীরে ভাইরাসটি প্রায় ৮-১২ দিন (ইনকিউবেশন পিরিয়ড) থাকে এবং মশার লালাগ্রন্থিতে পৌঁছায়। ৩. সুস্থ ব্যক্তিকে সংক্রমণ: এরপর এই ভাইরাস বহনকারী মশা যখন একজন সুস্থ মানুষকে কামড়ায়, তখন মশার লালার সাথে ভাইরাস সেই ব্যক্তির রক্তে প্রবেশ করে এবং তাকে সংক্রমিত করে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- মানুষ থেকে মানুষে সরাসরি ছড়ায় না: ডেঙ্গু রোগ কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। অর্থাৎ, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, একই বিছানায় ঘুমালে বা তার ব্যবহৃত জিনিস ব্যবহার করলে অন্য কেউ সংক্রমিত হয় না।
- একাধিকবার সংক্রমণ: ডেঙ্গু ভাইরাস চার ধরনের (DENV-1, DENV-2, DENV-3, DENV-4)। একজন ব্যক্তি জীবনে একাধিকবার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে। প্রথমবারের চেয়ে দ্বিতীয়বার বা তার পরের সংক্রমণগুলো সাধারণত বেশি গুরুতর হয়।
- মশার কামড়: এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলায় বেশি সক্রিয় থাকে, বিশেষ করে ভোরবেলা এবং সন্ধ্যার পূর্বে। তবে বর্তমানে, এই মশার আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং এটি দিনে ও রাতে উভয় সময়েই কামড়াতে পারে।
- বংশবিস্তার স্থান: এডিস মশা পরিষ্কার, জমে থাকা পানিতে বংশবিস্তার করে। যেমন - ফুলের টব, টায়ার, প্লাস্টিকের পাত্র, এসি বা ফ্রিজের নিচে জমে থাকা পানি ইত্যাদি। বর্ষাকালে এর প্রকোপ বাড়ে।
সুতরাং, ডেঙ্গু রোগ ছড়ানোর একমাত্র প্রধান উপায় হলো ডেঙ্গু ভাইরাসবাহী এডিস মশার কামড়।
প্রশ্নঃ মানবদেহে রোগ প্রতিরোধে প্রাথমিক প্রতিরক্ষাস্তরের (First line of defence) অন্তর্ভুক্ত নয় কোনটি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
মানবদেহে রোগ প্রতিরোধে প্রাথমিক প্রতিরক্ষাস্তরের (First line of defence) অন্তর্ভুক্ত নয় লিম্ফোসাইট (LYMPHOCYTES)।
মানবদেহের প্রতিরক্ষা স্তরসমূহ:
মানবদেহে রোগ প্রতিরোধের জন্য তিনটি প্রধান প্রতিরক্ষা স্তর রয়েছে:
১. প্রাথমিক প্রতিরক্ষা স্তর (First Line of Defence): এটি হলো শরীরের প্রথম প্রতিরক্ষা ব্যূহ যা প্যাথোজেনকে (রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু) শরীরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এটি অনির্দিষ্ট (non-specific) এবং সহজাত প্রতিরোধ ব্যবস্থার অংশ। এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হলো:
- ত্বক (Skin): জীবাণু প্রবেশে প্রধান ভৌত বাধা।
- শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি (Mucous Membranes): শ্বাসযন্ত্র, পরিপাকতন্ত্র এবং মূত্রনালীতে থাকে, যা জীবাণুকে আটকে রাখে।
- লাইসোজাইম (Lysozyme): অশ্রু, লালা এবং অন্যান্য দেহ তরলে বিদ্যমান একটি এনজাইম যা ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর ভেঙে দেয়।
- গ্যাস্ট্রিক জুস (Gastric Juice): পাকস্থলীর শক্তিশালী অ্যাসিড (HCl) যা ingested জীবাণুকে মেরে ফেলে।
- সিলিয়া (Cilia): শ্বাসতন্ত্রে থাকা ছোট ছোট লোমের মতো কাঠামো যা শ্লেষ্মার সাথে জীবাণুকে শরীরের বাইরে বের করে দেয়।
- সাধারণ ফ্লোরা (Normal Flora): ত্বকে ও শ্লৈষ্মিক ঝিল্লিতে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে।
২. দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা স্তর (Second Line of Defence): এটিও অনির্দিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ এবং যখন প্রাথমিক স্তর ব্যর্থ হয় তখন এটি কাজ করে। এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হলো:
- ফ্যাগোসাইটিক কোষ (যেমন ম্যাক্রোফেজ, নিউট্রোফিল)।
- প্রদাহ (Inflammation)।
- জ্বর (Fever)।
- প্রাকৃতিক ঘাতক কোষ (Natural Killer Cells)।
৩. তৃতীয় প্রতিরক্ষা স্তর (Third Line of Defence): এটি হলো নির্দিষ্ট (specific) বা অভিযোজিত প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এটি নির্দিষ্ট প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং স্মৃতি কোষ তৈরি করে। এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হলো:
- লিম্ফোসাইট (Lymphocytes): এটি এক প্রকার শ্বেত রক্তকণিকা (White Blood Cell) যা অভিযোজিত প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রধান উপাদান। বি-লিম্ফোসাইট অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং টি-লিম্ফোসাইট কোষ-মধ্যস্থ প্রতিরোধে অংশ নেয়। লিম্ফোসাইটগুলো প্রাথমিক প্রতিরক্ষা স্তরের অংশ নয়, বরং তারা জীবাণুর বিরুদ্ধে আরও সুনির্দিষ্ট এবং লক্ষ্যযুক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায়।
সুতরাং, লিম্ফোসাইট দেহের তৃতীয় প্রতিরক্ষা স্তরের অন্তর্ভুক্ত, প্রাথমিক স্তরের নয়।
প্রশ্নঃ ভাইরাসজনিত রোগ নয় কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
- নিউমোনিয়া (Pneumonia): এটি ফুসফুসের একটি সংক্রমণ যা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক বা অন্যান্য অণুজীবের কারণে হতে পারে। ব্যাকটেরিয়াজনিত নিউমোনিয়া খুবই সাধারণ। তাই, এটি কেবল ভাইরাসজনিত রোগ নয়।
- জন্ডিস (Jaundice): এটি একটি রোগের লক্ষণ, রোগ নয়। এটি সাধারণত ভাইরাস (যেমন হেপাটাইটিস ভাইরাস), পিত্তথলির সমস্যা বা লিভারের অন্যান্য রোগের কারণে হতে পারে।
- এইডস (AIDS): এটি হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (HIV) দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ। এটি সম্পূর্ণরূপে ভাইরাসজনিত।
- চোখ ওঠা (Conjunctivitis/Pink Eye): এটি প্রায়শই ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয়, তবে ব্যাকটেরিয়া বা অ্যালার্জির কারণেও হতে পারে।
সুতরাং, নিউমোনিয়া এমন একটি রোগ যার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ব্যাকটেরিয়াও উল্লেখযোগ্যভাবে রয়েছে, যা এটিকে অন্যান্য বিকল্পগুলোর চেয়ে "ভাইরাসজনিত রোগ নয়" হিসেবে বেশি উপযুক্ত করে তোলে।
প্রশ্নঃ Dengue fever is spread by -
[ বিসিএস ৩৪তম ]
ডেঙ্গু জ্বর ছড়ায় কঃ Aedes aegypti mosquito (এডিস ইজিপ্টি মশা)-এর মাধ্যমে।
প্রশ্নঃ নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয় মানব দেহের-
[ বিসিএস ২৬তম ]
ফুসফুসের প্রদাহকে নিউমোনিয়া বলে। এটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। অপরদিকে যকৃতের প্রদাহকে হেপাটাইটিস (ভাইরাস ঘটিত) এবং কিডনির প্রদাহকে নেফ্রাইটিস বলে।
প্রশ্নঃ বিষধর সাপে কামড়ালে ক্ষতস্থানে থাকে?
[ বিসিএস ২৩তম ]
বিষধর সাপের বিষথলী সংযুক্ত থাকে সামনের দিকে উঁচু ও বড় দুটি ছিদ্রযুক্ত ফাঁপা দাঁতের সাথে। যখন বিষধর সাপ দংশন করে তখন ঐ দুটি দাঁত মাংসের মধ্যে ঢুকে যায় এবং বিষথলি থেকে নির্গত বিষ রক্তের সাথে মিশে যায়। তাই বিষধর সাপে কামড়ালে ক্ষতস্থানে পাশাপাশি দুটি দাঁতের দাগ থাকে।
প্রশ্নঃ ডেঙ্গু জ্বরের বাহক–
[ বিসিএস ২২তম ]
অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া, কিউলেক্স মশা ফাইলেরিয়া এবং এডিস মশা ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণু বহন করে। এডিস মশা পীতজ্বরের জীবাণুও বহন করে।
প্রশ্নঃ পেনিসিলিয়াম আবিষ্কার করেন–
[ বিসিএস ২২তম ]
আলেকজান্ডার ফ্লেমিং পেনিসিলিয়াম; এডিসন সিনেমাটোগ্রাফি, ফনোগ্রাফি, বৈদ্যুতিক বাতি; রবার্ট হুক উদ্ভিদ কোষ এবং জেমস ওয়াট বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন।
প্রশ্নঃ ডায়বেটিস রোগ সম্পর্কে যে তথ্যটি সত্য নয় সেটি হলো–
[ বিসিএস ২১তম ]
আমাদের দেশের মানুষের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে চিনি জাতীয় খাবার বেশি খেলে ডায়াবেটিস হয় প্রকৃতপক্ষে অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত ইনসুলিন হরমোনের অভাবে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস রোগ দেখা দেয়। এর ফলে মানবদেহের কিডনি বিনিষ্ট হতে পারে।
কার্বন ও অক্সিজেনের যৌগ কার্বন মনোক্সাইড (CO) একটি বর্ণ ও গন্ধহীন গ্যাস। শ্বাসবায়ুর সঙ্গে শরীরে গেলে তার মারাত্মক পরিণাম হতে পারে এ বিচারে কার্বন মনোক্সাইড তীব্র বিষ-গ্যাস, যা মানবদেহে রক্তের অক্সিজেন পরিবহন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।
প্রশ্নঃ কোন হরমোনের অভাবে ডায়াবেটিস রোগ হয়?
[ বিসিএস ২০তম ]
হরমোন হচ্ছে একশ্রেণীর রাসায়নিক বস্তু, যা দেহের কোষ বা অঙ্গসমূহের বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত ইনসুলিন হচ্ছে এমন এক ধরনের হরমোন, যা রক্তে গ্লুকোজের বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। কোনো কারণে রক্তে ইনসুলিন সরবরাহ কমে গেলে গ্লুকোজের বিপাক ক্রিয়া বিঘ্নিত হয়, যার ফলে ডায়াবেটিস রোগ হয়।
প্রশ্নঃ বহুমূত্র রোগে কোন হরমোনের দরকার?
[ বিসিএস ১৯তম ]
অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ থেকে নিঃসৃত ইনসুলিন হরমোন রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমায়। রক্তে এই ইনসুলিন হরমোন কমে গেলে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় যাকে হাইপারগ্লাইসেমিয়া বলে। এর ফলে ঘন ঘন ক্ষুধা, পিপাসা ও প্রস্রাবের চাপ লাগে যাকে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ বলে। এই রোগের জন্য ইনসুলিন হরমোন চামড়ার নিচে দেওয়া হয়।
প্রশ্নঃ ভায়াগ্রা কি?
[ বিসিএস ১৯তম ]
সিলডেনাফিল সাইট্রেট যা ভায়াগ্রা এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক নামে বিক্রি হয়ে থাকে এমন একটি ঔষুধ যা পুরুষের ধ্বজভঙ্গের (ইরেকটাইল ডিসফাংশান) ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও হৃদপিণ্ডের ধমনীর উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় ও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি ফাইজার কোম্পানির বিজ্ঞানী এন্ড্রু বেল, ডেভিড ব্রাউন এবং নিকোলাস টেরেট ১৯৯৮ তে আবিষ্কার করেন।
প্রশ্নঃ পোলিও টিকা আবিষ্কারক জোনাস সাল্ক যুক্তরাষ্ট্রে এক শহরে মারা যান, শহরটির নাম-
[ বিসিএস ১৭তম ]
রাশিয়ান ইহুদি বংশোদ্ভূত জোনাস সাল্ক যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ১৯১৪ সালের ২৮ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ভাইরাসবিদ। ১৯৫৫ সালের ১২ এপ্রিল তিনি পোলিও’র টিকা আবিষ্কার করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের লা জোলা (La Jolla) শহরে ১৯৯৫ সালের ২৩ জুন ৮০ বছর বয়সে মারা যান।
কোনো কারণে মস্তিষ্কের কোথাও রক্ত সরবরাহ বন্ধ হলে বা মস্তিষ্কের কোনো শিরা বা ধমনী ছিঁড়ে গেলে সে অবস্থাকে স্ট্রোক বলে। স্ট্রোকের ফলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ দ্রুত সংঘটিত হয় ও সঙ্গে সঙ্গে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
প্রশ্নঃ নিম্নের কোন রোগ দুটি অসংক্রামক ব্যাধি?
[ প্রা.বি.স.শি. 02-02-2024 ]
অসংক্রামক ব্যাধি হলো সেগুলো যা এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়ায় না। যেমন: ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, স্ট্রোক ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ মানুষের দেহের রক্তরসে শতকরা কত ভাগ পানি থাকে?
[ প্রা.বি.স.শি. 02-02-2024 ]
মানুষের দেহের রক্তরসে শতকরা প্রায় ৯০-৯২ ভাগ পানি থাকে। রক্তরসের বাকি অংশে বিভিন্ন দ্রবীভূত জৈব ও অজৈব পদার্থ থাকে।
প্রশ্নঃ হাইপোগ্লাইসেমিয়া কিসের অভাবে হয়?
[ প্রা.বি.স.শি. 08-12-2023 ]
হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় রক্তের গ্লুকোজ এর অভাবে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া মানে হলো রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাওয়া। গ্লুকোজ আমাদের শরীরের প্রধান শক্তি উৎস, এবং এর অভাব হলে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অন্যান্য বিকল্পগুলো কেন সঠিক নয়:
- কঃ ক্যালসিয়াম: ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য, স্নায়ু এবং পেশীর কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজনীয়। এর অভাবে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় না।
- গঃ ভিটামিন-ই: ভিটামিন-ই একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং শরীরের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এর অভাবে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় না।
- ঘঃ ইনসুলিন: ইনসুলিন একটি হরমোন যা অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত হয় এবং রক্ত থেকে গ্লুকোজকে শরীরের কোষে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। শরীরে ইনসুলিনের অভাব বা কার্যকারিতা কমে গেলে ডায়াবেটিস (হাইপারগ্লাইসেমিয়া - রক্তে উচ্চ গ্লুকোজ) হতে পারে, হাইপোগ্লাইসেমিয়া নয়। তবে, ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় অতিরিক্ত ইনসুলিন গ্রহণ করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। কিন্তু সরাসরি ইনসুলিনের অভাবে নয়, বরং গ্লুকোজের ভারসাম্যহীনতার কারণে এটি ঘটে।