বিসিএস ৩৬তম
১. ‘বন্ধন’ শব্দের সঠিক অক্ষর বিন্যাস কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'বন্ধন' শব্দের সঠিক অক্ষর বিন্যাস হলো:
বন্ + ধন
এখানে:
- 'বন্' হলো একটি বদ্ধাক্ষর (ব্যঞ্জন + স্বর + ব্যঞ্জন)
- 'ধন' হলো আরেকটি বদ্ধাক্ষর (ব্যঞ্জন + স্বর + ব্যঞ্জন)
যদি স্বরধ্বনির উচ্চারণকে ভিত্তি করে অক্ষর (syllable) বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে এটি হবে:
বন্-ধন
যদি বর্ণ বিশ্লেষণ চাওয়া হয়: ব্ + অ + ন্ + ধ্ + অ + ন্
২. বাংলা বর্ণমালায় অর্ধমাত্রার বর্ণ কয়টি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলা বর্ণমালায় মোট আটটি অর্ধমাত্রার বর্ণ রয়েছে।
এগুলো হলো:
স্বরবর্ণ:
- ঋ (Rri)
ব্যঞ্জনবর্ণ:
- খ (Kho)
- গ (Go)
- ণ (No)
- থ (Tho)
- ধ (Dho)
- প (Po)
- শ (Sho)
৩. ‘বিজ্ঞান’ শব্দের যুক্তবর্ণের সঠিক রূপ কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'বিজ্ঞান' শব্দের যুক্তবর্ণের সঠিক রূপ হলো জ্ + ঞ (জ + ঞ)।
এটি 'জ্ঞ' হিসেবে লেখা হয় এবং এর উচ্চারণ সাধারণত 'গ্গঁ' বা 'গ্যঁ'-এর মতো হয়, যেমন: জ্ঞান, যজ্ঞ।
৪. নিচের কোন শব্দটি প্রত্যয়যোগে গঠিত হয়নি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
"প্রত্যয়" বলতে বোঝায় কোনো শব্দ বা ধাতুর পরে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠনের প্রক্রিয়া।
প্রদত্ত শব্দগুলো বিশ্লেষণ করা যাক:
- কঃ সভাসদ: সভা (শব্দ) + সদ (প্রত্যয়) = সভাসদ (সদ = সদস্য, বসে আছে এমন) - এটি প্রত্যয়যোগে গঠিত।
- খঃ শুভেচ্ছা: শুভ (শব্দ) + ইচ্ছা (শব্দ) = শুভেচ্ছা। এটি দুইটি শব্দের সংযোগে গঠিত একটি সন্ধিজাত শব্দ (শুভ + ইচ্ছা = শুভেচ্ছা), প্রত্যয়যোগে নয়।
- গঃ ফলবান: ফল (শব্দ) + বান (প্রত্যয়) = ফলবান - এটি প্রত্যয়যোগে গঠিত।
- ঘঃ তন্বী: তনু (শব্দ) + ঈ (স্ত্রীবাচক প্রত্যয়) = তন্বী - এটি প্রত্যয়যোগে গঠিত।
সুতরাং, যে শব্দটি প্রত্যয়যোগে গঠিত হয়নি, সেটি হলো শুভেচ্ছা।
সঠিক উত্তর: খঃ শুভেচ্ছা
৫. বহুব্রীহি সমাসবদ্ধ পদ কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
- জনশ্রুতি: জন দ্বারা শ্রুতি = জনশ্রুতি (তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস)
- তপোবন: তপের নিমিত্ত বন = তপোবন (চতুর্থী তৎপুরুষ সমাস)
- খাসমহল: খাস যে মহল = খাসমহল (কর্মধারয় সমাস)
- অনমনীয়: নেই নমন যার = অনমনীয় (নঞ্ বহুব্রীহি সমাস)
সুতরাং, অনমনীয় হলো বহুব্রীহি সমাসবদ্ধ পদ।
৬. নিচের কোনটি বিশেষ্য পদ?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
"বিশেষ্য পদ" হলো যা দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, গুণ, ধারণা বা অবস্থার নাম বোঝায়।
প্রদত্ত বিকল্পগুলো বিশ্লেষণ করি:
- কঃ জাত: এটি একটি বিশেষণ পদ। যেমন: "জাত শিল্পী" (যে শিল্পী জন্মগতভাবে শিল্পী বা বিশেষ গুণে সম্পন্ন)।
- খঃ গৈরিক: এটি একটি বিশেষণ পদ। গৈরিক অর্থ গিরিমাটির মতো লাল বর্ণ বা গিরিমাটি সংক্রান্ত। যেমন: "গৈরিক বস্ত্র" (গিরিমাটির রঙের বস্ত্র)।
- গঃ উদ্ধত: এটি একটি বিশেষণ পদ। উদ্ধত অর্থ অহংকারী, বেয়াদব বা অহংকারে ভরা। যেমন: "উদ্ধত আচরণ" (বেয়াদবিপূর্ণ আচরণ)।
- ঘঃ গাম্ভীর্য: এটি একটি বিশেষ্য পদ। গাম্ভীর্য অর্থ গভীরতা, গাম্ভীর্যপূর্ণ অবস্থা বা গম্ভীর ভাব। এটি 'গম্ভীর' (বিশেষণ) থেকে উৎপন্ন একটি বিশেষ্য পদ।
সুতরাং, নিচের শব্দগুলোর মধ্যে গাম্ভীর্য হলো বিশেষ্য পদ।
সঠিক উত্তর: ঘঃ গাম্ভীর্য
৭. নিচের কোন শব্দে ণ-ত্ব বিধি অনুসারে ‘ণ’-এর ব্যবহার হয়েছে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ণ-ত্ব বিধি হলো বাংলা বানানের একটি নিয়ম, যা মূলত তৎসম (সংস্কৃত থেকে আগত) শব্দের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই নিয়ম অনুযায়ী, ঋ (ঋ), র (র-ফলা বা রেফ), ষ (ষ) - এই তিনটি বর্ণের পরে যদি দন্ত্য-ন আসে, তবে তা মূর্ধন্য-ণ-তে পরিবর্তিত হয়। এমনকি যদি ঋ, র, ষ-এর পরে ক-বর্গ, প-বর্গ, য, ব, হ, ং (অনুস্বার) থাকে, তার পরেও দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয়।
এবার বিকল্পগুলো বিশ্লেষণ করি:
- কঃ কল্যাণ: এই শব্দে 'ল' এর পরে 'ণ' বসেছে। 'ল' বর্ণটি ণ-ত্ব বিধির প্রযোজ্য বর্ণগুলির (ঋ, র, ষ) অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই এটি ণ-ত্ব বিধির কারণে 'ণ' হয়নি, বরং শব্দের নিজস্ব গঠনগত কারণেই 'ণ' আছে।
- খঃ প্রবণ: এই শব্দটিতে 'প্র' তে 'র' রয়েছে। 'র' এর পরে 'ব' (প-বর্গীয় বর্ণ) এবং তারপরে 'ণ' এসেছে। ণ-ত্ব বিধির নিয়ম অনুযায়ী, 'র' এর পরে যদি 'ন' আসে এবং তাদের মাঝে প-বর্গীয় বর্ণ থাকে, তাহলে 'ন' পরিবর্তিত হয়ে 'ণ' হয়। সুতরাং, 'প্রবণ' শব্দটি ণ-ত্ব বিধি অনুসারে 'ণ'-এর ব্যবহার হয়েছে।
- গঃ নিক্কণ: এই শব্দে 'ক্ক' এর পরে 'ণ' বসেছে। 'ক্ক' বর্ণটি ণ-ত্ব বিধির প্রযোজ্য বর্ণগুলির অন্তর্ভুক্ত নয়। এটিও নিজস্ব গঠনগত কারণে 'ণ' আছে।
- ঘঃ বিপণি: এই শব্দে 'প' এর পরে 'ণ' বসেছে। 'প' বর্ণটি ণ-ত্ব বিধির প্রযোজ্য বর্ণগুলির অন্তর্ভুক্ত নয়। এটিও নিজস্ব গঠনগত কারণেই 'ণ' আছে।
সুতরাং, সঠিক উত্তর হলো প্রবণ
মূল বাক্য: ‘মিথ্যাবাদীকে সবাই অপছন্দ করে’ (এটি একটি ইতিবাচক বাক্য, যা একটি নেতিবাচক অর্থ প্রকাশ করছে)।
এই বাক্যটিকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তর করতে হবে, যার অর্থ একই থাকবে।
- কঃ মিথ্যাবাদীকে সবাই পছন্দ করে: এটি মূল বাক্যের অর্থের বিপরীত।
- খঃ মিথ্যাবাদীকে সবাই পছন্দ না করে পারে না: এটি একটি দ্বৈত নেতিবাচক বাক্য, যার অর্থ "সবাই পছন্দ করে"। এটি মূল বাক্যের অর্থের বিপরীত।
- গঃ মিথ্যাবাদীকে কেউ পছন্দ করে না: এটি মূল বাক্যের অর্থকে সঠিকভাবে নেতিবাচক রূপে প্রকাশ করে। "সবাই অপছন্দ করে" মানে "কেউ পছন্দ করে না"।
- ঘঃ মিথ্যাবাদীকে কেউ অপছন্দ করে না: এটিও মূল বাক্যের অর্থের বিপরীত।
সুতরাং, সঠিক রূপান্তরটি হলো মিথ্যাবাদীকে কেউ পছন্দ করে না
৯. ‘Null and Void’-এর বাংলা পরিভাষা কী?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'Null and Void' একটি আইনি পরিভাষা, যার অর্থ হলো আইনত বাতিল বা অকার্যকর।
প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে সঠিক বাংলা পরিভাষাটি হলো বাতিল
ব্যাখ্যা:
- বাতিল: কোনো চুক্তি, আইন, সিদ্ধান্ত ইত্যাদি যা আর কার্যকর নেই বা আইনত অবৈধ হয়ে গেছে। এটি 'Null and Void' এর সবচেয়ে উপযুক্ত পরিভাষা।
- পালাবদল: এর অর্থ পরিবর্তন বা পর্যায়ক্রমিক আবর্তন (যেমন: সরকার পরিবর্তন)।
- মামুলি: এর অর্থ সাধারণ বা তুচ্ছ।
- নিরপেক্ষ: এর অর্থ পক্ষপাতহীন বা কোনো পক্ষের প্রতি সমর্থনহীন।
১০. ‘হেড মৌলভী’ কোন কোন ভাষায় শব্দ যোগে গঠিত হয়েছে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'হেড মৌলভী' শব্দটি ইংরেজি এবং ফারসি ভাষার শব্দ যোগে গঠিত হয়েছে।
- হেড (Head): এটি একটি ইংরেজি শব্দ, যার অর্থ 'প্রধান'।
- মৌলভী (Moulvi/Maulvi): এটি একটি ফারসি শব্দ, যা একজন ধর্মীয় পণ্ডিত বা শিক্ষককে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটি আরবি থেকে ফারসিতে এবং পরে বাংলাতে এসেছে।
১১. ‘রবীন্দ্র’-এর সঠিক সন্ধি বিচ্ছেদ কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'রবীন্দ্র' শব্দের সঠিক সন্ধি বিচ্ছেদ হলো:
রবি + ইন্দ্র
এটি স্বরসন্ধির একটি উদাহরণ, যেখানে 'ই' (রবি-এর 'ই') + 'ই' (ইন্দ্র-এর 'ই') = দীর্ঘ 'ঈ' (বীন্দ্র-এর 'ঈ') হয়েছে।
১২. ‘এ যে আমাদের চেনা লোক’– বাক্যে ‘চেনা’ কোন পদ?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
‘এ যে আমাদের চেনা লোক’– বাক্যে ‘চেনা’ পদটি হলো বিশেষণ।
এখানে 'চেনা' শব্দটি 'লোক' (বিশেষ্য) পদটিকে বিশেষিত করছে, অর্থাৎ লোকটি কেমন - 'চেনা'।
১৩. ‘প্রকর্ষ’ শব্দের সমার্থক শব্দ–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'প্রকর্ষ' শব্দের সমার্থক শব্দ হলো উৎকর্ষ।
ব্যাখ্যা:
- প্রকর্ষ অর্থ হলো উন্নতি, শ্রেষ্ঠতা, চরম উৎকর্ষ, বা উৎকৃষ্টতা।
- উৎকর্ষ অর্থও হলো উন্নতি, শ্রেষ্ঠতা, বা উৎকৃষ্টতা। এই দুটি শব্দ প্রায়শই একই অর্থে ব্যবহৃত হয়।
অন্যান্য বিকল্পগুলো হলো:
- কঃ উৎকর্ষতা: এটি 'উৎকর্ষ' শব্দের একটি বিশেষ্য রূপ, যার অর্থ 'উৎকর্ষের অবস্থা'। যদিও অর্থের দিক থেকে কাছাকাছি, 'উৎকর্ষ' সরাসরি 'প্রকর্ষ'-এর সমার্থক।
- খঃ অপকর্ষ: এর অর্থ হলো অবনতি, অধোগতি বা নিকৃষ্টতা। এটি 'প্রকর্ষ' বা 'উৎকর্ষ'-এর বিপরীত শব্দ।
- ঘঃ অপকর্ষতা: এটি 'অপকর্ষ' শব্দের একটি বিশেষ্য রূপ, যার অর্থ 'অপকর্ষের অবস্থা'। এটিও বিপরীতার্থক।
সুতরাং, সবচেয়ে সঠিক সমার্থক শব্দটি হলো গঃ উৎকর্ষ।
১৪. কোনটি কাজী নজরুল ইসলামের রচনা নয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে বালুচর কাজী নজরুল ইসলামের রচনা নয়।
- ছায়ানট: কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থ (১৯২৫)।
- চক্রবাক: কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থ (১৯২৯)।
- রুদ্রমঙ্গল: কাজী নজরুল ইসলামের প্রবন্ধগ্রন্থ (১৯২৬)।
- বালুচর: এটি জীবনানন্দ দাশের একটি কাব্যগ্রন্থ (১৯৪৮)।
সুতরাং, সঠিক উত্তর হলো:
ঘঃ বালুচর
১৫. ‘সবুজপত্র’ প্রকাশিত হয় কোন সালে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
‘সবুজপত্র’ ছিল বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাসিক পত্রিকা। এটি বাংলা সাহিত্য এবং ভাষা সংস্কারে এক যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রতিষ্ঠা ও সম্পাদক:
- ১৯১৪ সালের ২৫শে বৈশাখ (১৯১৪ সালের মে মাস) প্রমথ চৌধুরী এটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
গুরুত্ব ও প্রভাব:
- চলিত রীতির প্রচলন: 'সবুজপত্র' পত্রিকার সবচেয়ে বড় অবদান হলো বাংলা সাহিত্যে সাধু রীতির পরিবর্তে চলিত রীতির প্রচলন ও প্রতিষ্ঠা। প্রমথ চৌধুরী যুক্তি দিয়েছিলেন যে, চলিত রীতির ব্যবহার সাহিত্যকে আরও প্রাণবন্ত ও সাধারণ মানুষের কাছে সহজবোধ্য করে তুলবে।
- চিন্তার নতুনত্ব: এটি শুধু ভাষারীতিতে নয়, চিন্তাভাবনাতেও আধুনিকতা ও মননশীলতার উন্মোচন ঘটায়। এটি রক্ষণশীলতার বিপরীতে উদার ও প্রগতিশীল চিন্তার ধারক ছিল।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমিকা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই পত্রিকার একজন প্রধান লেখক ছিলেন এবং তাঁর অনেক গুরুত্বপূর্ণ রচনা, যেমন - 'বলাকা' কাব্যের কিছু কবিতা, 'ঘরে বাইরে' উপন্যাস, 'মুক্তধারা' নাটক, 'চার অধ্যায়' উপন্যাস, 'হিং টিং ছট' ইত্যাদি প্রথমে 'সবুজপত্র'-এ প্রকাশিত হয়েছিল। এটি পত্রিকার মর্যাদা ও জনপ্রিয়তা বহু গুণে বাড়িয়েছিল।
- অন্যান্য লেখক: রবীন্দ্রনাথ ছাড়াও এতে অতুলচন্দ্র গুপ্ত, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, ইন্দিরা দেবী চৌধুরানী, কিরণশঙ্কর রায় প্রমুখের লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
সংক্ষেপে, 'সবুজপত্র' বাংলা সাহিত্যে চলিত রীতির প্রচলন, নতুন চিন্তাধারার স্ফুরণ এবং বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনার পথ খুলে দিয়েছিল, যা আধুনিক বাংলা গদ্য ও সাহিত্যের বিকাশে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।
১৬. মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক নাটক–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক নাটক হলো পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়
ব্যাখ্যা:
- পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়: এটি সৈয়দ শামসুল হকের রচিত একটি কাব্যনাট্য। এটি ১৯৭০-এর দশকের প্রথম দিকে রচিত এবং এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে লেখা সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রতীকী নাটকের একটি। এর বিষয়বস্তু সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ ও এর ভয়াবহতা নিয়ে।
অন্যান্য নাটকগুলো মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক নয়:
- সুবচন নির্বাসনে: এটি আবদুল্লাহ আল মামুনের বিখ্যাত নাটক। এটি মূলত সামাজিক ও রাজনৈতিক অবক্ষয় নিয়ে রচিত, মুক্তিযুদ্ধ সরাসরি এর বিষয়বস্তু নয়।
- রক্তাক্ত প্রান্তর: এটি মুনীর চৌধুরীর ঐতিহাসিক নাটক, যা পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রচিত। এটি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক নাটক নয়।
- নূরলদীনের সারা জীবন: এটি সৈয়দ শামসুল হকেরই আরেকটি বিখ্যাত কাব্যনাট্য। এটি ১৭০০-এর দশকের রংপুরের কৃষক বিদ্রোহ এবং এর নেতা নূরলদীনকে নিয়ে রচিত। এটিও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক নাটক নয়।
১৭. কোনটি জসীমউদ্দীনের নাটক?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
জসীমউদ্দীনের নাটকটি হলো:
গঃ বেদের মেয়ে
ব্যাখ্যা:
- রাখালী: এটি জসীমউদ্দীনের একটি বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ।
- মাটির কান্না: এটিও জসীমউদ্দীনের একটি কাব্যগ্রন্থ।
- বেদের মেয়ে: এটি জসীমউদ্দীনের রচিত একটি জনপ্রিয় নাটক।
- বোবা কাহিনী: এটি জসীমউদ্দীনের রচিত একটি উপন্যাস।
১৮. মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে কোন ধর্মপ্রচারক-এর প্রভাব অপরিসীম?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে যার প্রভাব অপরিসীম, তিনি হলেন শ্রীচৈতন্যদেব (চৈতন্য মহাপ্রভু)।
পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকে ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত তাঁর ভক্তি আন্দোলন (বৈষ্ণব ধর্ম আন্দোলন) বাংলা সাহিত্যে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। তাঁর আবির্ভাবে বৈষ্ণব পদাবলি, চৈতন্যজীবনী কাব্য, বৈষ্ণব ধর্মতত্ত্ব বিষয়ক গ্রন্থ এবং অন্যান্য ভক্তিমূলক রচনার বিপুল সমাহার ঘটে। তাঁর জীবন ও প্রেমধর্ম বাংলা সাহিত্যের এক বিশাল অংশ জুড়ে স্থান করে নেয়।
১৯. মুনীর চৌধুরীর অনূদিত নাটক কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
মুনীর চৌধুরীর অনূদিত নাটকটি হলো:
ঘঃ মুখরা রমণী বশীকরণ
ব্যাখ্যা:
- কবর: এটি মুনীর চৌধুরীর রচিত একটি মৌলিক নাটক (১৯৫২ সালে রচিত)।
- চিঠি: এটিও মুনীর চৌধুরীর একটি মৌলিক নাটক।
- রক্তাক্ত প্রান্তর: এটি মুনীর চৌধুরীর রচিত একটি মৌলিক ঐতিহাসিক নাটক (১৯৫৯ সালে রচিত)।
- মুখরা রমণী বশীকরণ: এটি উইলিয়াম শেক্সপিয়রের বিখ্যাত কমেডি নাটক "The Taming of the Shrew"-এর মুনীর চৌধুরী কৃত বাংলা অনুবাদ।
২০. কোনটি উপন্যাস নয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে কবিতার কথা উপন্যাস নয়।
- দিবারাত্রির কাব্য: এটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি বিখ্যাত উপন্যাস।
- হাঁসুলী বাঁকের উপকথা: এটি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি বিখ্যাত উপন্যাস।
- কবিতার কথা: এটি প্রখ্যাত কবি ও সাহিত্য সমালোচক সুধীন্দ্রনাথ দত্তের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। এখানে তিনি কবিতা এবং সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেছেন। এটি কোনো উপন্যাস নয়।
- পথের পাঁচালী: এটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি কালজয়ী উপন্যাস।
সুতরাং, সঠিক উত্তর হলো: গঃ কবিতার কথা
২১. ‘বিষাদ সিন্ধু’ একটি–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
‘বিষাদ সিন্ধু’ একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস।
এটি মীর মশাররফ হোসেন রচিত একটি বিখ্যাত উপন্যাস, যা কারবালার বিষাদময় ঘটনা অবলম্বনে রচিত হয়েছে। এই উপন্যাসে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেনের সঙ্গে ইয়াজিদের বিরোধ এবং কারবালার যুদ্ধের করুণ কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। এটি বাংলা সাহিত্যের একটি ক্লাসিক হিসেবে বিবেচিত।
ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর কে সাধারণত বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের শেষ এবং শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে গণ্য করা হয়।
তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীর একজন প্রখ্যাত কবি ছিলেন। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ হলো 'অন্নদামঙ্গল কাব্য', যা 'বিদ্যার সুন্দর' নামেও পরিচিত। এই কাব্যের জন্যই তিনি 'রায়গুণাকর' উপাধি লাভ করেন।
তাঁর গুরুত্ব:
- যুগসন্ধিক্ষণের কবি: ভারতচন্দ্র এমন এক সময়ে কাব্যচর্চা করেছেন যখন মধ্যযুগের প্রভাব শেষ হয়ে আধুনিক যুগের আগমনী বার্তা শোনা যাচ্ছিল। তাঁর রচনায় মধ্যযুগের ঐতিহ্য যেমন ছিল, তেমনি আধুনিক রচনার কিছু বৈশিষ্ট্যও লক্ষ করা যায়।
- ভাষা ও ছন্দের মুন্সিয়ানা: তিনি ভাষার ব্যবহারে অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। তাঁর লেখায় শব্দের গাঁথুনি, ছন্দের মাধুর্য এবং রসবোধ ছিল অতুলনীয়। সংস্কৃত, ফারসি এবং দেশীয় শব্দের চমৎকার মিশেল ঘটিয়ে তিনি এক বিশেষ ভাষারীতি তৈরি করেছিলেন।
- আর্টের জন্য শিল্প: তাঁর রচনায় কেবল ধর্মীয় বা পৌরাণিক বিষয়বস্তু নয়, বরং কাব্যিক সৌন্দর্য এবং শিল্পের প্রতিও জোর দেওয়া হয়েছিল, যা মধ্যযুগের ধর্ম-কেন্দ্রিক সাহিত্যের থেকে একটি ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য ছিল।
তাঁর মৃত্যুর (১৭৬০ খ্রিস্টাব্দ) পরেই বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার সূত্রপাত হয়, বিশেষ করে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রমুখের হাত ধরে। এই কারণে তাঁকে মধ্যযুগের সমাপ্তি রেখা হিসেবে ধরা হয়।
২৩. ‘তোহফা’ কাব্যটি কে রচনা করেন?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'তোহফা' কাব্যটি রচনা করেন আলাওল।
এটি মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি আলাওলের একটি নীতি কাব্য। এই কাব্যে তিনি সুফি দর্শন, নীতি ও ধর্মীয় উপদেশমূলক কথা তুলে ধরেছেন।
২৪. এন্টনি ফিরিঙ্গি কী জাতীয় সাহিত্যের রচয়িতা?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
এন্টনি ফিরিঙ্গি ছিলেন কবিগান ও শ্যামাসংগীত জাতীয় সাহিত্যের রচয়িতা।
তিনি ছিলেন একজন পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত বাঙালি কবিয়াল (কবিওয়ালা)। তার আসল নাম ছিল অ্যান্টনি ডি সুজা। তিনি বাংলা ভাষায় কবিগান রচনা ও পরিবেশনের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তার রচিত গানগুলিতে একদিকে যেমন প্রেম, ভক্তি ও ঈশ্বরতত্ত্বের কথা থাকত, তেমনি অন্যদিকে সামাজিক দিকও উঠে আসত। তিনি বহু শ্যামাসংগীত (দেবী কালীর স্তুতিমূলক গান) রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
সুতরাং, তার রচনার প্রধান ধারা ছিল কবিগান এবং শ্যামাসংগীত।
২৫. ‘রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ গ্রন্থটির প্রণেতা–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র' গ্রন্থটির প্রণেতা হলেন রামরাম বসু।
এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুদ্রিত মৌলিক গদ্যগ্রন্থ (১৮০১ সালে প্রকাশিত)। যদিও এটিকে আধুনিক অর্থে 'গদ্যসাহিত্য' বলা যায় না, কারণ এতে সাধু গদ্যের পাশাপাশি পদ্যের প্রভাব ছিল, তবুও বাংলা গদ্যের বিকাশে এর একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। বইটি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ছাত্রদের বাংলা শেখানোর উদ্দেশ্যে রচিত হয়েছিল।
২৬. ‘ইয়ং বেঙ্গল’ গোষ্ঠীর মুখপত্ররূপে কোন পত্রিকা প্রকাশিত হয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'ইয়ং বেঙ্গল' গোষ্ঠীর মুখপত্ররূপে 'জ্ঞানান্বেষণ' নামক পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়।
এটি ১৮৩১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এবং এর সম্পাদক ছিলেন দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়। এই পত্রিকাটি ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠীর প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা, যুক্তিবাদ ও সমাজ সংস্কারের আদর্শ প্রচার করত।
২৭. হরিনাথ মজুমদার সম্পাদিত পত্রিকার নাম–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
হরিনাথ মজুমদার সম্পাদিত পত্রিকার নাম হলো গ্রামবার্তা প্রকাশিকা।
এটি ১৮৬৩ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে প্রথম মাসিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হয়। এটি মফস্বল সাংবাদিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিল এবং গ্রামবাংলার দুঃখী মানুষের কথা, জমিদারদের অত্যাচার, নীলকরদের শোষণ ইত্যাদি তুলে ধরে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
২৮. নিচের কোনটি ভ্রমণসাহিত্য বিষয়ক গ্রন্থ নয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে চার ইয়ারী কথা ভ্রমণসাহিত্য বিষয়ক গ্রন্থ নয়।
- কঃ চার ইয়ারী কথা: এটি প্রমথ চৌধুরী রচিত একটি বিখ্যাত গল্প সংকলন বা কথিকা। এটি ভ্রমণসাহিত্য নয়, বরং চার বন্ধুর আলোচনা ও চিন্তাভাবনার উপর ভিত্তি করে লেখা।
- খঃ পালামৌ: এটি সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনী।
- গঃ দৃষ্টিপাত: এটি যাযাবর (বিনয় মুখোপাধ্যায়)-এর রচিত একটি জনপ্রিয় ভ্রমণকাহিনী।
- ঘঃ দেশে বিদেশে: এটি সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত একটি বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনী।
প্রদত্ত উপন্যাসগুলোর মধ্যে যেটিতে গ্রামীণ সমাজ জীবনের চিত্র প্রাধান্য লাভ করেনি, সেটি হলো সীতারাম
ব্যাখ্যা:
- কঃ গণদেবতা: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উপন্যাসটি গ্রামীণ বাংলার সমাজ, কৃষিভিত্তিক জীবন, জমিদারী প্রথার অবক্ষয় এবং গ্রামীণ সমাজের পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। এটি গ্রামীণ জীবন চিত্রের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
- খঃ পদ্মানদীর মাঝি: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কালজয়ী উপন্যাসটি পদ্মানদীর ধীবর সম্প্রদায়ের জীবন, তাদের সংগ্রাম, সুখ-দুঃখ এবং গ্রামীণ পরিবেশের এক বাস্তবসম্মত চিত্র তুলে ধরে। এটি মূলত গ্রামীণ সমাজের চিত্র নির্ভর।
- গঃ সীতারাম: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের এই উপন্যাসটি একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস। এটি সতেরো শতকের বাংলার জমিদার সীতারাম রায় এবং তার রাজ্য প্রতিষ্ঠা ও পতনের কাহিনী নিয়ে লেখা। এখানে ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহ, ক্ষমতা, বিদ্রোহ এবং ব্যক্তিগত চরিত্রায়ণই মুখ্য, গ্রামীণ সমাজ জীবন এর প্রধান উপজীব্য নয়, যদিও প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ কাঠামো বিদ্যমান ছিল।
- ঘঃ পথের পাঁচালী: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উপন্যাসটি গ্রামীণ বাংলার দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের জীবন, অপুর শৈশব, প্রকৃতি এবং গ্রামীণ সংস্কৃতির এক নিবিড় ও হৃদয়স্পর্শী চিত্র অঙ্কন করেছে। এটি গ্রামীণ জীবন চিত্রের এক অসাধারণ উদাহরণ।
সুতরাং, সীতারাম উপন্যাসটিতে গ্রামীণ সমাজ জীবনের চিত্র অন্যান্য উপন্যাসের মতো প্রধান্য লাভ করেনি।
৩০. নিচের কোন চরিত্র দুটি রবীন্দ্রনাথের ‘ঘরে বাইরে’ উপন্যাসের?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'ঘরে বাইরে' উপন্যাসের চরিত্র দুটি হলো নিখিলেস-বিমলা
ব্যাখ্যা:
- কঃ বিহারী-বিনোদিনী: এই চরিত্র দুটি রবীন্দ্রনাথের 'চোখের বালি' উপন্যাসের।
- খঃ নিখিলেস-বিমলা: এই দুটি চরিত্রই 'ঘরে বাইরে' উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। নিখিলেশ একজন উদারপন্থী জমিদার এবং বিমলা তার স্ত্রী, যিনি স্বদেশী আন্দোলনের নেতা সন্দীপের প্রভাবে প্রভাবিত হন।
- গঃ মধুসূদন-কুমুদিনী: এই চরিত্র দুটি রবীন্দ্রনাথের 'যোগাযোগ' উপন্যাসের।
- ঘঃ অমিত-লাবণ্য: এই চরিত্র দুটি রবীন্দ্রনাথের 'শেষের কবিতা' উপন্যাসের।
৩১. কোনটি কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাস?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে কুহেলিকা কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাস।
- কঃ রিক্তের বেদন: এটি কাজী নজরুল ইসলামের একটি গল্পগ্রন্থ।
- খঃ সর্বহারা: এটি কাজী নজরুল ইসলামের একটি কাব্যগ্রন্থ।
- গঃ আলেয়া: এটি কাজী নজরুল ইসলামের একটি গীতিনাট্য।
- ঘঃ কুহেলিকা: এটি কাজী নজরুল ইসলামের একটি উপন্যাস।
সুতরাং, সঠিক উত্তর হলো: ঘঃ কুহেলিকা
৩২. কোনটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের পত্রকাব্য?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
মাইকেল মধুসূদন দত্তের পত্রকাব্যটি হলো বীরাঙ্গনা
ব্যাখ্যা:
- বীরাঙ্গনা: এটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের একটি বিখ্যাত পত্রকাব্য। এটি ১৮৬২ সালে প্রকাশিত হয়। এই কাব্যে পৌরাণিক নারী চরিত্রদের (যেমন - শকুন্তলা, তারা, মন্দোদরী, ক্যাকেনী ইত্যাদি) নিজেদের প্রেম, বিরহ, ক্ষোভ ও অভিমান ব্যক্ত করে প্রেমিক বা স্বামীর কাছে লেখা পত্রাকারে কবিতা রয়েছে। এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক পত্রকাব্য।
অন্যান্য বিকল্পগুলো হলো:
- কঃ ব্রজাঙ্গনা: এটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত একটি গীতিকাব্য।
- খঃ বিলাতের পত্র: এটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচনা নয়, বা তার পত্রকাব্য হিসেবে পরিচিত নয়। এটি সম্ভবত অন্য কোনো লেখকের ভ্রমণ কাহিনী বা পত্র সংকলন।
- ঘঃ হিমালয়: এটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের কোনো পরিচিত কাব্য বা গ্রন্থ নয়।
‘একখানি ছোট ক্ষেত আমি একেলা’– এই চরণটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত কবিতা ‘সোনার তরী’ থেকে নেওয়া হয়েছে।
৩৪. ‘আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’–কবিতাটি কার লেখা?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
‘আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’ কবিতাটি লিখেছেন আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ।
এটি তাঁর অন্যতম বিখ্যাত এবং বহুল পঠিত কবিতা।
৩৫. কোনটি শওকত ওসমানের রচনা নয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
শওকত ওসমানের উল্লেখযোগ্য রচনাগুলো নিচে সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো:
শওকত ওসমানের রচনা তালিকা:
-
উপন্যাস:
- জননী (প্রথম উপন্যাস)
- চৌরসন্ধি
- ক্রীতদাসের হাসি
- সমাগম
- রাজা উপাখ্যান
- পতঙ্গ পিঞ্জর
- আর্তনাদ
- রাজসাক্ষী
- মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস: জাহান্নম হইতে বিদায়, দুই সৈনিক, নেকড়ে অরণ্য, জলাঙ্গী
-
গল্পগ্রন্থ:
- পিঁজরাপোল
- জুনু আপা ও অন্যান্য গল্প
- জন্ম যদি তব বঙ্গে
- ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী
- ভেজাল
-
নাটক:
- আমলার মামলা
- পূর্ণ স্বাধীনতা চূর্ণ স্বাধীনতা
- তস্কর ও লস্কর
- কাঁকরমণি
- বাগদাদের কবি
-
প্রবন্ধগ্রন্থ:
- মন্তব্য মৃগয়া
- সংস্কৃতির চড়াই উৎরাই
- মুসলিম মানসের রূপান্তর
সঠিক উত্তরটি হলো খঃ of।
এই ধরনের বাক্য গঠন সাধারণত এভাবে ব্যবহৃত হয়: "Professor Razzak was a scholar of [something]" - এখানে 'of' দ্বারা বোঝানো হচ্ছে যে তিনি কোনো একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বা বিষয়ে পাণ্ডিত্যপূর্ণ ছিলেন, যেমন "scholar of history" বা "scholar of literature"।
যদিও 'refute' সাধারণত একটি ক্রিয়া (verb), কিছু বিরল বা পুরনো ব্যবহারে এটি 'refutation' বা 'খণ্ডন' অর্থে বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে, "a scholar of refute" বলতে বোঝাতে পারে এমন একজন পণ্ডিত যিনি যুক্তি বা মতবাদ খণ্ডনে অত্যন্ত দক্ষ বা যার কাজই হলো ভুল ধারণা খণ্ডন করা।
তবে, যদি বাক্যটির উদ্দেশ্য হয় বোঝানো যে অধ্যাপক রাজ্জাকের পাণ্ডিত্য এতটাই অকাট্য ছিল যে তা খণ্ডন করা অসম্ভব, তাহলে সবচেয়ে উপযুক্ত শব্দগুচ্ছ হতো "a scholar beyond refute" বা "a scholar beyond question"। যেহেতু "beyond" বিকল্পগুলিতে নেই, এবং 'refute'কে বিশেষ্য হিসেবে ধরে নিলে 'of' কিছুটা অর্থপূর্ণ হয়, তাই এই প্রেক্ষাপটে 'of' সবচেয়ে উপযুক্ত বলে বিবেচিত।
৩৭. 'David Copperfield' is a/an _____ novel.
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'David Copperfield' উপন্যাসটি চার্লস ডিকেন্স-এর লেখা। এটি ১৮৪৯ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে এবং ১৮৫০ সালে একটি পূর্ণাঙ্গ বই হিসেবে প্রকাশিত হয়।
চার্লস ডিকেন্স ছিলেন একজন প্রধান ভিক্টোরিয়ান লেখক। তাঁর রচনাগুলো রানী ভিক্টোরিয়ার শাসনামল (১৮৩৭-১৯০১) অর্থাৎ ভিক্টোরিয়ান যুগের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটকে প্রতিফলিত করে। 'David Copperfield' নিজেও একটি ক্লাসিক ভিক্টোরিয়ান উপন্যাস, যা সেই সময়ের জীবনযাত্রার বাস্তব চিত্র তুলে ধরে।
প্রদত্ত বিকল্পগুলো থেকে সঠিক উত্তর হলো:
কঃ Victorian
৩৮. ‘Elegy Written in a Country Churchyard’ is written by–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'Elegy Written in a Country Churchyard' কবিতাটি লিখেছেন Thomas Gray (টমাস গ্রে)।
এটি ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম বিখ্যাত এবং প্রভাবশালী কবিতাগুলির মধ্যে একটি।
৩৯. John Smith is good ____ Mathematics. (Fill in the gap)
[ বিসিএস ৩৬তম ]
John Smith is good at Mathematics.
কোনো বিষয় বা কাজে দক্ষ বোঝাতে সাধারণত 'good at' ব্যবহৃত হয়।
- good at Mathematics (গণিতে ভালো)
- good at drawing (ছবি আঁকায় ভালো)
- good at sports (খেলাধুলায় ভালো)
৪০. Shakespeare's ‘Measure for Measure’ is a successful–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
শেক্সপিয়রের 'Measure for Measure' নাটকটি একটি সফল tragi-comedy (ট্র্যাজি-কমেডি)।
যদিও এটি শেক্সপিয়রের প্রথম ফলিত সংস্করণে (First Folio) 'কমেডি' হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ হয়েছিল, তবে এর অন্ধকার বিষয়বস্তু, নৈতিক জটিলতা এবং চূড়ান্ত সমাধানের (যা পুরোপুরি আনন্দদায়ক নয়) কারণে আধুনিক সমালোচকরা এটিকে প্রায়শই 'problem play' বা 'dark comedy' এবং বিশেষত tragi-comedy হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এতে কমেডির উপাদান থাকলেও, ট্র্যাজেডির গুরুতর দিকগুলোও বিদ্যমান।
৪১. Teacher said, ‘The earth ____ round the sun.’
[ বিসিএস ৩৬তম ]
Teacher said, ‘The earth moves round the sun.’
কারণ, এটি একটি চিরন্তন সত্য (universal truth)। চিরন্তন সত্য বা বৈজ্ঞানিক সত্যের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ উক্তিকে পরোক্ষ উক্তিতে রূপান্তর করার সময় ভেতরের ক্রিয়ার কাল (tense) পরিবর্তন হয় না, তা রিপোর্টিং ভার্ব পাস্ট টেন্সে (said) থাকলেও।
The romantic age in English literature began with the publication of Preface to Lyrical Ballads
'Lyrical Ballads' (প্রথম সংস্করণ ১৭৯৮ সালে এবং দ্বিতীয় সংস্করণ ১৮০০ সালে প্রকাশিত, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ 'Preface'টি যুক্ত করা হয়) উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ (William Wordsworth) এবং স্যামুয়েল টেলর কোলরিজ (Samuel Taylor Coleridge) যৌথভাবে রচনা করেন। এই কাব্যগ্রন্থটি, বিশেষত এর 'Preface'টি, রোমান্টিক আন্দোলনের মূলনীতি এবং উদ্দেশ্য ঘোষণা করে এবং ইংরেজী সাহিত্যে রোমান্টিক যুগের সূচনা করে।
৪৩. In English grammar, ____ deals with formation of sentences.
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সঠিক উত্তরটি হলো গঃ Syntax।
- Syntax (সিনট্যাক্স): ব্যাকরণের এই শাখাটি বাক্য গঠনের নিয়মাবলী, শব্দ এবং বাক্যংশের সঠিক বিন্যাস এবং একটি ভাষার বাক্য কাঠামোর সাথে সম্পর্কিত। এটি বাক্য কীভাবে গঠিত হয় এবং কীভাবে শব্দগুলো একত্রিত হয়ে অর্থপূর্ণ বাক্য তৈরি করে তা নিয়ে কাজ করে।
- Morphology (মরফোলজি): এটি শব্দ গঠন এবং শব্দের অভ্যন্তরীণ কাঠামো নিয়ে আলোচনা করে (যেমন: উপসর্গ, প্রত্যয়, মূল শব্দ)।
- Etymology (এটাইমলজি): এটি শব্দের উৎপত্তি এবং তাদের ঐতিহাসিক বিবর্তন নিয়ে আলোচনা করে।
- Semantics (সিমেন্টিক্স): এটি ভাষা, শব্দ, বাক্যংশ এবং বাক্যের অর্থের অধ্যয়ন নিয়ে কাজ করে।
৪৪. Which of the following books is written by Thomas Hardy?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রদত্ত বইগুলোর মধ্যে The Return of the Native থমাস হার্ডি (Thomas Hardy) লিখেছেন।
ব্যাখ্যা:
- Vanity Fair: লিখেছেন উইলিয়াম মেকপিস থ্যাকারে (William Makepeace Thackeray)।
- The Return of the Native: লিখেছেন থমাস হার্ডি (Thomas Hardy)। এটি তার অন্যতম বিখ্যাত 'ওয়েসেক্স উপন্যাস'।
- Pride and Prejudice: লিখেছেন জেন অস্টেন (Jane Austen)।
- Oliver Twist: লিখেছেন চার্লস ডিকেন্স (Charles Dickens)।
৪৫. He insisted ____ there. (Fill in the gap)
[ বিসিএস ৩৬তম ]
He insisted on my going there.
'insist' ক্রিয়াপদের পরে সাধারণত 'on' preposition বসে এবং তার পরে gerund (ক্রিয়ামূল + ing) ব্যবহৃত হয়। যদি কাজের কর্তা ভিন্ন হয়, তাহলে gerund-এর পূর্বে সেই কর্তার possessive form বসে।
- He insisted on going there. (যদি কর্তা একই হয়)
- He insisted on my going there. (যদি কর্তা ভিন্ন হয়, এখানে 'my' দ্বারা বোঝানো হচ্ছে যে সে আমার যাওয়ার উপর জোর দিয়েছিল।)
‘A stitch in time saves nine’– এই বাগধারাটি সময়োচিত পদক্ষেপ বা সময় মতো কাজ করার গুরুত্ব বোঝায়।
এর অর্থ হলো, কোনো সমস্যা ছোট থাকা অবস্থায় যদি দ্রুত সমাধান করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে তা অনেক বড় হওয়া থেকে রক্ষা পাবে এবং অনেক বেশি ঝামেলা বা ক্ষতি এড়ানো যাবে।
প্রদত্ত বিকল্পগুলো থেকে সঠিক উত্তর হলো:
খঃ timely action
৪৭. ‘Frailty thy name is woman’– is a famous dialogue from.
[ বিসিএস ৩৬তম ]
‘Frailty thy name is woman’\– এই বিখ্যাত সংলাপটি W. Shakespeare (উইলিয়াম শেক্সপিয়র)-এর লেখা।
এটি তাঁর বিখ্যাত নাটক 'Hamlet'-এর একটি বিখ্যাত উক্তি। হ্যামলেট তার মায়ের দ্রুত নতুন বিয়েতে হতাশা এবং নারীর প্রতি তার বিতৃষ্ণা প্রকাশ করতে এই উক্তিটি করেছিলেন।
'Frailty, thy name is woman' - এই উক্তিটির বাংলা অর্থ হলো:
"দুর্বলতা, তোমার নামই নারী।"
এটি শেক্সপিয়রের 'হ্যামলেট' নাটকের একটি বিখ্যাত উক্তি। হ্যামলেট তার মায়ের দ্রুত নতুন বিয়েতে হতাশা এবং নারীর প্রতি তার বিতৃষ্ণা প্রকাশ করতে গিয়ে এই কথাটি বলেছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি নারীর স্বভাবগত দুর্বলতা (বিশেষ করে চারিত্রিক অস্থিরতা বা সংকল্পের অভাব) বোঝাতে চেয়েছিলেন।
৪৮. The poem ‘The Solitary Reaper’ is written by–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
The poem ‘The Solitary Reaper’ কবিতাটি লিখেছেন W. Wordsworth (উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ)।
এটি রোমান্টিক যুগের অন্যতম বিখ্যাত কবিতা, যেখানে স্কটল্যান্ডের একটি গ্রামের মেয়ে ক্ষেতে কাজ করার সময় গান গায় এবং সেই গানের প্রভাব কবির মনে কীভাবে স্থায়ী হয়, তা বর্ণনা করা হয়েছে।
৪৯. ‘The Merchant of Venice’ is a Shakespearean play about–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
Shakespeare-এর 'The Merchant of Venice' নাটকটি একজন ইহুদি চরিত্রকে কেন্দ্র করে লেখা।
এই নাটকের কেন্দ্রীয় এবং সবচেয়ে বিতর্কিত চরিত্র হলো শাইলক (Shylock), যিনি একজন ইহুদি মহাজন। নাটকের মূল সংঘাত শাইলক এবং ভেনিসের একজন খ্রিস্টান বণিক আন্তোনিও-এর মধ্যে একটি ঋণ চুক্তির পরিণতি নিয়ে গড়ে উঠেছে।
সুতরাং, সঠিক উত্তর হলো: কঃ a Jew
৫০. What would be the right antonym for ‘initiative’?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
‘initiative’ শব্দের অর্থ হলো উদ্যোগ, কর্মপ্রচেষ্টা বা স্বাধীনভাবে কোনো কাজ শুরু করার ক্ষমতা। এর বিপরীত শব্দ হবে এমন কিছু যা নিষ্ক্রিয়তা, উদ্যমহীনতা বা আগ্রহের অভাব বোঝায়।
বিকল্পগুলো বিশ্লেষণ করা যাক:
- কঃ apathy (অ্যাপ্যাথি): এর অর্থ হলো আগ্রহ, উৎসাহ বা উদ্বেগের অভাব; উদাসীনতা বা ঔদাসীন্য। এটি উদ্যোগের সম্পূর্ণ বিপরীত, কারণ উদ্যোগের জন্য আগ্রহ ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
- খঃ indolence (ইন্ডোলেন্স): এর অর্থ হলো অলসতা বা নিষ্ক্রিয়তা। এটিও উদ্যোগের একটি বিপরীত গুণ, তবে 'apathy' উদ্যোগের মূল চালিকাশক্তির (আগ্রহ) অভাবকে আরও সরাসরি নির্দেশ করে।
- গঃ enterprise (এন্টারপ্রাইজ): এর অর্থ উদ্যোগ বা সাহসিকতা। এটি 'initiative'-এর একটি সমার্থক শব্দ।
- ঘঃ activity (অ্যাক্টিভিটি): এর অর্থ কর্মতৎপরতা বা সক্রিয়তা। এটিও 'initiative'-এর সাথে সম্পর্কিত, কারণ উদ্যোগের ফলে সক্রিয়তা আসে।
সুতরাং, 'initiative'-এর সবচেয়ে সঠিক বিপরীত শব্দ হলো apathy (অ্যাপ্যাথি)।
সঠিক উত্তর: কঃ apathy
৫১. The play ‘Candida’ is by–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
The play ‘Candida’ is by G. B. Shaw (জর্জ বার্নার্ড শ)।
এটি ১৯ শতকের শেষের দিকে রচিত একটি বিখ্যাত নাটক।
৫২. Which of the following writers belongs to the romantic period in English literature?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রদত্ত লেখকদের মধ্যে S.T. Coleridge (স্যামুয়েল টেলর কোলরিজ) ইংরেজি সাহিত্যের রোমান্টিক যুগের অন্তর্গত।
- কঃ A. Tennyson (আলফ্রেড, লর্ড টেনিসন): তিনি ছিলেন ভিক্টোরিয়ান যুগের একজন প্রধান কবি।
- খঃ Alexander Pope (আলেকজান্ডার পোপ): তিনি ছিলেন অগাস্টান যুগ/নিওক্লাসিক্যাল যুগের (১৮শ শতাব্দীর প্রথম ভাগ) একজন গুরুত্বপূর্ণ কবি।
- গঃ John Dryden (জন ড্রাইডেন): তিনি ছিলেন রিস্টোরেশন যুগের (১৭শ শতাব্দীর শেষ ভাগ) একজন প্রভাবশালী সাহিত্যিক।
- ঘঃ S.T. Coleridge (স্যামুয়েল টেলর কোলরিজ): তিনি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের সাথে যৌথভাবে রোমান্টিক যুগের সূচনা করেন এবং এই যুগের একজন অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে পরিচিত।
৫৩. This could have worked if I ____ been more cautious.
[ বিসিএস ৩৬তম ]
This could have worked if I had been more cautious.
এটি একটি তৃতীয় প্রকারের শর্তসাপেক্ষ বাক্য (Third Conditional Sentence)। এই ধরনের বাক্য অতীতকালের একটি কাল্পনিক বা অসম্ভব পরিস্থিতি এবং তার ফল বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
এর গঠন হলো: Main Clause: Subject + would have/could have/might have + past participle If Clause: If + Subject + had + past participle
এখানে মূল বাক্যটি হলো "This could have worked", যা "could have + past participle" গঠন মেনে চলছে। তাই 'if' clause-এ "had + past participle" ব্যবহৃত হবে। 'been' হলো 'be' ক্রিয়ার past participle form।
৫৪. The Climax of a plot is what happens–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
The Climax (ক্লাইম্যাক্স) হলো একটি প্লট বা কাহিনীর সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ বা সর্বোচ্চ বিন্দুর ঘটনা। এটি গল্পের সেই মুহূর্ত যেখানে মূল সংঘাত তার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় এবং গল্পের মোড় ঘুরে যায়।
প্রদত্ত বিকল্পগুলো থেকে সঠিক উত্তর হলো:
খঃ at the height
৫৫. London town is found a living being in the works of–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
London town-কে যেন একটি জীবন্ত সত্তা হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য Charles Dickens (চার্লস ডিকেন্স) বিখ্যাত।
তাঁর উপন্যাসগুলোতে লন্ডন শহরকে প্রায়শই একটি প্রধান চরিত্র হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে, যেখানে এর গলি, বস্তি, ধোঁয়াশা, শব্দ, এবং এর অধিবাসীদের জীবন শহরেরই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। তিনি লন্ডনের বিভিন্ন অংশকে এতটাই জীবন্ত ও প্রতীকীভাবে তুলে ধরেছেন যে মনে হয় শহরটি নিজেই যেন শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে এবং তার চরিত্রদের জীবনকে প্রভাবিত করছে।
৫৬. I have been living in Dhaka ____ 2000.
[ বিসিএস ৩৬তম ]
I have been living in Dhaka since 2000.
কোনো নির্দিষ্ট সময়বিন্দু থেকে বর্তমান পর্যন্ত কোনো কাজ চলছে বোঝাতে 'since' ব্যবহার করা হয়।
- Since 2000 (২০০০ সাল থেকে)
- Since last Monday (গত সোমবার থেকে)
- Since childhood (শৈশব থেকে)
অন্যদিকে, 'from' সাধারণত একটি কাজের শুরুর বিন্দু বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, যা একটি নির্দিষ্ট সময়কালের জন্য প্রযোজ্য হতে পারে (যেমন: from 9 AM to 5 PM)।
৫৭. Give the antonym of the word ‘transitory’.
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'transitory' শব্দের অর্থ হলো ক্ষণস্থায়ী, অস্থায়ী বা স্বল্পস্থায়ী।
এর বিপরীত শব্দ হবে এমন কিছু যা স্থায়ী বা চিরস্থায়ী বোঝায়।
বিকল্পগুলো বিশ্লেষণ করা যাক:
- কঃ temporary (টেম্পোরারি): এর অর্থ অস্থায়ী বা ক্ষণস্থায়ী। এটি 'transitory'-এর সমার্থক শব্দ।
- খঃ permanent (পার্মানেন্ট): এর অর্থ স্থায়ী বা চিরস্থায়ী। এটি 'transitory'-এর সঠিক বিপরীত শব্দ।
- গঃ transparent (ট্রান্সপারেন্ট): এর অর্থ স্বচ্ছ বা সুস্পষ্ট। এটি অর্থের দিক থেকে সম্পর্কহীন।
- ঘঃ short-lived (শর্ট-লিভড): এর অর্থ স্বল্পস্থায়ী। এটিও 'transitory'-এর সমার্থক শব্দ।
সুতরাং, সঠিক উত্তর হলো: খঃ permanent
৫৮. Verb of ‘Number’ is–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'Number' শব্দের ক্রিয়া রূপটি হলো enumerate।
যদিও 'number' নিজেও একটি ক্রিয়া হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে (যেমন: "Please number the pages"), 'enumerate' শব্দটি বিশেষভাবে 'সংখ্যা গণনা করা', 'তালিকাভুক্ত করা' বা 'এক এক করে উল্লেখ করা' অর্থে ব্যবহৃত হয়, যা 'number' এর ক্রিয়াবাচক ধারণাকে আরও সুনির্দিষ্টভাবে প্রকাশ করে।
উদাহরণ:
- Noun: The number of students is high.
- Verb (number): Please number the pages from 1 to 10.
- Verb (enumerate): He asked me to enumerate the reasons for his failure.
৫৯. ‘Child is the father of man’ is taken from the poem of–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
‘Child is the father of man’ – এই বিখ্যাত উক্তিটি কঃ W. Wordsworth (উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ)-এর কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
এটি তাঁর 'My Heart Leaps Up' (যা 'The Rainbow' নামেও পরিচিত) নামক কবিতার একটি বিখ্যাত পঙ্ক্তি। এর মাধ্যমে তিনি শৈশবের সারল্য, প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা এবং সেই প্রাথমিক অভিজ্ঞতার গভীর প্রভাব যা একজন মানুষের পরিণত জীবনকে গঠন করে, তা বোঝাতে চেয়েছেন।
৬০. Slow and steady ____ the race. (Fill in the gap)
[ বিসিএস ৩৬তম ]
Slow and steady wins the race.
"Slow and steady" (ধীর ও অবিচল) এই বাক্যটি একটি একক ধারণা বা নীতিকে নির্দেশ করে, তাই এটি একটি singular (একবচন) subject হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রবাদ-প্রবচনগুলো সাধারণত Simple Present Tense-এ লেখা হয়।
৬১. ‘Man is a political animal’– who said this?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
‘Man is a political animal’ – এই উক্তিটি করেছেন Aristotle (অ্যারিস্টটল)।
এটি তাঁর রাজনৈতিক দর্শন থেকে আসা একটি বিখ্যাত উক্তি, যেখানে তিনি মানুষকে স্বাভাবিকভাবেই একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
৬২. Who is known as ‘the poet of nature’ in English literature?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ইংরেজি সাহিত্যে ‘the poet of nature’ নামে পরিচিত হলেন William Wordsworth (উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ)।
তিনি রোমান্টিক যুগের একজন প্রধান কবি ছিলেন এবং তাঁর কবিতায় প্রকৃতি ও মানবমনের গভীর সম্পর্ক, প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং এর প্রভাবকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তুলে ধরা হয়েছে। প্রকৃতির প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই তিনি এই উপাধিতে পরিচিত।
৬৩. Identify the correct sentence?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সঠিক বাক্যটি হলো Yesterday, he went home
ব্যাখ্যা:
- Yesterday (গতকাল) একটি নির্দিষ্ট অতীত সময়কে নির্দেশ করে। যখন অতীতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো কাজ ঘটেছিল, তখন Simple Past Tense ব্যবহার করা হয়।
- went হলো 'go' ক্রিয়াপদের Simple Past রূপ।
অন্যান্য বিকল্পগুলো ভুল কারণ:
- কঃ Yesterday, he has gone home: 'has gone' (Present Perfect) নির্দিষ্ট অতীত সময়ের সাথে ব্যবহৃত হয় না।
- খঃ Yesterday, he did gone home: 'did'-এর পরে ক্রিয়াপদের base form বসে (go), 'gone' (past participle) নয়।
- গঃ Yesterday, he had gone home: 'had gone' (Past Perfect) অতীতে অন্য কোনো কাজ ঘটার আগে একটি কাজ ঘটেছিল বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, শুধু একটি নির্দিষ্ট অতীত সময়ের সাথে নয়।
৬৪. “A Passage to India” is written by–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
“A Passage to India” উপন্যাসটি লিখেছেন E.M. Forster (ই. এম. ফরস্টার)।
এটি ব্রিটিশ ভারতের পটভূমিতে রচিত একটি বিখ্যাত উপন্যাস, যা ঔপনিবেশিক সম্পর্ক, জাতিগত বৈষম্য এবং সাংস্কৃতিক বোঝাপড়ার জটিলতা নিয়ে আলোকপাত করে।
৬৫. ‘Gitanjali’ of Rabindranath Tagore was translated by–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'গীতাঞ্জলি' ইংরেজিতে অনুবাদ মূলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেই করেছিলেন। তবে, এই ইংরেজি সংস্করণের পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা, পরিমার্জন এবং এর একটি বিখ্যাত ভূমিকা লিখে এর আন্তর্জাতিক পরিচিতি ও নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন W. B. Yeats (ডব্লিউ. বি. ইয়েটস)।
অনেক সময়, তাঁর এই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য তাঁকে গীতাঞ্জলির ইংরেজি সংস্করণের সাথে সরাসরি যুক্ত করে দেখা হয়।
৬৬. ‘Venerate’ Means–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'Venerate' শব্দের অর্থ হলো কাউকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করা, সম্মান করা বা পূজা করা (to regard with great respect; revere)।
প্রদত্ত বিকল্পগুলো থেকে সঠিক অর্থ হলো respect
অন্যান্য বিকল্পের অর্থ:
- কঃ defame: বদনাম করা বা কুখ্যাতি ছড়ানো।
- খঃ abuse: অপব্যবহার করা বা দুর্ব্যবহার করা।
- ঘঃ accuse: অভিযোগ করা।
৬৭. Credit tk 5000 ____ my account.
[ বিসিএস ৩৬তম ]
Credit tk 5000 to my account.
যখন কোনো অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলা হয়, তখন 'credit to' ব্যবহৃত হয়।
৬৮. ‘To do away with’ means–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
‘To do away with’ এই বাগধারাটির অর্থ হলো বাদ দেওয়া, বিলোপ করা, নিষ্পত্তি করা, বা পরিত্রাণ পাওয়া।
প্রদত্ত বিকল্পগুলো থেকে সঠিক অর্থ হলো to get rid of
৬৯. Who of the following writers was not a novelist?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রদত্ত লেখকদের মধ্যে W.B. Yeats (ডব্লিউ. বি. ইয়েটস) একজন ঔপন্যাসিক ছিলেন না।
ব্যাখ্যা:
- কঃ Charles Dickens (চার্লস ডিকেন্স): তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত ইংরেজ ঔপন্যাসিক (যেমন: Great Expectations, Oliver Twist)।
- খঃ W.B. Yeats (ডব্লিউ. বি. ইয়েটস): তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত আইরিশ কবি এবং নাট্যকার, ২০শ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান সাহিত্যিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। তিনি মূলত উপন্যাস লেখেননি।
- গঃ James Joyce (জেমস জয়েস): তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত আইরিশ ঔপন্যাসিক (যেমন: Ulysses, A Portrait of the Artist as a Young Man)।
- ঘঃ Jane Austen (জেন অস্টেন): তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত ইংরেজ ঔপন্যাসিক (যেমন: Pride and Prejudice, Sense and Sensibility)।
৭০. Which one is a correct sentence?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সঠিক বাক্যটি হলো paper is made from wood
যখন কোনো জিনিস তার মূল উপাদান থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি রূপে রূপান্তরিত হয়, যেখানে মূল উপাদানটির বৈশিষ্ট্য আর অবশিষ্ট থাকে না, তখন 'made from' ব্যবহৃত হয়। কাঠকে প্রক্রিয়াজাত করে কাগজে পরিণত করার সময় কাঠের মূল বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে যায়।
অন্যদিকে, 'made of' ব্যবহার করা হয় যখন কোনো জিনিস তার মূল উপাদানের বৈশিষ্ট্য বজায় রাখে এবং উপাদানটি দৃশ্যমান বা সহজেই শনাক্তযোগ্য হয় (যেমন: "The table is made of wood")।
৭১. বাঙালী জাতির প্রধান অংশ কোন মূল জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাঙালী জাতি একটি মিশ্র জাতি। দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সংমিশ্রণে এই জাতির উদ্ভব হয়েছে। তবে, নৃতাত্ত্বিক গবেষণামতে, অস্ট্রিক জনগোষ্ঠীকেই বাঙালী জাতির প্রধান অংশ বলে মনে করা হয়।
প্রাচীনকালে আর্যপূর্ব জনগোষ্ঠীর চারটি প্রধান শাখা বাংলায় বাস করত: অস্ট্রিক, দ্রাবিড়, নেগ্রিটো ও ভোটচীনীয় (মঙ্গোলীয়)। এদের মধ্যে অস্ট্রিকরাই ছিল বাংলার প্রাচীনতম ও প্রধানতম জনগোষ্ঠী।
৭২. বাংলার সর্বপ্রাচীন জনপদের নাম কি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলার সর্বপ্রাচীন জনপদ হলো পুণ্ড্র।
এর রাজধানী ছিল পুণ্ড্রনগর বা পুণ্ড্রবর্ধন, যা বর্তমান বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ে অবস্থিত ছিল।
বাংলা (দেশ ও ভাষা) নামের উৎপত্তির বিষয়টি আইন-ই-আকবরী গ্রন্থে সর্বাধিক উল্লেখিত হয়েছে।
আইন-ই-আকবরী (Ain-i-Akbari) হলো মুঘল সম্রাট আকবরের সভাসদ আবুল ফজল রচিত 'আকবরনামা' গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ড। এই গ্রন্থে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থা, ভূগোল, অর্থনীতি এবং বিভিন্ন প্রদেশের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। এর মধ্যে 'বাংলার বিবরণ' অংশে 'বঙ্গ' বা 'বাঙ্গালা' নামের উৎপত্তি সম্পর্কে একটি সুপরিচিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, এই অঞ্চলের প্রাচীন অধিবাসী 'বঙ্গ' জাতির নাম থেকে 'বঙ্গাল' বা 'বাঙ্গালা' নামের উৎপত্তি হয়েছে। এটিই বাংলার নামের উৎপত্তির বিষয়ে প্রাচীনতম এবং সর্বাধিক উল্লিখিত ঐতিহাসিক সূত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম।
৭৪. ঢাকার লালবাগের দুর্গ নির্মাণ করেন:
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ঢাকার লালবাগের দুর্গ (Lalbagh Fort) নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র শাহজাদা মুহাম্মদ আজম শাহ ১৬৭৮ খ্রিস্টাব্দে, যখন তিনি বাংলার সুবেদার ছিলেন।
তবে, তাঁর দিল্লি চলে যাওয়ার পর এর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে শায়েস্তা খান (১৬৮০ সালে) এর অসমাপ্ত কাজ পুনরায় শুরু করেন, কিন্তু তাঁর প্রিয় কন্যা পরী বিবির মৃত্যুর পর দুর্গটিকে অপয়া মনে করে তিনি এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেননি। তাই এটি একটি অসমাপ্ত দুর্গ হিসেবেই রয়ে গেছে।
সাধারণত, প্রশ্নটি যখন 'কে নির্মাণ করেন' বোঝাতে চায়, তখন যিনি মূল কাজ শুরু করেন অথবা যার তত্ত্বাবধানে এর প্রধান অংশ নির্মিত হয়, তাকেই বোঝানো হয়। এই ক্ষেত্রে শাহজাদা আজম শাহ কাজ শুরু করলেও, শায়েস্তা খানের তত্ত্বাবধানেই এর অধিকাংশ কাজ হয় এবং তিনি এর কাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন, যদিও সম্পূর্ণ করতে পারেননি।
প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে, যদি 'শুরু করেন' বা 'প্রধান নির্মাতা' এমন কোনো সুস্পষ্ট প্রশ্ন না থাকে, তবে শায়েস্তা খানকেই এর নির্মাতা হিসেবে ধরা হয় কারণ তিনিই দীর্ঘ সময় এর নির্মাণ কাজ পরিচালনা করেছিলেন।
সঠিক উত্তর: খঃ শায়েস্তা খান
৭৫. বাংলার ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’-এর সময় কাল:
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলার ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ ছিল ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে (বাংলা ১১৭৬ সাল) ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে সংঘটিত এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। এটি বাংলার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মানবসৃষ্ট দুর্যোগগুলোর মধ্যে অন্যতম।
সময়কাল:
- বাংলা সন: ১১৭৬ বঙ্গাব্দ।
- ইংরেজি সন: ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দ।
কারণসমূহ:
- প্রাকৃতিক কারণ: ১৭৬৮-১৭৬৯ সালের দিকে অনাবৃষ্টি এবং খরা দেখা যায়, যার ফলে ফসলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
- ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শোষণমূলক নীতি:
- ১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দিল্লির বাদশাহ শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা, বিহার ও ওড়িশার দেওয়ানি লাভ করে। এর ফলে তারা রাজস্ব আদায়ের পূর্ণ ক্ষমতা পায়।
- কোম্পানি অধিক মুনাফার লোভে কৃষকদের উপর উচ্চ হারে রাজস্ব আরোপ করে এবং তা কঠোরভাবে আদায় করত, এমনকি ফসলহানির সময়ও।
- দ্বৈত শাসন ব্যবস্থার কারণে নবাবের হাতে প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকলেও রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা ছিল কোম্পানির হাতে। এর ফলে জনগণের দুর্দশা চরম আকার ধারণ করে।
- কোম্পানি খাদ্যশস্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এবং উচ্চ মূল্যে সেগুলো বিক্রি করে।
- খাদ্যশস্যের পরিবর্তে অর্থকরী ফসল (যেমন: নীল, আফিম) চাষে কৃষকদের বাধ্য করা হয়, যা খাদ্য উৎপাদন কমিয়ে দেয়।
প্রভাব:
- ব্যাপক প্রাণহানি: এই দুর্ভিক্ষে বাংলা ও বিহারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ, অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি মানুষ অনাহারে বা অপুষ্টিজনিত রোগে মারা যায়। এটি বাংলার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাণহানি ঘটায়।
- অর্থনৈতিক বিপর্যয়: কৃষি উৎপাদন প্রায় বন্ধ হয়ে যায়, বহু জমি অনাবাদী হয়ে পড়ে, এবং গ্রামগুলো জনশূন্য হয়ে যায়। বাংলার অর্থনীতি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে।
- সামাজিক বিশৃঙ্খলা: আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়, দস্যুতা বৃদ্ধি পায় এবং সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের মতো ঘটনা ঘটে।
- দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব: দুর্ভিক্ষ বাংলার জনসংখ্যা, অর্থনীতি, শিল্প ও বাণিজ্য ব্যবস্থায় দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল।
এই মন্বন্তর ব্রিটিশ শাসনের শোষণের একটি জঘন্য উদাহরণ হয়ে আছে।
৭৬. সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় ৩১ জানুয়ারি, ১৯৫২ সালে।
১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ঢাকায় এসে ঘোষণা করেন যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এর প্রতিক্রিয়ায় ঢাকায় তীব্র ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে, ৩১ জানুয়ারি, ১৯৫২ তারিখে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার লাইব্রেরি হলে অনুষ্ঠিত এক সভায় ৪০ সদস্যবিশিষ্ট সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। কাজী গোলাম মাহবুবকে এই পরিষদের আহ্বায়ক করা হয়। এই পরিষদই ২১ ফেব্রুয়ারি হরতাল ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল, যা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
৭৭. ৬ দফা দাবি পেশ করা হয়:
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ছয় দফা দাবি ছিল পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক উত্থাপিত একটি ঐতিহাসিক কর্মসূচি, যা পরবর্তীকালে বাঙালির মুক্তি সনদ বা ম্যাগনাকার্টা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলগুলোর এক সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু এই ছয় দফা দাবি পেশ করেন। ৭ জুনকে প্রতি বছর '৬ দফা দিবস' হিসেবে পালন করা হয়।
নিচে ছয় দফা দাবির বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
৬ দফা দাবিসমূহ:
১. শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি:
- ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংবিধান রচনা করে পাকিস্তানকে একটি ফেডারেল বা যুক্তরাষ্ট্রীয় রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
- সরকারের ধরন হবে সংসদীয় পদ্ধতির।
- প্রাপ্তবয়স্কদের সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে সকল আইনসভা গঠিত হবে এবং আইনসভা সার্বভৌম হবে।
- জনসংখ্যার অনুপাতে পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিনিধি থাকবে।
২. কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা:
- কেন্দ্রীয় বা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের ক্ষমতা শুধুমাত্র দুটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে: প্রতিরক্ষা (Defence) ও পররাষ্ট্র (Foreign Affairs)।
- অবশিষ্ট সকল ক্ষমতা অঙ্গরাজ্যগুলোর (প্রদেশ) হাতে থাকবে।
৩. মুদ্রা ও অর্থ বিষয়ক ক্ষমতা:
- পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য দুটি পৃথক অথচ অবাধে বিনিময়যোগ্য মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এক্ষেত্রে দুটি অঞ্চলের জন্য দুটি স্বতন্ত্র রিজার্ভ ব্যাংক থাকবে এবং মুদ্রার পরিচালনা ক্ষমতা আঞ্চলিক সরকারের হাতে থাকবে।
- অথবা, একটি মুদ্রা ব্যবস্থা চালু থাকবে, তবে সংবিধানের এমন বিধান থাকতে হবে যাতে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে মূলধন পাচার হতে না পারে।
৪. কর বা রাজস্ব বিষয়ক ক্ষমতা:
- সকল প্রকার কর (Tax), খাজনা ও শুল্ক ধার্য ও আদায়ের ক্ষমতা অঙ্গরাজ্যগুলোর হাতে থাকবে।
- প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয়সহ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে সংবিধানে নির্দেশিত হারে বা নির্ধারিত অনুপাতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রয়োজনীয় রাজস্বের যোগান দেওয়া হবে।
৫. বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা:
- ফেডারেশনভুক্ত প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের বহির্বাণিজ্যের পৃথক হিসাব রাখতে হবে।
- বহির্বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অঙ্গরাজ্যগুলোর এখতিয়ারে থাকবে এবং অঙ্গরাজ্যগুলো নিজ নিজ প্রয়োজনে তা ব্যবহার করবে।
- কেন্দ্রীয় সরকারের যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন হবে, তা সংবিধান নির্দেশিত বিধি অনুযায়ী অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে আদায় করা হবে।
- দেশের বৈদেশিক নীতির কাঠামোর মধ্যে, যার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে, বৈদেশিক বাণিজ্য ও বৈদেশিক সাহায্য সম্পর্কে চুক্তি সম্পাদনের ক্ষমতা আঞ্চলিক বা প্রাদেশিক সরকারগুলোর হাতে থাকবে।
৬. আঞ্চলিক মিলিশিয়া ও আধা-সামরিক বাহিনী গঠন:
- পূর্ব পাকিস্তানের কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অঙ্গরাজ্যগুলোকে মিলিশিয়া বা আধা-সামরিক বাহিনী গঠনের ক্ষমতা দিতে হবে।
ছয় দফা দাবি ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের শোষণমুক্তি ও স্বাধিকার অর্জনের মূল ভিত্তি। এটি পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করে।
৭৮. বঙ্গবন্ধুর ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ভাষণের সময়কালে পূর্ব পাকিস্তানে যে আন্দোলন চলছিল সেটি হলো:
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বঙ্গবন্ধুর ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ভাষণের সময়কালে পূর্ব পাকিস্তানে যে আন্দোলন চলছিল, সেটি ছিল অসহযোগ আন্দোলন।
১৯৭১ সালের ১ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করার পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই আন্দোলন শুরু হয়। ২ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন, এবং ২৫ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত এটি চলমান ছিল। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক প্রশাসন কার্যত শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে চলছিল এবং পশ্চিম পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ অকার্যকর হয়ে পড়েছিল।
৭৯. ২৬ মার্চ, ১৯৭১-এর স্বাধীনতা ঘোষণা বঙ্গবন্ধু জারী করেন-
[ বিসিএস ৩৬তম ]
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী 'অপারেশন সার্চলাইট' নামে নিরস্ত্র বাঙালির উপর গণহত্যা শুরু করলে, সেই রাতেই (২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা করেন।
এই ঘোষণাটি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছিল:
- ওয়্যারলেসের মাধ্যমে: ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে বঙ্গবন্ধু একটি ক্ষুদে বার্তা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে চট্টগ্রামে প্রেরণ করেন। সেই বার্তায় তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যার যা কিছু আছে, তা নিয়ে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
- অন্যান্য মাধ্যমে প্রচার: পরবর্তীতে এই ঘোষণাটি চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে এম. এ. হান্নান এবং পরবর্তীতে মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে পাঠ করেন, যা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীনতার ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই ঘোষণার দিনটি, অর্থাৎ ২৬ মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
৮০. বাংলাদেশে রোপা আমন ধান কাটা হয়–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশে রোপা আমন ধান হলো এক গুরুত্বপূর্ণ ধান ফসল, যা প্রধানত বর্ষাকালে (বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে) আবাদ করা হয়। বাংলাদেশের মোট ধান উৎপাদনের একটি বড় অংশ আসে রোপা আমন থেকে।
রোপা আমন ধানের বৈশিষ্ট্য:
- চারা রোপণ পদ্ধতি: রোপা আমন ধানের ক্ষেত্রে প্রথমে বীজতলায় ধানের চারা তৈরি করা হয়। এরপর সেই চারাগুলোকে নির্দিষ্ট দূরত্বে সারি করে মূল জমিতে রোপণ করা হয়। 'রোপা' নামটি এই রোপণ পদ্ধতি থেকেই এসেছে।
- চাষের সময়কাল:
- বীজ বপন (বীজতলায়): সাধারণত জৈষ্ঠ্য-আষাঢ় মাস (মে-জুন)।
- চারা রোপণ (মূল জমিতে): শ্রাবণ-ভাদ্র মাস (জুলাই-আগস্ট)।
- ধান কাটা: কার্তিক-অগ্রহায়ণ-পৌষ মাস (অক্টোবর-ডিসেম্বর), তবে অঞ্চল ও জাতভেদে এটি পরিবর্তিত হতে পারে।
- আলোক-সংবেদনশীলতা: রোপা আমনের অনেক জাতই আলোক-সংবেদনশীল, অর্থাৎ দিনের আলোর দৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের সাথে সাথে তাদের বৃদ্ধি ও ফুল ফোটার সময় প্রভাবিত হয়। তবে, বর্তমানে আলোক-অসংবেদনশীল উচ্চফলনশীল জাতও উদ্ভাবিত হয়েছে।
- উচ্চফলনশীল জাত (উফশী): বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এবং বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) বিভিন্ন উচ্চফলনশীল রোপা আমন জাত উদ্ভাবন করেছে, যেমন: ব্রি ধান৪৯, ব্রি ধান৫১ (বন্যা সহনশীল), ব্রি ধান৫২ (বন্যা সহনশীল), ব্রি ধান৫৬ (খরা সহনশীল), ব্রি ধান৭০ (সুগন্ধি), ব্রি ধান৮৭, ব্রি ধান৯০, ব্রি ধান৯৩, ব্রি ধান৯৪, ব্রি ধান৯৮ ইত্যাদি।
- জলবায়ু নির্ভরতা: এটি মূলত বৃষ্টির পানিতে চাষ হওয়া ধান। তাই আর্দ্রতা ও বর্ষার জলবায়ু রোপা আমন চাষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে রোপা আমনের গুরুত্ব:
- খাদ্য নিরাপত্তা: আমন ধান বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধান ফসল (বোরোর পর), যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় বিশাল ভূমিকা রাখে।
- অর্থনীতিতে অবদান: এটি কৃষক পরিবারের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস, যা তাদের জীবিকা নির্বাহে সহায়তা করে।
- কর্মসংস্থান: রোপা আমন ধানের আবাদ, পরিচর্যা ও কাটার সময় বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়।
রোপা আমন ধান বাংলাদেশের কৃষি ও অর্থনীতিতে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
৮১. সুন্দরবন-এর কত শতাংশ বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমার মধ্যে পড়েছে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সুন্দরবন বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট এবং পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলাজুড়ে বিস্তৃত। এ বনভূমির মোট আয়তন ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার, যার মধ্যে বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার। অর্থাৎ শতকরা হিসেবে তা ৬০% -এর একটু বেশি।
৮২. MDG-এর অন্যতম লক্ষ্য কি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
MDG-এর পূর্ণরূপ হলো Millennium Development Goals (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা)। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০০০ সালে আটটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে, যা ২০১৫ সালের মধ্যে অর্জন করার অঙ্গীকার করা হয়েছিল।
MDG-এর অন্যতম লক্ষ্যগুলো হলো:
১. চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূল করা: দৈনিক ১.২৫ ডলারের কম আয়ের মানুষের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা এবং ক্ষুধা ও অপুষ্টির শিকার মানুষের সংখ্যা কমানো। ২. সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন: ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা। ৩. লিঙ্গ সমতা উন্নীত করা এবং নারীর ক্ষমতায়ন: প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা আনয়ন এবং অকৃষি খাতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি। ৪. শিশু মৃত্যু হ্রাস করা: পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর হার দুই-তৃতীয়াংশ হ্রাস করা। ৫. মাতৃস্বাস্থ্য উন্নয়ন: মাতৃমৃত্যুর হার তিন-চতুর্থাংশ কমানো। ৬. এইচআইভি/এইডস, ম্যালেরিয়া এবং অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ: এইডস, ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য প্রধান রোগের বিস্তার রোধ এবং এর চিকিৎসায় প্রবেশাধিকার বাড়ানো। ৭. পরিবেশগত স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা: পরিবেশগত সম্পদ রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং নিরাপদ পানীয়জল ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার সহজলভ্যতা বৃদ্ধি। ৮. উন্নয়নের জন্য একটি বৈশ্বিক অংশীদারত্ব বিকাশ: উন্নয়নশীল দেশগুলোর চাহিদা পূরণে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা বৃদ্ধি, বাণিজ্য ও ঋণের ক্ষেত্রে ন্যায়পরায়ণতা নিশ্চিত করা এবং নতুন প্রযুক্তির সহজলভ্যতা বাড়ানো।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা হলো এমন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যা কোনো দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ করার লক্ষ্যে গঠিত হয়। এই সরকার নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে নতুন সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত সীমিত সময়ের জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিচালনা করে। এর প্রধান কাজ থাকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা।
বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ইতিহাস:
- প্রবর্তন: বাংলাদেশে ১৯৯০-এর দশকে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনের মুখে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার ষষ্ঠ জাতীয় সংসদে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এই ব্যবস্থাকে সাংবিধানিক বৈধতা দেয়। এর মাধ্যমে প্রতি সংসদ নির্বাচনের আগে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিধান যুক্ত করা হয়।
- উদ্দেশ্য: এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবমুক্ত একটি পরিবেশ তৈরি করা, যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে এবং একটি বিতর্কহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
- পরিচালনা: এই সরকার সাধারণত একজন প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত হতো, যিনি সাধারণত সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হতেন। তাঁর অধীনে অনির্বাচিত কয়েকজন উপদেষ্টা মিলে মন্ত্রিসভার কাজ পরিচালনা করতেন। এই সরকারের ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের মতো ব্যাপক ছিল না; এটি কেবল রুটিন কাজ এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখভাল করত।
- যেসব নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছিল: ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল:
- বাতিলের কারণ: ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) অবৈধ ঘোষণা করা হয়। আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী হিসেবে উল্লেখ করে। যদিও আদালত জনস্বার্থে পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিল, সরকার তা গ্রহণ করেনি।
- পঞ্চদশ সংশোধনী: এই রায়ের পর ২০১১ সালের ৩০ জুন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। এই সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধানে নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচনের বিধান ফিরে আসে।
- বিতর্ক: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ ও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বিরোধী দলগুলো নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে, অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল এটিকে অসাংবিধানিক বলে প্রত্যাখ্যান করছে।
৮৪. বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ কয় কক্ষবিশিষ্ট?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ (Jatiya Sangsad) হলো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনসভা। এটি একটি এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা।
গঠন ও সদস্য সংখ্যা:
- মোট আসন সংখ্যা: জাতীয় সংসদের মোট সদস্য সংখ্যা ৩৫০ জন।
- প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সদস্য: এর মধ্যে ৩০০ জন সংসদ সদস্য জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে এঁরা নির্বাচিত হন।
- সংরক্ষিত নারী আসন: অবশিষ্ট ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। এই ৫০ জন নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত ৩০০ সংসদ সদস্যের ভোটে (পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিতে) নির্বাচিত হন। এই সংরক্ষিত আসনগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে বণ্টিত হয়।
- মেয়াদকাল: সংসদের মেয়াদকাল পাঁচ বছর।
কার্যকারিতা ও ক্ষমতা:
জাতীয় সংসদ দেশের আইন প্রণয়নের প্রধান কেন্দ্র। এর প্রধান কাজগুলো নিম্নরূপ:
- আইন প্রণয়ন: দেশের জন্য নতুন আইন তৈরি করা, বিদ্যমান আইন সংশোধন বা বাতিল করা।
- সরকার গঠন ও নিয়ন্ত্রণ: সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বা জোটের নেতাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ এবং তাঁর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা গঠন করা। সংসদ সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে।
- বাজেট অনুমোদন: দেশের বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন করা।
- জাতীয় নীতি নির্ধারণ: জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখা।
- সংবিধান সংশোধন: সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা।
- বিতর্ক ও আলোচনা: জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা ও বিতর্ক করা।
- বিচার বিভাগীয় ক্ষমতা: কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বিচার বিভাগীয় ক্ষমতা প্রয়োগ (যেমন: রাষ্ট্রপতির অভিশংসন)।
জাতীয় সংসদ ভবন:
- অবস্থান: জাতীয় সংসদ ভবন রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলা নগর এলাকায় অবস্থিত।
- স্থপতি: এটি প্রখ্যাত মার্কিন স্থপতি লুই আই কান কর্তৃক নকশাকৃত এবং বিশ্বের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন আইনসভা ভবন হিসেবে বিবেচিত।
- নির্মাণ: এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৬১ সালে এবং সম্পন্ন হয় ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি। একই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদের অষ্টম (এবং শেষ) অধিবেশনে এটি প্রথম ব্যবহৃত হয়।
- আয়তন: সংসদ ভবন এলাকা প্রায় ২১৫ একর জুড়ে বিস্তৃত। এখানে মূল ভবনের পাশাপাশি রয়েছে উন্মুক্ত সবুজ পরিসর, মনোরম জলাধার এবং সংসদ সদস্যদের কার্যালয়।
জাতীয় সংসদ বাংলাদেশের গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর মূল স্তম্ভ।
২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমান্ত চুক্তি কার্যকরের মাধ্যমে ভারতের ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। একই সাথে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারতের ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত হয়।
৮৬. বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায়, ভারত ও মিয়ানমারের মাঝখানে এবং বঙ্গোপসাগরের উত্তর উপকূলে অবস্থিত। এটি একটি নিম্নভূমির দেশ যা মূলত বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত, যেখানে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর বিশাল অববাহিকা অবস্থিত।
ভৌগোলিক স্থানাঙ্ক:
- অক্ষাংশ: ২০°৩৪′ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৬°৩৮′ উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত।
- দ্রাঘিমাংশ: ৮৮°০১′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৯২°৪১′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত।
- কর্কটক্রান্তি রেখা: বাংলাদেশের প্রায় মধ্যভাগ দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা (২৩°৫০′ উত্তর অক্ষাংশ) অতিক্রম করেছে।
- মান সময়: গ্রিনিচ মান সময় থেকে ৬ ঘণ্টা এগিয়ে (GMT +6)।
আয়তন:
- বাংলাদেশের মোট আয়তন প্রায় ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার (মতান্তরে ১,৪৮,৪৬০ বর্গ কিলোমিটার)।
৮৭. বাংলাদেশে প্রথম আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয় কবে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশে প্রথম আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ধানমন্ডিস্থ বাসভবনে একজন গণনাকারীকে সাক্ষাৎকার প্রদানের মাধ্যমে এই আদমশুমারির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন।
এরপর থেকে সাধারণত প্রতি দশ বছর অন্তর আদমশুমারি (বর্তমানে 'জনশুমারি' নামে পরিচিত) পরিচালিত হয়ে আসছে।
৮৮. কোন উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ধর্ম ইসলাম?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশে বেশ কিছু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই বিভিন্ন প্রচলিত ধর্ম (যেমন: বৌদ্ধধর্ম, খ্রিস্টধর্ম, হিন্দুধর্ম, প্রকৃতি পূজা) পালন করে। তবে, একটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে যারা ঐতিহ্যগতভাবে ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করে।
এই জনগোষ্ঠীটি হলো পাঙন (Pangal), যাদেরকে মুসলিম মণিপুরি নামেও অভিহিত করা হয়।
- অবস্থান: পাঙনরা প্রধানত মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা এবং সিলেট জেলার কিছু অঞ্চলে বসবাস করে।
- পরিচয়: তারা জাতিগতভাবে মণিপুরি হলেও ধর্মীয়ভাবে মুসলমান। তাদের রীতিনীতি ও সংস্কৃতি মূলধারার বাঙালিদের থেকে কিছুটা ভিন্ন, তবে তাদের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মণিপুরিদের সাথে বেশি সাদৃশ্যপূর্ণ।
- ধর্ম: তাদের মূল ধর্ম হলো ইসলাম এবং তারা মুসলিম শরীয়তের বিধান অনুযায়ী জীবনযাপন করে।
সুতরাং, বাংলাদেশে পাঙন উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ধর্ম ইসলাম।
৮৯. ঢাকার ‘ধোলাই খাল’ কে খনন করেন?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ঢাকার ধোলাই খাল খনন করেন মুঘল সুবেদার ইসলাম খান চিশতী।
সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে ১৬১০ খ্রিস্টাব্দে ইসলাম খান চিশতী বাংলার রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। তখন তিনি ঢাকার কৌশলগত সুরক্ষা এবং অভ্যন্তরীণ নৌ যোগাযোগের সুবিধার জন্য এই খালটি খনন করান। এই খালটি বালু নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে ঢাকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বুড়িগঙ্গা নদীর সাথে মিলিত হয়েছিল। এটি একসময় ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ এবং নগর রক্ষা পরিখা হিসেবে কাজ করত।
বর্তমানে ধোলাই খালের অধিকাংশ অংশই ভরাট হয়ে গেছে এবং এটি পুরান ঢাকার একটি পরিচিত এলাকার নাম হিসেবে টিকে আছে, যেখানে মূলত গাড়ির যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য জিনিসপত্রের ব্যবসা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে বুদ্ধিজীবীদের ওপর ব্যাপক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
যদিও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ 'অপারেশন সার্চলাইট' শুরু হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বুদ্ধিজীবী নিধন শুরু করে, তবে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক আগে, বিশেষ করে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এই হত্যাযজ্ঞ ব্যাপক আকার ধারণ করে। পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর আল-বদর, আল-শামস ও রাজাকার বাহিনী দেশের বুদ্ধিজীবীদের একটি তালিকা তৈরি করে এবং তাদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে, যাতে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা লাভের পর মেধাশূন্য হয়ে পড়ে।
এই দিনটিকে বাংলাদেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
৯১. বাংলাদেশেকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম ইউরোপীয় দেশ কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম ইউরোপীয় দেশ হলো পূর্ব জার্মানি (East Germany)।
পূর্ব জার্মানি ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
৯২. বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা কতটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
১৯৪৭ সালের পূর্ব পর্যন্ত বর্তমান বাংলাদেশ ভূখণ্ডে জেলার সংখ্যা ছিল ১৬ টি। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় নদীয়া জেলা থেকে প্রাপ্ত অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ১৭তম জেলা ‘কুষ্টিয়া’ গঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালের ১ জানুয়ারি বৃহত্তর বরিশাল জেলা থেকে ‘ পটুয়াখালী’ (১৮তম) এবং একই সালের ১ ডিসেম্বর বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা থেকে ‘টাঙ্গাইল’ (১৯তম) জেলা আত্মপ্রকাশ করে। এরপর ২৬ ডিসেম্বর ১৯৭৮ বৃহত্তম ময়মনসিংহ জেলা থেকে ২০তম জেলা হিসেবে গঠিত হয় জামালপুর। তারপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তারিখ ও প্রজ্ঞাপন মূলে দেশে জেলার সংখ্যা হয় ৬৪টি।
৯৩. ‘শুভলং’ ঝরনা কোন জেলায় অবস্থিত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
শুভলং ঝরনা রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত।
এটি রাঙামাটি সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে কাপ্তাই হ্রদের পাশে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ। বর্ষাকালে এর রূপ আরও মনোমুগ্ধকর হয়।
৯৪. বাংলাদেশের উষ্ণতম স্থানের নাম কি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশের উষ্ণতম স্থান নিয়ে বিভিন্ন সময়ে রেকর্ডকৃত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এবং চলমান তাপপ্রবাহের ভিত্তিতে কিছু স্থানকে উষ্ণতম হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
ঐতিহাসিকভাবে, বাংলাদেশের উষ্ণতম স্থান হিসেবে নাটোরের লালপুর-কে উল্লেখ করা হয়, যেখানে দেশের সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাতও রেকর্ড করা হয়।
তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এপ্রিল-মে মাসে তীব্র তাপপ্রবাহের সময় চুয়াডাঙ্গা, যশোর, রাজশাহী এবং পাবনার ঈশ্বরদী অঞ্চলে তাপমাত্রা প্রায়শই ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায় এবং অনেক সময় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এই স্থানগুলোতে রেকর্ড করা হয়।
অতএব, যদিও ঐতিহাসিকভাবে নাটোরের লালপুর উষ্ণতম স্থান হিসেবে পরিচিত, সাম্প্রতিক সময়ে চুয়াডাঙ্গা এবং যশোর-ও দেশের অন্যতম উষ্ণতম অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে প্রায়শই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
৯৫. বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা কবে গৃহীত হয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি সরকারিভাবে গৃহীত হয়।
তবে, এর একটি ইতিহাস আছে:
- ১৯৭১ সালের ২ মার্চ: প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে। তখন পতাকার নকশায় লাল বৃত্তের মাঝখানে সোনালি রঙের বাংলাদেশের মানচিত্র ছিল। এটি নকশা করেছিলেন ছাত্রনেতা শিবনারায়ণ দাস।
- ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি: স্বাধীনতার পর, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে পটুয়া কামরুল হাসান পতাকার ডিজাইন থেকে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে বর্তমান নকশাটি চূড়ান্ত করেন। এই দিনই এটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হিসেবে গৃহীত হয়।
জাতীয় পতাকার বর্তমান রূপে সবুজ রং বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যের প্রতীক, আর লাল বৃত্তটি উদীয়মান সূর্য এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের রক্তের প্রতীক।
৯৬. কোনো রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীতের কত চরণ বাজানো হয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
- জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষণা ও গ্রহণ: বঙ্গভঙ্গের প্রেক্ষাপটে রচিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা’ কবিতার প্রথম ১০ চরণকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং এটি ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি গৃহীত হয়।
- পরিবেশনের বিধান:
- কণ্ঠে গাওয়ার ক্ষেত্রে: সাধারণত প্রথম ১০ চরণ গাওয়া হয়।
- যন্ত্র সংগীতে বাজানোর ক্ষেত্রে: প্রথম ৪ চরণ পর্যন্ত বাজানো হয়।
এই তথ্যগুলো বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের ইতিহাস ও পরিবেশন প্রটোকল বোঝার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৯৭. ECNEC-এর চেয়ারম্যান বা সভাপতি কে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ECNEC-এর পূর্ণরূপ হলো Executive Committee of the National Economic Council বা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি।
এই কমিটির চেয়ারম্যান বা সভাপতি হলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী বিকল্প সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ECNEC দেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের অনুমোদন, পর্যালোচনা ও বাস্তবায়ন তত্ত্বাবধান করে।
৯৮. ‘অগ্নিশ্বর’ কি ফসলের উন্নত জাত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
‘অগ্নিশ্বর’ হলো কলার একটি উন্নত জাত।
এটি বাংলাদেশে চাষকৃত কলার বিভিন্ন উন্নত জাতগুলোর মধ্যে অন্যতম। অন্যান্য পরিচিত জাতগুলো হলো অমৃতসাগর, সবরী, চাঁপা, কবরী, মেহেরসাগর, সিঙ্গাপুরী ইত্যাদি।
৯৯. বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ সরকারের বড় অর্জন কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রশ্নে উল্লেখিত অপশনের সবগুলোই বর্তমান সরকারের সাফল্য। তবে স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪০ বছর পর দেশি -বিদেশি চাপের মুখে থেকেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করা এবং সফলভাবে শেষের পথে থাকা বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ সরকারের বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত।
১০০. কোন সংকটকে কেন্দ্র করে ১৯৫০ সালে ‘শান্তির জন্য ঐক্য প্রস্তাব’ জাতিসংঘের মাধ্যমে পেশ করা হয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
১৯৫০ সালে কোরীয় যুদ্ধ-কে কেন্দ্র করে ‘শান্তির জন্য ঐক্য প্রস্তাব’ (Uniting for Peace Resolution) জাতিসংঘের মাধ্যমে পেশ করা হয়।
প্রেক্ষাপট:
১৯৫০ সালের জুন মাসে উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ করলে কোরীয় যুদ্ধ শুরু হয়। এই সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পদক্ষেপ নিতে গেলে সোভিয়েত ইউনিয়ন (তৎকালীন ইউএসএসআর) তার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে বাধা দেয়। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মতৈক্যের অভাবে যখন শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে নিরাপত্তা পরিষদ ব্যর্থ হয়, তখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এই অচলাবস্থা কাটানোর জন্য একটি নতুন পথ খোঁজে।
এর ফলস্বরূপ, ১৯৫০ সালের ৩ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ "শান্তির জন্য ঐক্য প্রস্তাব" (Resolution 377 A (V)) গ্রহণ করে। এই প্রস্তাবের মূল কথা ছিল, যদি নিরাপত্তা পরিষদ তার স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে ঐক্যের অভাবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়, তবে সাধারণ পরিষদ বিষয়টি বিবেচনা করবে এবং প্রয়োজনে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সম্মিলিত পদক্ষেপ (সামরিক শক্তি ব্যবহারসহ) গ্রহণের সুপারিশ করতে পারবে। এই প্রস্তাবের উদ্দেশ্য ছিল নিরাপত্তা পরিষদের ভেটোর কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটিয়ে বিশ্বশান্তি রক্ষায় জাতিসংঘের কার্যকারিতা নিশ্চিত করা।
১০১. সুয়েজ খাল কোন বছর চালু হয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সুয়েজ খাল (Suez Canal) হলো মিশরের সিনাই উপদ্বীপের পশ্চিমে অবস্থিত একটি কৃত্রিম সামুদ্রিক খাল। এটি ভূমধ্যসাগরকে লোহিত সাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে। এই খালটি আফ্রিকা মহাদেশকে পরিভ্রমণ না করেই ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচলের পথ তৈরি করেছে, যা বিশ্ব বাণিজ্যে এর গুরুত্ব অপরিসীম।
ভৌগোলিক অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য:
- অবস্থান: মিশর। এটি সিনাই উপদ্বীপ থেকে মিশরের মূল ভূখণ্ডকে পৃথক করেছে।
- সংযোগ: ভূমধ্যসাগরের পোর্ট সাইদকে লোহিত সাগরের সুয়েজ উপসাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে।
- দৈর্ঘ্য: বর্তমানে প্রায় ১৯৩.৩০ কিলোমিটার (১২০ মাইল)।
- প্রশস্ততা ও গভীরতা: আধুনিক ও বড় জাহাজ চলাচলের সুবিধার্থে এটি নিয়মিত গভীর ও প্রশস্ত করা হয়েছে। ২০১৫ সালে এর সমান্তরালে একটি 'দ্বিতীয় লেন' খনন করা হয়, যা জাহাজগুলোর অপেক্ষার সময় কমিয়ে এনেছে।
ইতিহাস:
- খনন কাজ শুরু: ১৮৫৯ সালের ২৫ এপ্রিল ফরাসি কূটনীতিক ফার্দিনান্দ দে লেসেপসের উদ্যোগে সুয়েজ খাল খনন কাজ শুরু হয়।
- উদ্বোধন: দশ বছর ধরে খননের পর ১৮৬৯ সালের ১৭ নভেম্বর এটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
- জাতীয়করণ: ১৯৫৬ সালে মিশরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গামাল আবদেল নাসের সুয়েজ খালকে জাতীয়করণ করেন, যা সুয়েজ সংকট নামে পরিচিত একটি আন্তর্জাতিক বিতর্কের জন্ম দেয়।
অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব:
- বৈশ্বিক বাণিজ্যের ধমনী: সুয়েজ খালকে প্রায়শই বিশ্ব অর্থনীতির ধমনী হিসেবে অভিহিত করা হয়, কারণ বিশ্ব বাণিজ্যের একটি বিশাল অংশ (প্রায় ১২-১৫%) এই খাল দিয়ে পরিচালিত হয়। বিশেষ করে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য পরিবহনে এটি অপরিহার্য।
- দূরত্ব ও সময় সাশ্রয়: এই খালের কারণে জাহাজগুলোকে আফ্রিকার কেপ অফ গুড হোপ (উত্তমাশা অন্তরীপ) ঘুরে যেতে হয় না, ফলে ভ্রমণের সময় ও দূরত্ব অনেক কমে যায়, যা জ্বালানি ও খরচ সাশ্রয় করে।
- মিশরের অর্থনীতি: সুয়েজ খাল মিশরের জন্য রাজস্ব আয়ের একটি প্রধান উৎস। প্রতি বছর এই খাল থেকে মিশর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করে।
সামুদ্রিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুয়েজ খাল একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এর গুরুত্ব বিশ্ব অর্থনীতি ও ভূ-রাজনীতিতে অপরিসীম।
১০২. নিম্নলিখিত কোনটি International Mother Earth day?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'International Mother Earth Day'-এর বাংলা হলো আন্তর্জাতিক ধরিত্রী দিবস বা বিশ্ব বসুন্ধরা দিবস।
প্রতি বছর ২২ এপ্রিল এই দিবসটি পালন করা হয়। পরিবেশ রক্ষা এবং পৃথিবীকে সুস্থ ও বাসযোগ্য রাখার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই দিনটি বিশ্বজুড়ে পালিত হয়।
১০৩. প্রেসিডেন্ট উইড্র উইলসনের 14 points এ কত নম্বর point এ জাতিপুঞ্জের সৃষ্টির কথা উল্লেখ করা হয়েছে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসনের ১৪ দফা (Fourteen Points) ঘোষণার ১৪ নম্বর দফায় জাতিপুঞ্জ (League of Nations) সৃষ্টির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
১৯১৮ সালের ৮ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া এক ভাষণে উইলসনের এই ১৪ দফা বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার একটি নীলনকশা হিসেবে উপস্থাপিত হয়। এই ১৪ নম্বর দফায় বলা হয়েছিল, "A general association of nations must be formed under specific covenants for the purpose of affording mutual guarantees of political independence and territorial integrity to great and small states alike." অর্থাৎ, ছোট-বড় সকল রাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার পারস্পরিক নিশ্চয়তা প্রদানের লক্ষ্যে একটি সাধারণ জাতিসংঘ গঠন করতে হবে।
এই ১৪ নম্বর দফাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তরকালে জাতিপুঞ্জ (League of Nations) গঠনের মূল ভিত্তি ছিল।
১০৪. ১৭৮৩ সালে ভার্সাইতে কয়টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
১৭৮৩ সালে ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে চারটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেগুলো ছিল ঐ সময়কার বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
চারটি চুক্তি হলো:
- গ্রেট ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র – এটি মূলত Treaty of Paris (1783) নামে পরিচিত, যা আমেরিকার স্বাধীনতা নিশ্চিত করে।
- গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্স – ফ্রান্সের অংশগ্রহণের পরিণতি নির্ধারণ করে।
- গ্রেট ব্রিটেন ও স্পেন – স্পেনের সঙ্গে যুদ্ধের অবসান ঘটায়।
- গ্রেট ব্রিটেন ও ডাচ প্রজাতন্ত্র – অর্থনৈতিক ও ঔপনিবেশিক বিরোধ নিষ্পত্তি হয়।
উপসংহার: ভার্সাইতে ১৭৮৩ সালে মোট চারটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেগুলোর একটি হলো যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা স্বীকৃতির চুক্তি।
এই চারটি চুক্তি সম্মিলিতভাবে "Treaties of Versailles (1783)" নামে পরিচিত, এবং এর অন্তর্গত "Treaty of Paris" সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ইতিহাসে বিবেচিত হয়।
১০৫. লাওসের (Laos) সরকারি নাম কি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
লাওসের সরকারি নাম হলো লাও গণপ্রজাতন্ত্রী গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র।
লাও ভাষায় এর উচ্চারণ: সাত্থালানালত পাছাত্থিপাতাই পাছাখন লাও (Sathalanalat Paxathipatai Paxaxôn Lao)।
ইংরেজিতে এটিকে Lao People's Democratic Republic (LPDR) বলা হয়।
১০৬. নিচের কোন রাষ্ট্র সর্বাধিক রাষ্ট্রের সাথে সীমান্তযুক্ত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
চীন পৃথিবীর এমন একটি রাষ্ট্র যার সর্বাধিক সংখ্যক রাষ্ট্রের সাথে স্থল সীমান্ত রয়েছে। চীন মোট ১৪টি রাষ্ট্রের সাথে সীমান্ত ভাগ করে।
চীনের সীমান্তবর্তী দেশগুলো:
- ভারত
- পাকিস্তান
- আফগানিস্তান
- তাজিকিস্তান
- কিরগিজস্তান
- কাজাখস্তান
- মঙ্গোলিয়া
- রাশিয়া
- উত্তর কোরিয়া
- ভিয়েতনাম
- লাওস
- মিয়ানমার
- নেপাল
- ভুটান
অতএব, চীনই সেই দেশ যেটি সর্বাধিক (১৪টি) রাষ্ট্রের সাথে স্থলসীমান্ত ভাগ করে।
১০৭. জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (UNDP)-এর শীর্ষ পদটি কি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (UNDP)-এর শীর্ষ পদটি হলো Administrator (অ্যাডমিনিস্ট্রেটর)।
তিনিই ইউ.এন.ডি.পি-এর প্রধান কার্যনির্বাহী। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (UNDP)-এর শীর্ষ পদটি হলো প্রশাসক (Administrator)।
১০৮. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় Green Climate Fund বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর জন্য কি পরিমাণ অর্থ মঞ্জুর করেছে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
৭-১৮ ডিসেম্বর ২০০৯ ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় COP-15 সম্মেলন। এ সম্মেলনেই প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২° সেলসিয়াসে সীমিত রাখার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। আর উক্ত সম্মেলনে Green Climate Fund বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোকে ১০০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
১০৯. যুক্তরাষ্ট্র কবে এককভাবে ABM (Anti-Ballistic Missile) চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
যুক্তরাষ্ট্র ১৩ জুন, ২০০২ তারিখে এককভাবে অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক মিসাইল (ABM) চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়।
১৯৭২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সীমিত করা। তবে, জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন ২০০১ সালের ডিসেম্বরে এই চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের অভিপ্রায় ঘোষণা করে এবং ছয় মাস পর তা কার্যকর হয়।
১১০. আরব লীগ প্রতিষ্ঠা পায়–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
আরব লীগ (League of Arab States) প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৫ সালের ২২ মার্চ।
এটি মিশরের কায়রোতে ছয়টি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত হয়েছিল। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রাষ্ট্রগুলো ছিল: মিশর, ইরাক, লেবানন, সৌদি আরব, সিরিয়া এবং ট্রান্সজর্ডান (যা পরে জর্ডান হয়)। এরপর ৫ মে ১৯৪৫ সালে ইয়েমেন আরব লীগে যোগদান করে।
এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পারস্পরিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধান এবং নিজেদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। আরব লীগের সদর দপ্তর মিশরের কায়রোতে অবস্থিত।
১১১. Yalta Conference-এর একটি লক্ষ্য ছিল:
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ইয়াল্টা সম্মেলন (Yalta Conference) ১৯৪৫ সালের ৪ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের ইয়াল্টায় (ক্রিমিয়া) অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে মিত্রশক্তির তিন প্রধান নেতা—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এবং সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্তালিন—এই সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলেন।
ইয়াল্টা সম্মেলনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল:
- যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউরোপের পুনর্গঠন এবং যুদ্ধের পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থা নির্ধারণ করা।
- জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা এবং এর কাঠামো নিয়ে আলোচনা করা। বিশেষ করে, জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ এবং ভেটো ক্ষমতা নিয়ে এখানে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
- জার্মানির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ: জার্মানিকে কীভাবে বিভক্ত ও দখল করা হবে, নিরস্ত্রীকরণ ও নাৎসিবাদের অবসান ঘটানো এবং জার্মানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
- পোল্যান্ডের ভবিষ্যৎ: পোল্যান্ডের সীমান্ত এবং সেখানে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।
- সোভিয়েত ইউনিয়নের জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগদান: স্তালিন জার্মানির আত্মসমর্পণের পর জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
সুতরাং, সংক্ষেপে বলতে গেলে, ইয়াল্টা সম্মেলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ছিল জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা এবং যুদ্ধোত্তর ইউরোপের পুনর্গঠন ও শান্তি প্রক্রিয়া নির্ধারণ।
১১২. বর্তমানে NAM-এর সদস্য সংখ্যা–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বর্তমানে NAM (Non-Aligned Movement) বা জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন-এর সদস্য দেশের সংখ্যা হচ্ছে ১২০টি দেশ
এছাড়াও:
- ১৭টি পর্যবেক্ষক দেশ
- ১০টি পর্যবেক্ষক সংস্থা
NAM বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর একটি, যা মূলত ঠাণ্ডা যুদ্ধকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয় উন্নয়নশীল দেশগুলোর নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার লক্ষ্যে।
১১৩. ‘War and Peace’ উপন্যাসের রচয়িতা–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
‘War and Peace’ উপন্যাসের রচয়িতা হলেন লিও তলস্তয় (Leo Tolstoy)
এই রুশ সাহিত্যিকের এই উপন্যাসটি ১৯শ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি মূলত নেপোলিয়নের রাশিয়া আক্রমণের প্রেক্ষাপটে রচিত একটি মহাকাব্যিক উপন্যাস।
১১৪. আন্তর্জাতিক রেড ক্রস-এর সদর দপ্তর:
[ বিসিএস ৩৬তম ]
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস হলো একটি বিশ্বব্যাপী মানবতাবাদী আন্দোলন, যা যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অন্যান্য জরুরি পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষা এবং তাদের মানবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখতে কাজ করে। এটি কয়েকটি স্বতন্ত্র সংগঠন নিয়ে গঠিত, তবে তারা একই মৌলিক নীতি ও উদ্দেশ্য দ্বারা পরিচালিত হয়।
প্রতিষ্ঠা ও প্রতিষ্ঠাতা:
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস আন্দোলনের মূল ধারণা আসে ১৮৫৯ সালে সলফেরিনোর যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে। সুইস ব্যবসায়ী ও মানবতাবাদী অঁরি দ্যুনঁ (Henry Dunant) যুদ্ধাহত সৈন্যদের দুর্দশা দেখে গভীরভাবে প্রভাবিত হন এবং তাদের সাহায্য করার জন্য একটি নিরপেক্ষ সংস্থা গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।
- প্রতিষ্ঠা: ১৮৬৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি জেনেভায় "আন্তর্জাতিক কমিটি ফর রিলিফ টু দ্য ওয়ান্ডেড" (International Committee for Relief to the Wounded) নামে একটি কমিটি গঠিত হয়, যা পরবর্তীতে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস (ICRC) হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
- প্রতিষ্ঠাতা: অঁরি দ্যুনঁ এবং গ্যুস্তাভ মোয়ানিয়ে সহ আরও চারজন মিলে এই কমিটি গঠন করেন।
সদর দপ্তর ও মূলনীতি:
- সদর দপ্তর: আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (ICRC) সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত।
- মূলনীতি: রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলন সাতটি মৌলিক নীতি দ্বারা পরিচালিত হয়: ১. মানবতা (Humanity): মানুষের দুঃখ-দুর্দশা প্রতিরোধ ও উপশম করা। ২. পক্ষপাতহীনতা (Impartiality): জাতি, ধর্ম, বর্ণ বা রাজনৈতিক মতবাদ নির্বিশেষে কেবল প্রয়োজনের ভিত্তিতে সাহায্য করা। ৩. নিরপেক্ষতা (Neutrality): সকলের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক, জাতিগত, ধর্মীয় বা আদর্শগত বিতর্কে জড়িয়ে না পড়া। ৪. স্বাধীনতা (Independence): যদিও এটি সরকারের সহায়ক হিসেবে কাজ করে, তবে এর কার্যক্রমের মৌলিক লক্ষ্য বজায় রাখার জন্য স্বাধীন থাকা। ৫. স্বেচ্ছাসেবা (Voluntary Service): কোনো প্রকার ব্যক্তিগত বা দলগত লাভের আশা ছাড়া স্বেচ্ছায় কাজ করা। ৬. একতা (Unity): প্রতিটি দেশে কেবল একটিই রেড ক্রস বা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি থাকবে। ৭. সর্বজনীনতা (Universality): বিশ্বব্যাপী একটি সর্বজনীন আন্দোলন হিসেবে সমমর্যাদা ও দায়িত্ব পালন করা।
প্রধান কাজ:
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলনের মূল কাজগুলো হলো:
- যুদ্ধ ও সশস্ত্র সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষা ও সহায়তা প্রদান।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী এবং অন্যান্য জরুরি পরিস্থিতিতে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করা।
- প্রাথমিক চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসেবা ও রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা।
- নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান ও পরিবারের পুনর্মিলনে সহায়তা করা।
- আন্তর্জাতিক মানবিক আইন (International Humanitarian Law - IHL) প্রচার ও প্রয়োগে সহায়তা করা।
- দুর্যোগ প্রস্তুতি ও ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রমে সহায়তা করা।
অঁরি দ্যুনঁ-এর জন্মদিন, ৮ মে, বিশ্বজুড়ে বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস হিসেবে পালিত হয়।
১১৫. IAEA-এর সদর দপ্তর হচ্ছে:
[ বিসিএস ৩৬তম ]
IAEA-এর পূর্ণরূপ হলো International Atomic Energy Agency বা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা। এটি জাতিসংঘের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত আন্তর্জাতিক সংস্থা, যা পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারকে উৎসাহিত করে এবং সামরিক উদ্দেশ্যে এর ব্যবহার (বিশেষ করে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার) প্রতিরোধে কাজ করে।
প্রতিষ্ঠার পটভূমি:
১৯৫৩ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে "এটমস ফর পিস" (Atoms for Peace) প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল পারমাণবিক প্রযুক্তির ধ্বংসাত্মক দিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এর শান্তিপূর্ণ ব্যবহারকে উৎসাহিত করা। এই ধারণার ভিত্তিতেই ১৯৫৭ সালের ২৯ জুলাই IAEA প্রতিষ্ঠিত হয়।
সদর দপ্তর:
IAEA-এর সদর দপ্তর অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় অবস্থিত।
মূল কাজ ও উদ্দেশ্য:
IAEA-এর প্রধান কাজগুলো তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, যেগুলোকে প্রায়শই "থ্রি পিলারস" বলা হয়:
১. নিরাপত্তা ও যাচাই (Safeguards and Verification):
- এটি IAEA-এর সবচেয়ে পরিচিত কাজ। সংস্থাটি পারমাণবিক প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম যাতে সামরিক উদ্দেশ্যে, বিশেষ করে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পারমাণবিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও যাচাই করে (যেমন: পরিদর্শন, তথ্য বিশ্লেষণ)।
- পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (Non-Proliferation Treaty - NPT) বাস্তবায়নে IAEA একটি মূল ভূমিকা পালন করে।
২. নিরাপত্তা ও সুরক্ষা (Safety and Security):
- পারমাণবিক স্থাপনা এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করা।
- পারমাণবিক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানো এবং এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা উন্নত করা।
- পারমাণবিক নিরাপত্তা মানদণ্ড তৈরি ও প্রয়োগে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তা করা।
৩. পারমাণবিক প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ প্রয়োগ (Peaceful Applications of Nuclear Technology):
- সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে, স্বাস্থ্য, কৃষি, পানি ব্যবস্থাপনা, শিল্প এবং জ্বালানি উৎপাদন (যেমন: পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র) সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারমাণবিক প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার ও উন্নয়নে সহায়তা করা।
- পারমাণবিক প্রযুক্তি ও জ্ঞান বিনিময়ের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করা।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- সদস্য সংখ্যা: বর্তমানে IAEA-এর সদস্য সংখ্যা ১৭৮টি (এপ্রিল, ২০২৪ পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী)।
- নোবেল শান্তি পুরস্কার: ২০০৫ সালে IAEA এবং এর তৎকালীন মহাপরিচালক মোহাম্মদ এলবারাদেই (Mohamed ElBaradei) যৌথভাবে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধে তাদের প্রচেষ্টার জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।
সংক্ষেপে, IAEA বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক শক্তির নিরাপদ, সুরক্ষিত ও শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে, যাতে মানবজাতির কল্যাণে এর সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায় এবং এর ধ্বংসাত্মক অপব্যবহার রোধ করা যায়।
১১৬. সার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়:
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সার্ক (SAARC - South Asian Association for Regional Cooperation) প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালের ৮ ডিসেম্বর।
বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এটি গঠিত হয়েছিল। এর সদর দপ্তর নেপালের কাঠমান্ডুতে অবস্থিত। প্রাথমিকভাবে ৭টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও, ২০০৭ সালে আফগানিস্তান এর অষ্টম সদস্য হয়।
১১৭. জাতিসংঘ কোন বছর প্রতিষ্ঠিত হয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
জাতিসংঘ ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়।
এটি ৫১টি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল, যখন জাতিসংঘ সনদ কার্যকর হয়।
১১৮. আলেপ্পো শহরটি কোথায় অবস্থিত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
আলেপ্পো (Aleppo) সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক শহর। এটি সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং আলেপ্পো প্রদেশের রাজধানী।
ভৌগোলিক অবস্থান ও গুরুত্ব:
আলেপ্পো রাজধানী দামেস্ক থেকে প্রায় ৩১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি তুরস্কের সীমান্তবর্তী চেকপয়েন্ট বাব আল হাওয়ার ৪৫ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এর ভৌগোলিক অবস্থান এটিকে প্রাচীনকাল থেকেই এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের বাণিজ্যিক পথের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র করে তুলেছিল। ভূমধ্যসাগর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার।
ইতিহাস ও সংস্কৃতি:
আলেপ্পো বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এবং অবিচ্ছিন্নভাবে বসবাসকারী শহরগুলির মধ্যে একটি। খননকাজের মাধ্যমে জানা যায়, খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দ থেকে এখানে মানুষের বসতি ছিল। প্রাচীনকালে এটি বাণিজ্যিক ও সামরিক উভয় ক্ষেত্রেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। উসমানীয় সাম্রাজ্যের সময় ইস্তাম্বুল ও কায়রোর পর এটি ছিল সাম্রাজ্যের তৃতীয় বৃহত্তম শহর।
আলেপ্পোর পুরাতন শহর ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা লাভ করেছে। এখানে বিভিন্ন মধ্যযুগীয় স্থাপত্য, মসজিদ, হাম্মামখানা (গোসলখানা) এবং বাজার (সুক) ছিল, যা এর সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতির সাক্ষী।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি:
২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আলেপ্পো শহরটি ভয়াবহ সংঘাতের শিকার হয়। এটি সরকার ও বিদ্রোহী বাহিনীর মধ্যে একটি প্রধান যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। যুদ্ধের কারণে শহরের প্রাচীন স্থাপত্য এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়, এবং বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। ২০১৬ সালে সরকারি বাহিনী রাশিয়ার সহায়তায় আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে (২০২৪ সালের শেষ দিকে) আবার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো আলেপ্পো শহরে প্রবেশ করে এর কিছু অংশ দখল করে নিয়েছে, যা নতুন করে সংঘাতের জন্ম দিয়েছে।
আলেপ্পো একসময় সিরিয়ার অর্থনীতির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র এবং একটি সমৃদ্ধ বাণিজ্যিক শহর ছিল। যুদ্ধ যদিও এর অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তবে এর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব এখনও অপরিসীম।
১১৯. বাংলাদেশে কখন থেকে বয়স্কভাতা চালু হয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশে বয়স্কভাতা কর্মসূচি ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে প্রবর্তন করা হয়।
এর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ১৯৯৮ সালের এপ্রিল মাস থেকে। এটি দেশের দুস্থ ও স্বল্প উপার্জনক্ষম অথবা উপার্জনে অক্ষম বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং পরিবার ও সমাজে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চালু করা হয়েছিল।
১২০. বাংলাদেশের সাথে ভারতের সীমানা কত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশের সাথে ভারতের স্থলসীমানার দৈর্ঘ্য হলো ৪,১৫৬ কিলোমিটার।
এটি বিশ্বের দীর্ঘতম স্থলসীমান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের মোট স্থলসীমার (প্রায় ৪,৪২৭ কিলোমিটার) প্রায় ৯৪% হলো ভারতের সাথে। ভারতের পাঁচটি রাজ্য (পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম) বাংলাদেশের সাথে সীমান্ত ভাগ করে নিয়েছে।
১২১. মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য কত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের মোট দৈর্ঘ্য ১১.৮ কিলোমিটার (র্যাম্পসহ)।
এটি যাত্রা শুরু করেছে পুরান ঢাকার চানখাঁরপুল থেকে এবং শেষ হয়েছে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত।
১২২. সুন্দরবনে বাঘ গণনায় ব্যবহৃত হয়–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
গণনা পদ্ধতি:
বর্তমানে সুন্দরবনে বাঘ গণনার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতি (Camera Trapping Method) ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে:
- বনের বিভিন্ন স্থানে স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা স্থাপন করা হয়।
- বাঘ যখন ক্যামেরার সামনে দিয়ে যায়, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার ছবি ওঠে।
- প্রতিটি বাঘের শরীরের ডোরাকাটা দাগ (স্ট্রাইপ প্যাটার্ন) স্বতন্ত্র ও অদ্বিতীয়, অনেকটা মানুষের আঙুলের ছাপের মতো। এই ডোরাকাটা দাগ বিশ্লেষণ করে প্রতিটি বাঘকে আলাদাভাবে শনাক্ত করা হয় এবং মোট বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়।
- এছাড়া, বাঘের মল বিশ্লেষণ (Pugmark/Scat analysis) এবং অন্যান্য চিহ্ন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেও বাঘের উপস্থিতি ও ঘনত্ব সম্পর্কে ধারণা নেওয়া হয়।
আগে পায়ের ছাপ (পাগমার্ক) দেখে বাঘ গণনার পদ্ধতি ব্যবহার করা হলেও, ২০১৫ সাল থেকে বৈজ্ঞানিক ও আধুনিক ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতি চালু হয়েছে।
সর্বশেষ বাঘশুমারি ও সংখ্যা:
- সর্বশেষ বাঘশুমারি: ২০২৩-২০২৪ সালের বাঘ জরিপের ফলাফল ৮ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে প্রকাশ করা হয়েছে।
- বাঘের সংখ্যা: সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়ে ১২৫টি-তে দাঁড়িয়েছে।
- পূর্ববর্তী জরিপ:
- ২০১৫ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬টি।
- ২০১৮ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪টি।
এই ধারাবাহিক বৃদ্ধি বাঘ সংরক্ষণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হওয়ার ইতিবাচক ফল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
১২৩. ২০০৪ সালের ভয়ংকর সুনামি ঢেউয়ের গতি ছিল ঘণ্টায়–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
২০০৪ সালের ভয়ংকর সুনামি ছিল আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এটি ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ভারত মহাসাগরে আঘাত হানে।
কারণ:
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের কাছে সমুদ্রের তলদেশে ৯.১ থেকে ৯.৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের (যাকে "সুমাত্রা-আন্দামান ভূমিকম্প"ও বলা হয়) ফলে এই সুনামি সৃষ্টি হয়েছিল। এটি ছিল শতাব্দীর অন্যতম শক্তিশালী ভূমিকম্প, যার প্রভাবে পুরো পৃথিবী কেঁপে উঠেছিল এবং বিজ্ঞানীরা দাবি করেন যে এই ভূমিকম্পের কারণে পৃথিবী এক সেন্টিমিটার নড়ে গিয়েছিল।
ক্ষয়ক্ষতি:
এই সুনামি ভারত মহাসাগরের উপকূলীয় ১৩ থেকে ১৪টি দেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ঢেউয়ের গতি ঘণ্টায় ৭০০-৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ছিল, যা একটি জেট বিমানের গতির সমান। এই প্রলয়ঙ্করী সুনামি প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়, যার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ছিল শিশু। বহু মানুষ নিখোঁজ হয় এবং লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো ছিল:
- ইন্দোনেশিয়া: প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, যার মধ্যে শুধু আচেহ প্রদেশেই ১ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়।
- শ্রীলঙ্কা: প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়।
- ভারত: প্রায় ১০ হাজার মানুষ মারা যায়।
- থাইল্যান্ড: প্রায় ৮ হাজার মানুষ মারা যায়। এছাড়াও মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, মাদাগাস্কার, সোমালিয়া, কেনিয়া, তানজানিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
২০০৪ সালের সুনামি বিশ্বজুড়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সতর্কতা ব্যবস্থার গুরুত্ব সম্পর্কে নতুন করে সচেতনতা তৈরি করে।
১২৪. ফিশারিজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট কোথায় অবস্থিত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশে একাধিক ফিশারিজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট বা মৎস্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা মৎস্য খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রধান কিছু প্রতিষ্ঠান হলো:
-
মৎস্য প্রশিক্ষণ একাডেমি, সাভার, ঢাকা: এটি মৎস্য অধিদপ্তরের অধীনস্থ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং মৎস্য সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে জনবলের জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এর প্রধান কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মৌলিক সম্প্রসারণ, আধুনিক মৎস্যচাষ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া।
-
মৎস্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, চাঁদপুর: এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যা চাঁদপুর জেলায় অবস্থিত। এটি মৎস্য অধিদপ্তর পরিচালিত একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
-
বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ একাডেমি (BMFA), চট্টগ্রাম: এটি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার অন্তর্গত ইছানগর এলাকায় অবস্থিত। এটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পেশাদার স্নাতক (অনার্স) কোর্স প্রদান করে, যা সামুদ্রিক মৎস্য খাতে দক্ষ জনবল তৈরিতে সহায়ক।
-
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (BFRI) এর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম: যদিও এটি মূলত একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (ময়মনসিংহে সদর দপ্তর), এটি তার বিভিন্ন কেন্দ্র (যেমন: ময়মনসিংহ, চাঁদপুর, খুলনা, কক্সবাজার, বাগেরহাট) ও উপকেন্দ্রের মাধ্যমে মৎস্য চাষি, গবেষক এবং সম্প্রসারণ কর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও আয়োজন করে।
সুতরাং, বাংলাদেশে 'ফিশারিজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট' নামে নির্দিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান না থাকলেও, মৎস্য খাতের প্রশিক্ষণের জন্য উল্লিখিত একাধিক প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ, এবং এর ফলে জলবায়ু শরণার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে বিভিন্ন গবেষণা ও পূর্বাভাসে উঠে এসেছে।
যদি ২০৫০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠ ৪৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়, তাহলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ডুবে যাবে এবং বিপুল সংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। বিভিন্ন গবেষণার পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই পরিস্থিতিতে কমপক্ষে ৩.৫ কোটি (সাড়ে তিন কোটি) মানুষ জলবায়ু শরণার্থী বা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হতে পারে।
বিশ্বব্যাংক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও তাদের প্রতিবেদনে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে কয়েক কোটি মানুষের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি একটি প্রধান কারণ। এটি শুধু সরাসরি প্লাবনের কারণে নয়, লবণাক্ততার বৃদ্ধি, কৃষি জমির উর্বরতা হ্রাস, বিশুদ্ধ পানির অভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের (যেমন: ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস) তীব্রতা বৃদ্ধির কারণেও মানুষকে তাদের বাড়িঘর ও জীবিকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করবে।
এই সংখ্যাটি একটি অনুমান এবং বিভিন্ন মডেল ও গবেষণার ওপর নির্ভর করে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, তবে সামগ্রিকভাবে এটি একটি বিশাল মানবিক সংকট নির্দেশ করে।
১২৬. বায়ুমণ্ডলের মোট শক্তির কত শতাংশ সূর্য হতে আসে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বায়ুমণ্ডলের মোট শক্তির প্রায় ৯৯.৯৭% সূর্য থেকে আসে।
সূর্য থেকে আসা এই শক্তিই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এবং পৃষ্ঠকে উষ্ণ রাখে, যা পৃথিবীর জলবায়ু ও আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও বায়ুমণ্ডল সূর্যের কিছু শক্তি শোষণ করে, তবে মূল উৎস হলো সৌর বিকিরণ।
১২৭. বিশ্বব্যাংক অনুযায়ী ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় বিশ্ব সাহায্যের কত শতাংশ বাংলাদেশকে প্রদান করবে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে একাধারে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা সমস্যা, হিমালয়ের বরফ গলার কারণে নদীর দিক পরিবর্তন, বন্যা ইত্যাদি সবগুলো দিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং হচ্ছে। তাই এই ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় বিশ্ব সাহায্যের ৩০% বাংলাদেশকে প্রদান করবে।
১২৮. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০১৫ কবে জারি হয়েছে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০১৫ মূলত ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়েছিল।
তবে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এর প্রকাশের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৫ এবং বাংলাদেশ গেজেটে এটি ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে প্রকাশিত হয়েছিল।
সুতরাং, প্রশ্নে 'কবে জারি হয়েছে' বলতে যদি গেজেট প্রকাশের তারিখ বোঝানো হয়, তাহলে ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫। যদি প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ বোঝানো হয়, তাহলে ১৯ জানুয়ারি ২০১৫। তবে সাধারণত প্রজ্ঞাপন জারির তারিখটিকেই মূল ধরা হয়।
১২৯. সুনামির কারণ হলো–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সুনামি (Tsunami) হলো সমুদ্রের তলদেশে সৃষ্ট বিশাল আকারের ঢেউ, যা সাধারণত শক্তিশালী ভূ-তাত্ত্বিক ঘটনার কারণে উৎপন্ন হয়। জাপানি শব্দ 'সুনামি'-র অর্থ হলো 'পোতাশ্রয়ের ঢেউ' বা 'বন্দরের ঢেউ'।
সুনামির প্রধান কারণগুলো হলো:
-
সমুদ্র তলদেশের ভূমিকম্প: এটি সুনামির সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রধান কারণ। যখন সমুদ্রের নিচে টেকটনিক প্লেটগুলোর হঠাৎ নড়াচড়া হয় (বিশেষ করে যখন একটি প্লেট আরেকটির নিচে চলে যায় বা একে অপরের থেকে দূরে সরে যায়), তখন বিশাল পরিমাণ জলরাশি স্থানচ্যুত হয়। এই স্থানচ্যুত জলরাশি থেকে বিশাল ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়, যা সুনামি হিসেবে উপকূলের দিকে ধাবিত হয়। ভূমিকম্পের মাত্রা যত বেশি হয়, সুনামির ঢেউ তত বড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
-
আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত: সমুদ্রের তলদেশের আগ্নেয়গিরির ব্যাপক অগ্ন্যুৎপাতও সুনামি ঘটাতে পারে। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে যদি বিশাল পরিমাণ লাভা বা শিলা সমুদ্রের জলে পতিত হয় বা তলদেশে আকস্মিক আলোড়ন সৃষ্টি হয়, তবে তা বড় ঢেউ তৈরি করতে পারে।
-
ভূমিধস: সমুদ্রের তলদেশে বা উপকূলীয় অঞ্চলে বড় আকারের ভূমিধস হলে তা বিশাল পরিমাণ জলরাশিকে স্থানচ্যুত করে সুনামি সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, সমুদ্রের নিচে পর্বতের অংশ ধসে পড়লে বড় সুনামি হতে পারে।
-
উল্কাপিণ্ড বা গ্রহাণুর পতন: যদিও এটি খুবই বিরল ঘটনা, তবে কোনো বিশাল উল্কাপিণ্ড বা গ্রহাণু যদি সমুদ্রে পতিত হয়, তবে এর প্রভাবেও বিশাল আকারের সুনামি সৃষ্টি হতে পারে।
এই কারণগুলোর মধ্যে সমুদ্র তলদেশের ভূমিকম্প হলো সুনামির প্রধান এবং সবচেয়ে ঘন ঘন কারণ। ২০০৪ সালের ভারত মহাসাগরের সুনামি এবং ২০১১ সালের জাপানের সুনামি - উভয়ই সমুদ্র তলদেশের শক্তিশালী ভূমিকম্পের কারণে ঘটেছিল।
১৩০. যেসব অণুজীব রোগ সৃষ্টি করে তাদের বলা হয়–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
যেসব অণুজীব রোগ সৃষ্টি করে তাদের প্যাথোজেন (Pathogen) বলা হয়।
প্যাথোজেনগুলো বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন:
- ভাইরাস
- ব্যাকটেরিয়া
- ছত্রাক
- প্রোটোজোয়া (এককোষী পরজীবী)
- কিছু কৃমি (হেলমিন্থ)
১৩১. শিশুর মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা পূরণে নিচের কোনটি জরুরি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
শিশুর মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা পূরণে উল্লেখিত সবকটিই জরুরি।
আসুন প্রতিটি বিষয় কেন জরুরি তা সংক্ষেপে দেখি:
-
স্বীকৃতি: শিশুরা যখন তাদের কাজ বা প্রচেষ্টার জন্য প্রশংসা ও স্বীকৃতি পায়, তখন তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং তারা অনুভব করে যে তাদের মূল্য আছে। এটি তাদের আত্মমর্যাদা বিকাশে সহায়তা করে।
-
স্নেহ: ভালোবাসা, মমতা এবং নিরাপদ পরিবেশ শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য। স্নেহ শিশুদের মানসিক স্থিতিশীলতা দেয় এবং তাদের মধ্যে বিশ্বাস ও নিরাপত্তার অনুভূতি তৈরি করে।
-
সাফল্য: শিশুরা যখন কোনো কাজে সফল হয়, তখন তাদের মধ্যে সক্ষমতার অনুভূতি জন্মায়। এটি তাদের শেখার আগ্রহ বাড়ায় এবং নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উৎসাহিত করে।
এই তিনটি উপাদানই একে অপরের পরিপূরক এবং একটি শিশুর সামগ্রিক মানসিক সুস্থতা ও সুস্থ বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১৩২. নিচের কোনটি আমিষ জাতীয় খাদ্য হজমে সাহায্য করে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
আমিষ জাতীয় খাদ্য হজমে সাহায্য করে ট্রিপসিন (Trypsin)।
- ট্রিপসিন: এটি অগ্ন্যাশয় (pancreas) থেকে নিঃসৃত হয় এবং ক্ষুদ্রান্ত্রে আমিষ (প্রোটিন) পরিপাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- লাইপেজ: চর্বি (ফ্যাট) পরিপাকে সাহায্য করে।
- টায়ালিন/অ্যামাইলেজ: শ্বেতসার (কার্বোহাইড্রেট) পরিপাকে সাহায্য করে। টায়ালিন লালায় থাকে এবং অ্যামাইলেজ অগ্ন্যাশয় থেকেও নিঃসৃত হয়।
১৩৩. বায়ুমণ্ডলে শতকরা কতভাগ আর্গন বিদ্যমান?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
- নাইট্রোজেন (
): প্রায় ৭৮.০৯% - অক্সিজেন (
): প্রায় ২০.৯৫% - আর্গন (Ar): প্রায় ০.৯৩%
- কার্বন ডাইঅক্সাইড (
): প্রায় ০.০৪% (এই পরিমাণ শিল্পায়ন ও অন্যান্য কারণে পরিবর্তনশীল)
এছাড়াও, সামান্য পরিমাণে নিয়ন, হিলিয়াম, মিথেন, ক্রিপটন, হাইড্রোজেন এবং জলীয় বাষ্পের মতো অন্যান্য গ্যাসও থাকে।
১৩৪. মানুষের রক্তে লোহিত কণিকা কোথায় সঞ্চিত থাকে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
মানুষের রক্তে লোহিত কণিকা প্রধানত প্লীহাতে (Spleen) সঞ্চিত থাকে।
প্লীহাকে প্রায়শই "রক্তের কবরস্থান" বা "রক্তের আধার" বলা হয়, কারণ এটি পুরনো বা ক্ষতিগ্রস্ত লোহিত কণিকাকে ভেঙে ফেলে এবং প্রয়োজনে রক্ত সঞ্চয় করে।
যে যন্ত্রের সাহায্যে যান্ত্রিক শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়, তাকে জেনারেটর (Generator) বা ডায়নামো (Dynamo) বলা হয়।
জেনারেটরের মূলনীতি হলো ফ্যারাডের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশনের সূত্র। এর মাধ্যমে চৌম্বক ক্ষেত্রে একটি কন্ডাক্টরকে ঘোরানোর ফলে তাতে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।
১৩৬. মস্তিষ্ক কোন তন্ত্রের অঙ্গ?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
মস্তিষ্ক হলো স্নায়ুতন্ত্রের (Nervous System) প্রধান অঙ্গ।
এটি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের (Central Nervous System - CNS) একটি অংশ, যা শরীরের সমস্ত কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় সাধন করে। মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নাকাণ্ড (Spinal Cord) মিলেই কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র গঠিত।
১৩৭. ভাইরাসজনিত রোগ নয় কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
- নিউমোনিয়া (Pneumonia): এটি ফুসফুসের একটি সংক্রমণ যা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক বা অন্যান্য অণুজীবের কারণে হতে পারে। ব্যাকটেরিয়াজনিত নিউমোনিয়া খুবই সাধারণ। তাই, এটি কেবল ভাইরাসজনিত রোগ নয়।
- জন্ডিস (Jaundice): এটি একটি রোগের লক্ষণ, রোগ নয়। এটি সাধারণত ভাইরাস (যেমন হেপাটাইটিস ভাইরাস), পিত্তথলির সমস্যা বা লিভারের অন্যান্য রোগের কারণে হতে পারে।
- এইডস (AIDS): এটি হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (HIV) দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ। এটি সম্পূর্ণরূপে ভাইরাসজনিত।
- চোখ ওঠা (Conjunctivitis/Pink Eye): এটি প্রায়শই ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয়, তবে ব্যাকটেরিয়া বা অ্যালার্জির কারণেও হতে পারে।
সুতরাং, নিউমোনিয়া এমন একটি রোগ যার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ব্যাকটেরিয়াও উল্লেখযোগ্যভাবে রয়েছে, যা এটিকে অন্যান্য বিকল্পগুলোর চেয়ে "ভাইরাসজনিত রোগ নয়" হিসেবে বেশি উপযুক্ত করে তোলে।
১৩৮. প্রাণিজগতের উৎপত্তি ও বংশসম্বন্ধীয় বিদ্যাকে বলে–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রাণিজগতের উৎপত্তি ও বংশসম্বন্ধীয় বিদ্যাকে জেনেটিক্স (Genetics) বা বংশগতিবিদ্যা এবং ইভোলিউশন (Evolution) বা বিবর্তনবাদ উভয়ই বলা যেতে পারে, তবে এদের সুনির্দিষ্ট অর্থ ভিন্ন।
-
জেনেটিক্স (Genetics) / বংশগতিবিদ্যা: এটি জীববিজ্ঞানের সেই শাখা যা বংশগতির রীতিনীতি, বংশানুক্রমিক গুণাবলির উৎপত্তি, প্রকৃতি, বৃদ্ধি এবং আচরণ নিয়ে আলোচনা করে। অর্থাৎ, কিভাবে বৈশিষ্ট্যগুলো এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয়, তা জেনেটিক্সের মূল আলোচ্য বিষয়।
-
ইভোলিউশন (Evolution) / বিবর্তনবাদ: এটি জীববিজ্ঞানের সেই শাখা যা প্রাণিজগতের উৎপত্তি, ধারাবাহিক পরিবর্তন এবং সময়ের সাথে জীবের বিকাশ নিয়ে আলোচনা করে। এটি প্রজাতির উৎপত্তি এবং দীর্ঘ সময় ধরে তাদের অভিযোজন ও পরিবর্তনকে ব্যাখ্যা করে।
সাধারণত, "প্রাণিজগতের উৎপত্তি ও বংশসম্বন্ধীয় বিদ্যা" বলতে দুটি ধারণাই বোঝাতে পারে, তবে যদি বংশগতির প্রক্রিয়া এবং গুণাবলির স্থানান্তর বিশেষভাবে বোঝায়, তবে জেনেটিক্স বেশি প্রযোজ্য। আর যদি প্রজাতির দীর্ঘমেয়াদী উৎপত্তি ও পরিবর্তন বোঝায়, তবে ইভোলিউশন বেশি প্রযোজ্য।
অনেক সময় প্রশ্নপত্রে এই দুটির মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বলা হলে, যদি প্রশ্নের ফোকাস বংশগতি বা জিন হয়, তাহলে জেনেটিক্স এবং যদি প্রজাতির উৎপত্তি ও বিবর্তনীয় ইতিহাস হয়, তাহলে ইভোলিউশন সঠিক উত্তর হবে।
১৩৯. কোন জ্বালানি পোড়ালে সালফার ডাই-অক্সাইড বাতাসে আসে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
যে জ্বালানি পোড়ালে সালফার ডাই-অক্সাইড (SO₂) বাতাসে আসে, তা হলো সালফারযুক্ত জীবাশ্ম জ্বালানি।
প্রধানত:
- কয়লা (Coal): কয়লায় উচ্চ মাত্রার সালফার থাকতে পারে। কয়লা পোড়ালে প্রচুর পরিমাণে সালফার ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়, যা অম্লবৃষ্টি এবং বায়ু দূষণের একটি প্রধান কারণ।
- পেট্রোলিয়াম (Petroleum) বা অপরিশোধিত তেল: কিছু পেট্রোলিয়াম পণ্যে (যেমন কিছু ডিজেল বা ফার্নেস অয়েল) সালফারের উপস্থিতি থাকে। এসব পোড়ালেও সালফার ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়, যদিও বর্তমানে সালফার কমানোর জন্য পরিশোধনের প্রক্রিয়া উন্নত হয়েছে।
প্রাকৃতিক গ্যাসে (Natural Gas) সালফারের পরিমাণ সাধারণত খুবই কম থাকে, তাই এটি পোড়ালে সালফার ডাই-অক্সাইড নির্গমন অনেক কম হয়।
১৪০. মোবাইল টেলিফোনের লাইনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
মোবাইল টেলিফোনের লাইনের মধ্য দিয়ে প্রধানত তড়িৎশক্তি এবং আধুনিক ফাইবার অপটিক লাইনের ক্ষেত্রে আলোকশক্তি প্রবাহিত হয়।
বিকল্পগুলোর মধ্যে, খঃ তড়িৎশক্তি একটি সঠিক উত্তর। কারণ, মোবাইল নেটওয়ার্কের তারযুক্ত অংশে (যেমন কপার তার বা এমনকি ফাইবার অপটিকের আগে ও পরে সিগন্যাল প্রক্রিয়াকরণের জন্য) তথ্য সাধারণত তড়িৎশক্তি হিসেবে প্রবাহিত হয়। যদিও ফাইবার অপটিক তারের মাধ্যমে আলোকশক্তি ব্যবহার করে দীর্ঘ দূরত্বে তথ্য পাঠানো হয়, তবে সামগ্রিক নেটওয়ার্কের অনেক অংশে তড়িৎশক্তিই সংকেত বহন করে।
যদি প্রশ্নে শুধু ফাইবার অপটিকের কথা বলা হতো, তবে আলোকশক্তি এককভাবে সঠিক হতো। কিন্তু 'লাইনের মধ্য দিয়ে' বলতে একটি বিস্তৃত অর্থ বোঝায়, যেখানে তড়িৎশক্তির ব্যবহারও ব্যাপক।
১৪১. জীবজগতের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর রশ্মি কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
জীবজগতের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর রশ্মি হলো গামা রশ্মি (Gamma Ray)।
গামা রশ্মি হলো উচ্চ শক্তি সম্পন্ন তড়িৎচৌম্বকীয় বিকিরণ। এর ভেদন ক্ষমতা (penetrating power) অত্যন্ত বেশি, যা আলফা (Alpha) এবং বিটা (Beta) রশ্মির চেয়েও অনেক বেশি। গামা রশ্মি মানবদেহ বা উদ্ভিদ দেহের গভীরে প্রবেশ করে কোষের ডিএনএ (DNA) সহ গুরুত্বপূর্ণ অণুগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যার ফলে ক্যান্সার, বিকলাঙ্গতা এবং অন্যান্য মারাত্মক রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
যদিও অতিবেগুনি রশ্মি (Ultraviolet Ray) ত্বকের ক্ষতি এবং ত্বকের ক্যান্সার ঘটাতে পারে, তবে ভেদন ক্ষমতা এবং কোষীয় ক্ষতির মাত্রার দিক থেকে গামা রশ্মিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর।
১৪২. কোন রং বেশি দূর থেকে দেখা যায়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সবচেয়ে বেশি দূর থেকে দেখা যায় এমন রং হলো লাল (Red)।
এর কারণগুলো হলো:
১. দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্য: আলোর বর্ণালীতে লালের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি। এর ফলে এটি বায়ুমণ্ডলে কম বিক্ষিপ্ত হয়। ২. কম বিচ্ছুরণ: বায়ুমণ্ডলের কণা দ্বারা নীল বা বেগুনি আলোর মতো লাল আলো সহজে ছড়িয়ে পড়ে না বা বিক্ষিপ্ত হয় না। এর ফলে লাল আলো অনেক দূর পর্যন্ত প্রায় সোজা পথে যেতে পারে। ৩. চোখের সংবেদনশীলতা: মানুষের চোখ লাল রঙের প্রতি বিশেষভাবে সংবেদনশীল, বিশেষ করে সতর্কতা বা বিপদের প্রতীক হিসেবে।
এই কারণে ট্র্যাফিক লাইট, জরুরি অবস্থার সংকেত এবং সতর্কতা চিহ্ন হিসেবে লাল রং ব্যবহার করা হয়।
১৪৩. ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত গামা বিকিরণের উৎস হলো–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত গামা বিকিরণের প্রধান উৎস হলো তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ (Radioactive Isotope)।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত আইসোটোপটি হলো:
- কোবাল্ট-৬০ (Cobalt-60)
কোবাল্ট-৬০ একটি কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ যা নিউক্লিয়ার চুল্লিতে তৈরি হয়। এটি তার ক্ষয় প্রক্রিয়ায় (decay) শক্তিশালী গামা রশ্মি নির্গত করে, যা ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়। কোবাল্ট-৬০ ছাড়াও, কখনও কখনও সিজিয়াম-১৩৭ (Cesium-137)-ও গামা বিকিরণের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তবে কোবাল্ট-৬০ বেশি প্রচলিত।
১৪৪. নিচের কোন মেমোরীটি Non-volatile?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
নন-ভোলাটাইল মেমরি (Non-volatile memory) হলো এক ধরনের কম্পিউটার মেমরি যা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলেও তার মধ্যে সংরক্ষিত তথ্য ধরে রাখতে পারে। অর্থাৎ, আপনি কম্পিউটার বন্ধ করে দিলেও বা বিদ্যুৎ চলে গেলেও এই মেমরিতে থাকা ডেটা মুছে যায় না।
এর বিপরীত হলো ভোলাটাইল মেমরি (যেমন RAM), যা বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু থাকাকালীনই ডেটা সংরক্ষণ করে এবং বিদ্যুৎ চলে গেলে ডেটা হারিয়ে ফেলে।
নন-ভোলাটাইল মেমরির বৈশিষ্ট্য:
- স্থায়ী ডেটা সংরক্ষণ: বিদ্যুৎ চলে গেলেও ডেটা হারায় না।
- প্রাথমিক বুটিং-এ সহায়তা: অপারেটিং সিস্টেম এবং কম্পিউটারের বুট করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রোগ্রামগুলো এতে সংরক্ষিত থাকে।
- ধীর গতি: সাধারণত ভোলাটাইল মেমরির (যেমন RAM) চেয়ে এর ডেটা পড়া ও লেখার গতি ধীর হয়।
- বৃহৎ ধারণক্ষমতা: এটি সাধারণত বড় আকারের ডেটা সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
নন-ভোলাটাইল মেমরির উদাহরণ:
কিছু সাধারণ নন-ভোলাটাইল মেমরির উদাহরণ হলো:
- রম (ROM - Read-Only Memory): কম্পিউটারের বায়োস (BIOS) এবং ফার্মওয়্যার (Firmware) এতে সংরক্ষিত থাকে।
- ফ্ল্যাশ মেমরি (Flash Memory): এটি পেনড্রাইভ (USB Drive), সলিড স্টেট ড্রাইভ (SSD), মেমরি কার্ড, স্মার্টফোন এবং ডিজিটাল ক্যামেরায় ব্যবহৃত হয়।
- হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ (HDD - Hard Disk Drive): এটি ডেটা ও অপারেটিং সিস্টেম সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- অপটিক্যাল ডিস্ক (Optical Discs): যেমন সিডি (CD), ডিভিডি (DVD), ব্লু-রে ডিস্ক (Blu-ray Disc)।
- ইইপিআরওএম (EEPROM - Electrically Erasable Programmable Read-Only Memory): এটি রমের একটি উন্নত সংস্করণ যা বৈদ্যুতিকভাবে মুছে ও পুনরায় লেখা যায়।
১৪৫. নিচের কোন উক্তিটি সঠিক?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
১ কিলোবাইট (KB) = ১০২৪ বাইট (bytes)
যদিও "কিলো" উপসর্গটি সাধারণত ১০০০ বোঝাতে ব্যবহৃত হয় (যেমন ১ কিলোমিটার = ১০০০ মিটার), কম্পিউটারের ক্ষেত্রে বাইনারি পদ্ধতির কারণে ২-এর ঘাত (
১৪৬. Wi-fi কোন স্ট্যান্ডার্ড-এর উপর ভিত্তি করে কাজ করে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ওয়াই-ফাই (Wi-Fi) IEEE 802.11 স্ট্যান্ডার্ড-এর উপর ভিত্তি করে কাজ করে।
IEEE (Institute of Electrical and Electronics Engineers) 802.11 পরিবারভুক্ত বিভিন্ন স্ট্যান্ডার্ড রয়েছে, যেমন:
- IEEE 802.11a
- IEEE 802.11b
- IEEE 802.11g
- IEEE 802.11n (Wi-Fi 4)
- IEEE 802.11ac (Wi-Fi 5)
- IEEE 802.11ax (Wi-Fi 6/6E)
- IEEE 802.11be (Wi-Fi 7) - এটি নতুন এবং এখনও চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন।
এই প্রতিটি স্ট্যান্ডার্ড ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির বিভিন্ন প্রজন্মকে নির্দেশ করে এবং তাদের গতি, ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য ভিন্ন ভিন্ন হয়। তবে এদের সবার মূল ভিত্তি হলো IEEE 802.11 প্রোটোকল।
১৪৭. নিচের কোনটিতে সাধারণত ইনফ্রারেড ডিভাইস ব্যবহার করা হয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
TV রিমোট কন্ট্রোলে ইনফ্রারেড ডিভাইস ব্যবহার করা হয়।
টিভি রিমোট কন্ট্রোল ইনফ্রারেড (IR) আলো ব্যবহার করে টেলিভিশনে কমান্ড (যেমন চ্যানেল পরিবর্তন, ভলিউম বাড়ানো-কমানো) পাঠায়। ইনফ্রারেড রশ্মি স্বল্প পাল্লার, সরাসরি দৃষ্টির (line-of-sight) প্রয়োজন হয় এবং এটি দেয়াল বা অন্যান্য বাধার মধ্য দিয়ে যেতে পারে না, যা রিমোট কন্ট্রোলের জন্য উপযুক্ত।
১৪৮. (1011)₂ + (0101)₂ = ?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
1011₂
+ 0101₂
-------
10000₂
ব্যাখ্যা:
- ডান দিক থেকে প্রথম কলাম (সর্বনিম্ন গুরুত্বপূর্ণ বিট):
(বাইনারিতে ১০ মানে দশমিকে ২)। ০ বসবে, ১ হাতে থাকবে। - দ্বিতীয় কলাম: হাতে থাকা
। ০ বসবে, ১ হাতে থাকবে। - তৃতীয় কলাম: হাতে থাকা
। ০ বসবে, ১ হাতে থাকবে। - চতুর্থ কলাম: হাতে থাকা
। বসবে।
সুতরাং,
১৪৯. Wi MAX-এর পূর্ণরূপ কি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
"Worldwide Interoperability for Microwave Access" এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো WiMAX (ওয়াইম্যাক্স)।
এটি একটি তারবিহীন টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি যা উচ্চ গতির ইন্টারনেট অ্যাক্সেস প্রদান করে, বিশেষত বিস্তৃত এলাকায়। এটি IEEE 802.16 স্ট্যান্ডার্ডের উপর ভিত্তি করে তৈরি।
১৫০. Boolean Algebra-এর নিচের কোনটি সঠিক?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বুলিয়ান অ্যালজেব্রার নিয়ম অনুযায়ী, নিচের কোনটি সঠিক?
কঃ
যদি
যদি
এই উক্তিটি সঠিক।
খঃ
যদি
যদি
কিন্তু,
গঃ
বুলিয়ান অ্যালজেব্রায়
ঘঃ উপরের কোনোটিই নয়
সুতরাং, সঠিক উক্তিটি হলো কঃ
১৫১. 8086 কত বিটের মাইক্রো প্রসেসর?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ইন্টেল ৮০৮৬ (Intel 8086) হলো একটি ১৬-বিটের (16-bit) মাইক্রোপ্রসেসর।
এটি ১৯৭৮ সালে ইন্টেল দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল এবং x86 আর্কিটেকচারের প্রথম সদস্য ছিল। এর ডেটা বাস ১৬ বিটের, যার অর্থ এটি একবারে ১৬ বিট ডেটা প্রক্রিয়া করতে পারে।
১৫২. Mobile Phone-এর কোনটি input device নয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে, Power Supply হলো একটি ইনপুট ডিভাইস নয়।
অন্যান্য বিকল্পগুলো ইনপুট ডিভাইস হিসেবে কাজ করে:
- কঃ Keypad: ব্যবহারকারীকে সংখ্যা বা অক্ষর ইনপুট করার সুযোগ দেয়।
- খঃ Touch Screen: স্পর্শের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ইনপুট গ্রহণ করে (যেমন: টাইপ করা, সোয়াইপ করা)। এটি আউটপুট ডিভাইস হিসেবেও কাজ করে।
- গঃ Camera: ছবি বা ভিডিও ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে।
অন্যদিকে, পাওয়ার সাপ্লাই মোবাইল ফোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, কিন্তু এটি ব্যবহারকারীর কাছ থেকে কোনো ডেটা বা কমান্ড ইনপুট নেয় না।
১৫৩. নিচের কোনটি ডাটাবেজ language?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
Oracle হলো ডাটাবেজ language।
- কঃ Oracle: এটি একটি বিখ্যাত এবং শক্তিশালী রিলেশনাল ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (RDBMS)। যদিও ওরাকল নিজে একটি প্রোগ্রামিং ভাষা নয়, এটি তার ডেটাবেজ পরিচালনার জন্য SQL (Structured Query Language) ব্যবহার করে, যা একটি ডাটাবেজ ল্যাঙ্গুয়েজ। অনেক সময় প্রশ্নপত্রে ডাটাবেজ সিস্টেমকে তার জনপ্রিয় ব্র্যান্ড নাম দিয়ে চিহ্নিত করা হয়।
- খঃ C: এটি একটি সাধারণ-উদ্দেশ্যের প্রোগ্রামিং ভাষা, ডাটাবেজ ভাষা নয়।
- গঃ MS-Word: এটি একটি ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার, ডাটাবেজ বা ডাটাবেজ ল্যাঙ্গুয়েজ নয়।
- ঘঃ কোনোটিই নয়: যেহেতু Oracle একটি ডাটাবেজ সিস্টেম এবং এটি ডাটাবেজ ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে, তাই এটি অন্য বিকল্পগুলোর তুলনায় ডাটাবেজের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত।
১৫৪. LinkedIn-এর ক্ষেত্রে কোনটি সঠিক?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
লিংকডইন (LinkedIn) হলো পেশাদারদের জন্য তৈরি একটি সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম। এটি ২০০৩ সালের ৫ মে যাত্রা শুরু করে এবং বর্তমানে মাইক্রোসফটের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ফেসবুক বা টুইটারের মতো ব্যক্তিগত নেটওয়ার্কিংয়ের পরিবর্তে, লিংকডইন পেশাগত সম্পর্ক তৈরি, কর্মজীবনের উন্নয়ন এবং ব্যবসায়িক সুযোগ খুঁজে পাওয়ার ওপর জোর দেয়।
লিংকডইন কী কাজে লাগে?
লিংকডইনের মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্বের পেশাজীবীদের সংযুক্ত করে তাদের আরও বেশি উৎপাদনশীল এবং সফল হতে সাহায্য করা। এর প্রধান ব্যবহারগুলো হলো:
- পেশাদার নেটওয়ার্ক তৈরি: এটি আপনাকে আপনার সহকর্মী, প্রাক্তন সহকর্মী, ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য পেশাদার, এমনকি সম্ভাব্য নিয়োগকর্তা বা ক্লায়েন্টদের সাথে সংযুক্ত হতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে আপনি আপনার পেশাগত পরিচিতির পরিধি বাড়াতে পারেন।
- চাকরি খোঁজা ও নিয়োগ: লিংকডইনে একটি বিশাল জব বোর্ড রয়েছে যেখানে অসংখ্য চাকরির বিজ্ঞাপন পোস্ট করা হয়। আপনি আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং পছন্দের অবস্থান অনুযায়ী চাকরি খুঁজতে পারেন এবং সরাসরি আবেদনও করতে পারেন। অনেক নিয়োগকারীও এখানে সম্ভাব্য কর্মীদের খুঁজে থাকেন।
- ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং: আপনি আপনার প্রোফাইলে আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, অর্জন এবং কাজের নমুনা তুলে ধরে আপনার পেশাগত পরিচয় তৈরি করতে পারেন। এটি আপনাকে আপনার পছন্দের ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করে।
- জ্ঞান ও তথ্য আদান-প্রদান: বিভিন্ন পেশাদার গ্রুপে যোগ দিয়ে আপনি আপনার ইন্ডাস্ট্রির সর্বশেষ খবর, ট্রেন্ড এবং ইনসাইট সম্পর্কে জানতে পারেন। আপনি নিজেও আর্টিকেল বা পোস্ট শেয়ার করে অন্যদের সাথে আপনার জ্ঞান ভাগ করে নিতে পারেন।
- লার্নিং ও দক্ষতা উন্নয়ন: লিংকডইন লার্নিং (LinkedIn Learning)-এর মতো ফিচারের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন পেশাগত বিষয়ে অনলাইন কোর্স করে নতুন দক্ষতা অর্জন করতে পারেন বা বিদ্যমান দক্ষতাগুলোকে আরও উন্নত করতে পারেন।
- ব্যবসায়িক সুযোগ অন্বেষণ: উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীরা সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট, পার্টনার বা বিনিয়োগকারীদের খুঁজে বের করতে লিংকডইন ব্যবহার করতে পারেন।
সংক্ষেপে, লিংকডইন হলো আপনার পেশাগত জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি শক্তিশালী মাধ্যম, যা অনলাইন রেজিউমে, নেটওয়ার্কিং টুল এবং জব সার্চ প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ে গঠিত।
১৫৫. কমিউনিকেশন সিস্টেমে গেটওয়ে কি কাজে ব্যবহার হয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
কমিউনিকেশন সিস্টেমে গেটওয়ে (Gateway) এর প্রধান কাজ হলো দুটি ভিন্ন নেটওয়ার্কের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা, বিশেষ করে যখন সেই নেটওয়ার্কগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রোটোকল (Protocol) ব্যবহার করে।
সহজভাবে বললে, গেটওয়ে হলো একটি "দরজা" বা "সেতু" যা এক ধরনের নেটওয়ার্ককে অন্য ধরনের নেটওয়ার্কের সাথে কথা বলতে সাহায্য করে। এর মূল কাজগুলো হলো:
১. প্রোটোকল অনুবাদ (Protocol Translation): এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। প্রতিটি নেটওয়ার্ক তার নিজস্ব নিয়ম বা প্রোটোকল মেনে চলে। যখন ভিন্ন প্রোটোকল ব্যবহারকারী দুটি নেটওয়ার্ক যোগাযোগ করতে চায়, তখন গেটওয়ে সেই প্রোটোকলগুলোকে একে অপরের কাছে বোধগম্য ভাষায় অনুবাদ করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ল্যান (LAN) নেটওয়ার্ককে ইন্টারনেটের (WAN) সাথে সংযুক্ত করার জন্য গেটওয়ে প্রয়োজন, কারণ তাদের প্রোটোকল ভিন্ন।
২. ডেটা ফরম্যাট রূপান্তর: গেটওয়ে ডেটার ফরম্যাটও পরিবর্তন করতে পারে, যাতে এক নেটওয়ার্কের ডেটা অন্য নেটওয়ার্ক বুঝতে পারে।
৩. নেটওয়ার্ক সংযোগ: এটি দুটি বা ততোধিক ভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক (যেমন: LAN, WAN, ইন্টারনেট) এর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। আপনার বাড়ির রাউটারটি প্রায়শই একটি গেটওয়ে হিসেবে কাজ করে, যা আপনার লোকাল নেটওয়ার্ককে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করে।
৪. নিরাপত্তা: কিছু গেটওয়েতে ফায়ারওয়াল (Firewall) বা অন্যান্য নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকে যা নেটওয়ার্কের মধ্যে প্রবেশ এবং বাহির হওয়া ডেটা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে অননুমোদিত প্রবেশ বা সাইবার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
সংক্ষেপে, গেটওয়ে একটি অনুবাদকের মতো কাজ করে, যা ভিন্ন ভিন্ন নেটওয়ার্ককে একে অপরের সাথে নির্বিঘ্নে যোগাযোগ করতে সাহায্য করে।
১৫৬. নিচের কোনটি কম্পিউটারের প্রাইমারি মেমোরি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
কম্পিউটারের প্রাইমারি মেমরি হলো RAM (র্যাম)।
ব্যাখ্যা:
-
প্রাইমারি মেমরি (Primary Memory): এটি কম্পিউটারের প্রধান মেমরি, যা সিপিইউ (CPU) সরাসরি অ্যাক্সেস করতে পারে। এটি বর্তমানে চলমান প্রোগ্রাম এবং ডেটা অস্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে। কম্পিউটার বন্ধ হলে বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হলে এর ডেটা হারিয়ে যায় (এ কারণে RAM কে ভোলাটাইল মেমরি বলা হয়)। RAM (Random Access Memory) এবং ROM (Read-Only Memory) উভয়ই প্রাইমারি মেমরি হলেও, RAM কম্পিউটারের "ওয়ার্কিং মেমরি" বা কর্মক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে।
-
Hard Disk (হার্ড ডিস্ক) এবং Pen drive (পেন ড্রাইভ): এগুলো হলো সেকেন্ডারি মেমরি (Secondary Memory) বা সহায়ক মেমরি। এগুলো স্থায়ীভাবে ডেটা সংরক্ষণ করে (নন-ভোলাটাইল) এবং বিদ্যুৎ চলে গেলেও ডেটা হারায় না। তবে সিপিইউ সরাসরি এদের থেকে ডেটা অ্যাক্সেস করে না; ডেটা প্রথমে RAM-এ লোড হয় তারপর সিপিইউ প্রক্রিয়া করে।
১৫৭. Plotter কোন ধরনের ডিভাইস?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্লটার (Plotter) হলো একটি আউটপুট ডিভাইস।
এটি প্রিন্টারের মতোই কাজ করে, তবে বিশেষত কম্পিউটার থেকে প্রাপ্ত ভেক্টর গ্রাফিক্স ডেটা ব্যবহার করে উচ্চ-মানের, বড় আকারের নকশা, মানচিত্র, ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং এবং আর্কিটেকচারাল ব্লুপ্রিন্ট ইত্যাদি প্রিন্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়। প্লটার পেন, পেন্সিল বা অন্যান্য ড্রইং টুল ব্যবহার করে কাগজে বা অন্যান্য মাধ্যমে সরাসরি লাইন এঁকে আউটপুট তৈরি করে।
১৫৮. মৌলিক সংখ্যা এবং হলে ) এর সদস্য সংখ্যা কত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রথমে, সেট
সুতরাং, সেট
সেট
এখন,
এখানে
সুতরাং,
১৫৯. 12টি পুস্তক থেকে 5টি কত প্রকারে বাছাই করা যায় যেখানে 2টি পুস্তক সর্বদাই অন্তর্ভুক্ত থাকবে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
মোট পুস্তক সংখ্যা = ১২টি
বাছাই করতে হবে = ৫টি
শর্ত: ২টি পুস্তক সর্বদা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
যেহেতু ২টি পুস্তক সর্বদা অন্তর্ভুক্ত থাকবে, তার মানে এই ২টি পুস্তক আমরা ইতিমধ্যেই বাছাই করে ফেলেছি।
তাহলে,
অবশিষ্ট পুস্তক যা থেকে বাছাই করতে হবে =
অবশিষ্ট যতগুলো পুস্তক বাছাই করতে হবে =
এখন, বাকি ১০টি পুস্তক থেকে ৩টি পুস্তক কত প্রকারে বাছাই করা যায়, তা নির্ণয় করতে হবে। এটি বিন্যাস নয়, সমাবেশ (combination) কারণ এখানে বাছাইয়ের ক্রম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
সূত্র:
এখানে,
সুতরাং, ১২টি পুস্তক থেকে ৫টি পুস্তক যেখানে ২টি পুস্তক সর্বদা অন্তর্ভুক্ত থাকবে, তা ১২০ প্রকারে বাছাই করা যায়।
১৬০. আবহাওয়া অফিসের রিপোর্ট অনুযায়ী-২০১৫ সালের জুলাই মাসের ২য় সপ্তাহে বৃষ্টি হয়েছে মোট 5 দিন। ঐ সপ্তাহে বুধবার বৃষ্টি না হওয়ার সম্ভাবনা কত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
- মোট দিনের সংখ্যা: এক সপ্তাহ মানে ৭ দিন।
- বৃষ্টি হয়েছে: ৫ দিন
- বৃষ্টি হয়নি:
দিন
ঐ সপ্তাহে যেকোনো একটি নির্দিষ্ট দিনে (যেমন বুধবার) বৃষ্টি না হওয়ার সম্ভাবনা নির্ণয়ের জন্য, আমাদের ধরতে হবে যে বৃষ্টি হওয়া বা না হওয়া ঘটনাগুলো সপ্তাহের ৭ দিনের মধ্যে সমানভাবে বিন্যস্ত।
বৃষ্টি না হওয়ার অনুকূল ঘটনা = ২ দিন
মোট সম্ভাব্য ঘটনা = ৭ দিন
সুতরাং, বুধবার বৃষ্টি না হওয়ার সম্ভাবনা:
অতএব, ঐ সপ্তাহে বুধবার বৃষ্টি না হওয়ার সম্ভাবনা হলো
মিষ্টির মোট দাম = প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা
ভ্যাটের হার = ৪ টাকা হারে (প্রতি ১০০ টাকায় ৪ টাকা)
মোট ভ্যাটের পরিমাণ = মিষ্টির মোট দাম
= ১০৫০ টাকা
= ১০৫০
=
= ৪২ টাকা
সুতরাং, মোট ৪২ টাকা ভ্যাট দিতে হবে।
১৬২. যদি তেলের মূল্য ২৫% বৃদ্ধি পায় তবে তেলের ব্যবহার শতকরা কত কমালে তেল বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি পাবে না?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ধরি, তেলের পূর্ব মূল্য ছিল প্রতি ইউনিট ১০০ টাকা।
এবং পূর্ব ব্যবহার ছিল ১০০ ইউনিট।
তাহলে, তেলের পূর্বের মোট ব্যয় ছিল =
তেলের মূল্য ২৫% বৃদ্ধি পাওয়ায়, নতুন মূল্য হবে =
এখন, ব্যয় বৃদ্ধি না পেতে হলে, নতুন মূল্য ১২৫ টাকা দিয়েও পূর্বের মোট ব্যয় ১০০০০ টাকা রাখতে হবে।
নতুন ব্যবহার =
তাহলে, তেলের ব্যবহার কমাতে হবে = পূর্ব ব্যবহার - নতুন ব্যবহার
শতকরা কমানোর হার =
সুতরাং, তেলের ব্যবহার শতকরা ২০% কমালে তেল বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি পাবে না।
আমরা জানি, দুটি সংখ্যার গুণফল = সংখ্যা দুটির ল. সা. গু.
এখানে দেওয়া আছে:
দুটি সংখ্যার গুণফল = ৩৩৮০
গ. সা. গু. = ১৩
ধরি, সংখ্যা দুটির ল. সা. গু. =
তাহলে, সূত্র অনুযায়ী:
এখন,
সুতরাং, সংখ্যা দুটির ল. সা. গু. হলো ২৬০।
১৬৪. যদি কত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
এটি একটি সমান্তর ধারা (arithmetic series) যেখানে:
- প্রথম পদ (
) = ১ - সাধারণ অন্তর (
) = - শেষ পদ (
) =
প্রথমে, ধারাটিতে মোট কয়টি পদ আছে তা নির্ণয় করতে হবে।
যদি শেষ পদ
সমান্তর ধারার
সুতরাং, ধারাটিতে
এখন, প্রথম
এখানে
অতএব,
১৬৫. কত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ধরি,
লগারিদমের সংজ্ঞা অনুযায়ী, এর অর্থ হলো:
এখন, উভয় পক্ষকে
তাহলে, সমীকরণটি দাঁড়ায়:
যেহেতু ভিত্তি (base) উভয় পাশে একই (
সুতরাং,
১৬৬. যদি হয় তবে কত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
আমরা জানি যে
সূচকের নিয়ম অনুযায়ী,
যেহেতু উভয় পাশের ভিত্তি (base) একই (
এখন
সুতরাং,
ছবিটি দেখে নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও:

- O হলো বৃত্তের কেন্দ্র।
- AC হলো একটি ব্যাস (কারণ O কেন্দ্র AC রেখার উপর অবস্থিত এবং A ও C বৃত্তের পরিধির উপর)।
- ∆ABC হলো বৃত্তে অন্তর্লিখিত একটি ত্রিভুজ।
- ∠y = ∠BOC = 112°।
- ∠x = ∠OCB বা ∠BCA।
আমরা জানি যে, বৃত্তের ব্যাসার্ধগুলো সমান হয়। সুতরাং, ∆BOC ত্রিভুজে, OB এবং OC উভয়ই বৃত্তের ব্যাসার্ধ, তাই OB = OC।
যেহেতু ∆BOC একটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ (Isosceles Triangle) এবং OB = OC, তাই এদের বিপরীত কোণগুলোও সমান হবে।
অর্থাৎ, ∠OBC = ∠OCB।
ধরা যাক, ∠OCB = ∠x। তাহলে, ∠OBC = ∠x।
এখন, ∆BOC ত্রিভুজের তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০°।
∠BOC + ∠OBC + ∠OCB = 180°
∠y + ∠x + ∠x = 180°
112° + 2∠x = 180°
এখন ∠x-এর মান নির্ণয় করি:
2∠x = 180° - 112°
2∠x = 68°
∠x =
∠x = 34°
সুতরাং, ∠x এর মান হলো 34°।
১৬৮. একটি বর্গক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ্য একক হলে ঐ বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল কত বর্গ একক?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ধরি, বর্গক্ষেত্রটির প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য =
বর্গক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের সূত্র হলো =
প্রশ্নে দেওয়া আছে, কর্ণের দৈর্ঘ্য =
তাহলে,
উভয় পক্ষকে
এখন, বর্গক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল নির্ণয় করতে হবে।
বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = (বাহুর দৈর্ঘ্য)
ক্ষেত্রফল =
ক্ষেত্রফল =
সুতরাং, ঐ বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল হলো ১৬ বর্গ একক।
১৬৯. ∆ABC এ ∠A = 40°, ∠B=70°, হলে ∆ABC কি ধরনের ত্রিভুজ?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ত্রিভুজের তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০°। এখানে, ∠A = 40° ∠B = 70°
তাহলে, ∠C = 180° - (∠A + ∠B) ∠C = 180° - (40° + 70°) ∠C = 180° - 110° ∠C = 70°
এখন, আমরা ত্রিভুজের তিনটি কোণ পেয়েছি: ∠A = 40° ∠B = 70° ∠C = 70°
যেহেতু ত্রিভুজটির দুটি কোণ সমান (∠B = ∠C = 70°), তাই এটি একটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ (Isosceles Triangle)। (কারণ, যে ত্রিভুজের দুটি কোণ সমান, তার বিপরীত বাহুগুলোও সমান হয়।)
এছাড়াও, যেহেতু এর কোনো কোণই ৯০° এর বেশি নয়, তাই এটি একটি সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজও বটে। তবে কোণের সমান হওয়ার বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ হিসেবেই পরিচিতি লাভ করে।
১৭০. এর একটি সমাধান হল:
[ বিসিএস ৩৬তম ]
দেওয়া আছে দুটি সমীকরণ:
১)
২)
২নং সমীকরণ থেকে আমরা
এখন,
একই পদগুলো যোগ করি:
সমীকরণটিকে সহজ করার জন্য উভয় পক্ষকে
এখন,
এখান থেকে
অথবা,
এখন
ক্ষেত্র ১: যদি
একটি সমাধান হলো
ক্ষেত্র ২: যদি
অন্য একটি সমাধান হলো
সুতরাং, প্রদত্ত সমীকরণদ্বয়ের একটি সমাধান হলো
(অন্য সমাধানটি হলো
১৭১. কত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
প্রথমে, সর্বভ্যন্তরস্থ বন্ধনী থেকে শুরু করি:
1.
সুতরাং,
এবার এই মানটি বসিয়ে পাই:
2.
এই অংশটি ইতিমধ্যেই সরলীকৃত।
এবার এই মানটি বসিয়ে পাই:
3.
এই অংশটিও সরলীকৃত।
এবার সম্পূর্ণ রাশিতে বসিয়ে পাই:
সুতরাং, রাশিটির সরলীকৃত মান হলো
১৭২. হলে, এর মান কত?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
আমাদের
আমরা জানি,
এখানে
এখন,
সুতরাং,
১৭৩.
[ বিসিএস ৩৬তম ]
এটি একটি সমান্তর ধারা (arithmetic series)।
- প্রথম পদ (
) = ১ - সাধারণ অন্তর (
) = ৫ - ১ = ৪ - শেষ পদ (
) = ৮১
প্রথমে, ধারাটিতে মোট কতটি পদ আছে তা নির্ণয় করতে হবে।
সমান্তর ধারার
৮১ = ১ + (n-1)৪
৮১ - ১ = (n-1)৪
৮০ = (n-1)৪
২০ = n-১
n = ২০ + ১
n = ২১
সুতরাং, ধারাটিতে মোট ২১টি পদ রয়েছে।
এখন, ধারাটির যোগফল নির্ণয় করব।
সমান্তর ধারার যোগফলের সূত্র:
সুতরাং, $১ + ৫ + ৯ +................ + ৮১ = ৮৬১$।
ছবিটি দেখে নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও:

১৭৪. প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?)-এর স্থানে কি বসবে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
১. অক্ষরের বিন্যাস (এক অক্ষর পরপর):
- A, C, E (B বাদ, D বাদ)
- G, I, K (H বাদ, J বাদ)
- M, O, Q (N বাদ, P বাদ)
২. সংখ্যার বিন্যাস (গাণিতিক অঙ্ক):
আপনার ব্যাখ্যা অনুযায়ী: "প্রথম অক্ষর দুটির গাণিতিক অঙ্কগুলোর যোগফল হবে তৃতীয় অক্ষরটির গাণিতিক অঙ্ক।"
* প্রথম সারি: A₂, C₄, E₆
A এর অঙ্ক 2, C এর অঙ্ক 4।
নিয়ম অনুযায়ী,
* দ্বিতীয় সারি: G₃, I₅, ?
G এর অঙ্ক 3, I এর অঙ্ক 5।
নিয়ম অনুযায়ী,
সুতরাং, প্রশ্নবোধক স্থানের অক্ষরটি K এবং এর গাণিতিক অঙ্কটি 8 হবে।
তাহলে, প্রশ্নবোধক স্থানে হবে K₈।
১৭৫. যদি, ৫ + ৩ = ২৮
৯+১ = ৮১০
২+১ = ১৩ হয় তবে
৫+8=?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
এবং দ্বিতীয় অঙ্কটি হবে অক্ষরদ্বয়ের যোগফল। যথা-
এখন, R এর বামদিকে ১০ম অক্ষরটি বের করতে হলে আমাদের ১৮ থেকে ১০ বিয়োগ করতে হবে:
ইংরেজি বর্ণমালার ৮ম অক্ষরটি হলো H।
সুতরাং, ১৮তম অক্ষরের বামদিকে ১০ম অক্ষরটি হলো H।
১৭৭.
[ বিসিএস ৩৬তম ]
যেহেতু সংখ্যাটির শেষ অঙ্ক ৫, তাই এর বর্গমূলের শেষ অঙ্ক ৫ হবে।
আমরা জানি
এখন, আসল সংখ্যাটিতে দশমিক বিন্দুর পর ৪টি অঙ্ক আছে। তাই বর্গমূলে দশমিক বিন্দুর পর
সুতরাং,
অতএব, $\sqrt{১৫.৬০২৫} = ৩.৯৫$।
১৭৮. ধারার অষ্টম সংখ্যাটি কত হবে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
১. প্রথম ধারা (বিজোড় স্থানগুলোতে থাকা সংখ্যা):
৩, ৪, ৫, ৬,...
এই ধারাটি ১ করে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২. দ্বিতীয় ধারা (জোড় স্থানগুলোতে থাকা সংখ্যা):
৭, ১৪, ২১,...
এই ধারাটি ৭ এর গুণিতক। অর্থাৎ,
মূল ধারার অষ্টম সংখ্যাটি দ্বিতীয় ধারার অন্তর্ভুক্ত হবে (কারণ এটি একটি জোড় স্থান)।
দ্বিতীয় ধারার চতুর্থ পদটি হবে
সুতরাং, প্রদত্ত ধারার অষ্টম সংখ্যাটি হবে ২৮।
ছবিটি দেখে নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও:
.jpg)
১৭৯. কোনটি “প্রদত্ত চিত্র” - এর আয়নার প্রতিফলন?
[ বিসিএস ৩৬তম ]




ছবিটি দেখে নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও:

১৮০. ভারসাম্য রক্ষা করতে নিচের চিত্রে বাম দিকে কত ওজন রাখতে হবে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
মোমেন্ট = ওজন
চিত্রে দেওয়া আছে:
- ডান দিকের ওজন = ৬ কেজি
- ডান দিকের দূরত্ব = ৪ মি.
- বাম দিকের দূরত্ব = ৩ মি.
- বাম দিকের অজানা ওজন =
কেজি
ডান দিকের মোমেন্ট = ৬ কেজি
বাম দিকের মোমেন্ট =
ভারসাম্য রক্ষার জন্য, বাম দিকের মোমেন্ট = ডান দিকের মোমেন্ট
সুতরাং, ভারসাম্য রক্ষা করতে বাম দিকে ৮ কেজি ওজন রাখতে হবে।
১৮১. আয়নায় প্রতিফলিত হলে নিচের কোন শব্দটির কোন পরিবর্তন হবে না?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
আয়নায় প্রতিফলিত হলে যে শব্দটির কোনো পরিবর্তন হবে না, তা হলো: OTTO
আয়নায় প্রতিফলিত হওয়ার অর্থ হলো প্রতিটি অক্ষরের লম্বালম্বি প্রতিবিম্ব এবং পুরো শব্দটির ক্রম বিপরীত হয়ে যাওয়া। যে অক্ষরগুলো লম্বালম্বিভাবে প্রতিসম (vertically symmetrical), সেগুলোর প্রতিবিম্ব দেখতে একই রকম হয় (যেমন A, H, I, M, O, T, U, V, W, X, Y)।
- OPT: 'P' অক্ষরটি আয়নায় উল্টে যাবে, তাই পরিবর্তন হবে।
- NOON: 'N' অক্ষরটি আয়নায় উল্টে যাবে, তাই পরিবর্তন হবে।
- SOS: 'S' অক্ষরটি আয়নায় উল্টে যাবে, তাই পরিবর্তন হবে।
- OTTO: এই শব্দটির প্রতিটি অক্ষর ('O', 'T') লম্বালম্বিভাবে প্রতিসম। তাই আয়নায় প্রতিফলিত হলেও প্রতিটি অক্ষর একই রকম দেখাবে এবং সামগ্রিকভাবে শব্দটির কোনো পরিবর্তন হবে না।
১৮২. ২-এর কত শতাংশ ৮ হবে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
তাহলে, আমরা লিখতে পারি:
এখন
সুতরাং, ২-এর ৪০০ শতাংশ ৮ হবে।
১৮৩. প্রশ্নবোধক স্থানে কোনটি বসবে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
১. বিজোড় স্থানের সংখ্যাগুলো (১ম, ৩য়, ৫ম, ৭ম, ৯ম পদ):
৩, ৯, ২৭, ৮১, ২৪৩
এই ধারাটি একটি গুণোত্তর ধারা, যেখানে প্রতিটি সংখ্যাকে ৩ দ্বারা গুণ করে পরের সংখ্যাটি পাওয়া যাচ্ছে:
২. জোড় স্থানের সংখ্যাগুলো (২য়, ৪র্থ, ৬ষ্ঠ, ৮ম, ১০ম পদ):
১০, ৮, ৬, ৪, ?
এই ধারাটি একটি সমান্তর ধারা, যেখানে প্রতিটি সংখ্যা থেকে ২ বিয়োগ করে পরের সংখ্যাটি পাওয়া যাচ্ছে:
যেহেতু প্রশ্নবোধক চিহ্নটি ধারার ১০ম স্থানে (একটি জোড় স্থান) রয়েছে, তাই এটি দ্বিতীয় ধারার পরের সংখ্যাটি হবে।
দ্বিতীয় ধারার শেষ সংখ্যাটি হলো ৪। তাই, পরের সংখ্যাটি হবে:
সুতরাং, প্রশ্নবোধক স্থানে ২ বসবে।
পূর্ণাঙ্গ ধারাটি হবে:
ছবিটি দেখে নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও:

১৮৪. প্রশ্নবোধক স্থানে কোন সংখ্যাটি বসবে?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
১ম ক্ষেত্রে 15 + 15 = 30 30 + 15 = 45
৩য় ক্ষেত্রে, 21 + 7 = 28 28 + 7 = 35
২য় ক্ষেত্রে, 19 + 6 = 25 25 + 6 = 31
১৮৫. নৈতিকভাবে বলা হয় মানবজীবনের–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
নৈতিকভাবে বলা হয় মানবজীবনের নৈতিক আদর্শ।
এটি বোঝায় যে, মানবজীবনকে নৈতিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে তার একটি নির্দিষ্ট আদর্শ বা মূল্যবোধ অনুসরণ করা উচিত।
১৮৬. ‘Power : A New Social Analysis’ গ্রন্থটি কার লেখা?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'Power : A New Social Analysis' গ্রন্থটি ১৯৩৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এবং এটি লিখেছেন নোবেল বিজয়ী ব্রিটিশ দার্শনিক ও গণিতবিদ বার্ট্রান্ড রাসেল (Bertrand Russell)।
এই বইটি ক্ষমতা (Power) এবং সমাজের উপর তার প্রভাব নিয়ে একটি গভীর বিশ্লেষণ। রাসেল বইটিতে ক্ষমতাকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পরীক্ষা করেছেন – যেমন রাজনৈতিক ক্ষমতা, অর্থনৈতিক ক্ষমতা, ধর্মীয় ক্ষমতা এবং সামরিক ক্ষমতা। তিনি দেখিয়েছেন যে কিভাবে ক্ষমতা মানুষের সম্পর্ক, রাষ্ট্র এবং সামাজিক কাঠামোকে প্রভাবিত করে।
রাসেল ক্ষমতার উৎস, এর বিভিন্ন রূপ এবং এটি কিভাবে সমাজে ব্যবহৃত হয়, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে ক্ষমতা, যেমন সম্পদ বা জ্ঞানের মতো, নৈতিকভাবে নিরপেক্ষ নয় এবং এর ব্যবহার মানবজাতির জন্য কল্যাণকর বা ধ্বংসাত্মক হতে পারে। বইটি ক্ষমতাকে একটি মৌলিক সামাজিক শক্তি হিসেবে দেখে যা মানব ইতিহাস এবং সমাজের বিবর্তনকে চালিত করে।
১৮৭. ‘সুবর্ণ মধ্যক’ হলো–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'সুবর্ণ মধ্যক' (Golden Mean) হলো একটি দার্শনিক ধারণা, যা মূলত প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল তার নীতিশাস্ত্র (Ethics) আলোচনায় তুলে ধরেছেন।
এই ধারণা অনুযায়ী, নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব বা গুণাবলী হলো দুটি চরম প্রান্তের মধ্যবর্তী একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা, যা অতিরিক্ত বা অভাব থেকে মুক্ত। অর্থাৎ, কোনো গুণের বা আচরণের অতি বেশি বা অতি কম থাকা উভয়ই ত্রুটিপূর্ণ, আর তার মাঝামাঝি একটি সঠিক ও পরিমিত অবস্থানই হলো 'সুবর্ণ মধ্যক'।
সহজভাবে বললে:
- এটি বাড়াবাড়ি বা কমতি এড়িয়ে চলাকে বোঝায়।
- এটি বিচক্ষণতা, পরিমিতি এবং ভারসাম্যের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে।
- এটি বিশ্বাস করে যে, প্রতিটি গুণ বা মহৎ কর্মের একটি 'সঠিক' পরিমাণ আছে, যা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ:
- সাহস (Courage) হলো 'সুবর্ণ মধ্যক'। এর অভাব হলো ভীরুতা (Cowardice) এবং এর বাড়াবাড়ি হলো বেপরোয়া সাহস (Rashness)।
- উদারতা (Generosity) হলো 'সুবর্ণ মধ্যক'। এর অভাব হলো কৃপণতা (Stinginess) এবং এর বাড়াবাড়ি হলো অপচয় (Prodigality)।
অ্যারিস্টটল মনে করতেন যে, এই 'সুবর্ণ মধ্যক' খুঁজে বের করা এবং সে অনুযায়ী জীবনযাপন করাই হলো সার্থক ও নৈতিক জীবনযাপনের চাবিকাঠি। এটি কোনো গাণিতিক মধ্যবিন্দু নয়, বরং বিচক্ষণতার মাধ্যমে অর্জিত একটি পরিস্থিতিগত সঠিকতা।
১৮৮. নৈতিক আচরণবিধি (Code of ethics) বলতে বুঝায়–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
নৈতিক আচরণবিধি (Code of Ethics) বলতে সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট পেশা, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীর সদস্যদের জন্য নির্ধারিত নীতিমালা ও মানদণ্ডগুলোর একটি লিখিত দলিলকে বোঝায়, যা তাদের আচরণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নৈতিক নির্দেশনা প্রদান করে।
এর মূল উদ্দেশ্য হলো:
১. সদস্যদের আচরণের মান নির্ধারণ: এটি সদস্যদের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে বলে দেয় কোন আচরণগুলো নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য এবং কোনগুলো নয়। ২. সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা: প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বা পেশাগত অনুশীলনে সততা, ন্যায্যতা এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। ৩. দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি: সদস্যদের তাদের পেশাগত এবং সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। ৪. নৈতিক দ্বিধা সমাধানে সহায়তা: যখন সদস্যরা কোনো নৈতিক দোটানায় পড়েন, তখন এই আচরণবিধি তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পথনির্দেশ করে। ৫. বিশ্বাস ও আস্থা তৈরি: গ্রাহক, ক্লায়েন্ট, সহকর্মী এবং বৃহত্তর সমাজের মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থা তৈরি করতে সাহায্য করে। ৬. পেশাগত মান বজায় রাখা: এটি পেশার মর্যাদা ও মানকে উন্নত ও বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সংক্ষেপে, নৈতিক আচরণবিধি হলো একটি পথনির্দেশিকা যা সদস্যদের সঠিক ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে উৎসাহিত করে এবং অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখে। এটি শুধু আইনগত বাধ্যবাধকতার বাইরে গিয়ে নৈতিক শ্রেষ্ঠত্বের উপর জোর দেয়।
১৮৯. ব্যক্তিগত মূল্যবোধ লালন করে–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ব্যক্তিগত মূল্যবোধ হলো ব্যক্তির স্বতন্ত্র মূল্যবোধ। এই মূল্যবোধে ব্যক্তির স্বাধীনতাকে পালন করা হয়। যদিও নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠী, সংস্কৃতি, ধর্ম, রাজনৈতিক দল, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, জাতীয়তা, ইতিহাস প্রভৃতি ব্যক্তিগত মূল্যবোধ গঠনে সাহায্য করে। তথাপি সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে নিজস্ব অর্জিত জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগত মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। যেখানে অন্যান্য মূল্যবোধ থেকে ব্যক্তিগত মূল্যবোধের প্রধান পার্থক্য হলো ব্যক্তির স্বাধীনতা বা স্বকীয়তা। তাই সমাজের এক এক ব্যক্তির মূল্যবোধ এক এক রকম।
১৯০. মূল্যবোধ শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
মূল্যবোধ শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা
ব্যাখ্যা: মূল্যবোধ শিক্ষার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো সমাজে নৈতিকতা, সততা, দায়িত্বশীলতা এবং সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি করা। এর মাধ্যমে সামাজিক অবক্ষয়, যেমন - দুর্নীতি, অন্যায়, বিশৃঙ্খলা ইত্যাদি রোধ করা সম্ভব হয়। অন্যান্য বিকল্পগুলো (দুর্নীতি রোধ, রাজনৈতিক অবক্ষয় রোধ) সামাজিক অবক্ষয় রোধের বৃহত্তর লক্ষ্যেরই অংশ।
১৯১. সুশাসন হচ্ছে এমন এক শাসন ব্যবস্থা যা শাসক ও শাসিতের মধ্যে–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সুশাসন হচ্ছে এমন এক শাসন ব্যবস্থা যা শাসক ও শাসিতের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলে।
ব্যাখ্যা: সুশাসনের মূল ভিত্তি হলো শাসক ও শাসিতের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা। যখন শাসক জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করেন, তখন শাসিত জনগণ শাসকদের প্রতি আস্থাশীল হয়। এই আস্থার সম্পর্কই একটি সুষম ও স্থিতিশীল শাসন ব্যবস্থার জন্ম দেয়।
১৯২. সুশাসনের পূর্বশর্ত হচ্ছে–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সুশাসনের পূর্বশর্ত হিসেবে বিভিন্ন বিষয়কে উল্লেখ করা হয়, যেমন- আইনের শাসন, জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণ, সাম্যতা ইত্যাদি।
বিকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উপযুক্ত উত্তরটি হলো অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন।
ব্যাখ্যা: অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সুশাসনের জন্য একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে। একটি দেশের জনগণ যখন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয় এবং সামাজিক দিক থেকে উন্নত (যেমন - শিক্ষা, স্বাস্থ্য) হয়, তখন তারা সচেতন হয় এবং শাসন প্রক্রিয়ায় কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। এটি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে, দুর্নীতি কমাতে এবং সামগ্রিকভাবে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দীর্ঘস্থায়ী করা কঠিন।
১৯৩. একজন জনপ্রশাসকের মৌলিক মূল্যবোধ হলো-
[ বিসিএস ৩৬তম ]
একজন জনপ্রশাসকের মৌলিক মূল্যবোধ হলো: জনকল্যাণ।
ব্যাখ্যা: একজন জনপ্রশাসকের মূল উদ্দেশ্য এবং মৌলিক মূল্যবোধ হলো জনগণের সেবা করা এবং তাদের কল্যাণ সাধন করা। কর্মদক্ষতা, স্বাধীনতা বা ক্ষমতা—এগুলো সবই জনকল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় হাতিয়ার বা গুণাবলী, কিন্তু চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো জনগণের মঙ্গল।
১৯৪. সুশাসনের পথে অন্তরায়–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
সুশাসনের পথে অন্তরায় স্বজনপ্রীতি।
ব্যাখ্যা:
- আইনের শাসন, জবাবদিহিতা এবং ন্যায়পরায়ণতা – এগুলো সুশাসনের অপরিহার্য উপাদান বা ভিত্তি। এগুলো সুশাসনের পথে অন্তরায় নয়, বরং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে।
- স্বজনপ্রীতি (Nepotism) হলো ক্ষমতার অপব্যবহার করে আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুদের অন্যায়ভাবে সুবিধা দেওয়া। এটি স্বচ্ছতা, যোগ্যতা এবং নিরপেক্ষতার পরিপন্থী, যা সুশাসনের পথে একটি বড় অন্তরায়।