আমাদের স্কুল

সেটিং

বহুনির্বাচনি প্রশ্নের দেখানোর অপশনঃ
শুধুমাত্র উত্তর 2 অপশন
3 অপশন 4 অপশন
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের অপশন প্রদর্শনঃ
রো আকারে কলাম আকারে
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরঃ
লুকান বোল্ড করুন
দেখান দেখান ও বোল্ড করুন
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের ব্যাখ্যাঃ
দেখান লুকান নিচে লুকান
থিম নির্বাচন করুনঃ
ফন্ট সাইজঃ
16

ক. গারো
খ. সাওতাল
গ. মনিপুরি
ঘ. চাকমা
ব্যাখ্যাঃ

বাংলাদেশে মাতৃপ্রধান পরিবার ব্যবস্থার প্রচলন মূলত গারো এবং খাসি জাতীসত্ত্বায় দেখা যায়।

এই দুটি জাতিগোষ্ঠীর সমাজে নারীরা পরিবারের প্রধান এবং সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন। মায়ের বংশ ধরেই তাদের সমাজ ও গোত্র পরিচিতি নির্ধারিত হয়।

এছাড়াও, কিছু ক্ষেত্রে রাখাইন সম্প্রদায়েও মাতৃসূত্রীয় উত্তরাধিকারের কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।

ক. সিলেট
খ. মৌলভীবাজার
গ. হবিগঞ্জ
ঘ. সুনামগঞ্জ
ব্যাখ্যাঃ

বাংলাদেশে মনিপুরী নৃ-গোষ্ঠীর সবচেয়ে বেশি বসবাস মৌলভীবাজার জেলায়, বিশেষ করে কমলগঞ্জ উপজেলায়। তবে তারা সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলাতেও বসবাস করে।

মনিপুরীরা মূলত ভারতের মণিপুর রাজ্যের আদিবাসী জনগোষ্ঠী, যাদের নিজস্ব ভাষা, বর্ণমালা ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে।

ক. ২০
খ. ৪৮
গ. ২৫
ঘ. ৩২
ব্যাখ্যাঃ

সরকারী গেজেট অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে ৫০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে।

তবে বিভিন্ন গবেষণা ও মতামতের ভিত্তিতে এই সংখ্যা কিছুটা কমবেশি হতে পারে। ২০১৯ সালের ২৩শে মার্চ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত গেজেটে এই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

ক. রাজশাহী-দিনাজপুর
খ. বরগুনা-পটুয়াখালী
গ. রাঙামাটি-বান্দরবান
ঘ. সিলেট-হবিগঞ্জ
ব্যাখ্যাঃ

ওরাওঁ (Orao) বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। তারা মূলত রাজশাহী এবং দিনাজপুর অঞ্চলে বসবাস করে। এছাড়াও রংপুর ও বগুড়া জেলার কিছু অংশেও তাদের দেখা যায়। ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, উড়িষ্যা ও মধ্যপ্রদেশ রাজ্যেও এই জনজাতির মানুষ রয়েছে।

ওরাওঁদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা:

  • ভাষা: তাদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে, যা কুড়ুখ নামে পরিচিত। এটি দ্রাবিড় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। তবে বর্তমানে অনেকেই বাংলা ভাষাও ব্যবহার করে।
  • পেশা: তাদের প্রধান পেশা কৃষি। ধান, গম, ভুট্টা, সরিষা ইত্যাদি ফসল তারা উৎপাদন করে। অনেকে দিনমজুর হিসেবেও কাজ করে।
  • সামাজিক রীতিনীতি: ওরাওঁ সমাজে গ্রাম পঞ্চায়েত বা মোড়ল প্রথা প্রচলিত আছে, যা তাদের সামাজিক ও বিচারকার্য পরিচালনা করে। তাদের মধ্যে গোত্রভিত্তিক বিভাজনও দেখা যায়।
  • ধর্ম: তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী ধর্মবিশ্বাস রয়েছে, যেখানে প্রকৃতি পূজা ও বিভিন্ন দেবদেবীর আরাধনা করা হয়। তবে বর্তমানে অনেকেই খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
  • উৎসব: কর্মা, ফাগুয়া, সরহুল তাদের प्रमुख উৎসব। এসব উৎসবে তারা গান, নাচ ও বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী আচার-অনুষ্ঠান পালন করে।
  • পোশাক: তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের মধ্যে পুরুষরা ধুতি ও ফতুয়া এবং মহিলারা শাড়ি ও বিভিন্ন ধরনের অলঙ্কার পরিধান করে।

ওরাওঁরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এবং বাংলাদেশের নৃতাত্ত্বিক বৈচিত্র্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। তবে আধুনিক জীবনযাত্রার প্রভাবে তাদের সংস্কৃতি ও জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।

ক. সাঁওতাল
খ. গারো
গ. খাসিয়া
ঘ. মুরং
ব্যাখ্যাঃ

‘বিরিশি’ নেত্রকোনায় গারো উপজাতিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ আবাসস্থল।

বিরিশি মূলত নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার একটি ইউনিয়ন। এই অঞ্চলে গারো পাহাড়ের পাদদেশে বহু গারো পরিবার বসবাস করে। দুর্গাপুর উপজেলায় গারোদের একটি উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যা রয়েছে এবং বিরিশি তাদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

সুতরাং, সঠিক উত্তর হল গারো উপজাতি।

ক. পার্বত্য চট্রগ্রাম
খ. সিলেট
গ. ময়মনসিংহ
ঘ. টাঙ্গাইল
ব্যাখ্যাঃ

গারোরা বাংলাদেশের একটি অন্যতম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় তারা প্রধানত বসবাস করে। গারোরা নিজেদেরকে 'মান্দি' বা 'আচিক মান্দি' নামে পরিচয় দিতে পছন্দ করে, যার অর্থ 'মানুষ' বা 'পাহাড়ের মানুষ'।

গারোদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা:

  • মাতৃতান্ত্রিক সমাজ: গারো সমাজ মাতৃতান্ত্রিক। এখানে মায়ের বংশ পরিচয় মুখ্য এবং সম্পত্তির উত্তরাধিকারী সাধারণত কনিষ্ঠ কন্যা সন্তান।
  • ভাষা: গারোরা 'আচিক' বা গারো ভাষায় কথা বলে, যা বোডো-গারো ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।
  • ধর্ম: ঐতিহ্যগতভাবে গারোদের নিজস্ব ধর্ম ছিল, যার নাম 'সাংসারেক'। তবে বর্তমানে এদের বেশিরভাগই খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী। কিছু সংখ্যক সনাতন ধর্ম ও ইসলাম ধর্মও অনুসরণ করে।
  • উৎসব: গারোদের প্রধান উৎসব হলো 'ওয়ানগালা'। এটি ফসল তোলার পর অনুষ্ঠিত হয় এবং তাদের প্রধান দেবতা 'মিসালজং'-কে উৎসর্গ করা হয়। এই উৎসবে নাচ, গান ও বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী আচার-অনুষ্ঠান পালিত হয়।
  • পোশাক: গারোদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের মধ্যে নারীরা 'দকমান্দা' (এক প্রকার লম্বা পোশাক) এবং পুরুষরা 'খাদি' পরিধান করে। বিভিন্ন ধরনের অলঙ্কারও তারা ব্যবহার করে।
  • খাদ্য: ভাত তাদের প্রধান খাদ্য। এছাড়াও মাছ, মাংস, ডাল ও বিভিন্ন प्रकारের সবজি তারা খায়। শুঁটকি মাছ তাদের একটি প্রিয় খাবার।
  • পেশা: গারোদের প্রধান পেশা কৃষি। তারা জুম চাষ এবং সমতল ভূমিতে ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপাদন করে। অনেকে পশুপালন এবং বনজ সম্পদের উপরও নির্ভরশীল।
  • নৃত্য ও সঙ্গীত: গারোদের সংস্কৃতিতে নৃত্য ও সঙ্গীতের গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। তাদের বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও গান পরিবেশিত হয়। 'কু-দারে-সালা', 'কোরে-দোকা', 'ইঞ্জোকা' তাদের উল্লেখযোগ্য সঙ্গীত এবং 'আজেমা-রোয়া', 'চাম্বিল-মোয়া' তাদের জনপ্রিয় নৃত্যশৈলী।

গারোরা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রেখেছে এবং বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

ক. রাঙ্গামাটি জেলায়
খ. খাগড়াছড়ি জেলায়
গ. বান্দরবান জেলায়
ঘ. সিলেট জেলায়
ব্যাখ্যাঃ

চাকমা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের বৃহত্তম আদিবাসী সম্প্রদায় এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের একটি প্রধান নৃগোষ্ঠী। তাদের জীবনযাপন, সংস্কৃতি, ভাষা, এবং ইতিহাস অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ।

১. অবস্থান ও জনসংখ্যা:

  • অবস্থান: বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান জেলা) হলো চাকমাদের প্রধান আবাসস্থল। তবে, রাঙ্গামাটি জেলায় তাদের জনসংখ্যা সর্বাধিক। এছাড়া, ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্য এবং মায়ানমারের আরাকান (রাখাইন) প্রদেশেও চাকমাদের বসবাস রয়েছে।
  • জনসংখ্যা: বাংলাদেশে মোট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে চাকমাদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

২. ভাষা ও সাহিত্য:

  • ভাষা: চাকমাদের নিজস্ব ভাষা আছে, যার নাম চাকমা ভাষা। এই ভাষা ইন্দো-আর্য ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এবং এর নিজস্ব বর্ণমালা রয়েছে, যা 'চাকমা লিপি' বা 'আঝা পাথা' নামে পরিচিত। এই লিপির সাথে বাংলা, পালি ও মিয়ানমারের কিছু লিপির মিল রয়েছে।
  • সাহিত্য: চাকমা ভাষায় সমৃদ্ধ লোকসাহিত্য, লোকগান, রূপকথা, প্রবাদ-প্রবচন এবং আধুনিক সাহিত্য রয়েছে। তাদের গান 'গেংখুলী' নামে পরিচিত।

৩. ধর্ম:

  • ধর্ম: চাকমা জনগোষ্ঠীর সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী (থেরবাদ বৌদ্ধধর্ম)। তাদের ধর্মীয় উৎসবগুলোর মধ্যে বুদ্ধ পূর্ণিমা, প্রবারণা পূর্ণিমা (কঠিন চীবর দান) অন্যতম।

৪. সমাজ ও সংস্কৃতি:

  • সামাজিক ব্যবস্থা: চাকমা সমাজে 'গোজা' বা 'গোত্র' প্রথা প্রচলিত। প্রতিটি গোজার নিজস্ব প্রধান থাকে। তাদের সমাজ পিতৃতান্ত্রিক।
  • গ্রাম সংগঠন: প্রতিটি চাকমা গ্রাম 'আদাং' বা 'গাঁও' নামে পরিচিত, যার প্রধানকে 'কার্বারী' বলা হয়। কয়েকটি গ্রাম মিলে 'মৌজা' গঠিত হয় এবং মৌজার প্রধানকে 'হেডম্যান' বলা হয়। চাকমা সমাজের সর্বোচ্চ প্রধান হলেন 'চাকমা রাজা'।
  • পোশাক: চাকমা নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হলো 'পিনন' ও 'হাদি'। পিনন হলো এক ধরনের লুঙ্গির মতো নিচের অংশের পোশাক, আর হাদি হলো ব্লাউজের মতো উপরের অংশের পোশাক। পুরুষরা সাধারণত লুঙ্গি ও শার্ট পরেন।
  • উৎসব: চাকমাদের প্রধান উৎসব হলো 'বিজু'। এটি বাংলা নববর্ষের সময় তিন দিন ধরে উদযাপিত হয় (মূল বিজু, ফুল বিজু, গড়িয়া বিজু বা বৈসুক)। এটি তাদের সবচেয়ে বড় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব। এছাড়া তারা বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন উৎসবও পালন করে।
  • খাদ্য: ভাত তাদের প্রধান খাদ্য। এছাড়া মাছ, মাংস, এবং বিভিন্ন পাহাড়ি শাকসবজি খায়। 'সিদল' (এক প্রকার শুঁটকি মাছের ভর্তা) তাদের জনপ্রিয় খাবার।

৫. অর্থনীতি ও জীবিকা:

  • কৃষি: চাকমাদের প্রধান জীবিকা হলো জুম চাষ। তারা পাহাড়ের ঢালে জুম পদ্ধতিতে ধান, ভুট্টা, মারফা, আদা, হলুদ, তুলা ইত্যাদি ফসল ফলিয়ে থাকে।
  • অন্যান্য: বর্তমানে অনেকেই আধুনিক কৃষিপদ্ধতি, ব্যবসা, সরকারি-বেসরকারি চাকরি এবং বিভিন্ন পেশায় জড়িত হচ্ছে।

৬. ইতিহাস: চাকমারা দীর্ঘকাল ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করছে এবং তাদের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। তারা একসময় স্বাধীন রাজা দ্বারা শাসিত ছিল। ব্রিটিশ শাসনামলে এবং পরবর্তীতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলে তাদের জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। ১৯৭২ সালের সংবিধানে আদিবাসীদের স্বীকৃতি না পাওয়ায় তারা নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ও অধিকারের জন্য সংগ্রাম করে আসছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির মাধ্যমে তাদের অধিকার ও স্বায়ত্তশাসনের একটি ভিত্তি তৈরি হয়েছে।

চাকমা জনগোষ্ঠী তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং জীবনধারার কারণে বাংলাদেশের একটি অনন্য ও মূল্যবান অংশ।

ক. শেরপুর
খ. ময়মনসিংহ
গ. সিলেট
ঘ. নেত্রকোনা
ব্যাখ্যাঃ

হাজং হলো উত্তর-পূর্ব ভারত এবং বাংলাদেশের একটি অন্যতম আদিবাসী জনগোষ্ঠী

ভৌগোলিক অবস্থান

বাংলাদেশে হাজংদের প্রধানত ময়মনসিংহ জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে (যেমন: ধোবাউড়া, হালুয়াঘাট, ফুলপুর, তারাকান্দা), শেরপুর (শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতি, নালিতাবাড়ী), নেত্রকোনা (দুর্গাপুর, কলমাকান্দা) এবং সুনামগঞ্জ জেলায় (ধর্মপাশা, তাহিরপুর) বসবাস রয়েছে। এছাড়াও, গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও সিলেট অঞ্চলেও কিছু হাজং পরিবার বাস করে। ভারতের আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশেও তাদের বড় অংশ বসবাস করে।

উৎপত্তি ও ইতিহাস

নৃবিজ্ঞানীদের মতে, হাজংদের আদি নিবাস ছিল উত্তর বার্মায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তারা ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলে প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে আসামের কামরূপ জেলার হাজো নামক স্থানে বসতি স্থাপন করে। ধারণা করা হয়, 'হাজো' শব্দ থেকেই 'হাজং' নামের উৎপত্তি। সপ্তদশ শতকে মুঘলদের দ্বারা বিতাড়িত হয়ে তারা গারো পাহাড়ে আশ্রয় নেয় এবং পরবর্তীতে সমতল ভূমিতে বসতি স্থাপন করে। ঐতিহাসিক টঙ্ক আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন এবং জমিদারবিরোধী আন্দোলনে হাজং জনগোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। রাসিমণি হাজং টঙ্ক আন্দোলনে প্রথম শহীদ হন।

ভাষা ও সংস্কৃতি

  • ভাষা: হাজংদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে, যা তিব্বতি-বর্মী ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। তবে এই ভাষার নিজস্ব কোনো বর্ণমালা নেই। তারা সাধারণত বাংলা বা অসমীয়া বর্ণমালা ব্যবহার করে তাদের ভাষা লেখে। বাংলাদেশে বসবাসকারী অধিকাংশ হাজং বাংলা ভাষায় কথা বলে এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে।
  • ধর্ম: হাজংরা প্রধানত হিন্দু ধর্মাবলম্বী। তাদের নিজস্ব কিছু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও দেব-দেবী রয়েছে। প্রতিটি হাজং বাড়িতে সৃষ্টিকর্তাকে প্রণাম জানানোর জন্য একটি ছোট ঘর থাকে, যাকে তারা 'দেওঘর' বলে। সন্ধ্যায় তারা দেওঘরে প্রদীপ জ্বেলে ধূপধুনা দেয়।
  • খাদ্যাভ্যাস: তাদের প্রধান খাদ্য ভাত ও মাছ। তারা আমিষভোজী এবং বিভিন্ন পশুপাখির মাংস (যেমন: পাঁঠা, শুকর, মুরগি) খেতে পছন্দ করে। বিন্নী চালের ভাত এবং শুঁটকি মাছ তাদের প্রিয়।
  • পোশাক: হাজং নারীরা 'পাথিন' নামক এক ধরনের ঐতিহ্যবাহী মোটা ডোরাকাটা কাপড় পরিধান করে, যা তারা নিজেরাই তাঁতে বুনে। শীতকালে তারা 'আর্গন' নামে এক ধরনের চাদর ব্যবহার করে এবং কাজের সময় 'বানং' নামে কোমরবন্ধনী পরে।
  • সমাজ ব্যবস্থা: হাজং সমাজ পিতৃতান্ত্রিক। পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী ছেলেরা হয়। তারা মূলত যৌথ পরিবারে বাস করে, যদিও বর্তমানে একক পরিবারের প্রবণতা বাড়ছে।
  • জীবিকা: হাজংরা মূলত কৃষি প্রধান জনগোষ্ঠী। তারা ধান, গম, শাকসবজি এবং ফলমূল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রাচীনকাল থেকেই তারা জমি চাষে অভ্যস্ত ছিল।
ক. রাখাইন
খ. মারমা
গ. পাঙন
ঘ. খিয়াং
ব্যাখ্যাঃ

বাংলাদেশে বেশ কিছু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই বিভিন্ন প্রচলিত ধর্ম (যেমন: বৌদ্ধধর্ম, খ্রিস্টধর্ম, হিন্দুধর্ম, প্রকৃতি পূজা) পালন করে। তবে, একটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে যারা ঐতিহ্যগতভাবে ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করে।

এই জনগোষ্ঠীটি হলো পাঙন (Pangal), যাদেরকে মুসলিম মণিপুরি নামেও অভিহিত করা হয়।

  • অবস্থান: পাঙনরা প্রধানত মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা এবং সিলেট জেলার কিছু অঞ্চলে বসবাস করে।
  • পরিচয়: তারা জাতিগতভাবে মণিপুরি হলেও ধর্মীয়ভাবে মুসলমান। তাদের রীতিনীতি ও সংস্কৃতি মূলধারার বাঙালিদের থেকে কিছুটা ভিন্ন, তবে তাদের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মণিপুরিদের সাথে বেশি সাদৃশ্যপূর্ণ।
  • ধর্ম: তাদের মূল ধর্ম হলো ইসলাম এবং তারা মুসলিম শরীয়তের বিধান অনুযায়ী জীবনযাপন করে।

সুতরাং, বাংলাদেশে পাঙন উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ধর্ম ইসলাম।

ক. বারাং
খ. পাড়া
গ. পুঞ্জি
ঘ. মৌজা
ব্যাখ্যাঃ

খাসিয়াদের গ্রামগুলো পুঞ্জি নামে পরিচিত।

তারা সাধারণত পাহাড়ের টিলায় বা বনের কাছাকাছি ছোট ছোট বসতি গড়ে তোলে, আর এই বসতিগুলোকেই 'পুঞ্জি' বলা হয়। প্রতিটি পুঞ্জির একজন প্রধান থাকেন, যাকে 'হেডম্যান' বা 'মন্ত্রী' বলা হয়।

ক. ৬টি
খ. ৫টি
গ. ৪টি
ঘ. ৩টি
ব্যাখ্যাঃ

বাংলাদেশে বর্তমানে উপজাতীয় (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮টি। এগুলো হচ্ছে: ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমী (বিরিশিরি, নেত্রকোনা), ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট (রাঙামাটি), ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট (বান্দরবান), কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (কক্সবাজার), ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট (খাগড়াছড়ি), রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমী (রাজশাহী), মণিপুরী ললিতকলা একাডেমী (মৌলভীবাজার), রাখাইন সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট (রামু, কক্সবাজার)।

ক. ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা
খ. কক্সবাজার ও রামু
গ. রংপুর ও দিনাজপুর
ঘ. সিলেট ও মণিপুর
ব্যাখ্যাঃ

হাজংদের অধিবাস ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, শেরপুর ও সিলেট অঞ্চলে। হাজংরা পিতৃতান্ত্রিক সমাজের অন্তর্ভুক্ত। ধর্মবিশ্বাসের দিক থেকে হাজংদের মোটামুটিভাবে হিন্দু বলা যায়, যদিও কোনো কোনো দিক থেকে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

ক. মারমা
খ. খাসিয়া
গ. সাঁওতাল
ঘ. গারো
ব্যাখ্যাঃ

অপশনে প্রদত্ত চারটি উপজাতির মধ্যে মারমা ও সাঁওতাল উভয়ই পিতৃতান্ত্রিক। খাসিয়া ও গারো উপজাতির পারিবারিক কাঠামো মাতৃতান্ত্রিক। বাংলাদেশে বসবাসরত ৫০টি উপজাতির মধ্যে গারো ও খাসিয়া ব্যতীত সকল উপজাতির পারিবারিক কাঠামো পিতৃতান্ত্রিক।

ক. রাঙ্গামাটি
খ. রংপুর
গ. কুমিল্লা
ঘ. সিলেট
ব্যাখ্যাঃ

মণিপুরী নাচ সিলেটে বসবাসরত মণিপুরী উপজাতিদের একটি নৃত্য, যা সারা দেশে ব্যাপকভাবে সমাদৃত।

ক. রাজা ত্রিদিব রায়
খ. রাজা ত্রিভুবন চাকমা
গ. জুম্মা খান
ঘ. জান বখশ খাঁ
ক. সাঁওতাল
খ. মাওরি
গ. মুরং
ঘ. গারো
ব্যাখ্যাঃ

মাওরি উপজাতিরা বসবাস করে নিউজিল্যান্ডে। ২৩ মার্চ, ২০১৯ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত গেজেটে বাংলাদেশে ৫০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কথা উল্লেখ করে। এর মধ্যে বৃহত্তম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী চাকমা, দ্বিতীয় বৃহত্তম সাঁওতাল।

ক. ৩৮৭ জন
খ. ৩৭৫ জন
গ. ৩৫৭ জন
ঘ. ৩৭৮ জন
ক. গারো
খ. সাঁওতাল
গ. খাসিয়া
ঘ. মারমা
ব্যাখ্যাঃ

বাংলাদেশে বসবাসকারী ৫০টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে খাসিয়া ও গারো এ দুটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পারিবারিক কাঠামো মাতৃতান্ত্রিক। বাকি সব ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পারিবারিক কাঠামো পিতৃতান্ত্রিক।

ক. সাঁওতাল
খ. চাকমা
গ. গারো
ঘ. মারমা
ব্যাখ্যাঃ
উপজাতি ভাষা
চাকমা চাকমা বা চাঙমা
মারমা মারমা বা বর্মী
গারো আচিক খুসিক
সাঁওতাল সাঁওতালী
ক. সাঁওতাল
খ. মারমা
গ. চাকমা
ঘ. গারো
ব্যাখ্যাঃ

মারমা নৃগোষ্ঠীর প্রধান উৎসবের নাম 'সাংগ্রাই'।

এটি মূলত তাদের বর্ষবরণ উৎসব এবং প্রতি বছর এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে পালিত হয়। মারমা ছাড়াও রাখাইন সম্প্রদায়ও নিজস্ব রীতিতে এই উৎসব উদযাপন করে থাকে।

ক. সাঁওতাল
খ. গারো
গ. চাকমা
ঘ. মারমা
ব্যাখ্যাঃ

বাংলাদেশের সাঁওতাল নৃগোষ্ঠীর প্রধান উৎসব হলো সোহরাই

এটি মূলত তাদের কৃষিভিত্তিক উৎসব এবং ফসল তোলার পর কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এটি পালন করা হয়। এছাড়াও, অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর মধ্যেও এই উৎসব কিছু ভিন্ন আঙ্গিকে পালিত হতে দেখা যায়।