প্রশ্নঃ টেলিভিশনে যে তরঙ্গ ব্যবহৃত হয় –
[ বিসিএস ৪৫তম ]
টেলিভিশনে মূলত রেডিও তরঙ্গ ব্যবহৃত হয়। এই রেডিও তরঙ্গ একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডের মধ্যে থাকে যা টেলিভিশন সম্প্রচারের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
সম্প্রচারের পদ্ধতি অনুসারে বিভিন্ন ধরনের রেডিও তরঙ্গ ব্যবহৃত হতে পারে:
- VHF (Very High Frequency): এই ব্যান্ডের তরঙ্গ মূলত অ্যানালগ টেলিভিশন সম্প্রচারে ব্যবহৃত হতো।
- UHF (Ultra High Frequency): বর্তমানে ডিজিটাল টেলিভিশন (DTV) সম্প্রচারের জন্য এই ব্যান্ডের তরঙ্গ বেশি ব্যবহৃত হয়।
টেলিভিশনের রিমোট কন্ট্রোলে অবশ্য অবলোহিত রশ্মি (Infrared Ray) ব্যবহৃত হয়, যা একটি তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ হলেও এটি টেলিভিশন সম্প্রচারের জন্য ব্যবহৃত তরঙ্গ নয়। এটি শুধুমাত্র রিমোট থেকে টেলিভিশনে সংকেত পাঠানোর কাজে লাগে।
সুতরাং, টেলিভিশনে সম্প্রচারের জন্য প্রধানত রেডিও তরঙ্গ ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে VHF এবং UHF ব্যান্ড উল্লেখযোগ্য।
প্রশ্নঃ শূন্য মাধ্যমে শব্দের বেগ কত?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
শূন্য মাধ্যমে শব্দের বেগ শূন্য (০)।
ব্যাখ্যা: শব্দ এক ধরনের যান্ত্রিক তরঙ্গ, যা চলাচলের জন্য একটি মাধ্যমের প্রয়োজন হয়। শব্দ কম্পনের মাধ্যমে কণার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে শক্তি সঞ্চালন করে। শূন্য মাধ্যমে কোনো কণা থাকে না, তাই শব্দ তরঙ্গ চলাচল করতে পারে না। এজন্য মহাশূন্যে বা শূন্য স্থানে শব্দ শোনা যায় না।
অন্যদিকে, আলো তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ হওয়ায় এটি শূন্য মাধ্যমেও চলাচল করতে পারে।
প্রশ্নঃ কোন মাধ্যমে শব্দের গতি সর্বাপেক্ষা কম?
[ বিসিএস ৩১তম ]
কঠিন মাধ্যমে শব্দ সবচেয়ে দ্রুত চলে, তরল মাধ্যমে তার চেয়ে ধীরে চলে। বায়বীয় মাধ্যমে শব্দের দ্রুতি (গতি) সবচেয়ে কম আর ভ্যাকিউয়ামে বা শূন্যে শব্দের দ্রুতি (গতি) শূন্য। বায়বীয় মাধ্যমে শব্দের বেগ ৩৩২ মিটার/ সেকেন্ড, কঠিন পদার্থে শব্দের বেগ ৫২২১ মিটার/সেকেন্ড, তরল পদার্থে শব্দের বেগ ১৪৫০ মিটার/সেকেন্ড এবং শূন্য মাধ্যমে শব্দের বেগ শূন্য।
কোনো শব্দ শোনার পর প্রায় ০.১ সেকেন্ড পর্যন্ত এর রেশ আমাদের মস্তিষ্কে থাকে। এই সময়কে শব্দানুভূতির স্থায়িত্বকাল বলে। কোনো শব্দ শোনার পর যদি ০.১ সেকেন্ডের মধ্যে আরেকটি শব্দ আমাদের কানে এসে পৌঁছায় তবে আমাদের মস্তিষ্ক দুটি শব্দ আলাদাভাবে শনাক্ত করতে বা বুঝতে পারে না।
প্রশ্নঃ বাদুড় অন্ধকারে চলাফেরা করে কিভাবে?
[ বিসিএস ২৭তম ]
উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দোত্তর তরঙ্গ সৃষ্টি করে তার প্রতিধ্বনির মাধ্যমে বাদুড় পথ চলে। বাদুড় চলার সময় ক্রমাগত উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দোত্তর তরঙ্গ সৃষ্টি করে এবং সেই শব্দ এটির সামনের বস্তু থেকে প্রতিফলিত হয়ে বাদুড়ের কানে ফিরে আসে। সৃষ্ট শব্দোত্তর তরঙ্গ ও প্রতিধ্বনি শোনার মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান এবং প্রতিফলিত শব্দের প্রকৃতি থেকে বাদুড় সহজেই প্রতিবন্ধকের অবস্থান ও আকৃতি সম্বন্ধে ধারণা করতে পারে। ফলে পথ চলার সময় বাদুড় সেই প্রতিবন্ধকতা পরিহার করে।
প্রশ্নঃ শব্দের তীব্রতা নির্ণায়ক যন্ত্র-
[ বিসিএস ২৬তম ]
অ্যামিটার তড়িৎ প্রবাহ পরিমাপক যন্ত্র, অডিওফোন কানে লাগিয়ে শোনার যন্ত্র, অলটিমিটার উচ্চতা পরিমাপক যন্ত্র এবং অডিও মিটার দ্বারা শব্দের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করে শব্দ পরিমাপ করা হয়।
প্রশ্নঃ কোন মাধ্যমে শব্দের গতি সবচেয়ে বেশি?
[ বিসিএস ২৫তম ]
মাধ্যম ছাড়া শব্দ চলাচল করতে পারে না বিধায় শূন্য মাধ্যমে শব্দ গতিহীন। মাধ্যমের ঘনত্বের ওপর শব্দের গতি নির্ভরশীল। অর্থাৎ মাধ্যম যতো ঘন হবে শব্দের গতি ততো বেশি হবে। তাই লোহার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় পানি বা বাতাসের চেয়ে লোহায় শব্দের গতি বেশি হবে। স্বাভাবিক অবস্থায় বাতাসে শব্দের গতি ৩৩২ মি/সে. পানিতে ১৪৫০ মি/সে এবং লোহায় ৫২২১ মি/সে.।
প্রশ্নঃ লোকভর্তি হল ঘরে শূন্য ঘরের চেয়ে শব্দ ক্ষীণ হয়, কারণ–
[ বিসিএস ২৩তম ]
লোকভর্তি হল ঘরে মানুষ দ্বারা শব্দ শোষিত হওয়ার ফলে শব্দ ক্ষীণ হয়। শূন্য ঘরে শব্দের শোষণ কম হওয়ায় শব্দ বেশি হয়।
প্রশ্নঃ রাডারে যে তড়িৎ চৌম্বক ব্যবহার করা হয় তার নাম কি?
[ বিসিএস ২০তম ]
রাডারের মূলনীতি হলো ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের পালস ছড়িয়ে দেয়া হয় যেন বস্তু থেকে প্রতিফলিত হয়ে রাডারের গ্রাহক যন্ত্রে আসে। এ জন্য গামা রশ্মি বা মাইক্রোওয়েভ উভয়ের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ক্ষুদ্র হলেও কম ভেদন ক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোওয়েভই ব্যবহার করা হয়। অপরপক্ষে অবলোহিত বিকিরণ ও আলোক তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশ বড়।
প্রশ্নঃ চাঁদে কোনো শব্দ করলে তা শোনা যাবে না কেন?
[ বিসিএস ১৬তম ]
পৃথিবীতে বায়ুস্তর শব্দ সঞ্চালনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। শব্দ সঞ্চালনার জন্য মাধ্যম প্রয়োজন। চাঁদে বায়ুস্তর নেই, যার ফলে পাশাপাশি অবস্থিত দুজন লোক যত জোরেই কথা বলুক না কেন চাঁদে তা শুনতে পাবে না।
প্রশ্নঃ রেলওয়ে স্টেশনে আগমনরত ইঞ্জিনে বাঁশি বাজাতে থাকলে প্লাটফরমে দাঁড়ানো ব্যক্তির কাছে বাঁশির কম্পনাঙ্ক–
[ বিসিএস ১৪তম ]
স্টেশনের দিকে এগিয়ে আসা ট্রেনের ক্ষেত্রে শব্দের উৎস ও শ্রোতার মধ্যকার আপেক্ষিক বেগ বৃদ্ধি পেতে থাকে বলে শব্দের কম্পাঙ্ক ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। ফলে শব্দ আসলের চেয়ে বেশি হবে। শব্দের উৎস যদি কম্পাংকের দিকে অগ্রসর হয় তবে কম্পাংকের তীব্রতা বাড়ে। তাই প্লাটফর্মে দাঁড়ানো ব্যক্তির কাছে আগমনরত ইঞ্জিনের বাঁশির কম্পাংক আসলের চেয়ে বেশি হবে।
প্রশ্নঃ কোন মাধ্যমে শব্দের গতি সবচেয়ে কম?
[ বিসিএস ১৪তম ]
মাধ্যম ছাড়া শব্দ চলাচল করতে পারে না বিধায় শূন্য মাধ্যমে শব্দ গতিহীন। মাধ্যমের ঘনত্বের উপর শব্দের গতি নির্ভরশীল। মাধ্যম যতো ঘন হবে শব্দের গতি ততো বেশি হবে। তাই লোহার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় পানি বা বাতাসের চেয়ে লোহায় শব্দের গতি বেশি। স্বাভাবিক অবস্থায় বাতাসে শব্দের দ্রুতি ৩৩২ মি/সে, পানিতে ১৪৫০ মি/সে এবং লোহায় ৫২২১ মি/সে।
প্রশ্নঃ কিসের সাহায্যে সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয় করা হয়?
[ বিসিএস ১৪তম ]
সমুদ্রের গভীরতা মাপার জন্য ‘ফ্যাদোমিটার’-এর সাহায্যে শব্দ সৃষ্টি করা হয় এবং এই শব্দ সমুদ্রের গভীরে গিয়ে প্রতিধ্বনি সৃষ্টি হয়ে সমুদ্র পৃষ্ঠে ফিরে আসে। আর এ সময়ের পার্থক্য থেকে সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয় করা হয়।
প্রশ্নঃ সমটান সম্পন্ন একটি টানা তারের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ করলে কম্পনাঙ্কের কতটা পরিবর্তন ঘটবে?
[ বিসিএস ১৩তম ]
- \( f \) = কম্পনাঙ্ক
- \( L \) = তারের দৈর্ঘ্য
- \( T \) = তারের টান
- \( \mu \) = তারের একক দৈর্ঘ্যের ভর
ধরি, মূল কম্পনাঙ্ক \( f_1 \) এবং তারের দৈর্ঘ্য \( L \)।
তাহলে, মূল কম্পনাঙ্ক: \[ f_1 = \frac{1}{2L} \sqrt{\frac{T}{\mu}} \] এখন তারের দৈর্ঘ্য \( 2L \) করলে নতুন কম্পনাঙ্ক \( f_2 \) হবে: \[ f_2 = \frac{1}{2(2L)} \sqrt{\frac{T}{\mu}} \] \[ f_2 = \frac{1}{4L} \sqrt{\frac{T}{\mu}} \] \[ f_2 = \frac{f_1}{2} \] অতএব, তারের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ করলে কম্পনাঙ্ক অর্ধেক হয়ে যাবে।
প্রশ্নঃ কোন মাধ্যমে শব্দের গতি সবচেয়ে বেশি?
[ বিসিএস ১৩তম ]
শব্দ চলাচলের জন্য জড় মাধ্যমের প্রয়োজন। শূন্য মাধ্যমে শব্দের বেগ শূন্য। জড় মাধ্যমের ঘনত্ব যত বেশি হবে শব্দের গতি তত বেশি হবে। উল্লিখিত মাধ্যমগুলোর মধ্যে লোহার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি হওয়ায় শব্দের গতিও সবচেয়ে বেশি। স্বাভাবিক অবস্থায় বাতাসে শব্দের দ্রুতি ৩৩২ মি/সে, পানিতে ১৪৫০ মি /সে এবং লোহায় ৫২২১ মি/সে।
শব্দ উৎসের কম্পন যদি ২০ থেকে ২০,০০০-এর মধ্যে হয় তাহলে মানুষ সেই শব্দ শুনতে পারে। কিন্তু ১০৫ ডিবি সীমার উপর শব্দ মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে মানুষকে বধির করে দিতে পারে।
প্রশ্নঃ নিচের কোনটির সাহায্যে সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয় করা হয়?
[ প্রা.বি.স.শি. 02-02-2024 ]
সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয়ের জন্য প্রতিধ্বনি (Echo) ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে, সমুদ্রের তলদেশে শব্দ তরঙ্গ পাঠানো হয় এবং সেই তরঙ্গ ফিরে আসতে কত সময় লাগে তা পরিমাপ করা হয়। শব্দের গতি জানা থাকলে, এই সময়ের মাধ্যমে সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয় করা সম্ভব। এই প্রযুক্তি সোনার (SONAR - Sound Navigation and Ranging) নামে পরিচিত।