বিসিএস ৩৭তম
১. কোনটি বাগধারা বোঝায়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে শিরে সংক্রান্তি হলো একটি বাগধারা।
- শিরে সংক্রান্তি বাগধারাটির অর্থ হলো: মহাবিপদ, আসন্ন বিপদ, ঘোর বিপদ বা মারাত্মক ঝামেলা।
অন্যান্য বিকল্পগুলো হলো উৎসব বা নির্দিষ্ট দিনের নাম:
- চৈত্র সংক্রান্তি: বাংলা বছরের শেষ দিন, যা একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব।
- পৌষ সংক্রান্তি: বাংলা পঞ্জিকার পৌষ মাসের শেষ দিন, যা মকর সংক্রান্তি নামেও পরিচিত এবং একটি উৎসব।
- শিব-সংক্রান্তি: এই নামে কোনো পরিচিত বাগধারা বা উৎসব নেই। সম্ভবত এটি অন্য কোনো শব্দবন্ধের ভুল রূপ।
২. কোনটি মৌলিক শব্দ?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে গোলাপ হলো একটি মৌলিক শব্দ।
মৌলিক শব্দ হলো সেইসব শব্দ যাদেরকে আর কোনো ক্ষুদ্রতম অর্থপূর্ণ অংশে ভাঙা যায় না বা বিশ্লেষণ করা যায় না। এদের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ও ব্যবহারিক অর্থ অভিন্ন হয়।
আসুন বিকল্পগুলো বিশ্লেষণ করি:
- কঃ মানব: এটি প্রকৃতি ও প্রত্যয় দ্বারা বিশ্লেষণ করা যায়। 'মনু' (প্রকৃতি) + 'অ' (প্রত্যয়) = মানব। এর অর্থ 'মনু থেকে আগত'। এটি একটি সাধিত শব্দ।
- খঃ গোলাপ: এই শব্দটিকে আর ভাঙা যায় না বা এর বিশ্লেষণ করা যায় না। এটি একটি স্বাধীন অর্থ প্রকাশ করে এবং এর কোনো ব্যুৎপত্তিগত অর্থ নেই যা এর ব্যবহারিক অর্থের থেকে আলাদা।
- গঃ একাঙ্ক: এটিও বিশ্লেষণযোগ্য। 'এক' + 'অঙ্ক' = একাঙ্ক। এর অর্থ 'এক অংকের নাটিকা' বা 'এক অংকের হিসাব'। এটি একটি সাধিত শব্দ।
- ঘঃ ধাতব: এটিও বিশ্লেষণযোগ্য। 'ধাতু' (প্রকৃতি) + 'ষ্ণ' (প্রত্যয়) = ধাতব। এর অর্থ 'ধাতু দ্বারা নির্মিত' বা 'ধাতু সম্পর্কীয়'। এটি একটি সাধিত শব্দ।
সুতরাং, গোলাপ হলো একটি মৌলিক শব্দ।
৩. বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থসমূহের মধ্যে কোনটি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর লেখা?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থসমূহের মধ্যে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর লেখা গ্রন্থটি হলো: বাংলা সাহিত্যের কথা
অন্যান্য বিকল্পগুলো হলো:
- কঃ বঙ্গভাষা ও সাহিত্য: এটি ড. দীনেশচন্দ্র সেনের লেখা।
- খঃ বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস: এটি ড. সুকুমার সেনের লেখা।
- গঃ বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত: এটি মুহম্মদ আব্দুল হাই ও সৈয়দ আলী আহসান (যৌথভাবে) অথবা অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় (এককভাবে বহু খণ্ডে) এর লেখা।
৪. ভাষা আন্দোলনভিত্তিক প্রথম পত্রিকার সম্পাদকের নাম কী?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ভাষা আন্দোলনভিত্তিক প্রথম সংকলন ‘একুশে ফেব্রুয়ারী’ -এর সম্পাদক হাসান হাফিজুর রহমান। ভাষা আন্দোলনভিত্তিক প্রথম নাটক ‘কবর’-এর রচয়িতা মুনীর চৌধুরী। ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ভাষাসৈনিক হিসেবে পরিচিত গাজীউল হক। কবি শামসুর রাহমান তার সাংবাদিকতা শুরু করেন ১৯৫৭ সালে ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য মর্নিং নিইজ’ এর সহসম্পাদক হিসেবে। পরবর্তী সময়ে তিনি ‘দৈনিক বাংলা’ এবং ‘সাপ্তাহিক বিচিত্রা’র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
৫. নিচের কোন বানানগুচ্ছের সবগুলো বানানই অশুদ্ধ?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
নিক্কণ, সূচগ্র, অনুর্ধ্ব অপশনের সবগুলো বানানই অশুদ্ধ। শুদ্ধরূপ : নিক্বণ, সূচ্যগ্র ও অনূর্ধ্ব। অন্যদিকে অপশনের অনূর্বর ও শুদ্যশুদ্ধি এবং অপশনের ভূঁড়িওয়ালা শব্দের শুদ্ধরূপ যথাক্রমে– অনুর্বর শুদ্ধাশুদ্ধি ও ভুঁড়িওয়ালা। বাকি অপশনের সবগুলো বানানই শুদ্ধ।
৬. বাংলাদেশে ‘গ্রাম থিয়েটার’-এর প্রবর্তক কে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশে 'গ্রাম থিয়েটার' একটি গুরুত্বপূর্ণ নাট্য আন্দোলন, যা গ্রামীণ সংস্কৃতি ও নাট্যচর্চাকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে শুরু হয়েছিল।
এর প্রধান দিকগুলো হলো:
-
প্রতিষ্ঠাতা ও স্বপ্নদ্রষ্টা: বাংলাদেশে গ্রাম থিয়েটার আন্দোলনের স্বপ্নদ্রষ্টা হলেন নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন। তার সাথে নাসির উদ্দীন ইউসুফও এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
-
প্রতিষ্ঠা: ২০ জানুয়ারি ১৯৮২ সালে (৬ মাঘ ১৩৮৮ বঙ্গাব্দ) ঢাকা থিয়েটারের তত্ত্বাবধানে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার তালুকনগর গ্রামে 'বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার' যাত্রা শুরু করে। তালুকনগর গ্রামের শাহ আজহার ওরফে আজাহার বয়াতীর মাঘী মেলাকে কেন্দ্র করে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছিল।
-
উদ্দেশ্য ও দর্শন: গ্রাম থিয়েটারের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলার ঐতিহ্যবাহী নাট্যরীতি ও পরিবেশনাকে নাগরিক মঞ্চের বাইরে এনে গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং গ্রামীণ সমাজের নিজস্ব জীবন, সংস্কৃতি ও সমস্যা নিয়ে নাটক তৈরি ও পরিবেশন করা। এর মূলনীতি হলো "হাতের মুঠোয় হাজার বছর আমরা চলেছি সামনে"। এটি নাগরিক ও গ্রামীণ সংস্কৃতির ব্যবধান ঘোচাতে চেয়েছিল এবং ঐতিহ্যবাহী নাট্য আঙ্গিকগুলোকে আধুনিক জীবনে উপযোগী করে তুলতে চেয়েছিল।
-
বৈশিষ্ট্য:
- বর্ণনাত্মক নাট্যরীতি: ঢাকা থিয়েটার ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার বর্ণনাত্মক নাট্যরীতি ও বর্ণনাত্মক অভিনয় রীতি উদ্ভাবন ও প্রচলনে ভূমিকা রাখে।
- খোলা মঞ্চ: বৃত্তাকার ও চৌকোণ খোলা মঞ্চের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
- গ্রামীণ কর্মী সৃষ্টি: গ্রামীণ নাট্যকর্মী তৈরি করা এবং গ্রামে গ্রামে গ্রাম থিয়েটার সংগঠন গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হয়।
-
প্রভাব: গ্রাম থিয়েটার আন্দোলন বাংলাদেশের নাট্যচর্চায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং গ্রামীণ জনপদে নাটকের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। এটি শুধু বিনোদন নয়, সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবেও কাজ করেছে। সেলিম আল দীনের অনেক নাটক, যেমন 'কিত্তনখোলা', এই গ্রাম থিয়েটার আন্দোলনের দর্শনের সাথে সম্পর্কিত।
সংক্ষেপে, বাংলাদেশে গ্রাম থিয়েটার সেলিম আল দীন ও নাসির উদ্দীন ইউসুফের নেতৃত্বে গঠিত একটি আন্দোলন যা গ্রামীণ নাট্যচর্চা এবং বাঙালির নিজস্ব নাট্যশৈলীকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে।
৭. ‘সমভিব্যাহারে’ শব্দটির অর্থ কী?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'সমভিব্যাহারে' শব্দটির অর্থ হলো:
- সঙ্গে
- সাথে
- একসঙ্গে
- একযোগে
- সম্মিলিতভাবে
- সাহচর্যে
উদাহরণস্বরূপ: "মন্ত্রী অমাত্য সমভিব্যাহারে রাজা শিকারে চললেন।" - এর অর্থ হলো "মন্ত্রী অমাত্যদের সঙ্গে রাজা শিকারে চললেন।"
৮. শৃঙ্গার রসকে বৈষ্ণব পদাবলিতে কী রস বলে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
শৃঙ্গার রসকে বৈষ্ণব পদাবলিতে মধুর রস বলা হয়।
বৈষ্ণব পদাবলির মূল বিষয়ই হলো রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা, যা এই মধুর রসের প্রকাশ। এটি কেবল জাগতিক প্রেম নয়, বরং ঈশ্বরের প্রতি ভক্তের গভীর প্রেম, ভক্তি ও আকুতিকে বোঝায়।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সম্পাদিত চর্যাপদ বিষয়ক গ্রন্থের নাম হলো বুদ্ধিস্ট মিস্টিক সংগস (Buddhist Mystic Songs)।
এই গ্রন্থটি ১৯২৯ সালে প্রকাশিত হয়। এটি চর্যাপদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণমূলক গ্রন্থ, যেখানে তিনি চর্যাপদের ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন।
১০. ‘পূর্ববঙ্গ গীতিকা’র লোকপালাসমূহের সংগ্রাহক কে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'পূর্ববঙ্গ গীতিকা'র লোকপালাসমূহের প্রধান সংগ্রাহক হলেন চন্দ্রকুমার দে।
ড. দীনেশচন্দ্র সেনের অনুপ্রেরণায় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় চন্দ্রকুমার দে পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসব লোকপালা সংগ্রহ করেন। পরে ড. দীনেশচন্দ্র সেন সেগুলো সম্পাদনা করে 'পূর্ববঙ্গ গীতিকা' নামে প্রকাশ করেন।
১১. ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’-এর অর্থ কী?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'চর্যাচর্যবিনিশ্চয়' হলো চর্যাপদের মূল শিরোনাম। এর অর্থ হলো:
- করণীয় ও অকরণীয় সম্পর্কে সুনিশ্চিত জ্ঞান
- আচরণীয় ও অনাচরণীয়ের বিচার
- কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়, তার নিশ্চিত সিদ্ধান্ত
সহজ ভাষায়, এটি এমন একটি বিষয় যা ভালো-মন্দ, করণীয়-অকরণীয়, বা সঠিক-বেঠিক আচরণের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করে। চর্যাপদগুলো মূলত বৌদ্ধ সহেজিয়া সাধকদের গুহ্য সাধনপদ্ধতি ও দর্শনের ইঙ্গিতবাহী, এবং 'চর্যাচর্যবিনিশ্চয়' বলতে সেই সাধনার পথ ও পদ্ধতির সঠিক দিকনির্দেশনাকেই বোঝানো হয়েছে।
১২. ‘গোরক্ষ বিজয়’ কাব্য কোন ধর্মমতের কাহিনি অবলম্বনে লেখা?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'গোরক্ষ বিজয়' কাব্যটি নাথধর্ম মতের কাহিনি অবলম্বনে লেখা।
এটি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাব্যগ্রন্থ, যা শেখ ফয়জুল্লাহ রচনা করেন। এই কাব্যের মূল বিষয়বস্তু হলো নাথ বিশ্বাস-জাত যোগের মহিমা এবং গুরু মৎস্যেন্দ্রনাথকে তার শিষ্য গোরক্ষনাথের কদলী রাজ্য থেকে উদ্ধারের কাহিনী। নাথধর্ম মূলত শৈবধর্ম এবং বৌদ্ধ সহজযানের মিশ্রণে গঠিত একটি যোগ-তান্ত্রিক ধর্মমত।
১৩. শাক্ত পদাবলির জন্য বিখ্যাত –
[ বিসিএস ৩৭তম ]
শাক্ত পদাবলির জন্য বিখ্যাত হলেন প্রধানত রামপ্রসাদ সেন।
তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট বাঙালি শাক্ত কবি ও সাধক। তার রচিত কালীবিষয়ক গানগুলো 'রামপ্রসাদী' বা 'শ্যামা সঙ্গীত' নামে পরিচিত, যা বাংলা শাক্ত পদাবলির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
রামপ্রসাদ সেন ছাড়াও, কমলাকান্ত ভট্টাচার্য শাক্ত পদাবলির আরেকজন উল্লেখযোগ্য কবি। তিনি রামপ্রসাদ সেনের পরেই শাক্ত পদাবলীতে বিশেষভাবে স্মরণীয়।
১৪. ‘অলৌকিক ইস্টিমার’ গ্রন্থের রচয়িতা কে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'অলৌকিক ইস্টিমার' কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা হলেন হুমায়ুন আজাদ।
এটি তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ, যা ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
১৫. ‘Custom’ শব্দের পরিভাষা কোনটি যথার্থ?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'Custom' শব্দের যথার্থ পরিভাষা প্রথা।
যদিও 'Customs' (বহুবচনে) শুল্ক অর্থে ব্যবহৃত হয়, 'Custom' (একবচনে) সাধারণত প্রথা, রীতি, বা অভ্যাস বোঝায়। বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী 'Custom' শব্দের প্রধান অর্থ 'প্রথা' বা 'রীতি'।
- কঃ আইন: এর ইংরেজি পরিভাষা হলো Law বা Act।
- খঃ প্রথা: এটি 'Custom' এর একটি প্রধান এবং প্রচলিত অর্থ।
- গঃ শুল্ক: এটি সাধারণত 'Duty' বা 'Customs' (বহুবচন) এর পরিভাষা।
- ঘঃ রাজস্বনীতি: এর ইংরেজি পরিভাষা হলো Revenue Policy।
তাই, 'Custom' শব্দের যথার্থ পরিভাষা হলো প্রথা।
কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতায় 'কালাপাহাড়'কে স্মরণ করেছেন মূলত ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার এবং জীর্ণ ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও ধ্বংসের প্রতীক হিসেবে।
কালাপাহাড় ছিলেন একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব, যার আসল নাম ছিল রাজু। তিনি প্রথমে হিন্দু ছিলেন, কিন্তু পরে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তিনি মূর্তি ভাঙা এবং মন্দির ধ্বংস করার জন্য কুখ্যাত হয়ে ওঠেন। তার এই কর্মকাণ্ডকে অনেকে ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিবাদ বা পুরাতন জীর্ণতার বিনাশ হিসেবে দেখতেন।
নজরুল ছিলেন একজন বিদ্রোহী কবি। তিনি তার কবিতায় সামাজিক অবিচার, শোষণ, ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার এবং পুরনো পচা ধ্যান-ধারণার বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। তিনি পরাধীনতা ও সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে মানবতাকে স্থান দিয়েছেন। কালাপাহাড়ের চরিত্রকে নজরুল তার এই বিদ্রোহের আদর্শের সাথে মিলিয়ে দেখেছিলেন।
নজরুলের কাছে কালাপাহাড় ছিলেন সেই প্রতীক, যিনি পুরাতন, জীর্ণ এবং অকল্যাণকর প্রথা ও প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে চুরমার করতে পারেন, যাতে নতুন কিছু গড়ে উঠতে পারে। যেমন, তার বিখ্যাত 'বিদ্রোহী' কবিতায় তিনি নিজেকে 'আমি কালাপাহাড়' বলে ঘোষণা করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, তিনি বিদ্যমান অন্যায় ও অসঙ্গতিকে ভেঙে ফেলবেন, যেমন কালাপাহাড় মূর্তি ভেঙেছিলেন। এখানে মূর্তি ভাঙা আক্ষরিক অর্থে না হয়ে রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে - পুরাতন অন্যায়, শোষণ ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক বিদ্রোহ।
সুতরাং, সংক্ষেপে, নজরুল কালাপাহাড়কে স্মরণ করেছেন পুরাতন ও জীর্ণ প্রথার বিনাশকারী এবং বিদ্রোহের প্রতীক হিসেবে।
১৭. ‘প্রদীপ নিবিয়া গেল।’–এ বিখ্যাত বর্ণনা কোন উপন্যাসের?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'প্রদীপ নিবিয়া গেল!' – এই বিখ্যাত বর্ণনাটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর উপন্যাস 'কপালকুণ্ডলা' থেকে নেওয়া হয়েছে।
এটি উপন্যাসের দ্বিতীয় খণ্ডের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ 'পান্থনিবাসে'-এর শেষ বাক্য, যা কপালকুণ্ডলার জীবনে এক নতুন মোড় এবং বিয়োগান্তক ঘটনার ইঙ্গিত দেয়।
১৮. ‘মাতৃভাষায় যাহার ভক্তি নাই সে মানুষ নহে।’ –কার উক্তি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'মাতৃভাষায় যাহার ভক্তি নাই সে মানুষ নহে।' – এই উক্তিটি মীর মশাররফ হোসেনের।
এটি তার একটি বিখ্যাত উক্তি যা মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরে।
১৯. বর্গের কোন বর্ণসমূহের ধ্বনি মহাপ্রাণধ্বনি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বর্গের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বর্ণসমূহের ধ্বনি মহাপ্রাণধ্বনি।
বাংলা বর্ণমালায় ক থেকে ম পর্যন্ত ২৫টি ব্যঞ্জনবর্ণকে স্পর্শবর্ণ বা বর্গীয় বর্ণ বলা হয়। এই বর্ণগুলোকে উচ্চারণ স্থান ও রীতি অনুসারে পাঁচটি বর্গে ভাগ করা হয়েছে: ক-বর্গ, চ-বর্গ, ট-বর্গ, ত-বর্গ, প-বর্গ। প্রতিটি বর্গের পাঁচটি করে বর্ণ আছে।
মহাপ্রাণধ্বনি হলো সেইসব ধ্বনি যা উচ্চারণের সময় মুখগহ্বর থেকে অধিক বায়ুপ্রবাহ নির্গত হয়।
প্রতিটি বর্গের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বর্ণ মহাপ্রাণধ্বনি। উদাহরণস্বরূপ:
- ক-বর্গ: ক, খ, গ, ঘ, ঙ
- 'খ' এবং 'ঘ' হলো মহাপ্রাণধ্বনি।
- চ-বর্গ: চ, ছ, জ, ঝ, ঞ
- 'ছ' এবং 'ঝ' হলো মহাপ্রাণধ্বনি।
- ট-বর্গ: ট, ঠ, ড, ঢ, ণ
- 'ঠ' এবং 'ঢ' হলো মহাপ্রাণধ্বনি।
- ত-বর্গ: ত, থ, দ, ধ, ন
- 'থ' এবং 'ধ' হলো মহাপ্রাণধ্বনি।
- প-বর্গ: প, ফ, ব, ভ, ম
- 'ফ' এবং 'ভ' হলো মহাপ্রাণধ্বনি।
এছাড়াও, কিছু উষ্ম বা শিস ধ্বনি (যেমন শ, ষ, স, হ) মহাপ্রাণধ্বনি হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে বর্গের বর্ণসমূহের মধ্যে দ্বিতীয় ও চতুর্থ বর্ণগুলোই মহাপ্রাণ।
২০. ‘কদাকার’ শব্দটি কোন উপসর্গযোগে গঠিত?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'কদাকার' শব্দটি 'কৎ' উপসর্গযোগে গঠিত।
শব্দটি এসেছে 'কৎ' (মন্দ/কুৎসিত) + 'আকার' থেকে, যার অর্থ কুৎসিত আকার বা বিশ্রী দেখতে। 'কৎ' এখানে একটি বাংলা উপসর্গ।
প্রশ্নে ‘যুক্তাক্ষর’ -এর স্থলে হবে ‘মুক্তাক্ষর’। কবিতায় নির্দিষ্ট একটি সুর বা গতি দেওয়ার জন্য ছন্দব্যাকরণ তৈরি হয়েছে। ছন্দ পর্ব ও মাত্রানির্ভর, তাই ছন্দের নামকরণ করা হয়েছে তিনভাগে- অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত, ও স্বরবৃত্ত। অক্ষরবৃত্ত ধীরগতির - তাই এর মাত্রা হবে মুক্তাক্ষর এক মাত্রা, বদ্ধাক্ষর এককভাবে দুই মাত্রা, শেষে দুই মাত্রা আর প্রথম ও মাঝে এক মাত্রা। মাত্রাবৃত্ত ছন্দে মুক্তাক্ষর এক মাত্রা ও বদ্ধাক্ষর দুই মাত্রা হয়। আর স্বরবৃত্ত ছন্দে মুক্তাক্ষর ও বদ্ধাক্ষর সব সময় এক মাত্রা গণনা করা হয়।
২২. নিচের কোনটি অশুদ্ধ?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
আসুন, প্রতিটি জোড়া বিশ্লেষণ করে দেখি কোনটি অশুদ্ধ:
-
কঃ অহিংস–সহিংস
- 'অহিংস' (হিংসা বর্জিত) এর বিপরীত শব্দ 'সহিংস' (হিংসা যুক্ত)। এটি শুদ্ধ।
-
খঃ প্রসন্ন–বিষণ্ন
- 'প্রসন্ন' (আনন্দিত, খুশি) এর বিপরীত শব্দ 'বিষণ্ন' (বিষাদগ্রস্ত, দুঃখিত)। এটি শুদ্ধ।
-
গঃ দোষী–নির্দোষী
- 'দোষী' (অপরাধী, দোষযুক্ত) এর বিপরীত শব্দ 'নির্দোষ' (দোষমুক্ত)। 'নির্দোষী' বলে কোনো শব্দ নেই বা এটি ব্যাকরণগতভাবে অশুদ্ধ। এটি অশুদ্ধ।
-
ঘঃ নিষ্পাপ–পাপিনী
- 'নিষ্পাপ' (পাপমুক্ত) এর বিপরীত শব্দ হিসেবে 'পাপী' বা 'পাপীনি' (পাপযুক্ত ব্যক্তি বা নারী) ব্যবহৃত হতে পারে। যদিও 'পাপীনি' শব্দটি 'পাপী' শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ রূপ, এটি 'নিষ্পাপ' এর সরাসরি বিপরীত শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে, 'দোষী-নির্দোষী'র মতো এটি ততটা প্রকট ভুল নয়।
সবচেয়ে স্পষ্ট এবং ব্যাকরণগতভাবে ভুল জোড়াটি হলো গঃ দোষী–নির্দোষী। 'নির্দোষী' বলে কোনো শব্দ নেই। সঠিক বিপরীত শব্দ হলো 'নির্দোষ'।
অতএব, সঠিক উত্তর হলো গঃ দোষী–নির্দোষী।
২৩. ‘কল্লোল’ পত্রিকার প্রথম সম্পাদকের নাম কী?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'কল্লোল' বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকা। এটি ১৯২৩ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় এবং ১৯২৯ সাল পর্যন্ত এর প্রকাশনা চলে। এই পত্রিকাটিকে কেন্দ্র করেই বাংলা সাহিত্যে একটি নতুন ধারার সূচনা হয়, যা 'কল্লোল যুগ' নামে পরিচিত।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ:
- প্রকাশকাল: ১৯২৩ সাল (১৩৩০ বঙ্গাব্দের ১লা বৈশাখ)।
- প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম সম্পাদক: দীনেশরঞ্জন দাশ।
- উদ্দেশ্য: 'কল্লোল' ছিল রবীন্দ্র-প্রভাব বলয়ের বাইরে এসে বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতা ও নতুনত্বের অন্বেষণের এক প্রচেষ্টা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর কালে সমাজের পরিবর্তিত মনস্তত্ত্ব, বিদ্রোহ, ফ্রয়েডীয় মনস্তত্ত্ব এবং মার্কসবাদী চিন্তাভাবনার প্রভাব এই পত্রিকার লেখকদের মধ্যে দেখা যায়।
- উল্লেখযোগ্য লেখকবৃন্দ: অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র, বুদ্ধদেব বসু, কাজী নজরুল ইসলাম, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ এই পত্রিকার নিয়মিত লেখক ছিলেন।
- বৈশিষ্ট্য:
- রবীন্দ্র বিরোধিতা: যদিও সরাসরি বিরোধিতা ছিল না, তবে রবীন্দ্র-রোমান্টিক ধারার বাইরে গিয়ে জীবনের বাস্তবতাকে, এমনকি সমাজের অন্ধকার দিকগুলোকেও তুলে ধরতে এই পত্রিকা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
- আধুনিকতার সূত্রপাত: বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার এক নতুন জোয়ার এনেছিল 'কল্লোল'। এর মাধ্যমে নতুন জীবনবোধ, নতুন ভাবনা এবং নতুন লেখার কৌশল প্রবেশ করে।
- যৌনতা ও বিদ্রোহ: কিছু লেখায় তৎকালীন সমাজের প্রচলিত রীতির বাইরে গিয়ে যৌনতা ও বিদ্রোহের প্রকাশ ছিল, যা বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছিল।
- প্রভাব: 'কল্লোল' শুধুমাত্র একটি পত্রিকা ছিল না, এটি একটি সাহিত্য আন্দোলন ছিল। এই আন্দোলনের ফলস্বরূপ আরও অনেক পত্রিকা, যেমন 'উত্তরা', 'প্রগতি', 'কালিকলম' ইত্যাদি প্রকাশিত হয়, যা রবীন্দ্রোত্তর বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে।
- পতন: নানা কারণে ১৯২৯ সালে কল্লোলের প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু এর প্রভাব বাংলা সাহিত্যে সুদূরপ্রসারী ছিল।
সংক্ষেপে, 'কল্লোল' পত্রিকা বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রযুগের পর আধুনিকতার উন্মোচন এবং নতুন জীবনবোধ ও রচনারীতি প্রসারের ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে।
২৪. ‘আমি এ কথা, এ ব্যথা, সুখব্যাকুলতা কাহার চরণতলে দিব নিছনি’– রবীন্দ্রনাথের এ গানে ‘নিছনি’ কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
রবীন্দ্রনাথের এই গানে 'নিছনি' শব্দটি পূজা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
'নিছনি' বা 'নেওয়াজ' শব্দটি মূলত কাউকে শ্রদ্ধা বা ভক্তি সহকারে কিছু নিবেদন করা বা উৎসর্গ করা অর্থে ব্যবহৃত হয়, যা পূজার একটি অংশ। এখানে কবি তার কথা, ব্যথা, সুখ এবং ব্যাকুলতা সবকিছুই প্রিয়জনের চরণে নিবেদন করতে চাইছেন, যা এক প্রকার আত্মনিবেদন বা ভক্তির প্রকাশ, যা পূজারই সমার্থক।
অন্যান্য বিকল্পগুলো এখানে ততটা যথার্থ নয়:
- অপনোদন অর্থে: অপনোদন মানে দূর করা বা অপসারণ করা। এখানে নিবেদন করা হচ্ছে, দূর করা নয়।
- বিলানো অর্থে: বিলানো মানে বিতরণ করা বা ছড়িয়ে দেওয়া। এখানে নির্দিষ্ট চরণে নিবেদন করা হচ্ছে, যা বিতরণের থেকে ভিন্ন।
- উপহার অর্থে: উপহার দেওয়া ঠিকই, কিন্তু 'নিছনি'র মধ্যে ভক্তি ও আত্মনিবেদনের যে গভীরতা আছে, তা কেবল 'উপহার' শব্দে পুরোপুরি প্রকাশ পায় না। 'পূজা' শব্দে সেই ভক্তি ও নিবেদনের অর্থ আরও গভীরভাবে প্রকাশ পায়।
২৫. ‘ধর্ম সাধারণ লোকের সংস্কৃতি, আর সংস্কৃতি শিক্ষিত মার্জিত লোকের ধর্ম।’ – কে বলেছেন?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'ধর্ম সাধারণ লোকের সংস্কৃতি, আর সংস্কৃতি শিক্ষিত মার্জিত লোকের ধর্ম।' – এই বিখ্যাত উক্তিটি মোতাহের হোসেন চৌধুরীর।
এটি তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধগ্রন্থ 'সংস্কৃতি-কথা'-তে উল্লেখিত হয়েছে। এই উক্তিটির মাধ্যমে তিনি ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যে একটি গভীর সম্পর্ক স্থাপন করেছেন এবং এই দুইয়ের কার্যকারিতা সমাজের বিভিন্ন স্তরে কীভাবে ভিন্নভাবে প্রকাশিত হয় তা তুলে ধরেছেন।
২৬. কোন বাক্যটি শুদ্ধ?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রতিটি বাক্য বিশ্লেষণ করে দেখি কোনটি শুদ্ধ:
-
কঃ আপনি স্বপরিবারে আমন্ত্রিত।
- এই বাক্যটি অশুদ্ধ। 'স্বপরিবারে' শব্দটি ভুল। শুদ্ধ বানান হবে 'সপরিবারে'। 'স' উপসর্গ যুক্ত হলে 'স্ব' হয় না।
- শুদ্ধ বাক্য: আপনি সপরিবারে আমন্ত্রিত।
-
খঃ তার কথা শুনে আমি আশ্চর্যান্বিত হলাম।
- এই বাক্যটি শুদ্ধ। 'আশ্চর্য' থেকে 'আশ্চর্যান্বিত' শব্দটি গঠিত, যার অর্থ আশ্চর্য বোধ করা বা বিস্মিত হওয়া।
-
গঃ তোমার পরশ্রীকাতরতায় আমি মুগ্ধ।
- এই বাক্যটি অশুদ্ধ। 'পরশ্রীকাতরতা' (অন্যের উন্নতিতে ঈর্ষা) একটি নেতিবাচক গুণ। এতে কেউ 'মুগ্ধ' হয় না। বরং 'বিরক্ত' বা 'ক্ষুব্ধ' হতে পারে। এটি অর্থের দিক থেকে ভুল।
- শুদ্ধ বাক্য: তোমার পরশ্রীকাতরতায় আমি বিরক্ত/ক্ষুব্ধ হলাম।
-
ঘঃ সেদিন থেকে তিনি সেখানে আর যায় না।
- এই বাক্যটি অশুদ্ধ। 'তিনি' একটি সম্মানসূচক সর্বনাম, তাই এর সাথে 'যায় না' ক্রিয়াটি ব্যবহার করা ভুল। শুদ্ধ ক্রিয়াপদ হবে 'যান না'।
- শুদ্ধ বাক্য: সেদিন থেকে তিনি সেখানে আর যান না।
সুতরাং, শুদ্ধ বাক্যটি হলো খঃ তার কথা শুনে আমি আশ্চর্যান্বিত হলাম।
২৭. Ode কী?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
Ode-এর আভিধানিক অর্থ গীতিকবিতা বা গাথাকবিতা। অনেকে Ode-কে স্তোত্র কবিতা বা স্তুতি বা গুণকীর্তন জাতীয় কবিতা বলেছেন। গ্রিক Ode এক বা একাধিক কণ্ঠে গাওয়ার জন্য কোরাস ও নৃত্যের লয় অনুসরণ করে রচনা করা হতো। যেহেতু এটি কোরাস করে গাওয়া হতো তাই (ঘ) সঠিক। Elegy অর্থ শোককবিতা।
২৮. মুহম্মদ আবদুল হাই রচিত ধ্বনিবিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থের নাম কী?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ড. মুহম্মদ আবদুল হাই রচিত ধ্বনিবিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থের নাম হলো 'ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব'। এটি ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয়।
২৯. ‘জলে-স্থলে’ কী সমাস?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
‘জলে-স্থলে’ হলো * অলুক দ্বন্দ্ব** সমাস।
'জলে-স্থলে' হলো একটি অলুক দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ।
অলুক দ্বন্দ্ব সমাস: যে দ্বন্দ্ব সমাসে সমস্যমান পদের বিভক্তি (যেমন এখানে 'জল' এর সাথে 'এ' বিভক্তি এবং 'স্থল' এর সাথে 'এ' বিভক্তি) সমাসবদ্ধ হওয়ার পরেও লুপ্ত হয় না, তাকে অলুক দ্বন্দ্ব সমাস বলে।
- জল + এ = জলে
- স্থল + এ = স্থলে
- ব্যাসবাক্য: জলে ও স্থলে
অন্যান্য বিকল্পগুলো সঠিক নয়:
- সমার্থক দ্বন্দ্ব: যেখানে উভয় পদ সমার্থক হয় (যেমন: হাট-বাজার, কাগজ-পত্র)। 'জল' ও 'স্থল' সমার্থক নয়।
- বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব: যেখানে উভয় পদ বিপরীতার্থক হয় (যেমন: আয়-ব্যয়, ভালো-মন্দ)। 'জল' ও 'স্থল' বিপরীতার্থক নয়, বরং ভিন্ন স্থান বোঝায়।
- একশেষ দ্বন্দ্ব: যেখানে একাধিক পদ মিলে একটিমাত্র পদ অবশিষ্ট থাকে এবং সেই পদটি উভয় লিঙ্গ ও বচন নির্দেশ করে (যেমন: আমরা = তুমি, আমি ও সে)। 'জলে-স্থলে' একশেষ দ্বন্দ্ব নয়।
৩০. ‘ঔ’ কোন ধরনের স্বরধ্বনি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'ঔ' হলো একটি যৌগিক স্বরধ্বনি বা দ্বিস্বরধ্বনি (Diphthong)।
যৌগিক স্বরধ্বনি বলতে বোঝায় দুটি স্বরধ্বনি পাশাপাশি দ্রুত উচ্চারিত হয়ে একটি স্বরধ্বনির মতো শোনায়, যেখানে প্রথম স্বরধ্বনির উচ্চারণ শুরু হয়ে দ্বিতীয় স্বরধ্বনিতে গিয়ে শেষ হয়। 'ঔ' ধ্বনিটি মূলত 'ও' এবং 'উ' এই দুটি স্বরধ্বনির সম্মিলিত রূপ। অর্থাৎ, এর উচ্চারণ 'ওউ' এর মতো শোনায়।
৩১. ‘বিস্ময়াপন্ন’ সমস্ত পদটির সঠিক ব্যাসবাক্য কোনটি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'বিস্ময়াপন্ন' সমস্ত পদটির সঠিক ব্যাসবাক্য হলো: বিস্ময়কে আপন্ন
এটি দ্বিতীয় তৎপুরুষ সমাসের উদাহরণ। (কে/রে বিভক্তি লুপ্ত হয়েছে)।
- আপন্ন শব্দের অর্থ হলো 'প্রাপ্ত' বা 'প্রাপ্ত হয়েছে এমন'।
- সুতরাং, 'বিস্ময়কে আপন্ন' বলতে বোঝায় 'বিস্ময় প্রাপ্ত হয়েছে এমন' বা 'বিস্ময়ে অভিভূত'।
৩২. কবি কায়কোবাদ রচিত ‘মহাশ্মশান’ কাব্যের ঐতিহাসিক পটভূমি ছিল–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
কবি কায়কোবাদ রচিত বিখ্যাত মহাকাব্য 'মহাশ্মশান'-এর ঐতিহাসিক পটভূমি ছিল ১৭৬১ সালের তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধ।
এই যুদ্ধ ছিল ভারতের উদীয়মান হিন্দুশক্তি মারাঠাদের সঙ্গে মুসলিমশক্তি তথা আহমদ শাহ আবদালীর নেতৃত্বে রোহিলা-অধিপতি নজীবউদ্দৌলার মধ্যে সংঘটিত এক ভয়াবহ যুদ্ধ। যদিও এই যুদ্ধে মুসলমানরা জয়লাভ করেছিল, কিন্তু কবির দৃষ্টিতে এটি উভয় পক্ষের জন্যই ছিল এক বিশাল শক্তিক্ষয় ও ধ্বংসের প্রতিচ্ছবি। এই কারণেই কবি এই যুদ্ধক্ষেত্রকে 'মহাশ্মশান' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যেখানে মানবতা ও উভয় জাতির গৌরবই যেন শ্মশানে পরিণত হয়েছিল।
৩৩. সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের গ্রন্থ কোনটি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের গ্রন্থটি হলো অলীক মানুষ।
এটি তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং বহুল প্রশংসিত উপন্যাস, যার জন্য তিনি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন।
৩৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্য প্রকাশিত হয় কত সনে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'গীতাঞ্জলি' একটি বিশ্ববিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ, যা বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি এবং রবীন্দ্রনাথকে ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার এনে দিয়েছিল।
প্রকাশনা ও বিষয়বস্তু
-
বাংলা গীতাঞ্জলি: এটি ১৯১০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর (১৩১৭ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে) প্রকাশিত হয়। এই কাব্যগ্রন্থে মোট ১৫৭টি গীতিকবিতা সংকলিত হয়েছে। কবিতাগুলো মূলত ব্রাহ্ম-ভাবাপন্ন ভক্তিমূলক রচনা, যেখানে মানুষ ও ঈশ্বরের মধ্যে এক গভীর আধ্যাত্মিক সম্পর্ক, প্রেম, ভক্তি, প্রকৃতি ও জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। এর বেশিরভাগ কবিতাতেই রবীন্দ্রনাথ নিজে সুরারোপ করেছিলেন।
-
ইংরেজি গীতাঞ্জলি (Song Offerings): ১৯১২ সালে লন্ডনে 'Gitanjali (Song Offerings)' নামে এর ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয়। এই অনুবাদটি রবীন্দ্রনাথ নিজেই করেছিলেন। মজার বিষয় হলো, ইংরেজি 'গীতাঞ্জলি'তে বাংলা 'গীতাঞ্জলি'র সব কবিতা ছিল না। এতে মূল বাংলা গীতাঞ্জলির মাত্র ৫১টি এবং রবীন্দ্রনাথের অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ (যেমন - গীতিমাল্য, নৈবেদ্য, খেয়া, শিশু, কল্পনা, চৈতালি, উৎসর্গ, স্মরণ, অচলায়তন) থেকে নেওয়া আরও কিছু কবিতা/গানসহ মোট ১০৩টি কবিতা সংকলিত হয়েছিল। আইরিশ কবি উইলিয়াম বাটলার ইয়েটস (W. B. Yeats) এই ইংরেজি সংস্করণের অসাধারণ একটি ভূমিকা লিখেছিলেন, যা পাশ্চাত্যে এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।
নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি
১৯১৩ সালে 'Song Offerings' কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রথম ভারতীয় এবং প্রথম এশীয় হিসেবে এই সম্মানজনক পুরস্কার অর্জন করেন। সুইডিশ একাডেমি তার "গভীরভাবে সংবেদনশীল, তাজা এবং সুন্দর শ্লোক" এবং "পরিপূর্ণ দক্ষতার সাথে, তিনি তার কাব্যিক চিন্তাভাবনাকে তার নিজস্ব ইংরেজি ভাষায় প্রকাশ করেছেন, যা পাশ্চাত্যের সাহিত্যের একটি অংশ" - এই কারণ দেখিয়ে তাকে পুরস্কার প্রদান করে।
তাৎপর্য
'গীতাঞ্জলি'র মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ শুধু বাংলা সাহিত্যকে নয়, ভারতীয় আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক চিন্তাধারাকে বিশ্ব দরবারে নতুন করে তুলে ধরেন। এর কবিতাগুলোতে নিগূঢ় আধ্যাত্মিকতা, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের আত্মিক সংযোগ, এবং পরম সত্তার প্রতি আত্মসমর্পণের এক অসামান্য চিত্র ফুটে উঠেছে, যা বিশ্বজুড়ে পাঠককে আকৃষ্ট করেছে। 'গীতাঞ্জলি' রবীন্দ্রনাথকে 'বিশ্বকবি' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এবং বাংলা ভাষার গৌরব বৃদ্ধি করে।
৩৫. ‘আসাদের শার্ট’ কবিতার লেখক কে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'আসাদের শার্ট' কবিতার লেখক হলেন শামসুর রাহমান।
এই কবিতাটি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আসাদুজ্জামানের রক্তমাখা শার্টকে নিয়ে রচিত, যা তৎকালীন স্বৈরাচারী শাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। কবিতাটি শামসুর রাহমানের 'নিজ বাসভূমে' (১৯৭০) কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত।
৩৬. Which of the following words is in singular form?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রদত্ত শব্দগুলোর মধ্যে যেটি একবচন রূপে আছে সেটি হলো: radius
কারণ:
- কঃ formulae: এটি "formula" শব্দের বহুবচন। "formula" হলো একবচন।
- খঃ agenda: এটি মূলত "agendum" শব্দের বহুবচন হলেও, আধুনিক ইংরেজিতে "agenda" শব্দটি প্রায়শই একবচন হিসেবে "আলোচ্যসূচী" অর্থে ব্যবহৃত হয়। তবে এর মূল উৎপত্তি বহুবচন হিসেবেই।
- গঃ oases: এটি "oasis" শব্দের বহুবচন। "oasis" হলো একবচন।
- ঘঃ radius: এটি একবচন শব্দ। এর বহুবচন হলো "radii" (রেডিআই) বা "radiuses"।
৩৭. Choose the correct sentence:
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সঠিক বাক্যটি হলো: All of it depends on you
কারণ:
- এখানে 'All of it' বলতে একটি একক সমষ্টিকে বোঝানো হচ্ছে, যা একবচন হিসেবে গণ্য হয়। তাই এর সাথে একবচন ক্রিয়াপদ 'depends' বসবে।
- 'depend' ক্রিয়াপদের সাথে 's' যোগ করে একবচন করা হয়েছে।
অন্যান্য বিকল্পগুলো ভুল:
- কঃ All of it depend on you - এখানে 'depend' বহুবচন ক্রিয়া, যা 'All of it' (একবচন) এর সাথে মেলে না।
- খঃ All of it are depending on you - 'are' বহুবচন এবং 'depending' (বর্তমান নিরবচ্ছিন্ন) এখানে সঠিক প্রয়োগ নয়।
- ঘঃ All of it are depended on you - 'are depended' Passive Voice গঠন, যা এখানে অর্থের দিক থেকে অসংলগ্ন।
"A rolling stone gathers no moss" এই বাক্যটির জটিল (Complex) রূপ হলো: A stone that rolls gathers no moss.
কারণ:
- একটি জটিল বাক্যে একটি প্রধান খণ্ডবাক্য (main clause) এবং অন্তত একটি অধীনস্থ খণ্ডবাক্য (subordinate clause) থাকে।
- এখানে "A stone gathers no moss" হলো প্রধান খণ্ডবাক্য।
- "that rolls" হলো একটি আপেক্ষিক বা রিলেটিভ খণ্ডবাক্য, যা "stone" সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য দিচ্ছে। এটি একটি অধীনস্থ খণ্ডবাক্য যা 'that' (একটি রিলেটিভ প্রোনাউন) দিয়ে শুরু হয়েছে।
অন্যান্য বিকল্পগুলো সঠিক নয়:
- কঃ Since a stone is rolling, it gathers no moss. - এটি একটি কারণবাচক জটিল বাক্য, কিন্তু মূল বাক্যটির অর্থ বা গঠনকে সঠিকভাবে প্রকাশ করে না।
- খঃ Though a stone rolls, it gathers no moss. - এটি একটি বৈপরীত্যবাচক জটিল বাক্য, যা মূল বাক্যটির অর্থের সাথে পুরোপুরি মেলে না।
- গঃ A stone what rolls gathers no moss. - এখানে 'what' এর ব্যবহার ব্যাকরণগতভাবে ভুল। 'that' বা 'which' ব্যবহৃত হবে।
৩৯. A chart was appended to the report. Here ‘appended’ means–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'A chart was appended to the report.' এই বাক্যে 'appended' শব্দের অর্থ হলো:
joined
'Append' শব্দের অর্থ হলো কোনো কিছুকে অন্য কিছুর সাথে যুক্ত করা, বিশেষ করে কোনো নথি বা লেখার শেষে কিছু যোগ করা।
অন্যান্য বিকল্পগুলো ভুল:
- কঃ changed (পরিবর্তিত)
- খঃ removed (অপসারণ করা হয়েছে)
- ঘঃ shortened (সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে)
'The mother sat vigilantly beside the sick baby.' এই বাক্যে 'vigilantly' শব্দটি হলো: an adverb (ক্রিয়াবিশেষণ)
কারণ: 'Vigilantly' শব্দটি 'vigilant' (সতর্ক) বিশেষণ থেকে এসেছে এবং এর শেষে '-ly' যুক্ত হয়েছে, যা সাধারণত ক্রিয়াবিশেষণ তৈরি করে। এটি 'sat' ক্রিয়াকে (বসেছিলেন) বিশেষায়িত করছে, অর্থাৎ মা কীভাবে বসেছিলেন (সতর্কভাবে)।
৪১. The new offer of job was alluring. Here ‘alluring’ means –
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'The new offer of job was alluring.' এই বাক্যে 'alluring' শব্দের অর্থ হলো: tempting (লোভনীয় বা আকর্ষণীয়)
'Alluring' মানে অত্যন্ত আকর্ষণীয় বা প্রলুব্ধকর, যা কাউকে তার দিকে টানতে পারে।
অন্যান্য বিকল্পগুলো ভুল:
- কঃ unexpected (অপ্রত্যাশিত)
- গঃ disappointing (হতাশাজনক)
- ঘঃ ordinary (সাধারণ)
"Who planted this tree here"? এই বাক্যটির সঠিক প্যাসিভ ভয়েস (Passive Voice) হলো:
By whom the tree was planted here?
কারণ:
- মূল বাক্যটি Past Simple Tense-এ আছে।
- 'Who' দ্বারা প্রশ্ন করা হলে প্যাসিভ করার সময় 'By whom' ব্যবহার করা হয়।
- Past Simple-এর প্যাসিভ গঠনে 'was/were + V3' (ক্রিয়ার Past Participle রূপ) ব্যবহৃত হয়।
- এখানে 'this tree' হলো Singular Subject, তাই 'was' ব্যবহৃত হয়েছে।
অন্যান্য বিকল্পগুলো ভুল:
- খঃ Who the tree had been planted hereby? - 'had been planted' Past Perfect-এর প্যাসিভ এবং 'hereby' এর ব্যবহার ভুল।
- গঃ The tree was planted here by whom - এটি প্রশ্নবোধক বাক্য নয়, একটি বিবৃতি।
- ঘঃ By whom had the tree been planted here? - 'had been planted' Past Perfect-এর প্যাসিভ, যা মূল বাক্যের Tense-এর সাথে মেলে না।
৪৩. Fraility the name is women. Here ‘Fraility’ is:
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'Frailty, thy name is woman.' (এটি শেক্সপিয়রের হ্যামলেট নাটকের একটি বিখ্যাত উক্তি, যদিও প্রশ্নে 'thy' এর পরিবর্তে 'the' এবং 'woman' এর পরিবর্তে 'women' লেখা হয়েছে, তবে মূল অর্থ একই থাকে)।
এই বাক্যে 'Frailty' হলো:
A noun (বিশেষ্য)
কারণ: 'Frailty' মানে হলো দুর্বলতা বা ভঙ্গুরতা। এটি একটি গুণ বা অবস্থার নাম বোঝায়, তাই এটি বিশেষ্য পদ।
৪৪. Education is enlightening. Here ‘enlightening’ is:
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'Education is enlightening.' এই বাক্যে 'enlightening' হলো: A participle (অংশীপদ)
কারণ:
- এখানে 'enlightening' শব্দটি 'Education' (শিক্ষা) সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য দিচ্ছে, অর্থাৎ শিক্ষা কেমন – এটি 'আলোকিত করার মতো' বা 'বোধদায়ক'।
- এটি একটি বর্তমান অংশীপদ (Present Participle) যা একটি বিশেষণ (adjective) হিসেবে কাজ করছে। এটি সরাসরি 'is' (finite verb) এর পরে বসে 'Education' এর একটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করছে।
অন্যান্য বিকল্পগুলো ভুল:
- কঃ A gerund (বিশেষ্যবাচক ক্রিয়াবিশেষণ): জেরান্ড ক্রিয়ার সাথে ing যোগ করে তৈরি হয় এবং তা বিশেষ্য হিসেবে কাজ করে (যেমন: Reading is my hobby. – এখানে Reading বিশেষ্য)। এখানে enlightening বিশেষ্য হিসেবে কাজ করছে না।
- গঃ An infinitive (অসমাপিকা ক্রিয়া): ইনফিনিটিভ হলো 'to + verb' (যেমন: to read, to write)। এটি এখানে নেই।
- ঘঃ A finite verb (সমাপিকা ক্রিয়া): সমাপিকা ক্রিয়া বাক্যের কর্তা ও কাল অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। এখানে 'is' হলো সমাপিকা ক্রিয়া। 'enlightening' নিজে সমাপিকা ক্রিয়া নয়, এটি 'is' ক্রিয়ার পরিপূরক হিসেবে ব্যবহৃত একটি অংশীপদ।
৪৫. Choose the appropriate prepositions in the blank of the following sentence:
The family doesn't fell ____ going outing this season.
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রদত্ত বাক্যটির শূন্যস্থানে সঠিক প্রিপোজিশন (Preposition) বসবে:
The family doesn't feel like going out this season.
এখানে 'feel like' একটি ফ্রেজ (Phrase) হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যার অর্থ হলো 'ইচ্ছা করা' বা 'কোনো কিছু করতে মন চাওয়া'।
- 'feel like doing something' - এর মানে হলো 'কোনো কিছু করার ইচ্ছা পোষণ করা'।
সুতরাং, বাক্যটির অর্থ দাঁড়ায়: পরিবারটি এই মরসুমে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা করছে না।
৪৬. Fill in the blank with appropriate use of tense:
I couldn't mend the computer myself, so I ____ at a shop.
[ বিসিএস ৩৭তম ]
I couldn't mend the computer myself, so I had it mended at a shop.
- এই বাক্যে "have something done" কাঠামোটি ব্যবহৃত হয়েছে, যা বোঝায় যে কর্তা নিজে কাজটি না করে অন্য কাউকে দিয়ে কাজটি করিয়েছেন।
- এখানে 'I couldn't mend the computer myself' (আমি নিজে কম্পিউটারটি সারতে পারিনি) অংশটি দ্বারা বোঝা যাচ্ছে যে কাজটি অন্য কাউকে দিয়ে করানো হয়েছে।
- 'had' হলো 'have' এর Past Tense, কারণ প্রথম অংশটি ('couldn't') Past Tense-এ আছে।
- 'it' হলো কম্পিউটারকে নির্দেশ করছে।
- 'mended' হলো 'mend' ক্রিয়ার Past Participle রূপ।
সুতরাং, বাক্যটির অর্থ দাঁড়ায়: আমি নিজে কম্পিউটারটি সারতে পারিনি, তাই আমি একটি দোকানে সেটি সারিয়ে নিয়েছিলাম।
৪৭. Use the appropriate article:
I saw ___ one-eyed man when I was walking on the road.
[ বিসিএস ৩৭তম ]
I saw a one-eyed man when I was walking on the road.
- 'one-eyed' শব্দটির প্রথম অক্ষর 'o' একটি স্বরবর্ণ হলেও, এর উচ্চারণ শুরু হচ্ছে ব্যঞ্জনধ্বনির মতো ('ওয়া' বা 'W' ধ্বনি)।
- আর্টিকেলের ক্ষেত্রে শব্দের উচ্চারণের প্রথম ধ্বনিটি স্বরধ্বনি (vowel sound) নাকি ব্যঞ্জনধ্বনি (consonant sound) তার ওপর নির্ভর করে 'a' বা 'an' বসে।
- যেহেতু 'one-eyed' এর উচ্চারণ ব্যঞ্জনধ্বনি দিয়ে শুরু হচ্ছে, তাই এর আগে 'a' বসবে, 'an' বসবে না।
৪৮. The word ‘omnivorous’ means:
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'omnivorous' শব্দটির অর্থ হলো: eating all types of food (সব ধরনের খাবার খায়)
'Omnivorous' (সর্বভুক) প্রাণী বা ব্যক্তিকে বোঝায় যারা উদ্ভিদ এবং প্রাণী উভয়ই খায়।
অন্যান্য বিকল্পগুলো ভুল:
- খঃ eating only fruits (শুধুমাত্র ফল খায়) - এটি 'frugivore'
- গঃ eating only meat (শুধুমাত্র মাংস খায়) - এটি 'carnivore'
- ঘঃ eating grass and plants only (শুধুমাত্র ঘাস ও উদ্ভিদ খায়) - এটি 'herbivore'
৪৯. Complete the following sentence choosing the appropriate option:
It's raining cats and dogs, so–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
It's raining cats and dogs, so Make sure you take an umbrella.
- 'It's raining cats and dogs' একটি প্রবাদ, যার অর্থ মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে বা খুব জোরে বৃষ্টি পড়ছে।
- যখন খুব জোরে বৃষ্টি হয়, তখন ছাতা নিয়ে বের হওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ।
অন্যান্য বিকল্পগুলো প্রবাদের অর্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়:
- কঃ Watch out for falling animals. (পড়ে যাওয়া প্রাণীর দিকে খেয়াল রাখুন।) - এটি আক্ষরিক অর্থে ভুল এবং প্রবাদের অর্থ বোঝায় না।
- গঃ Keep your pets inside. (আপনার পোষা প্রাণীগুলিকে ভেতরে রাখুন।) - প্রবাদের সাথে এর সরাসরি সম্পর্ক নেই।
- ঘঃ Keep the windows open. (জানালা খোলা রাখুন।) - জোরে বৃষ্টি হলে জানালা খোলা রাখা উচিত নয়।
৫০. The phrase ‘Achilles’ heel means:
[ বিসিএস ৩৭তম ]
‘Achilles’ heel’ এই বাক্যাংশটির অর্থ হলো: A weak point (একটি দুর্বল দিক বা দুর্বলতা)
'Achilles' heel' (আকিলিসের গোড়ালি) হলো গ্রিক পুরাণের একটি উপকথা থেকে আসা একটি বাগধারা। অ্যাকিলিস ছিলেন একজন মহান যোদ্ধা। কথিত আছে, তার মা তাকে অমর করার জন্য শৈশবে স্টিঙ্ নামের নদীতে ডুবিয়েছিলেন, কিন্তু তার গোড়ালি ধরে রাখায় সেই অংশটি সুরক্ষিত ছিল না। ফলে, তার গোড়ালির সেই স্থানটিই তার একমাত্র দুর্বল জায়গা ছিল এবং সেখানেই আঘাত লেগে তার মৃত্যু হয়।
তাই, 'Achilles' heel' বলতে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর সবচেয়ে দুর্বল বা অরক্ষিত অংশকে বোঝায়, যা তার ধ্বংস বা পরাজয়ের কারণ হতে পারে।
৫১. He worked with all sincerity.
The underlined phrase is-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'He worked with all sincerity.' এই বাক্যে আন্ডারলাইন করা অংশটি হলো: An adverbial phrase (ক্রিয়াবিশেষণ স্থানীয় বাক্যাংশ)
- একটি ক্রিয়াবিশেষণ স্থানীয় বাক্যাংশ (Adverbial Phrase) ক্রিয়াপদকে (verb), বিশেষণকে (adjective) অথবা অন্য কোনো ক্রিয়াবিশেষণকে (adverb) বিশেষায়িত করে। এটি সাধারণত 'কীভাবে', 'কখন', 'কোথায়', 'কেন' ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর দেয়।
- এই বাক্যে 'with all sincerity' অংশটি 'worked' (কাজ করেছিল) ক্রিয়াকে বিশেষায়িত করছে। এটি 'কীভাবে কাজ করেছিল?' – এই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে (সম্পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে)।
- যেহেতু এটি ক্রিয়ার কাজ করার ধরন নির্দেশ করছে, তাই এটি একটি ক্রিয়াবিশেষণ স্থানীয় বাক্যাংশ।
৫২. This is the book I lost.
Here ‘I lost’ is–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'This is the book I lost.' এই বাক্যে 'I lost' হলো: An adjective clause (বিশেষণ স্থানীয় খণ্ডবাক্য)
- একটি বিশেষণ স্থানীয় খণ্ডবাক্য (Adjective Clause) বিশেষণের মতো কাজ করে এবং বাক্যে কোনো বিশেষ্য বা সর্বনাম সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য দেয়।
- এখানে 'I lost' অংশটি 'book' (বিশেষ্য) সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য দিচ্ছে। এটি বোঝায় "যে বইটি আমি হারিয়েছিলাম"।
- যদিও এখানে একটি সম্পর্কবাচক সর্বনাম (যেমন 'which' বা 'that') উহ্য আছে ('This is the book [which/that] I lost'), তবুও এটি একটি বিশেষণ খণ্ডবাক্য হিসেবেই কাজ করে।
৫৩. Which do you think is the nearest in meaning to ‘proviso’:
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'Proviso' শব্দের সবচেয়ে কাছের অর্থ হলো: stipulation
-
Proviso (প্রোভাইসো) মানে হলো একটি শর্ত বা বিধান যা একটি চুক্তি, দলিল বা প্রস্তাবের অংশ হিসেবে যোগ করা হয়, যেখানে একটি নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য বা কোনো কিছু কার্যকর হওয়ার জন্য একটি শর্ত থাকে। এটি প্রায়শই একটি সীমাবদ্ধতা বা শর্ত বোঝায়।
-
Stipulation (স্টিপিউলেশন) মানেও একটি নির্দিষ্ট শর্ত বা দাবি যা একটি চুক্তি বা আলোচনার অংশ হিসেবে নির্ধারিত হয়। এটি 'proviso' শব্দের অর্থের সাথে খুব নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত।
অন্যান্য বিকল্পগুলো:
- sanction (স্যাঙ্কশন): এর দুটি বিপরীত অর্থ থাকতে পারে – ১) অনুমোদন বা অনুমতি দেওয়া, অথবা ২) নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। এটি সরাসরি 'শর্ত' বোঝায় না।
- substitute (সাবস্টিটিউট): এর অর্থ বিকল্প বা পরিবর্তক।
- directive (ডাইরেক্টিভ): এর অর্থ নির্দেশ বা আদেশ।
'Cassandra is a night owl, so she doesn't usually get up until about:'
এখানে 'night owl' (নাইট আউল) বলতে এমন ব্যক্তিকে বোঝানো হয় যে রাতে দেরিতে জেগে থাকে এবং সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠে।
সুতরাং, সঠিক বিকল্পটি হলো: 11 a.m.
কারণ, যারা 'night owl' হয়, তারা সাধারণত সকালের দিকে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে। ১১টা সকাল তাদের জন্য দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার একটি স্বাভাবিক সময়।
৫৫. Select the word that is the most closely opposite in meaning to the capitalized word: DELETERIOUS
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'DELETERIOUS' শব্দটির সবচেয়ে কাছাকাছি বিপরীত অর্থপূর্ণ শব্দটি হলো: harmless
- DELETERIOUS (ডিলিটেরিয়াস) মানে হলো ক্ষতিকারক বা অনিষ্টকর।
- harmless (হার্মলেস) মানে হলো নিরীহ বা ক্ষতি করে না এমন।
অন্যান্য বিকল্পগুলো:
- toxic (টক্সিক) মানে বিষাক্ত বা ক্ষতিকারক (DELETERIOUS এর সমার্থক)।
- spurious (স্পিউরিয়াস) মানে ভুয়া, নকল বা ভেজাল।
- lethal (লেথাল) মানে মারাত্মক বা প্রাণঘাতী (DELETERIOUS এর কাছাকাছি সমার্থক)।
৫৬. "Gerontion" is a poem by –
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'Gerontion' কবিতাটি লিখেছেন: T.S. Eliot
এটি টি.এস. এলিয়টের একটি বিখ্যাত কবিতা যা ১৯২০ সালে প্রকাশিত হয়।
৫৭. Fill in the blank.
'____' is Shakespeare's last play.
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'Tempest' হলো শেক্সপিয়রের শেষ এককভাবে রচিত নাটক।
এটি উইলিয়াম শেক্সপিয়রের একটি বিখ্যাত রোমান্স (বা ট্র্যাজিকমেডি) নাটক, যা প্রায় ১৬১০-১৬১১ সালের দিকে লেখা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। সমালোচকদের মতে, এই নাটকের চরিত্র প্রসপেরোকে প্রায়শই শেক্সপিয়রের নিজের প্রতীকী চরিত্র হিসেবে দেখা হয়, এবং প্রসপেরোর জাদুবিদ্যা ত্যাগের ঘটনাটিকে শেক্সপিয়রের নাট্যজীবন থেকে বিদায়ের ইঙ্গিত হিসেবে ধরা হয়।
"Elegy Written in a Country Churchyard" কবিতাটি লিখেছেন: Thomas Gray
এটি টমাস গ্রের লেখা একটি বিখ্যাত এবং প্রভাবশালী কবিতা, যা ১৭৫১ সালে প্রকাশিত হয়।
৫৯. Who has written the play 'Volpone'?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'Volpone' নাটকটি লিখেছেন: Ben Jonson
বেন জনসন ছিলেন একজন বিখ্যাত ইংরেজ নাট্যকার এবং উইলিয়াম শেক্সপিয়রের সমসাময়িক। 'Volpone' তার সবচেয়ে বিখ্যাত নাটকগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা প্রায় ১৬০৫-১৬০৬ সালের দিকে লেখা হয়েছিল।
Shakespeare তাঁর অধিকাংশ নাটক রচনা করেছেন Iambic pentameter (আইয়াম্বিক পেন্টামিটার) নামক ছন্দে।
এটি এক ধরনের কাব্যিক ছন্দ যেখানে প্রতিটি লাইনে ১০টি অক্ষর থাকে, যা ৫টি আইয়াম্বিক ফুটের সমন্বয়ে গঠিত। প্রতিটি আইয়াম্বিক ফুটের প্রথম অক্ষরটি unstressed (গুরুত্বহীন) এবং দ্বিতীয় অক্ষরটি stressed (গুরুত্বপূর্ণ) হয়। এটি ইংরেজি ভাষার স্বাভাবিক কথ্য ভঙ্গির কাছাকাছি হওয়ায় শেক্সপিয়র এটি পছন্দ করতেন। যদিও তিনি তার নাটকে গদ্য (prose) এবং অন্যান্য ছন্দও ব্যবহার করেছেন, তবে উচ্চবিত্ত চরিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ সংলাপে Iambic pentameter বা ব্ল্যাঙ্ক ভার্স (অমুক্তাক্ষর ছন্দ) ছিল তার প্রধান পছন্দ।
৬১. The repetition of beginning consonant sound is know as–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
The repetition of beginning consonant sound (আদি ব্যঞ্জনধ্বনির পুনরাবৃত্তি) কে বলা হয়: alliteration (অনুপ্রাস)
অনুপ্রাস বা Alliteration হলো একটি সাহিত্যিক কৌশল যেখানে একই বা একই ধরনের ব্যঞ্জনধ্বনিগুলো একটি বাক্যে বা একটি বাক্যের মধ্যে পরপর শব্দের শুরুতে পুনরাবৃত্তি হয়। যেমন: "Peter Piper picked a peck of pickled peppers."
অন্যান্য বিকল্পগুলো:
- Personification (ব্যক্তিত্ব আরোপ): জড় বস্তুতে বা বিমূর্ত ধারণায় মানবীয় গুণ আরোপ করা।
- onomatopoeia (ধ্বন্যাত্মক শব্দ): এমন শব্দ যা কোনো কিছুর ধ্বনিকে অনুকরণ করে (যেমন: মিয়াঁও, ঠকঠক)।
- rhyme (অন্ত্যমিল): কবিতার লাইনের শেষে শব্দের ধ্বনির মিল।
৬২. Which of the following is not a poetic tradition?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে যেটি একটি কাব্যিক ঐতিহ্য (poetic tradition) নয় সেটি হলো: The Occult (অকাল্ট বা গুপ্তবিদ্যা)
ব্যাখ্যা:
- The Epic (মহাকাব্য): এটি সাহিত্যের একটি প্রাচীন এবং সুপ্রতিষ্ঠিত কাব্যিক ঐতিহ্য, যেখানে মহৎ বীরদের দীর্ঘ কাহিনী বর্ণিত হয় (যেমন: ইলিয়াড, ওডিসি, মহাভারত)।
- The Comic (কৌতুক): এটিও একটি কাব্যিক ঐতিহ্য, যেখানে হাস্যরস এবং ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয় (যেমন: কমেডি নাটক, ব্যঙ্গ কবিতা)।
- The Tragic (ট্র্যাজিক বা বিয়োগান্তক): এটিও একটি সুপরিচিত কাব্যিক ঐতিহ্য, বিশেষ করে নাটকে, যেখানে নায়কের পতন বা দুঃখজনক পরিণতি বর্ণিত হয় (যেমন: শেক্সপিয়রের ট্র্যাজেডি)।
- The Occult (গুপ্তবিদ্যা): এটি কোনো কাব্যিক ঐতিহ্য নয়, বরং এটি গুপ্ত বা রহস্যময় জ্ঞান, জাদুবিদ্যা বা অতিপ্রাকৃত বিষয় সম্পর্কিত একটি ধারণা বা চর্চার ক্ষেত্র। যদিও অকাল্ট বিষয়বস্তু কাব্যে ব্যবহৃত হতে পারে, কিন্তু এটি নিজে কোনো কাব্যিক ধারা বা ঐতিহ্য নয়।
৬৩. What is a funny poem of five lines called?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
পাঁচ লাইনের একটি মজার কবিতাকে বলা হয়: Limerick (লিমেরিক)
লিমেরিক হলো পাঁচ লাইনের একটি হাস্যরসাত্মক কবিতা, যার একটি নির্দিষ্ট ছন্দ (AABBA) এবং ছড়ার বিন্যাস থাকে। প্রথম, দ্বিতীয় এবং পঞ্চম লাইনে মিল থাকে এবং তারা তৃতীয় ও চতুর্থ লাইনের চেয়ে দীর্ঘ হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ লাইনেও নিজেদের মধ্যে মিল থাকে এবং তারা ছোট হয়।
অন্যান্য বিকল্পগুলো:
- Quatrain (কোয়াট্রেন): চার লাইনের স্তবক।
- Sixtet (সিক্সটেট): ছয় লাইনের স্তবক (সাধারণত সনেট-এর শেষ ছয় লাইনকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়)।
- Haiku (হাইকু): তিন লাইনের একটি জাপানিজ কবিতা, যার সিলেবল সংখ্যা ৫, ৭, ৫।
৬৪. Who wrote "Biographia Literaria"?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'Biographia Literaria' গ্রন্থটি লিখেছেন: S.T. Coleridge
স্যামুয়েল টেলর কোলরিজ (Samuel Taylor Coleridge) ছিলেন একজন বিখ্যাত ইংরেজ কবি, সাহিত্য সমালোচক এবং দার্শনিক। 'Biographia Literaria' তাঁর অন্যতম প্রধান গদ্য রচনা, যা ১৮১৭ সালে প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে তিনি তাঁর সাহিত্যিক জীবন, দার্শনিক ধারণা এবং উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের কবিতার উপর তাঁর সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন। এটি ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য সমালোচনামূলক কাজ হিসেবে বিবেচিত।
Robert Browning ছিলেন একজন Victorian (ভিক্টোরিয়ান) কবি।
রবার্ট ব্রাউনিং ১৮১২ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৮৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। রাণী ভিক্টোরিয়ার রাজত্বকাল (১৮৩৭-১৯০১) হলো ভিক্টোরিয়ান যুগ। ব্রাউনিংয়ের লেখার বেশিরভাগ সময় এই যুগের মধ্যে পড়ে, তাই তিনি ভিক্টোরিয়ান যুগের অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে পরিচিত। তিনি তার ড্রামাটিক মনোলগ (Dramatic Monologue)-এর জন্য বিশেষভাবে বিখ্যাত।
৬৬. Othello gave Desdemona ____ as a token of love:
[ বিসিএস ৩৭তম ]
Othello Desdemona-কে ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে Handkerchief (রুমাল) দিয়েছিল।
শেক্সপিয়রের বিখ্যাত ট্র্যাজেডি 'ওথেলো' নাটকে, এই রুমালটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। ওথেলো তার মাকে মিশরের একজন জাদুকরের কাছ থেকে পাওয়া এই রুমালটি দিয়েছিল, যার জাদুকরী ক্ষমতা ছিল বলে বিশ্বাস করা হতো এবং এটি দাম্পত্য বিশ্বস্ততার প্রতীক ছিল। পরবর্তীতে এই রুমালটিই ইয়াকুর চক্রান্তের প্রধান হাতিয়ার হয়ে ওঠে এবং ডেসডেমোনার অবিশ্বাসিতার প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে তাদের বিয়োগান্তক পরিণতির কারণ হয়।
৬৭. P.B. Shelley's ‘Adonais’ is an elegy on the death of–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
P.B. Shelley's ‘Adonais’ হলো John Keats -এর মৃত্যুতে রচিত একটি শোকগাথা (elegy)।
ব্যাখ্যা: 'Adonais' (অ্যাডোনাইস) হলো পার্সি বিশি শেলি (Percy Bysshe Shelley) কর্তৃক ১৮২১ সালে রচিত একটি বিখ্যাত পাস্টোরাল এলিজি (pastoral elegy)। এটি তার বন্ধু এবং সমসাময়িক রোমান্টিক কবি জন কিটস-এর অকাল মৃত্যুতে রচিত হয়েছিল, যিনি যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে রোমে মারা যান। শেলি এই কবিতায় কিটসকে একজন 'অ্যাডোনাইস' রূপে চিত্রিত করেছেন, যা গ্রিক পুরাণের একজন সুন্দর তরুণ দেবতার নাম, যার অকাল মৃত্যু হয়েছিল।
বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে তুলনা বোঝাতে 'like' বা 'as' শব্দ ব্যবহার করা হলে তাকে বলা হয়: simile (উপমা)
উপমা (Simile) হলো একটি সাহিত্যিক অলঙ্কার যেখানে দুটি ভিন্ন জিনিসের মধ্যে সরাসরি তুলনা করা হয় এবং এই তুলনা বোঝানোর জন্য সাধারণত 'like' (মত) বা 'as' (মতো/যেমন) শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়। যেমন: "তিনি সিংহের মতো সাহসী" (He is as brave as a lion)।
অন্যান্য বিকল্পগুলো:
- metaphor (রূপক): এটিও দুটি ভিন্ন জিনিসের মধ্যে তুলনা করে, কিন্তু 'like' বা 'as' ব্যবহার না করে সরাসরি এক বস্তুকে অন্য বস্তুর সাথে অভিন্ন বলে কল্পনা করা হয়। যেমন: "তিনি একজন সিংহ" (He is a lion)।
- alliteration (অনুপ্রাস): একই ব্যঞ্জনধ্বনির পুনরাবৃত্তি।
- personification (ব্যক্তিত্ব আরোপ): জড় বস্তুতে বা বিমূর্ত ধারণায় মানবীয় গুণ আরোপ করা।
৬৯. ‘Restoration period’ in English literature refers to–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
English সাহিত্যে 'Restoration period' বলতে বোঝায়: 1660
১৬৬০ সাল ছিল সেই ঐতিহাসিক সময় যখন ইংল্যান্ডে রাজতন্ত্র (monarchy) পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর আগে প্রায় এক দশক (১৬৪৯-১৬৬০) ইংল্যান্ড কমনওয়েলথ বা প্রজাতন্ত্র ছিল। ১৬৬০ সালে দ্বিতীয় চার্লস সিংহাসনে আরোহণ করেন, এবং এই ঘটনাকে 'Restoration' বা রাজতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা বলা হয়। এই সময়ের সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য, বিশেষ করে নাটক (Restoration Comedy), এই যুগের নামে পরিচিত। সাহিত্যিকরা সাধারণত ১৬৬০ থেকে ১৭০০ সাল পর্যন্ত সময়কালকে 'Restoration Period' হিসেবে বিবেচনা করেন।
৭০. ‘The Sun Also Rises’ is a novel written by–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'The Sun Also Rises' উপন্যাসটি লিখেছেন: Ernest Hemingway (আর্নেস্ট হেমিংওয়ে)
'The Sun Also Rises' হলো আমেরিকান লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের একটি বিখ্যাত উপন্যাস, যা ১৯২৬ সালে প্রকাশিত হয়। এটি 'লস্ট জেনারেশন' (Lost Generation) বা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্মের একদল আমেরিকান এবং ব্রিটিশ প্রবাসীর প্যারিস ও স্পেনে কাটানো জীবন, প্রেম এবং হতাশাকে চিত্রিত করে। এটি হেমিংওয়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং প্রভাবশালী কাজ হিসেবে বিবেচিত।
পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশ গঠনকালে (১৯০৫ সালে) ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় ছিলেন: লর্ড কার্জন (Lord Curzon)
তিনি ১৮৯৯ সাল থেকে ১৯০৫ সাল পর্যন্ত ভারতের ভাইসরয় হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর সময়েই বঙ্গভঙ্গ (Partition of Bengal) হয়, যার ফলস্বরূপ পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশ গঠিত হয়েছিল।
৭২. ঐতিহাসিক ৬-দফাকে কিসের সাথে তুলনা করা হয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ঐতিহাসিক ৬-দফাকে ম্যাগনা কার্টার সাথে তুলনা করা হয়।
৬-দফা ও ম্যাগনা কার্টা
ম্যাগনা কার্টা ছিল ১২১৫ সালে ইংল্যান্ডের রাজা জন এবং তার ব্যারনদের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি ঐতিহাসিক চুক্তি, যা রাজার ক্ষমতাকে সীমিত করে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। একইভাবে, ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬-দফা কর্মসূচি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অধিকার ও স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে জোরালোভাবে তুলে ধরেছিল। এটি ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাঙালির মুক্তির সনদ, যা পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত করে। এ কারণেই ৬-দফাকে বাঙালির মুক্তির সনদ বা ম্যাগনা কার্টা বলা হয়।
৭৩. বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীন নবাব কে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীন নবাব ছিলেন: মুর্শিদ কুলি খাঁ (Murshid Quli Khan)
১৭১৭ সালে মুঘল সম্রাট ফারুকশিয়র কর্তৃক তিনি বাংলার সুবাহদার (প্রাদেশিক শাসক) নিযুক্ত হন। তবে সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর মুঘল সাম্রাজ্যের কেন্দ্রীয় ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। এই সুযোগে মুর্শিদ কুলি খাঁ কার্যত বাংলার স্বাধীন শাসক হিসেবে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন এবং ঢাকা থেকে রাজধানী মুর্শিদাবাদে স্থানান্তর করেন। যদিও তিনি নামমাত্র মুঘল সম্রাটের প্রতি আনুগত্য দেখাতেন, কিন্তু কার্যতঃ তিনি বাংলার স্বাধীন নবাব হিসেবে শাসন করতেন। তাঁর সময় থেকেই বাংলায় স্বাধীন নবাবী শাসনের সূচনা হয়।
৭৪. আলুর একটি জাত–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
আলুর একটি জাত হলো: ডায়মন্ড
'ডায়মন্ড' হলো বাংলাদেশে চাষকৃত আলুর একটি পরিচিত ও উন্নত জাত।
অন্যান্য বিকল্পগুলোর ব্যাখ্যা:
- রূপালী: এটি ধানের একটি জাত।
- ড্রামহেড: এটি সাধারণত বাঁধাকপির একটি জাত।
- ব্রিশাইল: এটি সম্ভবত কোনো প্রচলিত কৃষি জাত নয়, অথবা অন্য কোনো ফসলের নাম হতে পারে।
৭৫. বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়: বোরো ধান
বাংলাদেশের তিনটি প্রধান ধানের মৌসুমের মধ্যে বোরো ধানই সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়। উচ্চ ফলনশীল (HYV) জাতের ব্যাপক ব্যবহার এবং সেচ সুবিধার কারণে বোরো ধানের উৎপাদন দেশের মোট ধান উৎপাদনের একটি সিংহভাগ পূরণ করে। এটি মূলত শুষ্ক মৌসুমে চাষ করা হয় এবং এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে কাটা হয়।
৭৬. প্রধান বীজ উৎপাদনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশের প্রধান বীজ উৎপাদনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান হলো:
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (BADC)
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (BADC) হলো দেশের বৃহত্তম সরকারি প্রতিষ্ঠান যা উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন ফসলের বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং বিতরণের কাজ করে। ধান, গম, ভুট্টা, আলু, শাকসবজি ইত্যাদি ফসলের মানসম্পন্ন বীজ কৃষকদের কাছে সুলভ মূল্যে পৌঁছে দেওয়াই তাদের প্রধান কাজ। এছাড়াও, বাংলাদেশে আরও কিছু সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (যেমন: BARI, BRRI, BINA) রয়েছে যারা নতুন জাত উদ্ভাবন করে, কিন্তু BADC প্রধানত উদ্ভাবিত বীজের উৎপাদন ও বিতরণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
৭৭. ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশে নারী-পুরুষের অনুপাত–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশে নারী-পুরুষের অনুপাত ছিল: ১০০ : ১০০.৩
২০১১ সালের পঞ্চম আদমশুমারি অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি ১০০ জন নারীর বিপরীতে পুরুষের সংখ্যা ছিল ১০০.৩ জন। অর্থাৎ, এই শুমারিতে পুরুষদের সংখ্যা নারীদের তুলনায় সামান্য বেশি ছিল।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী এই অনুপাত পরিবর্তিত হয়ে ৯৮.০৪ হয়েছে (অর্থাৎ প্রতি ১০০ জন নারীর বিপরীতে ৯৮.০৪ জন পুরুষ), যেখানে প্রথমবারের মতো নারীর সংখ্যা পুরুষের চেয়ে বেশি হয়েছে। তবে আপনার প্রশ্নটি ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ছিল।
৭৮. যে জেলায় হাজংদের বসবাস নেই–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
হাজং হলো উত্তর-পূর্ব ভারত এবং বাংলাদেশের একটি অন্যতম আদিবাসী জনগোষ্ঠী।
ভৌগোলিক অবস্থান
বাংলাদেশে হাজংদের প্রধানত ময়মনসিংহ জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে (যেমন: ধোবাউড়া, হালুয়াঘাট, ফুলপুর, তারাকান্দা), শেরপুর (শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতি, নালিতাবাড়ী), নেত্রকোনা (দুর্গাপুর, কলমাকান্দা) এবং সুনামগঞ্জ জেলায় (ধর্মপাশা, তাহিরপুর) বসবাস রয়েছে। এছাড়াও, গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও সিলেট অঞ্চলেও কিছু হাজং পরিবার বাস করে। ভারতের আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশেও তাদের বড় অংশ বসবাস করে।
উৎপত্তি ও ইতিহাস
নৃবিজ্ঞানীদের মতে, হাজংদের আদি নিবাস ছিল উত্তর বার্মায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তারা ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলে প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে আসামের কামরূপ জেলার হাজো নামক স্থানে বসতি স্থাপন করে। ধারণা করা হয়, 'হাজো' শব্দ থেকেই 'হাজং' নামের উৎপত্তি। সপ্তদশ শতকে মুঘলদের দ্বারা বিতাড়িত হয়ে তারা গারো পাহাড়ে আশ্রয় নেয় এবং পরবর্তীতে সমতল ভূমিতে বসতি স্থাপন করে। ঐতিহাসিক টঙ্ক আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন এবং জমিদারবিরোধী আন্দোলনে হাজং জনগোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। রাসিমণি হাজং টঙ্ক আন্দোলনে প্রথম শহীদ হন।
ভাষা ও সংস্কৃতি
- ভাষা: হাজংদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে, যা তিব্বতি-বর্মী ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। তবে এই ভাষার নিজস্ব কোনো বর্ণমালা নেই। তারা সাধারণত বাংলা বা অসমীয়া বর্ণমালা ব্যবহার করে তাদের ভাষা লেখে। বাংলাদেশে বসবাসকারী অধিকাংশ হাজং বাংলা ভাষায় কথা বলে এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে।
- ধর্ম: হাজংরা প্রধানত হিন্দু ধর্মাবলম্বী। তাদের নিজস্ব কিছু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও দেব-দেবী রয়েছে। প্রতিটি হাজং বাড়িতে সৃষ্টিকর্তাকে প্রণাম জানানোর জন্য একটি ছোট ঘর থাকে, যাকে তারা 'দেওঘর' বলে। সন্ধ্যায় তারা দেওঘরে প্রদীপ জ্বেলে ধূপধুনা দেয়।
- খাদ্যাভ্যাস: তাদের প্রধান খাদ্য ভাত ও মাছ। তারা আমিষভোজী এবং বিভিন্ন পশুপাখির মাংস (যেমন: পাঁঠা, শুকর, মুরগি) খেতে পছন্দ করে। বিন্নী চালের ভাত এবং শুঁটকি মাছ তাদের প্রিয়।
- পোশাক: হাজং নারীরা 'পাথিন' নামক এক ধরনের ঐতিহ্যবাহী মোটা ডোরাকাটা কাপড় পরিধান করে, যা তারা নিজেরাই তাঁতে বুনে। শীতকালে তারা 'আর্গন' নামে এক ধরনের চাদর ব্যবহার করে এবং কাজের সময় 'বানং' নামে কোমরবন্ধনী পরে।
- সমাজ ব্যবস্থা: হাজং সমাজ পিতৃতান্ত্রিক। পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী ছেলেরা হয়। তারা মূলত যৌথ পরিবারে বাস করে, যদিও বর্তমানে একক পরিবারের প্রবণতা বাড়ছে।
- জীবিকা: হাজংরা মূলত কৃষি প্রধান জনগোষ্ঠী। তারা ধান, গম, শাকসবজি এবং ফলমূল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রাচীনকাল থেকেই তারা জমি চাষে অভ্যস্ত ছিল।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশে Household প্রতি জনসংখ্যা বা খানা প্রতি জনসংখ্যা ছিল ৪.৪ জন।
'খানা' বা 'Household' বলতে এক বা একাধিক ব্যক্তির সমষ্টিকে বোঝায় যারা একই রান্নাঘর থেকে খাবার খায় এবং একই আবাসন ইউনিটে বসবাস করে। ২০১১ সালের পঞ্চম আদমশুমারিতে এই গড় সদস্য সংখ্যা নির্ণয় করা হয়েছিল।
৮০. যে বিভাগে সাক্ষরতার হার সর্বাধিক–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বর্তমানে ঢাকা বিভাগে সাক্ষরতার হার সর্বাধিক।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনার প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে সাক্ষরতার হার সর্বোচ্চ (প্রায় ৭৮.০৯%)। এর পরেই রয়েছে বরিশাল বিভাগ (৭৭.৫৭%)।
৮১. ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্জিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্জিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.১১%।
ব্যাখ্যা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (GDP) প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.১১ শতাংশ, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ছিল। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল।
৮২. বাংলাদেশের তৈরি জাহাজ ‘স্টেলা মেরিস’ রপ্তানি হয়েছে–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশের তৈরি জাহাজ ‘স্টেলা মেরিস’ ডেনমার্কে রপ্তানি হয়েছিল।
এটি ছিল বাংলাদেশের জাহাজ রপ্তানি খাতের একটি মাইলফলক। আনন্দ শিপইয়ার্ড লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ সালের ১৫ই মে ডেনমার্কের স্টেলা শিপিং (Stella Shipping) কোম্পানির কাছে এই অত্যাধুনিক কন্টেইনার জাহাজটি হস্তান্তর করেছিল। এটিই ছিল বাংলাদেশ থেকে প্রথম রপ্তানিকৃত সমুদ্রগামী জাহাজ।
৮৩. বেনাপোল স্থলবন্দর সংলগ্ন ভারতীয় স্থলবন্দর–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বেনাপোল স্থলবন্দর সংলগ্ন ভারতীয় স্থলবন্দরটি হলো: পেট্রাপোল
পেট্রাপোল স্থলবন্দরটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমায় অবস্থিত। এটি বেনাপোল স্থলবন্দরের ঠিক বিপরীতে ভারতীয় অংশে অবস্থিত এবং ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্থলপথে বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম স্থল কাস্টমস স্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম।
৮৪. বাংলাদেশে সরকারি EPZ সংখ্যা–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি EPZ (Export Processing Zone) এর সংখ্যা ৮টি।
এগুলো হলো: ১. চট্টগ্রাম ইপিজেড (চট্টগ্রাম) - দেশের প্রথম সরকারি ইপিজেড (১৯৮৩) ২. ঢাকা ইপিজেড (সাভার, ঢাকা) ৩. মংলা ইপিজেড (মংলা, বাগেরহাট) ৪. কুমিল্লা ইপিজেড (কুমিল্লা) ৫. ঈশ্বরদী ইপিজেড (পাবনা) ৬. উত্তরা ইপিজেড (সৈয়দপুর, নীলফামারী) - একমাত্র কৃষিভিত্তিক ইপিজেড ৭. আদমজী ইপিজেড (নারায়ণগঞ্জ) ৮. কর্ণফুলী ইপিজেড (চট্টগ্রাম)
এছাড়াও, বেসরকারি পর্যায়ে আরও ২টি ইপিজেড রয়েছে। নতুন কিছু ইপিজেড প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যেমন গাইবান্ধা, যশোর ও পটুয়াখালীতে।
৮৫. বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করে–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
২০২১-২২ অর্থবছরে চীন বাংলাদেশে রপ্তানি করেছে ১৬১৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারত রপ্তানি করে ১০০২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
৮৬. বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং শুরু করে–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশে প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শুরু করে ডাচ-বাংলা ব্যাংক (Dutch-Bangla Bank Ltd.)।
ডাচ-বাংলা ব্যাংক ২০১১ সালের ৩১শে মার্চ 'রকেট' (Rocket) নামে তাদের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে। এটি ছিল বাংলাদেশে প্রথম কোনো ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (MFS) বা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিকাশ (bKash) এবং পরে অন্যান্য ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান এই সেবায় যুক্ত হয়।
৮৭. ট্যারিফ কমিশন কোন মন্ত্রণালয়ের অধীন?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ট্যারিফ কমিশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংস্থা।
বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন (Bangladesh Trade and Tariff Commission - BTTC) একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। এর প্রধান কাজ হলো দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ, আমদানি শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া, এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে সহায়তা করা।
বাংলাদেশের সপ্তম জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব চালু হয়।
১৯৯৬ সালের জুনে সপ্তম জাতীয় সংসদ গঠিত হওয়ার পর এই সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি পরিবর্তন করে প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রশ্নোত্তর পর্ব চালু করা হয়। এর আগে সংসদ সদস্যরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার সুযোগ পেতেন না। এটি সংসদকে আরও কার্যকর এবং জবাবদিহিমূলক করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। প্রাথমিকভাবে ১৫ মিনিটের জন্য এই পর্ব নির্ধারিত থাকলেও, পরবর্তীতে এর সময় বাড়ানো হয়।
৮৯. মাত্র ১টি সংসদীয় আসন–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশের যে জেলায় মাত্র ১টি সংসদীয় আসন রয়েছে তা হলো: রাঙ্গামাটি জেলায়
বাংলাদেশের সংসদীয় আসন বিন্যাসে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি - এই তিনটি পার্বত্য জেলায় মাত্র একটি করে সংসদীয় আসন রয়েছে। জনসংখ্যা এবং ভৌগোলিক আয়তনের উপর ভিত্তি করে এই আসন বিন্যাস করা হয়।
৯০. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় নির্মিত ‘ধীরে বহে মেঘনা’ চলচ্চিত্রের নির্মাতা কে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় নির্মিত ‘ধীরে বহে মেঘনা’ চলচ্চিত্রের নির্মাতা হলেন আলমগীর কবির
'ধীরে বহে মেঘনা' ১৯৭৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। এটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন আলমগীর কবির। এই চলচ্চিত্রটি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত এবং এটি আলমগীর কবিরের পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এই ছবিতে ববিতা, গোলাম মুস্তাফা, আনোয়ার হোসেন, খলিল উল্লাহ খান প্রমুখ গুণী শিল্পীরা অভিনয় করেছেন। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট এটিকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ১০টি চলচ্চিত্রের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
৯১. জাতীয় সংসদে ‘কাউন্টিং’ ভোট কি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
জাতীয় সংসদে 'কাউন্টিং' ভোট বলতে সাধারণত কোনো বিল, প্রস্তাব বা সিদ্ধান্তের উপর ভোটাভুটির ফলাফল নির্ণয় পদ্ধতিকে বোঝায়, যখন মৌখিক বা প্রাথমিক ভোটে (যেমন 'হ্যাঁ' বা 'না' বলে) সংখ্যাগরিষ্ঠতা স্পষ্ট হয় না অথবা যখন স্পিকারের সিদ্ধান্তের উপর কোনো সদস্য আপত্তি জানান।
সাধারণত, জাতীয় সংসদে ভোট গ্রহণের কয়েকটি পদ্ধতি থাকে:
১. ভয়েস ভোট (Voice Vote): প্রথমে স্পিকার সংসদ সদস্যদের মৌখিকভাবে 'হ্যাঁ' বা 'না' বলতে বলেন এবং শব্দের তীব্রতা শুনে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
২. ডিভিশন বা কাউন্টিং ভোট (Division or Counting Vote): যদি ভয়েস ভোটে ফলাফল স্পষ্ট না হয় বা কোনো সংসদ সদস্য স্পিকারের সিদ্ধান্তের উপর আপত্তি জানান, তখন 'ডিভিশন' বা 'কাউন্টিং ভোট'-এর আহ্বান করা হয়। এই পদ্ধতিতে:
- সংসদ সদস্যদের দুটি পৃথক লবিতে (Division Lobby) যেতে বলা হয় – একটি 'হ্যাঁ' ভোটের জন্য এবং অন্যটি 'না' ভোটের জন্য।
- লবিগুলোতে যাওয়ার সময় প্রতিটি সদস্যের নাম রেকর্ড করা হয় এবং তাদের ভোট গণনা করা হয়।
- এই পদ্ধতিটি ফলাফলকে আরও সুনির্দিষ্ট এবং নিশ্চিত করে, কারণ প্রতিটি সদস্যের ভোট স্পষ্টভাবে রেকর্ড করা হয়। এটি সাধারণত কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিল বা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সংক্ষেপে, জাতীয় সংসদে 'কাউন্টিং' ভোট হলো একটি আনুষ্ঠানিক পদ্ধতি যেখানে সংসদ সদস্যদের ভোট শারীরিকভাবে গণনা করা হয়, যাতে কোনো বিতর্কিত বিষয়ে ভোটের সঠিক ফলাফল নির্ণয় করা যায়।
৯২. NILG এর পূর্ণরূপ-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
National Institute of Local Government (জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউট - NILG) হলো বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় কর্মরত নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও গবেষণার জন্য একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান।
পরিচিতি ও অবস্থান
- প্রতিষ্ঠা: ১৯৬৯ সালে 'লোকাল গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট' নামে এটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮০ সালে এটিকে 'ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ লোকাল গভর্নমেন্ট' (NILG) হিসেবে পুনর্গঠন করা হয়।
- অবস্থান: এটি ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত।
- মন্ত্রণালয়: এটি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে পরিচালিত হয়।
প্রধান কাজ ও উদ্দেশ্য
NILG এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা এবং তাদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা। এর মূল কাজগুলো নিম্নরূপ:
- প্রশিক্ষণ: স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি (যেমন: ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্য, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র ও কাউন্সিলর, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর) এবং সরকারি কর্মকর্তাদের (যেমন: উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী) জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা। এই প্রশিক্ষণগুলো তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি, আধুনিক জ্ঞান অর্জন এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে।
- গবেষণা: স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা করা। এই গবেষণাগুলো স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সমস্যা, সম্ভাবনা, নতুন নীতি প্রণয়ন এবং সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে।
- পরামর্শ: স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পরামর্শ প্রদান করা।
- প্রকাশনা: স্থানীয় সরকার সম্পর্কিত গবেষণা, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, জার্নাল এবং অন্যান্য প্রকাশনা তৈরি ও বিতরণ করা।
- সেমিনার ও কর্মশালা: স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সেমিনার, কর্মশালা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা।
৯৩. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ক্যাডার সংখ্যা–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (BCS) হলো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং অন্যান্য সরকারি সংস্থায় কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য পরিচালিত একটি জাতীয়ভিত্তিক প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (BPSC) এই পরীক্ষার আয়োজন করে।
বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের মোট ২৬টি ক্যাডার পদ রয়েছে। এই ক্যাডারগুলো মূলত দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত:
১. সাধারণ ক্যাডার (General Cadre): এই ক্যাডারগুলোর কাজ সাধারণত প্রশাসন পরিচালনা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, পররাষ্ট্র সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তৃত হয়। এখানে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা যেকোনো বিষয় থেকে হতে পারে।
২. পেশাগত/কারিগরি ক্যাডার (Professional/Technical Cadre): এই ক্যাডারগুলো বিশেষায়িত জ্ঞান বা দক্ষতার প্রয়োজন হয়, যেমন চিকিৎসা, প্রকৌশল, কৃষি, শিক্ষা ইত্যাদি। এসব ক্যাডারের জন্য সাধারণত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রয়োজন হয়।
কিছু ক্যাডার সাধারণ ও পেশাগত/কারিগরি উভয় ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
২৬টি ক্যাডারের তালিকা (বর্ণানুক্রমিক):
সাধারণ ক্যাডার:
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (আনসার)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (নিরীক্ষা ও হিসাব)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সমবায়)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (শুল্ক ও আবগারি)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পরিবার পরিকল্পনা)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পররাষ্ট্র)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পুলিশ)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ডাক)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কর)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বাণিজ্য)
পেশাগত/কারিগরি ক্যাডার:
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বন)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সাধারণ শিক্ষা)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (স্বাস্থ্য)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (মৎস্য)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (গণপূর্ত)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (রেলওয়ে প্রকৌশল)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সড়ক ও জনপথ)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পরিসংখ্যান)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কারিগরি শিক্ষা)
উভয় ক্যাডার (সাধারণ এবং পেশাগত/কারিগরি):
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (খাদ্য)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (তথ্য)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পশু সম্পদ)
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক)
উল্লেখ্য, পূর্বে কিছু ক্যাডার ছিল (যেমন ইকোনমিক, টেলিকমিউনিকেশন) যা পরবর্তীতে বিলুপ্ত বা অন্য ক্যাডারের সাথে একীভূত করা হয়েছে, ফলে বর্তমান ক্যাডারের সংখ্যা ২৬টি।
৯৪. সংবিধানের কোন অনুচ্ছেদে সরকারি কর্ম কমিশন গঠনের উল্লেখ আছে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সংবিধানের ১৩৭ নম্বর অনুচ্ছেদে সরকারি কর্ম কমিশন (Public Service Commission) গঠনের উল্লেখ আছে।
বাংলাদেশের সংবিধানের একাদশ ভাগের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে 'কর্মবিভাগ' সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এই পরিচ্ছেদের ১৩৭ অনুচ্ছেদে সরকারি কর্ম কমিশন প্রতিষ্ঠার বিধান রয়েছে। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বাংলাদেশের জন্য এক বা একাধিক সরকারি কর্ম কমিশন গঠনের ব্যবস্থা থাকবে, যা রাষ্ট্রপতির আদেশ দ্বারা গঠিত হবে। এই কমিশন সরকারি নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে।
অবস্থান অনুসারে বাংলাদেশের টারশিয়ারি পাহাড়কে ২ ভাগে ভাগ করা হয়।
বাংলাদেশের টারশিয়ারি যুগের পাহাড়গুলো প্রায় ২০ লক্ষ বছর পূর্বে হিমালয় পর্বত উত্থিত হওয়ার সময় সৃষ্টি হয়েছিল। এই পাহাড়গুলো দেশের মোট ভূমির প্রায় ১২% এলাকা নিয়ে গঠিত। এদের অবস্থান এবং বৈশিষ্ট্য অনুসারে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়:
১. দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ: এই অংশে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম জেলার পূর্বাংশের পাহাড়গুলো অন্তর্ভুক্ত। এগুলোর গড় উচ্চতা প্রায় ৬১০ মিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বিভাবে বিস্তৃত। তাজিংডং (বিজয়) ও কেওক্রাডং-এর মতো বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গগুলো এই অঞ্চলেই অবস্থিত।
২. উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ: এই অংশে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিণের পাহাড় এবং ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার উত্তরাংশের ছোট ছোট টিলা ও পাহাড়গুলো অন্তর্ভুক্ত। এ অঞ্চলের পাহাড়গুলোর উচ্চতা সাধারণত দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ের তুলনায় কম, প্রায় ২৪৪ মিটারের বেশি নয়।
৯৬. বাংলাদেশে মর্যাদা অনুসারে ৩য় বীরত্বসূচক খেতাব–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশে মর্যাদা অনুসারে তৃতীয় বীরত্বসূচক খেতাব হলো: বীরবিক্রম
বাংলাদেশের বীরত্বসূচক খেতাবসমূহের ক্রম
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ মোট চারটি সামরিক খেতাব প্রদান করা হয়। এগুলোর মর্যাদার ক্রম নিম্নরূপ:
১. বীরশ্রেষ্ঠ: এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব। ২. বীরউত্তম: এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব। ৩. বীরবিক্রম: এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব। ৪. বীরপ্রতীক: এটি চতুর্থ ও সর্বনিম্ন সামরিক খেতাব।
৯৭. ক্রিকেটে বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা পায়–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ২০০০ সালের ২৬ জুন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) থেকে টেস্ট মর্যাদা লাভ করে।
বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের দশম টেস্ট খেলুড়ে দেশ। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ২০০০ সালের ১০-১৪ নভেম্বর ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ তাদের অভিষেক টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ওয়ানডে মর্যাদা পেয়েছিল এবং এরপর ২০০০ সালে টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ স্তরে প্রবেশ করে।
৯৮. ‘কালাপানি’ কোন দুই রাষ্ট্রের মধ্যে অমীমাংসিত ভূখণ্ড?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'কালাপানি' হলো ভারত ও নেপাল - এই দুই রাষ্ট্রের মধ্যে একটি অমীমাংসিত ভূখণ্ড।
কালাপানি অঞ্চলটি ভারত, নেপাল এবং চীনের ত্রিদেশীয় সীমান্ত সংযোগস্থলে অবস্থিত। এটি ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের পিথোরাগড় জেলায় অবস্থিত বলে ভারত দাবি করে, আর নেপাল এটিকে তার সুদূর পশ্চিমের ধারচুলা জেলার অংশ বলে দাবি করে। মূলত, মহাকালী (নেপালে কালী) নদীর উৎস এবং ১৮১৬ সালের সুগৌলি চুক্তির ব্যাখ্যা নিয়ে এই বিতর্ক। ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের পর থেকে ভারত এই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নেপাল এই অঞ্চলকে তাদের নিজেদের নতুন মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে বিতর্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
৯৯. সলোমন-দ্বীপপুঞ্জ কোন মহাসাগরে অবস্থিত?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ হলো প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র, যা ওশেনিয়া মহাদেশে অবস্থিত। এটি পাপুয়া নিউ গিনির পূর্বে এবং ভানুয়াতুর উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত।
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ সম্পর্কে কিছু তথ্য:
- রাজধানী: হোনিয়ারা (Honiara), যা গুয়াদালকানাল দ্বীপে অবস্থিত।
- ভূগোল: এটি ৬টি বড় দ্বীপ এবং প্রায় ৯০০টিরও বেশি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর, যেখানে রেইনফরেস্ট, উপহ্রদ (লেগুন), জলপ্রপাত এবং শান্ত বালুকাময় সৈকত রয়েছে। এখানকার জলজ জীবনও অত্যন্ত সমৃদ্ধ।
- স্বাধীনতা: ১৯৭৮ সালের ৭ জুলাই এটি যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।
- ভাষা: এর সরকারি ভাষা ইংরেজি হলেও, স্থানীয় মেলানেশিয়ান ভাষাগুলোও প্রচলিত।
- জনসংখ্যা: ২০২৩ সালের আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, এর জনসংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষ।
- সংস্কৃতি: সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও বর্ণময়। এখানকার আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রকৃতি এবং বন বাস্তুতন্ত্রের সাথে গভীর সংযোগ বজায় রাখে।
- অর্থনীতি: মূলত কৃষি ও মৎস্য চাষের উপর নির্ভরশীল। সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তিগুলোর কাছে এটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যার ফলে এই অঞ্চলে তাদের প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা দেখা যায়।
চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসকারী প্রধান মুসলিম সম্প্রদায়ের নাম হলো উইঘুর (Uyghur)।
উইঘুররা মূলত তুর্কি বংশোদ্ভূত একটি জাতিগোষ্ঠী, যারা উইঘুর ভাষায় কথা বলে এবং প্রধানত সুন্নি ইসলাম ধর্মাবলম্বী। জিনজিয়াং প্রদেশকে তারা 'পূর্ব তুর্কিস্তান' নামেও অভিহিত করে থাকে। এই অঞ্চলের উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীন সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচিত।
ভারত গুগলকে তাদের 'Street View' (স্ট্রিট ভিউ) প্রোগ্রামের জন্য ছবি তোলা থেকে বিরত করেছে।
গুগল স্ট্রিট ভিউ এমন একটি প্রযুক্তি, যেখানে বিশেষ ক্যামেরা লাগানো গাড়ি বিশ্বের বিভিন্ন রাস্তার ৩৬০ ডিগ্রি প্যানোরামিক ছবি তোলে, যা পরে গুগল ম্যাপস এবং গুগল আর্থে ব্যবহারকারীদের জন্য উপলব্ধ করা হয়। ভারত তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর রিপোর্টের ভিত্তিতে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় এই কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছিল। ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো মনে করেছিল যে, এই সেবা চালু হলে তা স্পর্শকাতর সামরিক প্রতিরক্ষা স্থাপনাগুলোর জন্য হুমকি হতে পারে এবং তা একবার চালু হলে পর্যবেক্ষণ করা কঠিন হবে। এর ফলে, তারা মনে করেছিল যে এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
১০২. সংবিধান অনুযায়ী মিয়ানমারের সংসদে কত শতাংশ আসন অনির্বাচিত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সংবিধান অনুযায়ী মিয়ানমারের সংসদে ২৫ শতাংশ আসন অনির্বাচিত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকে।
মিয়ানমারের ২০০৮ সালের সংবিধান অনুযায়ী, দেশটির পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের মোট আসনের ২৫% সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত। এই সামরিক সদস্যরা নির্বাচিত নন, বরং সেনাবাহিনী কর্তৃক মনোনীত হন। এই বিধানের কারণে, বেসামরিক সরকার গঠন হলেও সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা সংবিধানে সুপ্রতিষ্ঠিত থাকে এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ৭৫% এর বেশি সংসদ সদস্যের সমর্থন পেতে সামরিক বাহিনীর অনুমোদন অপরিহার্য হয়ে পড়ে। এই সংরক্ষিত আসনগুলি মিয়ানমারের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাবের একটি মূল কারণ।
১০৩. নিম্নের কোনটি গ্রিন হাউজ গ্যাস নয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
গ্রিন হাউজ গ্যাসসমূহ এবং তাদের প্রভাব
গ্রিন হাউজ গ্যাসগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে তাপ আটকে রেখে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি করে, যা গ্রিন হাউজ প্রভাব নামে পরিচিত। এদের মধ্যে প্রধান গ্যাসগুলো হলো:
- কার্বন ডাই-অক্সাইড (
): জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো এবং বন উজাড়ের ফলে এর নির্গমন বাড়ে। - মিথেন (
): কৃষিক্ষেত্রে (যেমন ধানক্ষেত), বর্জ্য পচন এবং প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের ফলে এটি নির্গত হয়। - নাইট্রাস অক্সাইড (
): কৃষি, শিল্প প্রক্রিয়া এবং জীবাশ্ম জ্বালানির দহন থেকে উৎপন্ন হয়। - জলীয় বাষ্প (
): এটি প্রাকৃতিকভাবে বায়ুমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণে থাকে এবং গ্রিন হাউজ প্রভাবে এর বড় ভূমিকা আছে। - ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFCs): রেফ্রিজারেশন এবং অ্যারোসল স্প্রেতে ব্যবহৃত হয় (যদিও এখন এর ব্যবহার সীমিত)।
অক্সিজেন (
১০৪. জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা (UNEP) ও জলবায়ু বিষয়ক সংস্থা (WMO) এর মিলিত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা লাভ করে-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা (UNEP) ও জলবায়ু বিষয়ক সংস্থা (WMO) এর মিলিত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা লাভ করে IPCC
IPCC এর পূর্ণরূপ হলো Intergovernmental Panel on Climate Change (জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেল)।
- প্রতিষ্ঠা: এটি ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (UNEP) এবং বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) এর যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
- লক্ষ্য: IPCC এর প্রধান লক্ষ্য হলো জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহ, মূল্যায়ন এবং নীতিনির্ধারকদের কাছে পরিবেশন করা। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ, প্রভাব এবং এর প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিশ্বকে একটি পরিষ্কার বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে।
- কার্যক্রম: এটি নিজে কোনো গবেষণা বা পর্যবেক্ষণ পরিচালনা করে না, বরং বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞদের দ্বারা প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত এবং আর্থ-সামাজিক তথ্যের মূল্যায়ন করে প্রতিবেদন তৈরি করে। এই প্রতিবেদনগুলো আন্তর্জাতিক জলবায়ু আলোচনা এবং নীতি প্রণয়নের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
- পুরস্কার: ২০০৭ সালে IPCC এবং আল গোর যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে তাদের কাজ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য।
World Development Report (ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট) হলো বিশ্বব্যাংকের (World Bank) একটি বার্ষিক প্রকাশনা।
প্রতি বছর বিশ্বব্যাংক এই রিপোর্ট প্রকাশ করে, যেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের নির্দিষ্ট কোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ এবং ডেটা উপস্থাপন করা হয়। ১৯৭৮ সাল থেকে এটি নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে আসছে এবং উন্নয়ন অর্থনীতির ক্ষেত্রে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে বিবেচিত।
১০৬. IMF-এর সদর দপ্তর অবস্থিত-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
IMF (International Monetary Fund) এর সদর দপ্তর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন, ডি.সি. শহরে অবস্থিত।
১০৭. বিশ্বব্যাংক সংশ্লিষ্ট কোন সংস্থাটি স্বল্প আয়ের উন্নয়নশীল দেশে বেসরকারি খাতে আর্থিক সহায়তা ও উপদেশ দিয়ে থাকে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বিশ্বব্যাংক সংশ্লিষ্ট যে সংস্থাটি স্বল্প আয়ের উন্নয়নশীল দেশে বেসরকারি খাতে আর্থিক সহায়তা ও উপদেশ দিয়ে থাকে, সেটি হলো আন্তর্জাতিক অর্থ কর্পোরেশন (International Finance Corporation - IFC)।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পাঁচটি সংস্থার মধ্যে IFC একটি। এর প্রধান লক্ষ্য হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বেসরকারি খাতের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা। IFC বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সহায়তা (যেমন: ঋণ, ইক্যুইটি বিনিয়োগ) এবং পরামর্শ সেবা প্রদান করে, যাতে তারা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে, উদ্ভাবনী সমাধান আনতে পারে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটাতে পারে। এটি বিশেষ করে কঠিন বিনিয়োগ পরিবেশে কাজ করতে আগ্রহী।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের অন্যান্য সংস্থাগুলো হলো:
- International Bank for Reconstruction and Development (IBRD): মধ্যম আয়ের এবং ঋণগ্রহীতা দরিদ্র দেশগুলোকে ঋণ ও উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করে।
- International Development Association (IDA): বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোকে অনুদান ও সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে।
- Multilateral Investment Guarantee Agency (MIGA): উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিদেশী বিনিয়োগে রাজনৈতিক ঝুঁকি বীমা (Political Risk Insurance) প্রদান করে।
- International Centre for Settlement of Investment Disputes (ICSID): আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সালিশি ও মধ্যস্থতা পরিষেবা প্রদান করে।
১০৮. সামন্তবাদ কোন ইউরোপীয় দেশে প্রথম সূত্রপাত হয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সামন্তবাদ (Feudalism) প্রথম ফ্রান্সে সূত্রপাত হয়।
সামন্তবাদ একটি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছিল যা মধ্যযুগের ইউরোপে, বিশেষ করে নবম থেকে পঞ্চদশ শতাব্দী পর্যন্ত প্রচলিত ছিল। এটি মূলত সামরিক সেবার বিনিময়ে ভূমির (ফিফ) বিনিময়ের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল।
যদিও সামন্তবাদ ইউরোপের অনেক অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল, তবে এর মূল কাঠামো এবং ব্যাপক প্রয়োগ প্রথমদিকে ফ্রাঙ্কিশ সাম্রাজ্যে (যা বর্তমান ফ্রান্সের একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল) অষ্টম ও নবম শতাব্দীতে শুরু হয়েছিল। ক্যারোলিংগিয়ান সাম্রাজ্যের পতনের পর স্থানীয় সামরিক নেতারা নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য এবং ভূমি রক্ষা করার জন্য এই ব্যবস্থার আশ্রয় নেয়। ফলে, সামন্তবাদের ধারণা ও কাঠামো প্রথম ফ্রান্সে বিকশিত হয়ে পরে ইউরোপের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
১০৯. জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য:
[ বিসিএস ৩৭তম ]
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য দেশ রয়েছে। এই দেশগুলো হলো:
- গণচীন (People's Republic of China)
- ফ্রান্স (France)
- রাশিয়া (Russia) - (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন)
- যুক্তরাজ্য (United Kingdom)
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (United States of America)
এই দেশগুলোর প্রতিটি নিরাপত্তা পরিষদের যেকোনো প্রস্তাবে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে, যার অর্থ হলো তারা কোনো প্রস্তাবকে বাতিল করে দিতে পারে, এমনকি যদি অন্য সব সদস্য দেশ তাতে সম্মত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই দেশগুলোই প্রধান মিত্রশক্তি ছিল এবং জাতিসংঘ সনদের মাধ্যমে তাদের এই স্থায়ী সদস্যপদ ও বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়।
১১০. ‘Law of the Sea Convention’ অনুযায়ী উপকূল থেকে কত দূরত্ব পর্যন্ত Exclusive Economic Zone হিসেবে গণ্য?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
‘Law of the Sea Convention’ (UNCLOS - United Nations Convention on the Law of the Sea) অনুযায়ী উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৩৭০ কিলোমিটার) দূরত্ব পর্যন্ত Exclusive Economic Zone (EEZ) হিসেবে গণ্য করা হয়।
এই অঞ্চলের মধ্যে উপকূলবর্তী দেশগুলো সমুদ্রের প্রাকৃতিক সম্পদ (যেমন মাছ, খনিজ সম্পদ), পানি ও বাতাস থেকে শক্তি উৎপাদন, বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের একচেটিয়া অধিকার লাভ করে। তবে, এই অঞ্চলে অন্যান্য দেশের জাহাজ চলাচল বা উড়োজাহাজ উড়ে যাওয়ার (freedom of navigation and overflight) অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকে।
১১১. ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি যা Joint Comprehensive Plan of Action নামে পরিচিত তা সই হয়-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি, যা Joint Comprehensive Plan of Action (JCPOA) নামে পরিচিত, তা ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই সই হয়।
ব্যাখ্যা: এই চুক্তিটি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ইরান এবং বিশ্বের ছয় পরাশক্তি (P5+1: চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ও যুক্তরাষ্ট্র) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) এর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সীমিত করা, যাতে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে।
১১২. ‘গ্রিনপিস’ যাত্রা শুরু করে-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'গ্রিনপিস' (Greenpeace) হলো একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি পরিবেশবাদী সংস্থা। এটি ১৯৭১ সালে কানাডায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর সদর দপ্তর বর্তমানে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে অবস্থিত।
গ্রিনপিসের প্রধান উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম:
- পরিবেশ সংরক্ষণ: গ্রিনপিসের মূল লক্ষ্য হলো পৃথিবী নামক গ্রহের সব ধরনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
- সরাসরি পদক্ষেপ ও অহিংস প্রতিরোধ: তারা পরিবেশগত সমস্যাগুলির বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে এবং পরিবর্তন আনতে অহিংস পদ্ধতিতে সরাসরি প্রতিরোধ ও প্রচারণা চালায়।
- প্রচারণার ক্ষেত্র: তাদের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে:
- পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা বন্ধ: প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই তারা পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে।
- জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা: বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাস এবং নবায়নযোগ্য শক্তির প্রচারে তারা কাজ করে।
- সমুদ্র ও বনাঞ্চল সংরক্ষণ: সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য রক্ষা, অতিরিক্ত মাছ ধরা প্রতিরোধ এবং বন উজাড়ের বিরুদ্ধে তারা সক্রিয়।
- বিষাক্ত বর্জ্য ও রাসায়নিক দূষণ প্রতিরোধ: বিপজ্জনক রাসায়নিক এবং পারমাণবিক বর্জ্য নিক্ষেপের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান রয়েছে।
- প্রাণী সুরক্ষা: বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী রক্ষা এবং তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণেও তারা কাজ করে।
- অর্থায়ন: নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য গ্রিনপিস কোনো সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের কাছ থেকে তহবিল গ্রহণ করে না। তারা শুধুমাত্র ব্যক্তি এবং স্বাধীন অনুদানকারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে।
গ্রিনপিস তাদের সাহসী এবং প্রায়শই বিতর্কিত সরাসরি অ্যাকশনের জন্য পরিচিত, যা বিশ্বজুড়ে পরিবেশ আন্দোলনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১১৩. ‘Black Lives Matter’ কি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার' (Black Lives Matter - BLM) হলো একটি আন্তর্জাতিক বিকেন্দ্রীভূত রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলন। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর প্রতি বর্ণবাদ, বৈষম্য এবং পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
উদ্ভব ও বিস্তার:
- ২০১৩ সালে আমেরিকায় এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ট্রেভন মার্টিনের হত্যাকারী জর্জ জিমারম্যানের খালাসের প্রতিবাদে। অ্যালিসিয়া গার্জা, প্যাট্রিস কুলর্স এবং ওপাল টোমেটি '#BlackLivesMatter' হ্যাশট্যাগ ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইনে এই আন্দোলন শুরু করেন।
- ২০১৪ সালে মাইকেল ব্রাউন ও এরিক গার্নারসহ নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গদের পুলিশি হত্যাকাণ্ডের পর আন্দোলনটি দেশজুড়ে ব্যাপকতা লাভ করে।
- বিশেষ করে ২০২০ সালে জর্জ ফ্লয়েডের পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দেয় এবং 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার' আন্দোলন আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করে।
উদ্দেশ্য ও দাবি:
- পুলিশি বর্বরতা ও পদ্ধতিগত বর্ণবাদ নির্মূল: আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হলো কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি পুলিশি সহিংসতা, জাতিগত প্রোফাইলিং এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় বিদ্যমান পদ্ধতিগত বর্ণবাদ বন্ধ করা।
- কৃষ্ণাঙ্গ জীবনের মূল্য প্রতিষ্ঠা: এটি জোর দিয়ে বলে যে, কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনও মূল্যবান এবং সাদা মানুষদের জীবনের মতোই তাদের মর্যাদা ও সম্মান প্রাপ্য।
- সামাজিক ন্যায়বিচার: এটি কেবল পুলিশি সংস্কার নয়, বরং কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক নীতি, অর্থনৈতিক অসমতা এবং অন্যান্য সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধেও কাজ করে।
- আইন ও নীতির পরিবর্তন: আন্দোলনকারীরা পুলিশি জবাবদিহিতা বাড়ানো, পুলিশি বাজেট হ্রাস করে সামাজিক সেবায় বিনিয়োগ, এবং অন্যান্য কাঠামোগত সংস্কারের দাবি জানায়।
বৈশিষ্ট্য:
- বিকেন্দ্রীভূত আন্দোলন: 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার' একটি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ববিহীন তৃণমূল পর্যায়ের আন্দোলন। এর স্থানীয় শাখাগুলো স্বায়ত্তশাসিতভাবে কাজ করে।
- অহিংস প্রতিরোধ: আন্দোলনকারীরা সাধারণত অহিংস প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের দাবি তুলে ধরে।
- বহুমাত্রিকতা: এই আন্দোলনটি শুধু জাতিগত ন্যায়বিচারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং LGBTQ+ অধিকার, নারীবাদ, অভিবাসন সংস্কার এবং অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের মতো বিষয়গুলোকেও সমর্থন করে।
সংক্ষেপে, 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার' হলো কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর প্রতি চলমান বর্ণবাদ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বৈশ্বিক কণ্ঠস্বর, যা সমতা, ন্যায়বিচার এবং মানবিক মর্যাদার দাবি জানায়।
মাথাপিছু গ্রিনহাউজ গ্যাস উদগীরণে সবচেয়ে বেশি দায়ী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম।
তবে, বিভিন্ন রিপোর্ট এবং সময়কালের উপর নির্ভর করে এই তালিকা পরিবর্তিত হতে পারে। কিছু তথ্যে কুয়েত, কাতার বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোকেও মাথাপিছু নির্গমনে অনেক উচ্চ অবস্থানে দেখা যায়, বিশেষ করে যদি প্রতি ব্যক্তির মোট নির্গমনকে বিবেচনা করা হয়।
যদি প্রদত্ত বিকল্পগুলোর (রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, জার্মানি) মধ্যে বিবেচনা করা হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রই ঐতিহাসিক এবং বর্তমান মাথাপিছু নির্গমনের ক্ষেত্রে শীর্ষে থাকে। চীন মোট গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনে বিশ্বের এক নম্বর দেশ হলেও, বিশাল জনসংখ্যার কারণে তাদের মাথাপিছু নির্গমন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে কম।
১১৫. কোনটি নিরস্ত্রীকরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
নিরস্ত্রীকরণের (Disarmament) সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন সংস্থা বা চুক্তি হলো: NATO
-
NATO (North Atlantic Treaty Organization): এটি একটি সামরিক জোট যা ১৯৪৯ সালে গঠিত হয়েছিল। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সম্মিলিত প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা। এটি অস্ত্র হ্রাস বা নিরস্ত্রীকরণে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়, বরং এর উদ্দেশ্য হলো এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তা রক্ষা করা।
-
SALT (Strategic Arms Limitation Talks): এটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা ও চুক্তি যা কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের উৎপাদন সীমিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছিল। এটি নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার একটি অংশ ছিল।
-
NPT (Treaty on the Non-Proliferation of Nuclear Weapons): এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চুক্তি যার উদ্দেশ্য হলো পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ করা এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্য অর্জন করা।
-
CTBT (Comprehensive Nuclear-Test-Ban Treaty): এটি একটি বহুপাক্ষিক চুক্তি যা পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা বিস্ফোরণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছিল। এটিও নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার একটি অংশ।
সুতরাং, NATO একটি সামরিক জোট হওয়ায় এটি নিরস্ত্রীকরণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়, বরং বাকিগুলো অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বা নিরস্ত্রীকরণের উদ্দেশ্যে গঠিত চুক্তি বা আলোচনা।
১১৬. SDR (Special Drawing Rights) সুবিধা প্রবর্তনের জন্য কত সালে IMF এর গঠনতন্ত্র (Articles) সংশোধন করা হয়েছিল?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
IMF এর গঠনতন্ত্র (Articles of Agreement) বেশ কয়েকবার সংশোধন করা হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু সংশোধনীর মধ্যে রয়েছে:
১. প্রথম সংশোধনী (১৯৬৯ সাল): এই সংশোধনীটি Special Drawing Rights (SDR) সুবিধা প্রবর্তনের জন্য করা হয়েছিল। এটি আন্তর্জাতিক তারল্য সংকট মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।
২. দ্বিতীয় সংশোধনী (১৯৭৮ সাল): এই সংশোধনীটি মূলত ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেমকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য করা হয়েছিল। ব্রেটন উডস ব্যবস্থার অধীনে স্থির বিনিময় হার ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার পর এই পরিবর্তন আনা হয়। এটি স্বর্ণের আনুষ্ঠানিক ভূমিকা বাতিল করে এবং সদস্য দেশগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার নীতিতে আইএমএফের নজরদারি (surveillance) জোরদার করে।
৩. সাম্প্রতিক সংশোধনী (২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর গৃহীত, ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি কার্যকর): এই সংশোধনীটি আইএমএফের গভর্ন্যান্স কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে, বিশেষ করে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর কোটা (Quotas) এবং ভোটিং ক্ষমতা বাড়ানো হয়, যাতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে তাদের ক্রমবর্ধমান ভূমিকা প্রতিফলিত হয়।
সংক্ষেপে, IMF এর গঠনতন্ত্রে মোট সাতবার সংশোধনী আনা হয়েছে, যার মধ্যে প্রথমটি ছিল ১৯৬৯ সালে SDR প্রবর্তনের জন্য।
১১৭. বাংলাদেশের নিম্নলিখিত জেলাসমূহের মধ্যে কোন জেলায় নিচু ভূমির (Low land) পরিমাণ সবচেয়ে বেশি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশের নিম্নলিখিত জেলাসমূহের মধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলায় নিচু ভূমির (Low land) পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
কিশোরগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের হাওর অঞ্চলের একটি প্রধান অংশ। এই জেলার বেশিরভাগ অঞ্চলই নিচু ভূমি, যা মূলত হাওড় ও বাঁওড় এলাকা নিয়ে গঠিত এবং বর্ষাকালে মৌসুমী বায়ু প্রবাহের সময় ১৮০ সেমি থেকে ২৭৫ সেমি পর্যন্ত প্লাবিত হয়। বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, কিশোরগঞ্জে ১২২টি হাওর রয়েছে, যার আয়তন ১,৮২,১০৩ হেক্টর। হবিগঞ্জেও হাওর রয়েছে, তবে কিশোরগঞ্জের তুলনায় এর পরিমাণ কম।
১১৮. বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী কোনটি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী হলো পদ্মা।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ২০২৩ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে পদ্মা নদীর দৈর্ঘ্য ৩৪১ কিলোমিটার।
১১৯. বাংলাদেশের কোন অঞ্চল বেশি খরাপ্রবণ?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি খরাপ্রবণ অঞ্চল হলো উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল।
এই অঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, দিনাজপুর, বগুড়া এবং কুষ্টিয়া জেলাগুলোকে অতি খরাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম থাকে এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যায়, যা খরার তীব্রতা বাড়ায়।
১২০. বাংলাদেশের কোন অঞ্চলের পরিবেশ বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি নিষ্কাশন ও সেচের (FCDI) কারণে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি নিষ্কাশন ও সেচ (FCDI) প্রকল্পগুলোর কারণে বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চল এবং উপকূলীয় অঞ্চল উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে ক্ষতির ধরন ভিন্ন।
-
বরেন্দ্র অঞ্চল: এই অঞ্চলে মূলত গভীর নলকূপের মাধ্যমে অতিরিক্ত পানি উত্তোলনের কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে, যা এক ধরনের পরিবেশগত ক্ষতি। সেচ সুবিধার জন্য এই অঞ্চলে FCDI প্রকল্পগুলো পানির ভারসাম্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
-
উপকূলীয় অঞ্চল: এই অঞ্চলে FCDI প্রকল্পগুলো, বিশেষ করে বাঁধ ও পোল্ডার নির্মাণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও লবণাক্ত পানি প্রবেশ রোধে সাহায্য করলেও এর কিছু দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশগত প্রভাব রয়েছে। যেমন, প্রাকৃতিক জোয়ার-ভাটা প্রবাহে বাধা, পাললিকরণের পরিবর্তন, কিছু জলাভূমির ক্ষতি, এবং অভ্যন্তরীণ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি। কিছু ক্ষেত্রে, বাঁধ নির্মাণের ফলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা এবং এর ইকোসিস্টেমের উপর নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে।
যদি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রসঙ্গে সামগ্রিক পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতা এবং পানির স্তরের অবনতির কথা বলা হয়, তাহলে বরেন্দ্র অঞ্চল একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। অন্যদিকে, উপকূলীয় অঞ্চল ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং লবণাক্ততা বৃদ্ধির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেও হুমকির সম্মুখীন, তবে FCDI প্রকল্পগুলো এখানে কিছু ইতিবাচক ভূমিকাও পালন করেছে, যদিও সেগুলোর পরিবেশগত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে।
প্রশ্নটি যদি "পানি নিষ্কাশন ও সেচের কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার ফলে" ক্ষতি বোঝায়, তাহলে বরেন্দ্র অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। যদি "বন্যা নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর কারণে প্রাকৃতিক পানি প্রবাহে বাধা এবং জলাবদ্ধতা" বোঝায়, তাহলে উপকূলীয় এবং কিছু অভ্যন্তরীণ নিচু অঞ্চল (যেমন চলন বিল) প্রভাবিত হয়েছে।
সাধারণভাবে, FCDI প্রকল্পগুলির কারণে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও, কিছু ক্ষেত্রে পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে, যেমন জলাভূমির বিলুপ্তি, ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের পরিবর্তন এবং নদীর প্রবাহ হ্রাস।
বাংলাদেশে বার্ষিক সর্বোচ্চ গড় বৃষ্টিপাত সিলেটের লালখালে রেকর্ড করা হয়।
লালখাল (লালাখাল) মূলত সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত, যা ভারতের মেঘালয় সীমান্তের খুব কাছে। এই অঞ্চলের পাশেই পৃথিবীর অন্যতম বৃষ্টিবহুল স্থান চেরাপুঞ্জি অবস্থিত হওয়ায় এখানেও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।
একটি অঞ্চলের বা দেশের জলবায়ু নির্ধারণ করে না এমন নিয়ামকটি হলো: দ্রাঘিমারেখা
জলবায়ু নির্ধারণকারী নিয়ামকসমূহ:
- অক্ষরেখা (Latitude): এটি সূর্যরশ্মির পতন কোণকে প্রভাবিত করে, যা একটি অঞ্চলের তাপমাত্রাকে সরাসরি প্রভাবিত করে। নিরক্ষরেখার কাছাকাছি অঞ্চলগুলো উষ্ণ এবং মেরু অঞ্চলের কাছাকাছি অঞ্চলগুলো শীতল হয়।
- উচ্চতা (Altitude/Elevation): উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুর ঘনত্ব এবং তাপমাত্রা হ্রাস পায়। পর্বত শিখরগুলো সংলগ্ন নিম্নভূমির চেয়ে শীতল হয়।
- সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents): উষ্ণ বা শীতল সমুদ্রস্রোত উপকূলীয় অঞ্চলের তাপমাত্রাকে প্রভাবিত করে। উষ্ণ স্রোত উপকূলীয় অঞ্চলকে উষ্ণ রাখে, আর শীতল স্রোত শীতল করে।
- দূরত্ব (Distance from Sea/Continentality): সমুদ্রের নিকটবর্তী অঞ্চলে তাপমাত্রা চরমভাবাপন্ন হয় না (অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে খুব বেশি গরম বা শীতকালে খুব বেশি ঠান্ডা হয় না), কারণ সমুদ্রের জল ধীরে ধীরে গরম হয় এবং ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়। মহাদেশের অভ্যন্তরভাগে তাপমাত্রা চরমভাবাপন্ন হয়।
- বায়ুপ্রবাহ (Prevailing Winds): বায়ুপ্রবাহের দিক এবং উৎপত্তি স্থল একটি অঞ্চলের তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতকে প্রভাবিত করে।
- পাহাড় ও পর্বতের অবস্থান (Relief/Mountain Barriers): পর্বতমালা বায়ুর গতিপথ পরিবর্তন করে এবং একপাশে বৃষ্টিপাত ঘটায় (Windward side) এবং অন্যপাশে শুষ্ক পরিবেশ সৃষ্টি করে (Leeward side)।
দ্রাঘিমারেখা (Longitude) পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিম অবস্থান নির্দেশ করে এবং এটি মূলত সময় অঞ্চল নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়। এটি সরাসরি কোনো অঞ্চলের জলবায়ু নির্ধারণে ভূমিকা রাখে না। জলবায়ু মূলত অক্ষরেখা, উচ্চতা, সমুদ্রের নৈকট্য, বায়ুপ্রবাহ এবং সমুদ্রস্রোত দ্বারা প্রভাবিত হয়।
বায়ু দূষণ (গঃ) হলো পৃথিবীতে মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান এবং নীরব কারণ।
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ বায়ু দূষণের কারণে মারা যায়।
- এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, শ্বাসযন্ত্রের রোগসহ নানা জটিল রোগের মাধ্যমে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
- যদিও অন্যান্য কারণগুলিও গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু বৈশ্বিক পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় বায়ু দূষণজনিত রোগে।
সড়ক দুর্ঘটনা, তামাক গ্রহণ, ক্যান্সার – এদেরও মৃত্যুতে বড় ভূমিকা রয়েছে, তবে তুলনামূলকভাবে বায়ু দূষণ সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে পরিচিত।
১২৪. সার্ক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সার্ক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (SAARC Disaster Management Centre - SDMC) ভারতের নতুন দিল্লিতে অবস্থিত।
পূর্বে এটি গুজরাটের গান্ধীনগরে অবস্থিত থাকলেও, বর্তমানে এটি নয়াদিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়েছে।
১২৫. কোন পর্যায়ে দুর্যোগের ক্ষতি মূল্যায়ন করা হয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সঠিক উত্তর: পুনর্বাসন পর্যায়ে
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে — যেমন:
- সতর্কতা/প্রস্তুতি
- প্রতিক্রিয়া/উদ্ধার
- পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন
দুর্যোগের ক্ষতি মূল্যায়ন (Damage and Loss Assessment) সাধারণত পুনর্বাসন পর্যায়ে করা হয়। এই পর্যায়ে মূলত:
- ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ,
- ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো ও জনগণের পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা,
- এবং ভবিষ্যৎ প্রস্তুতির জন্য ডেটা সংগ্রহ করা হয়।
তাই, পুনর্বাসন পর্যায়েই ক্ষতির নিরূপণ ও পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১২৬. নিম্নের কোন দুর্যোগটি বাংলাদেশের জনগণের জীবিকা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি একটি ধীর গতির কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী দুর্যোগ, যা উপকূলবর্তী অঞ্চলের:
- কৃষিজমি,
- পানির উৎস,
- বাসস্থান,
- এবং সামগ্রিক জীবিকা ব্যবস্থাকে ধীরে ধীরে অকার্যকর করে তোলে।
কেন এটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে:
- এটি স্থায়ীভাবে জমি ডুবিয়ে দিতে পারে।
- লবণাক্ততার মাত্রা বেড়ে কৃষি ও মিষ্টি পানির চাষাবাদ কঠিন হয়।
- মানুষকে জোরপূর্বক স্থানান্তরিত হতে হয় (climate migrants)।
- এর প্রভাব প্রজন্মের পর প্রজন্ম টিকে থাকে।
অন্যদিকে ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা বা খরা তাৎক্ষণিক ও মাঝারি মেয়াদি ক্ষতি করে, তবে পুনর্বাসন ও উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রভাব কিছুটা লাঘব করা যায়।
অতএব, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের জনগণের জীবিকা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।
১২৭. আকাশে রংধনু সৃষ্টির কারণ-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
আকাশে রংধনু সৃষ্টির প্রধান কারণ হলো আলোর প্রতিসরণ (Refraction), প্রতিফলন (Reflection) এবং বিচ্ছুরণ (Dispersion) - এই তিনটি ঘটনার সম্মিলিত ফল, যা বৃষ্টির কণার (জলবিন্দু) মধ্যে ঘটে।
এখানে প্রতিটি ঘটনার ভূমিকা বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো:
১. প্রতিসরণ (Refraction):
- যখন সূর্যের আলো বায়ুমণ্ডলে ভাসমান অসংখ্য ছোট ছোট বৃষ্টির কণার (জলবিন্দু) উপর পড়ে, তখন আলো এক মাধ্যম (বায়ু) থেকে অন্য মাধ্যমে (জল) প্রবেশ করে।
- আলোকরশ্মি যখন বায়ু থেকে জলকণার মধ্যে প্রবেশ করে, তখন এটি দিক পরিবর্তন করে বেঁকে যায়। এই বেঁকে যাওয়াকে প্রতিসরণ বলে।
২. বিচ্ছুরণ (Dispersion):
- সূর্যের সাদা আলো প্রকৃতপক্ষে সাতটি ভিন্ন রঙের আলোর (বেগুনি, নীল, আকাশি, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল - সংক্ষেপে VIBGYOR বা বেনীআসহকলা) সমষ্টি।
- জলকণার মধ্যে প্রবেশ করার সময়, আলোর প্রতিটি রঙ ভিন্ন ভিন্ন কোণে প্রতিসরিত হয়। বেগুনি আলোর প্রতিসরণ কোণ সবচেয়ে বেশি এবং লাল আলোর প্রতিসরণ কোণ সবচেয়ে কম হয়।
- এই কারণে সাদা আলো তার উপাদান রঙে ভেঙে যায় বা ছড়িয়ে পড়ে। একে আলোর বিচ্ছুরণ বলে।
৩. প্রতিফলন (Reflection):
- প্রতিসরিত এবং বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মিগুলো যখন জলকণার ভেতরের পেছনের পৃষ্ঠে পৌঁছায়, তখন তারা জলকণার ভেতর থেকে বাইরের দিকে না গিয়ে সম্পূর্ণভাবে প্রতিফলিত হয়ে আবার জলকণার সামনের দিকে ফিরে আসে। একে অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলন বলে।
৪. দ্বিতীয় প্রতিসরণ ও দৃশ্যমানতা:
- প্রতিফলিত আলোকরশ্মিগুলো যখন আবার জলকণা থেকে বাইরের বায়ুমণ্ডলে আসে, তখন তারা দ্বিতীয়বার প্রতিসরিত হয়।
- এই দ্বিতীয় প্রতিসরণের কারণে, আলোর বিভিন্ন রঙ (যেমন: লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল, আকাশি, বেগুনি) নির্দিষ্ট কোণে দর্শকের চোখের দিকে আসে।
- বৃষ্টির কণাগুলো প্রিজমের মতো কাজ করে, যেখানে প্রতিটি কণা সাদা আলোকে তার উপাদান রঙে বিচ্ছুরিত করে।
- দর্শক যখন সূর্যের বিপরীত দিকে মুখ করে দাঁড়ান এবং আকাশে বৃষ্টি বা জলকণা থাকে, তখন তারা অসংখ্য জলকণা থেকে আসা এই বিচ্ছুরিত ও প্রতিসরিত আলো দেখতে পান, যা একটি অর্ধ-বৃত্তাকার বা পূর্ণ বৃত্তাকার বর্ণালীর (রংধনু) সৃষ্টি করে।
সংক্ষেপে: সূর্যের আলো যখন বৃষ্টির ফোঁটার মধ্যে দিয়ে যায়, তখন প্রথমে প্রতিসরিত ও বিচ্ছুরিত হয়, তারপর ফোঁটার পেছনের পৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত হয় এবং অবশেষে ফোঁটা থেকে বেরিয়ে আসার সময় আবার প্রতিসরিত হয়। এই সম্মিলিত প্রক্রিয়াই আকাশে বর্ণিল রংধনু তৈরি করে।
১২৮. ইস্টের সংশ্লিষ্টতা নেই কোন শিল্পে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ইস্টের (Yeast) সংশ্লিষ্টতা নেই এমন শিল্প হলো সাইট্রিক এসিড উৎপাদন
ইস্টের ব্যবহার ও কার্যকারিতা
ইস্ট হলো এক ধরণের এককোষী ছত্রাক, যা গাঁজন (fermentation) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- মদ্য শিল্পে (Wine industry): ইস্ট, বিশেষ করে Saccharomyces cerevisiae, আঙুরের রসে থাকা চিনিকে অ্যালকোহল ও কার্বন ডাই-অক্সাইডে রূপান্তরিত করে মদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
- রুটি শিল্পে (Bakery): রুটি তৈরিতে ইস্ট চিনিকে গাঁজন করে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে, যা রুটিকে ফুলিয়ে তোলে এবং নরম করে।
- এক কোষীয় প্রোটিন (Single-cell-protein) তৈরিতে: কিছু নির্দিষ্ট প্রজাতির ইস্ট প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং এগুলি খাদ্য বা পশু খাদ্যের পরিপূরক হিসেবে তৈরি করা হয়।
সাইট্রিক এসিড উৎপাদন মূলত ছত্রাক যেমন Aspergillus niger-এর নির্দিষ্ট স্ট্রেইন ব্যবহার করে করা হয়, ইস্টের সরাসরি ব্যবহারের মাধ্যমে নয়। যদিও কিছু ইস্ট প্রজাতি সাইট্রিক অ্যাসিড তৈরি করতে পারে, তবে শিল্প উৎপাদন সাধারণত Aspergillus niger ব্যবহার করে বেশি কার্যকর।
১২৯. চন্দ্রে কোনো বস্তুর ওজন পৃথিবীর ওজনের-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
চাঁদে কোনো বস্তুর ওজন পৃথিবীর ওজনের এক-ষষ্ঠাংশ (১/৬)।
একটি বস্তুর ওজন নির্ভর করে তার ভর এবং যে মহাজাগতিক বস্তুর (যেমন পৃথিবী বা চাঁদ) মহাকর্ষীয় বলের উপর। চাঁদের ভর এবং ব্যাসার্ধ পৃথিবীর তুলনায় অনেক কম, যার ফলস্বরূপ চাঁদের মহাকর্ষীয় টান পৃথিবীর তুলনায় দুর্বল।
নির্দিষ্টভাবে, চাঁদের পৃষ্ঠে মহাকর্ষীয় ত্বরণ (g) পৃথিবীর পৃষ্ঠের মহাকর্ষীয় ত্বরণের প্রায় ১/৬ গুণ। যেহেতু ওজন = ভর × মহাকর্ষীয় ত্বরণ, তাই চাঁদে যেকোনো বস্তুর ওজন পৃথিবীতে তার ওজনের প্রায় ১/৬ গুণ হবে।
উদাহরণস্বরূপ, যদি পৃথিবীতে আপনার ওজন ৬০ কেজি হয়, তাহলে চাঁদে আপনার ওজন হবে প্রায় ১০ কেজি। তবে বস্তুর ভর কিন্তু অপরিবর্তিত থাকে।
১৩০. মানবদেহে রোগ প্রতিরোধে প্রাথমিক প্রতিরক্ষাস্তরের (First line of defence) অন্তর্ভুক্ত নয় কোনটি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
মানবদেহে রোগ প্রতিরোধে প্রাথমিক প্রতিরক্ষাস্তরের (First line of defence) অন্তর্ভুক্ত নয় লিম্ফোসাইট (LYMPHOCYTES)।
মানবদেহের প্রতিরক্ষা স্তরসমূহ:
মানবদেহে রোগ প্রতিরোধের জন্য তিনটি প্রধান প্রতিরক্ষা স্তর রয়েছে:
১. প্রাথমিক প্রতিরক্ষা স্তর (First Line of Defence): এটি হলো শরীরের প্রথম প্রতিরক্ষা ব্যূহ যা প্যাথোজেনকে (রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু) শরীরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এটি অনির্দিষ্ট (non-specific) এবং সহজাত প্রতিরোধ ব্যবস্থার অংশ। এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হলো:
- ত্বক (Skin): জীবাণু প্রবেশে প্রধান ভৌত বাধা।
- শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি (Mucous Membranes): শ্বাসযন্ত্র, পরিপাকতন্ত্র এবং মূত্রনালীতে থাকে, যা জীবাণুকে আটকে রাখে।
- লাইসোজাইম (Lysozyme): অশ্রু, লালা এবং অন্যান্য দেহ তরলে বিদ্যমান একটি এনজাইম যা ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর ভেঙে দেয়।
- গ্যাস্ট্রিক জুস (Gastric Juice): পাকস্থলীর শক্তিশালী অ্যাসিড (HCl) যা ingested জীবাণুকে মেরে ফেলে।
- সিলিয়া (Cilia): শ্বাসতন্ত্রে থাকা ছোট ছোট লোমের মতো কাঠামো যা শ্লেষ্মার সাথে জীবাণুকে শরীরের বাইরে বের করে দেয়।
- সাধারণ ফ্লোরা (Normal Flora): ত্বকে ও শ্লৈষ্মিক ঝিল্লিতে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে।
২. দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা স্তর (Second Line of Defence): এটিও অনির্দিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ এবং যখন প্রাথমিক স্তর ব্যর্থ হয় তখন এটি কাজ করে। এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হলো:
- ফ্যাগোসাইটিক কোষ (যেমন ম্যাক্রোফেজ, নিউট্রোফিল)।
- প্রদাহ (Inflammation)।
- জ্বর (Fever)।
- প্রাকৃতিক ঘাতক কোষ (Natural Killer Cells)।
৩. তৃতীয় প্রতিরক্ষা স্তর (Third Line of Defence): এটি হলো নির্দিষ্ট (specific) বা অভিযোজিত প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এটি নির্দিষ্ট প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং স্মৃতি কোষ তৈরি করে। এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হলো:
- লিম্ফোসাইট (Lymphocytes): এটি এক প্রকার শ্বেত রক্তকণিকা (White Blood Cell) যা অভিযোজিত প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রধান উপাদান। বি-লিম্ফোসাইট অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং টি-লিম্ফোসাইট কোষ-মধ্যস্থ প্রতিরোধে অংশ নেয়। লিম্ফোসাইটগুলো প্রাথমিক প্রতিরক্ষা স্তরের অংশ নয়, বরং তারা জীবাণুর বিরুদ্ধে আরও সুনির্দিষ্ট এবং লক্ষ্যযুক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায়।
সুতরাং, লিম্ফোসাইট দেহের তৃতীয় প্রতিরক্ষা স্তরের অন্তর্ভুক্ত, প্রাথমিক স্তরের নয়।
১৩১. নিচের কোনটি ভাইরাসের (VIRUS) জন্য সত্য নয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ভাইরাসের (VIRUS) জন্য যেটি সত্য নয়, সেটি হলো রাইবোজোম (Ribosome) থাকে
ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যসমূহ:
- ডিএনএ বা আরএনএ থাকে (কঃ): ভাইরাস জিনগত বস্তু হিসেবে হয় ডিএনএ (DNA) অথবা আরএনএ (RNA) বহন করে, কিন্তু একসাথে উভয়টি নয়। এটি সত্য।
- শুধুমাত্র জীবদেহের অভ্যন্তরে সংখ্যাবৃদ্ধি করে (খঃ): ভাইরাস হলো বাধ্যতামূলক অন্তঃকোষীয় পরজীবী (obligate intracellular parasites)। এর অর্থ হলো, তারা শুধুমাত্র পোষক কোষের (host cell) অভ্যন্তরেই সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে, কারণ তাদের নিজস্ব কোষীয় যন্ত্রপাতি (যেমন রাইবোজোম) নেই। এটিও সত্য।
- স্ফটিক দানায় রূপান্তরিত (CRYSTALLIZATION) (গঃ): ভাইরাসের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো, তাদের কোষীয় গঠন না থাকায় এবং বিপাকীয় কার্যকলাপ না থাকায়, তারা জীবদেহের বাইরে রাসায়নিক পদার্থের মতো স্ফটিকাকার দানায় রূপান্তরিত হতে পারে। এটি সত্য।
- রাইবোজোম (Ribosome) থাকে (ঘঃ): ভাইরাসের নিজস্ব রাইবোজোম থাকে না। প্রোটিন সংশ্লেষণের জন্য তারা পোষক কোষের রাইবোজোম এবং অন্যান্য কোষীয় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে। এটি মিথ্যা।
সুতরাং, রাইবোজোম থাকা ভাইরাসের জন্য সত্য নয়।
১৩২. তাপ ইঞ্জিনের কাজ- (Heat Engine)
[ বিসিএস ৩৭তম ]
তাপ ইঞ্জিনের প্রধান কাজ হলো তাপশক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা।
এটি একটি এমন যন্ত্র যা একটি উচ্চ তাপমাত্রার উৎস থেকে তাপশক্তি শোষণ করে, সেই তাপশক্তির কিছু অংশকে কার্যকর যান্ত্রিক কাজে রূপান্তরিত করে এবং অবশিষ্ট তাপশক্তিকে একটি নিম্ন তাপমাত্রার তাপগ্রাহকে বর্জন করে।
উদাহরণস্বরূপ, গাড়ির ইঞ্জিন (পেট্রোল বা ডিজেল ইঞ্জিন), বাষ্পীয় ইঞ্জিন এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের টারবাইনগুলো তাপ ইঞ্জিনের উদাহরণ।
১৩৩. শূন্য মাধ্যমে শব্দের বেগ কত?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
শূন্য মাধ্যমে শব্দের বেগ শূন্য (০)।
ব্যাখ্যা: শব্দ এক ধরনের যান্ত্রিক তরঙ্গ, যা চলাচলের জন্য একটি মাধ্যমের প্রয়োজন হয়। শব্দ কম্পনের মাধ্যমে কণার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে শক্তি সঞ্চালন করে। শূন্য মাধ্যমে কোনো কণা থাকে না, তাই শব্দ তরঙ্গ চলাচল করতে পারে না। এজন্য মহাশূন্যে বা শূন্য স্থানে শব্দ শোনা যায় না।
অন্যদিকে, আলো তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ হওয়ায় এটি শূন্য মাধ্যমেও চলাচল করতে পারে।
১৩৪. দৈনিক খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক মাছ/শৈবালের অন্তর্ভুক্তি, কোন রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে সাহায্য করবে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
দৈনিক খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক মাছ/শৈবালের অন্তর্ভুক্তি হাইপো-থাইরয়ডিজম (HYPOTHYROIDISM) রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে সাহায্য করবে।
ব্যাখ্যা: সামুদ্রিক মাছ ও শৈবাল আয়োডিনের একটি চমৎকার উৎস। আয়োডিন থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরয়েড হরমোন নিঃসৃত হয়, যা শরীরের বিপাক ক্রিয়া (metabolism) নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আয়োডিনের অভাবে থাইরয়েড গ্রন্থি পর্যাপ্ত পরিমাণে হরমোন তৈরি করতে পারে না, যার ফলে হাইপো-থাইরয়ডিজম (থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি) এবং গয়টার (গলগণ্ড) রোগ হতে পারে। তাই, আয়োডিন সমৃদ্ধ সামুদ্রিক মাছ ও শৈবাল গ্রহণ এই রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
অন্যান্য বিকল্পগুলো:
- রাতকানা: ভিটামিন A এর অভাবে হয়।
- এনিমিয়া (রক্তস্বল্পতা): আয়রনের অভাবে হয়।
- কোয়াশিয়রকর: প্রোটিনের অভাবে হয়।
১৩৫. গ্রিনহাউজ কি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
গ্রিনহাউস (Greenhouse) হলো একটি বিশেষ ধরনের কাঁচ বা প্লাস্টিকের তৈরি ঘর, যা উদ্ভিদের চাষের জন্য নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো ভেতরের তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা, বিশেষ করে ঠান্ডা আবহাওয়ায় বা নির্দিষ্ট ফসল ফলানোর জন্য।
গ্রিনহাউসের কাজ করার পদ্ধতি:
১. সূর্যের আলো প্রবেশ: গ্রিনহাউসের কাঁচ বা স্বচ্ছ প্লাস্টিকের দেয়াল সূর্যের আলোকরশ্মিকে সহজে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়।
২. তাপ আটকে রাখা (গ্রিনহাউস প্রভাব):
- সূর্যের আলোকরশ্মি (স্বল্প তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বিকিরণ) ঘরের ভেতরে প্রবেশ করার পর মাটি, গাছপালা এবং ভেতরের অন্যান্য বস্তু দ্বারা শোষিত হয়।
- এই বস্তুগুলো উত্তপ্ত হয়ে তাপশক্তি বিকিরণ করে (দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অবলোহিত বিকিরণ)।
- কাঁচ বা প্লাস্টিকের দেয়ালগুলো এই দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তাপ বিকিরণকে সহজে বাইরে বের হতে দেয় না, ফলে তাপ ঘরের ভেতরে আটকা পড়ে।
- এর ফলে গ্রিনহাউসের ভেতরের তাপমাত্রা বাইরের তাপমাত্রার চেয়ে উষ্ণ থাকে, যা ঠান্ডা আবহাওয়ায় উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। এই প্রক্রিয়াটিই 'গ্রিনহাউস প্রভাব' নামে পরিচিত।
গ্রিনহাউসের ব্যবহার:
- ঠান্ডা অঞ্চলে উষ্ণতা প্রদান: শীতপ্রধান দেশগুলোতে ঠান্ডা আবহাওয়ায় ফসল ফলানোর জন্য গ্রিনহাউস অপরিহার্য।
- নির্দিষ্ট ফসল চাষ: বিভিন্ন প্রজাতির ফুল, ফল বা সবজি, যা একটি নির্দিষ্ট জলবায়ুতে স্বাভাবিকভাবে জন্মায় না, সেগুলোর চাষের জন্য গ্রিনহাউস ব্যবহার করা হয়।
- ফসলের সুরক্ষা: এটি গাছপালাকে কঠোর আবহাওয়া (যেমন অতিরিক্ত ঠান্ডা, বাতাস) এবং কীটপতঙ্গ থেকে রক্ষা করে।
- গবেষণা: কৃষি গবেষণায় নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে উদ্ভিদের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করার জন্য গ্রিনহাউস ব্যবহৃত হয়।
সংক্ষেপে, গ্রিনহাউস হলো এমন একটি কাঠামো যা সূর্যের আলো ব্যবহার করে ভেতরের পরিবেশকে উষ্ণ রাখে এবং উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও ফলনের জন্য অনুকূল তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বজায় রাখে।
১৩৬. কোনটি জারক পদার্থ নয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
জারক পদার্থ নয় এমন বিকল্পটি হলো হাইড্রোজেন
জারক পদার্থ (Oxidizing Agent) কী?
জারক পদার্থ (Oxidizing agent) হলো এমন রাসায়নিক পদার্থ যা অন্য কোনো পদার্থকে জারিত করে এবং নিজে বিজারিত হয়। জারণ প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন ত্যাগ হয়, আর বিজারণ প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন গ্রহণ হয়।
জারক পদার্থগুলো সাধারণত ইলেকট্রন গ্রহণে সক্ষম হয়।
-
অক্সিজেন (খঃ): অক্সিজেন একটি শক্তিশালী জারক পদার্থ। এটি ইলেকট্রন গ্রহণের প্রবণতা দেখায় এবং অনেক রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অন্য পদার্থকে জারিত করে।
-
ক্লোরিন (গঃ): ক্লোরিন একটি হ্যালোজেন মৌল এবং এটিও একটি শক্তিশালী জারক পদার্থ। এটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে।
-
ব্রোমিন (ঘঃ): ব্রোমিনও একটি হ্যালোজেন মৌল এবং এটিও জারক পদার্থ হিসেবে কাজ করে, যদিও ক্লোরিনের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী।
-
হাইড্রোজেন (কঃ): হাইড্রোজেন সাধারণত বিজারক পদার্থ হিসেবে কাজ করে, অর্থাৎ এটি অন্য পদার্থকে বিজারিত করে এবং নিজে জারিত হয় (ইলেকট্রন ত্যাগ করে)। যদিও কিছু নির্দিষ্ট শর্তে এটি জারক হিসেবে কাজ করতে পারে, তবে সাধারণভাবে এবং প্রশ্নটির প্রেক্ষাপটে এটি জারক পদার্থ নয়।
সুতরাং, এই বিকল্পগুলোর মধ্যে হাইড্রোজেনই জারক পদার্থ নয়।
১৩৭. নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে কি বলা হয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে বলা হয় ফিশন (Fission)।
ব্যাখ্যা: নিউক্লিয়ার ফিশন হলো একটি পারমাণবিক প্রক্রিয়া যেখানে একটি ভারী পরমাণুর নিউক্লিয়াস (যেমন ইউরেনিয়াম বা প্লুটোনিয়াম) দুটি বা তার বেশি ছোট নিউক্লিয়াসে বিভক্ত হয়। এই প্রক্রিয়ায় প্রচুর পরিমাণে শক্তি নির্গত হয়, যা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং পারমাণবিক বোমায় ব্যবহৃত হয়।
অন্যদিকে, নিউক্লিয়াসের একত্রিত হওয়াকে ফিউশন (Fusion) বলা হয়, যা সূর্যের শক্তির উৎস।
১৩৮. ধরিত্রী সম্মেলন কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
১৯৯২ সালে জাতিসংঘের উদ্যোগে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে প্রথম ধরিত্রী সম্মেলন (Earth Summit) অনুষ্ঠিত হয়।
এটি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলন (United Nations Conference on Environment and Development - UNCED) নামে পরিচিত। এই সম্মেলনে পরিবেশ সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয় এবং এজেন্ডা ২১ (Agenda 21) এর মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি গৃহীত হয়।
এরপর ২০০২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে দ্বিতীয় ধরিত্রী সম্মেলন এবং ২০১২ সালে আবারও ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে তৃতীয় ধরিত্রী সম্মেলন (Rio+20) অনুষ্ঠিত হয়।
১৩৯. বস্তুর ওজন কোথায় সবচেয়ে বেশি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ব্যাখ্যা:
একটি বস্তুর ওজন (Weight) তার ভর (mass) এবং অভিকর্ষজ ত্বরণ (acceleration due to gravity,
পৃথিবীর আকৃতির কারণে অভিকর্ষজ ত্বরণ (
১. পৃথিবীর আকৃতি: পৃথিবী পুরোপুরি গোলাকার নয়, এটি মেরুতে কিছুটা চাপা এবং বিষুবরেখায় কিছুটা স্ফীত। এর ফলে, মেরু অঞ্চল পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে বিষুব অঞ্চলের তুলনায় সামান্য কাছে থাকে।
২. দূরত্ব ও অভিকর্ষজ ত্বরণ: অভিকর্ষজ ত্বরণ (
৩. আবর্তন গতি: পৃথিবী তার অক্ষের চারপাশে আবর্তন করছে। এই আবর্তনের কারণে একটি কেন্দ্রবিমুখী বল (centrifugal force) তৈরি হয় যা বিষুবরেখায় সবচেয়ে বেশি এবং মেরুতে প্রায় শূন্য। এই কেন্দ্রবিমুখী বল ওজনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, অর্থাৎ এটি ওজনকে কিছুটা কমিয়ে দেয়। মেরুতে এই বলের প্রভাব না থাকায় ওজন সর্বাধিক থাকে।
এই দুটি কারণের (পৃথিবীর চাপা আকৃতি এবং আবর্তন গতির প্রভাব) সম্মিলিত ফলস্বরূপ, বস্তুর ওজন মেরু অঞ্চলে সর্বাধিক হয় এবং বিষুবরেখায় সর্বনিম্ন হয়।
১৪০. প্রাকৃতিক গ্যাসে মিথেন কি পরিমাণ থাকে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বিশ্বব্যাপী প্রাপ্ত প্রাকৃতিক গ্যাসে মিথেনের পরিমাণ সাধারণত ৮০% থেকে ৯৫% বা তারও বেশি থাকে।
বিশেষ করে, বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক গ্যাসে মিথেনের পরিমাণ সাধারণত ৯৩.৬৮% থেকে ৯৯% পর্যন্ত হতে পারে, যা এটিকে অত্যন্ত বিশুদ্ধ এবং কার্যকর জ্বালানি হিসেবে গণ্য করে। মিথেন ছাড়াও প্রাকৃতিক গ্যাসে অল্প পরিমাণে ইথেন, প্রোপেন, বিউটেন, পেন্টেন এবং কিছু পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেন সালফাইড থাকে।
১৪১. চা পাতায় কোন ভিটামিন থাকে?
[ বিসিএস ৩৭তম | বিসিএস ২৮তম ]
চা পাতায় ভিটামিন বি কমপ্লেক্স থাকে।
এছাড়াও, চা পাতায় ভিটামিন কে (K), ভিটামিন সি (C) এবং কিছু পরিমাণে অন্যান্য ভিটামিনও পাওয়া যায়, তবে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের উপাদানগুলো (যেমন রাইবোফ্ল্যাভিন, ফলিক অ্যাসিড) উল্লেখযোগ্য পরিমাণে থাকে।
কম্পিউটারের সিপিইউ (CPU)-এর যে অংশ গাণিতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাজ করে, তা হলো অ্যারিথমেটিক লজিক ইউনিট (Arithmetic Logic Unit - ALU)।
ALU সিপিইউ-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা সকল গাণিতিক (যেমন যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ) এবং যৌক্তিক (যেমন তুলনা করা, AND, OR, NOT) অপারেশন সম্পন্ন করে।
১৪৩. “একটি ২(দুই) ইনপুট লজিক সেটের আউটপুট ∅ হবে, যদি এর ইনপুটগুলো সমান হয়”– এই উক্তিটি কোন সেটের জন্য সত্য?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
"একটি ২ (দুই) ইনপুট লজিক সেটের আউটপুট ∅ (শূন্য/False) হবে, যদি এর ইনপুটগুলো সমান হয়" – এই উক্তিটি এক্স-অর (XOR) গেটের জন্য সত্য।
এক্স-অর (XOR) গেটের কার্যকারিতা:
এক্স-অর গেটের আউটপুট '১' (True) হয় শুধুমাত্র তখনই যখন এর ইনপুটগুলো ভিন্ন হয়। যদি ইনপুটগুলো সমান হয় (অর্থাৎ উভয়ই ০ অথবা উভয়ই ১), তাহলে এর আউটপুট '০' (False) হয়।
ট্রুথ টেবিল (Truth Table) of XOR Gate:
ইনপুট A | ইনপুট B | আউটপুট (A XOR B) |
---|---|---|
0 | 0 | 0 |
0 | 1 | 1 |
1 | 0 | 1 |
1 | 1 | 0 |
সুতরাং, যখন ইনপুটগুলো সমান (0,0) বা (1,1) হয়, তখন আউটপুট 0 হয়, যা আপনার দেওয়া উক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
১৪৪. কোনটি অপারেটিং সিস্টেম নয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
"C" একটি অপারেটিং সিস্টেম নয়।
এটি একটি প্রোগ্রামিং ভাষা।
অন্যান্য বিকল্পগুলো হলো:
- DOS (Disk Operating System): এটি একটি জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম ছিল, বিশেষ করে ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে ব্যক্তিগত কম্পিউটারে ব্যবহৃত হতো।
- CP/M (Control Program for Microcomputers): এটিও একটি অপারেটিং সিস্টেম যা ১৯৮০-এর দশকে মাইক্রোকম্পিউটারগুলোতে ব্যাপক ব্যবহৃত হতো।
- XENIX: এটি ইউনিক্স-ভিত্তিক একটি অপারেটিং সিস্টেম যা মাইক্রোসফট কর্তৃক উন্নয়ন করা হয়েছিল।
সুতরাং, C হলো একটি প্রোগ্রামিং ভাষা, অপারেটিং সিস্টেম নয়।
১৪৫. ক্লাউড সার্ভার নিচের কোনটিতে সবচেয়ে ভালো বর্ণনা করা সম্ভব?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বিকল্পগুলির মধ্যে, ক্লাউড সার্ভারকে সবচেয়ে ভালোভাবে বর্ণনা করা সম্ভব গঃ ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী কম্পিউটিং সেবা দেয়া।
যদিও ক্লাউড সার্ভারগুলো প্রায়শই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যুক্ত একাধিক কম্পিউটার সার্ভার (কঃ) ব্যবহার করে এবং নিজেরাই বিশাল ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার সার্ভার (খঃ) হতে পারে, তবে তাদের মূল বৈশিষ্ট্য এবং সংজ্ঞায়িত দিক হলো "সেবা" (service) প্রদান করা।
ক্লাউড সার্ভার এমন একটি ধারণা যেখানে ব্যবহারকারীকে হার্ডওয়্যার বা পরিকাঠামো কেনার বা রক্ষণাবেক্ষণের চিন্তা করতে হয় না। বরং, তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী কম্পিউটিং রিসোর্স (যেমন প্রসেসিং পাওয়ার, স্টোরেজ, ডেটাবেস, নেটওয়ার্কিং) ব্যবহার করতে পারেন এবং কেবল ব্যবহারের জন্য অর্থ প্রদান করেন। এটিকে "কম্পিউটিং অন ডিমান্ড" (computing on demand) বা "ইউটিলিটি কম্পিউটিং"ও বলা হয়।
সুতরাং, ক্লাউড সার্ভার শুধু একটি যন্ত্র নয়, বরং এটি একটি পরিষেবা মডেল যা ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুসারে কম্পিউটিং ক্ষমতা সরবরাহ করে।
১৪৬. IP-V6 এড্রেস কত বিটের?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
IPv6 এর প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ:
- ঠিকানার দৈর্ঘ্য: IPv6 ঠিকানা ১২৮ বিট (bit) দীর্ঘ হয়। এর বিপরীতে, IPv4 ঠিকানা ৩২ বিট দীর্ঘ। এই ১২৮ বিট দীর্ঘ ঠিকানা প্রায়
টি অনন্য ঠিকানা তৈরি করতে পারে, যা বিশ্বের প্রতিটি ডিভাইসকে একটি করে ঠিকানা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। - ঠিকানার বিন্যাস: IPv6 ঠিকানাগুলি আটটি ১৬-বিট হেক্সাডেসিমেল (hexadecimal) সংখ্যার গ্রুপে লেখা হয়, যেখানে প্রতিটি গ্রুপ কোলন (:) দ্বারা পৃথক করা হয়।
* সংক্ষিপ্ত রূপ: সুবিধার জন্য, IPv6 ঠিকানাগুলোকে সংক্ষিপ্ত আকারে লেখা যায়।
* প্রতিটি গ্রুপে শুরুতে থাকা শূন্য (leading zeros) বাদ দেওয়া যায়। যেমন, `0db8` কে `db8` লেখা যায়।
* এক বা একাধিক ধারাবাহিক শূন্যের গ্রুপকে একটি ডাবল কোলন (::) দিয়ে প্রতিস্থাপন করা যায়। তবে, একটি ঠিকানায় শুধুমাত্র একবার `::` ব্যবহার করা যায়।
* উদাহরণ: `2001:0db8:0000:0000:0000:8a2e:0370:7334` কে `2001:db8::8a2e:0370:7334` লেখা যায়।
- উন্নত কার্যকারিতা: IPv6 উন্নত রাউটিং দক্ষতা, স্বয়ংক্রিয় কনফিগারেশন, এবং এন্ড-টু-এন্ড সংযোগ নিরাপত্তা প্রদান করে।
- IPSec অন্তর্ভুক্তি: IPv6 প্রোটোকলে IPsec (Internet Protocol Security) অন্তর্নির্মিত থাকে, যা IPv4-এ ঐচ্ছিক ছিল। এটি নেটওয়ার্ক স্তরে ডেটা এনক্রিপশন এবং প্রমাণীকরণ নিশ্চিত করে।
- মোবাইল সমর্থন: এটি মোবাইল ডিভাইস এবং অন্যান্য গতিশীল যন্ত্রাংশের জন্য উন্নত সমর্থন প্রদান করে।
IPv4 ঠিকানার সংকটের কারণে, ভবিষ্যতে ইন্টারনেট জুড়ে IPv6 এর ব্যবহার আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
১৪৭. নিচের কোনটি ইনপুট ডিভাইস?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
আপনার দেওয়া বিকল্পগুলির মধ্যে, OMR হলো একটি ইনপুট ডিভাইস।
ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস:
- OMR (Optical Mark Recognition): এটি একটি ইনপুট ডিভাইস যা কাগজের ফর্মের উপর চিহ্নিত বৃত্ত বা চিহ্ন (যেমন পরীক্ষার উত্তরপত্রে পূরণ করা বৃত্ত) স্ক্যান করে ডেটা ইনপুট করে।
অন্যান্য বিকল্পগুলো আউটপুট ডিভাইস অথবা অন্য কিছু:
- COM: এটি সাধারণত "Communication Port" বোঝায়, যা একটি ইন্টারফেস, কোনো ইনপুট বা আউটপুট ডিভাইস নয়।
- Plotter: এটি একটি আউটপুট ডিভাইস যা গ্রাফিক্স, নকশা বা বড় আকারের ছবি প্রিন্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
- Monitor: এটি একটি আউটপুট ডিভাইস যা কম্পিউটারের ভিজ্যুয়াল ডিসপ্লে দেখায়।
ইউনিকোডের মাধ্যমে ১৬-বিট কোডিং ব্যবস্থায় ৬৫,৫৩৬ (2¹⁶) টি সম্ভাব্য চিহ্ন বা ক্যারেক্টার নির্দিষ্ট করা যায়, যেটি বেসিক মাল্টিলিংগুয়াল প্লেন (BMP) নামে পরিচিত।
তবে আধুনিক ইউনিকোড স্ট্যান্ডার্ডে ১৭টি প্লেন রয়েছে, যার মাধ্যমে ১০ লক্ষের বেশি (প্রায় ১,১১৪,১১২টি) ক্যারেক্টার নির্ধারণ করা সম্ভব। তবে প্রশ্নে যদি “সম্ভাব্য কতগুলো চিহ্ন” বলা হয় এবং অপশনগুলোর মধ্যে ৬৫,৫৩৬ দেওয়া থাকে, তাহলে এটি সাধারণত BMP (Basic Multilingual Plane) বোঝায়।
১৪৯. এনড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে নিচের কোনটি সঠিক?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে বিকল্পগুলির মধ্যে উপরের সবগুলো সঠিক।
অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের বৈশিষ্ট্যসমূহ:
- কঃ এটির নির্মাতা গুগল: অ্যান্ড্রয়েড প্রাথমিকভাবে অ্যান্ড্রয়েড ইনকর্পোরেটেড দ্বারা তৈরি হয়েছিল, যা ২০০৫ সালে গুগল অধিগ্রহণ করে। এরপর থেকে গুগলই অ্যান্ড্রয়েডের প্রধান উন্নয়নকারী।
- খঃ এটি লিনাক্স (Linux) কার্নেল নির্ভর: অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের ভিত্তি হলো লিনাক্স কার্নেল। এটি লিনাক্স কার্নেল ব্যবহার করে সিস্টেম হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের মধ্যে একটি ব্রিজ তৈরি করে।
- গঃ এটি প্রধানত টাচস্ক্রিন মোবাইল ডিভাইসের জন্য তৈরি: অ্যান্ড্রয়েড মূলত স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের মতো টাচস্ক্রিন মোবাইল ডিভাইসের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। যদিও পরে এটি স্মার্ট টিভি (Android TV), স্মার্টওয়াচ (Wear OS), গাড়ি (Android Auto) এবং অন্যান্য ডিভাইসেও অভিযোজিত হয়েছে, এর মূল ভিত্তি মোবাইল ডিভাইস।
সুতরাং, এই তিনটি উক্তিই অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য সঠিক।
আইওএস (iOS) মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমটি অ্যাপল ইনকর্পোরেটেড (Apple Inc.) বাজারজাত করে। এটি অ্যাপলের আইফোন, আইপ্যাড এবং আইপড টাচ ডিভাইসের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে।
EDSAC (Electronic Delay Storage Automatic Calculator) কম্পিউটার-এ ডেটা সংরক্ষণের জন্য মার্কারি ডিলে লাইন (Mercury Delay Line Memory) মেমোরি ব্যবহার করা হতো।
এটি প্রথম দিকের কম্পিউটারগুলোতে ব্যবহৃত এক ধরনের মেমোরি ছিল, যেখানে ডেটা শব্দ তরঙ্গ (sound waves) হিসেবে পারদপূর্ণ টিউবের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতো। এই শব্দ তরঙ্গগুলো এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে যে সময় নিত, সেই সময়ের ব্যবধানে ডেটা সংরক্ষিত থাকত। ডেটা হারিয়ে যাওয়া এড়াতে এটি বারবার রিফ্রেশ করা হতো।
১৫২. ই-কমার্স সাইট amazon.com কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ই-কমার্স সাইট Amazon.com হলো বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অনলাইন খুচরা বিক্রেতা (retailer) এবং ক্লাউড কম্পিউটিং পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা।
প্রধান বৈশিষ্ট্য ও কার্যক্রম:
- প্রতিষ্ঠাতা: জেফ বেজোস (Jeff Bezos) ১৯৯৪ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন।
- সদর দপ্তর: সিয়াটল, ওয়াশিংটন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
- মূল কার্যক্রম:
- অনলাইন রিটেইল: এটি বিভিন্ন ধরনের পণ্য যেমন বই, ইলেকট্রনিক্স, পোশাক, গৃহস্থালীর জিনিসপত্র, মুদি পণ্য ইত্যাদি অনলাইনে বিক্রি করে। এটি একটি মার্কেটপ্লেস হিসেবে কাজ করে যেখানে তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতারাও তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারে।
- অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (AWS): এটি বিশ্বের বৃহত্তম ক্লাউড কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে একটি, যা বিভিন্ন কোম্পানিকে ক্লাউড সার্ভার, স্টোরেজ, ডেটাবেস এবং অন্যান্য ক্লাউড-ভিত্তিক পরিষেবা প্রদান করে।
- ডিজিটাল কন্টেন্ট: কিন্ডল ই-রিডার এবং কিন্ডল ই-বুক, অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও (স্ট্রিমিং সেবা), অ্যামাজন মিউজিক, অডিবল (অডিওবুক) এর মতো ডিজিটাল কন্টেন্ট সেবাও এটি প্রদান করে।
- অন্যান্য সেবা: ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যালেক্সা, স্মার্ট হোম ডিভাইস, ডেলিভারি সার্ভিস ইত্যাদি।
অ্যামাজন বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে একটি এবং এটি বিশ্বজুড়ে ই-কমার্স এবং প্রযুক্তি শিল্পে একটি প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে।
১৫৩. ই-মেইল আদান প্রদানে ব্যবহৃত SMTP-এর পূর্ণরূপ কি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ই-মেইল (Email) হলো ইলেকট্রনিক মেইল-এর সংক্ষিপ্ত রূপ, যা ডিজিটাল বার্তা আদান-প্রদানের একটি পদ্ধতি। এটি ইন্টারনেট ব্যবহার করে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে বার্তা (টেক্সট, ছবি, ভিডিও, ফাইল ইত্যাদি) পাঠানোর সুযোগ দেয়।
ই-মেইল আদান-প্রদানের প্রক্রিয়া:
ই-মেইল আদান-প্রদানের জন্য সাধারণত কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করা হয়:
১. ই-মেইল ক্লায়েন্ট বা ওয়েবমেইল ব্যবহার: প্রেরক তার কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইসে একটি ই-মেইল ক্লায়েন্ট অ্যাপ্লিকেশন (যেমন Microsoft Outlook, Mozilla Thunderbird) অথবা একটি ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে ওয়েবমেইল সেবা (যেমন Gmail, Yahoo Mail, Outlook.com) ব্যবহার করে ই-মেইল তৈরি করেন।
২. বার্তা লেখা: প্রেরক প্রাপকের ই-মেইল ঠিকানা, বার্তার বিষয় (Subject) এবং মূল বার্তা (Body) লেখেন। প্রয়োজনে ফাইল (Attachment) যুক্ত করা যায়।
৩. ই-মেইল পাঠানো: প্রেরক 'Send' বোতামে ক্লিক করার সাথে সাথে ই-মেইলটি প্রেরকের আউটগোয়িং মেইল সার্ভারে (SMTP Server) পাঠানো হয়।
৪. সার্ভার থেকে সার্ভারে যাত্রা: আউটগোয়িং সার্ভার প্রাপকের ই-মেইল ঠিকানা বিশ্লেষণ করে এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রাপকের ইনকামিং মেইল সার্ভারে (POP3 বা IMAP Server) ই-মেইলটি পৌঁছে দেয়। এই সার্ভারগুলো মূলত ডেটা গ্রহণ, সংরক্ষণ এবং বিতরণের কাজ করে।
৫. ই-মেইল গ্রহণ: প্রাপক যখন তার ই-মেইল ক্লায়েন্ট বা ওয়েবমেইল অ্যাকাউন্টে লগ ইন করেন, তখন তাদের ইনকামিং মেইল সার্ভার থেকে ই-মেইলগুলো তাদের ইনবক্সে ডাউনলোড হয় বা প্রদর্শিত হয়।
ই-মেইলের সুবিধা:
- দ্রুততা: দ্রুততার সাথে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বার্তা পাঠানো যায়।
- খরচ-কার্যকরী: ঐতিহ্যবাহী ডাক পরিষেবার চেয়ে অনেক কম ব্যয়বহুল, অনেক সেবা বিনামূল্যে পাওয়া যায়।
- কাগজবিহীন: পরিবেশবান্ধব এবং কাগজের ব্যবহার কমায়।
- সংযুক্তি: টেক্সট বার্তার সাথে ফাইল, ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট ইত্যাদি সংযুক্ত করা যায়।
- রেকর্ড: প্রেরিত ও গৃহীত বার্তার ডিজিটাল রেকর্ড রাখা যায়।
ই-মেইল ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা এবং পেশাগত ক্ষেত্রে একটি অপরিহার্য যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
১৫৪. TCP দিয়ে কোনটি বোঝানো হয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
টিসিপি (TCP) বলতে ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রোটোকল (Transmission Control Protocol) বোঝানো হয়।
এটি ইন্টারনেট প্রোটোকল সুইটের (TCP/IP Suite) অন্যতম প্রধান প্রোটোকল। টিসিপি একটি নির্ভরযোগ্য (reliable) এবং সংযোগ-ভিত্তিক (connection-oriented) প্রোটোকল, যা ইন্টারনেটে ডিভাইসগুলোর মধ্যে ডেটা আদান-প্রদান নিশ্চিত করে।
টিসিপি-এর প্রধান কাজগুলো:
- নির্ভরযোগ্য ডেটা ডেলিভারি: টিসিপি নিশ্চিত করে যে পাঠানো ডেটাগুলো সঠিক ক্রমে, অক্ষত অবস্থায় এবং কোনো ত্রুটি ছাড়াই প্রাপকের কাছে পৌঁছাচ্ছে। যদি কোনো ডেটা প্যাকেট হারিয়ে যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, টিসিপি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেটি পুনরায় পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
- সংযোগ স্থাপন ও সমাপ্তি: ডেটা আদান-প্রদান শুরু করার আগে টিসিপি প্রেরক ও প্রাপকের মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপন করে (যাকে 'থ্রি-ওয়ে হ্যান্ডশেক' বলা হয়)। ডেটা আদান-প্রদান শেষ হলে এটি যথাযথভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে।
- ডেটা সেগমেন্টেশন ও পুনঃসংযোজন: টিসিপি অ্যাপ্লিকেশন থেকে আসা ডেটাকে ছোট ছোট প্যাকেটে (সেগমেন্ট) ভাগ করে, যা ইন্টারনেটে পাঠানো সহজ হয়। প্রাপক প্রান্তে এই সেগমেন্টগুলোকে আবার একত্রিত করে মূল ডেটা তৈরি করে।
- ফ্লো কন্ট্রোল (Flow Control): এটি ডেটা প্রবাহের গতি নিয়ন্ত্রণ করে যাতে দ্রুত ডেটা পাঠাতে থাকা প্রেরক ধীরগতির প্রাপককে অভিভূত না করে।
- কনজেশন কন্ট্রোল (Congestion Control): টিসিপি নেটওয়ার্কের ভিড় বা চাপ কমাতে সাহায্য করে ডেটা পাঠানোর গতি নিয়ন্ত্রণ করে।
ই-মেইল (Email), ওয়েব ব্রাউজিং (HTTP/HTTPS), ফাইল ট্রান্সফার (FTP) এর মতো ইন্টারনেটের বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ্লিকেশনের জন্য টিসিপি ব্যবহার করা হয়, কারণ এগুলো ডেটার নির্ভুল এবং সঠিক ক্রমে পৌঁছানো নিশ্চিত করে।
১৫৫. Push এবং Pop নিচের কার সাথে সম্পর্কিত?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
"Push" এবং "Pop" কম্পিউটার বিজ্ঞানের ডাটা স্ট্রাকচার (Data Structure), বিশেষ করে স্ট্যাক (Stack)-এর সাথে সম্পর্কিত।
-
স্ট্যাক (Stack): এটি একটি লিনিয়ার ডাটা স্ট্রাকচার যা "লাস্ট ইন, ফার্স্ট আউট" (Last In, First Out - LIFO) নীতি অনুসরণ করে। এর অর্থ হলো, যে ডেটা শেষে প্রবেশ করে সেটিই প্রথমে বের হয়। বাস্তব জীবনের উদাহরণ হিসেবে একটার পর একটা রাখা প্লেটের স্তূপের কথা ভাবা যেতে পারে।
-
Push (পুশ): স্ট্যাকে নতুন ডেটা বা উপাদান যুক্ত করার প্রক্রিয়াকে "পুশ" অপারেশন বলে। এটি স্ট্যাকের একেবারে উপরে নতুন উপাদান যোগ করে।
-
Pop (পপ): স্ট্যাক থেকে ডেটা বা উপাদান সরিয়ে ফেলার প্রক্রিয়াকে "পপ" অপারেশন বলে। এটি স্ট্যাকের একেবারে উপরের উপাদানটিকে সরিয়ে দেয়।
সুতরাং, "Push" এবং "Pop" স্ট্যাক ডাটা স্ট্রাকচারের দুটি মৌলিক অপারেশন।
১৫৬. ওয়াই-ফাই (Wi-Fi) নেটওয়ার্কে সংযোগের জন্য সংশ্লিষ্ট ডিভাইসটির সংযোগ মাধ্যম কোনটি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ওয়াই-ফাই (Wi-Fi) হলো ওয়্যারলেস লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (Wireless Local Area Network - WLAN) প্রযুক্তির একটি ব্র্যান্ড নাম যা ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোকে বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে ইন্টারনেট বা অন্যান্য নেটওয়ার্ক ডিভাইসের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে দেয়।
এটি IEEE 802.11 স্ট্যান্ডার্ডের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
ওয়াই-ফাই এর প্রধান বৈশিষ্ট্য এবং কার্যকারিতা:
১. বেতার সংযোগ: ওয়াই-ফাই ফিজিক্যাল কেবল বা তারের প্রয়োজন ছাড়াই ডিভাইসগুলোকে (যেমন স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, স্মার্ট টিভি) একে অপরের সাথে এবং ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করে।
২. রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার: এটি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি (2.4 GHz এবং 5 GHz ব্যান্ড) ব্যবহার করে ডেটা প্রেরণ করে।
৩. অ্যাক্সেস পয়েন্ট (Access Point - AP): একটি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক সাধারণত একটি রাউটার বা অ্যাক্সেস পয়েন্টের মাধ্যমে কাজ করে। রাউটার ইন্টারনেট সংযোগ গ্রহণ করে এবং এটিকে বেতার সংকেতে রূপান্তরিত করে, যা ওয়াই-ফাই সক্ষম ডিভাইসগুলো গ্রহণ করতে পারে।
৪. সুবিধা:
- সুবিধা: ব্যবহারকারীরা তারের সীমাবদ্ধতা ছাড়াই যেকোনো জায়গা থেকে নেটওয়ার্ক অ্যাক্সেস করতে পারে (নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে)।
- গতিশীলতা: ডিভাইসগুলো নেটওয়ার্কের সীমার মধ্যে অবাধে চলাচল করতে পারে।
- মাল্টিপল ডিভাইস: একটি অ্যাক্সেস পয়েন্টের সাথে একাধিক ডিভাইস একই সাথে সংযুক্ত হতে পারে।
- সহজ সেটআপ: তুলনামূলকভাবে সেটআপ করা সহজ।
৫. নিরাপত্তা: ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কগুলোতে সাধারণত এনক্রিপশন প্রোটোকল (যেমন WEP, WPA, WPA2, WPA3) ব্যবহার করা হয় অননুমোদিত অ্যাক্সেস রোধ করার জন্য।
ওয়াই-ফাই দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে, যা বাড়ি, অফিস, কফি শপ, বিমানবন্দর এবং অন্যান্য জনসমাগম স্থলে দ্রুত ইন্টারনেট অ্যাক্সেস প্রদান করে।
প্রথমে অনুপাতটিকে পূর্ণ সংখ্যায় পরিণত করতে হবে। এর জন্য ৩, ৫, ৯ এর ল.সা.গু. (লসাগু) বের করতে হবে।
৩, ৫, ৯ এর ল.সা.গু. হলো ৪৫।
এবার প্রতিটি পদকে ৪৫ দিয়ে গুণ করি:
সুতরাং, অনুপাতটি হলো
অনুপাতের পদগুলির যোগফল:
মোট আম সংখ্যা ২৬১টি।
প্রথম ভাই আম পাবে:
এখন গণনা করি:
সুতরাং, প্রথম ভাই ১৩৫টি আম পাবে।
১৫৮. 10% মুনাফায় 3000 টাকা এবং 8% মুনাফায় 2000 টাকা বিনিয়োগ করলে মোট মূলধনের উপর গড়ে শতকরা কত হার মুনাফা পাওয়া যাবে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রথম বিনিয়োগ:
মূলধন (P1) = ৩০০০ টাকা
মুনাফার হার (R1) = ১০% =
মুনাফা (I1) =
দ্বিতীয় বিনিয়োগ:
মূলধন (P2) = ২০০০ টাকা
মুনাফার হার (R2) = ৮% =
মুনাফা (I2) =
মোট মূলধন:
মোট মূলধন =
মোট মুনাফা:
মোট মুনাফা =
গড় মুনাফার হার:
গড় মুনাফার হার =
গড় মুনাফার হার =
গড় মুনাফার হার =
গড় মুনাফার হার =
সুতরাং, মোট মূলধনের উপর গড়ে শতকরা ৯.২% হার মুনাফা পাওয়া যাবে।
৮টি ডিম ১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে, তাই প্রতি ডিমের বিক্রয় মূল্য—
প্রতি ডিমের লাভ = বিক্রয় মূল্য - ক্রয় মূল্য
শতকরা লাভ গণনা করতে হলে—
অতএব, শতকরা লাভ = ২৫%
১৬০. হলে, এর মান-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রথমে,
এখন,
আমরা জানি,
সুতরাং,
আমরা
এখন
আমরা জানি,
তাহলে,
এখন
সুতরাং,
১৬১. হলে-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রথমে, আমরা
এটি একটি দ্বিঘাত সমীকরণ। আমরা এটিকে উৎপাদকে বিশ্লেষণ করতে পারি:
সুতরাং, সমীকরণটির মূলগুলি হলো
এখন আমরা একটি সংখ্যা রেখায় এই মূলগুলি স্থাপন করব এবং দেখব কোন অঞ্চলে
প্রতিটি অঞ্চলে একটি করে মান বসিয়ে অসমতাটি পরীক্ষা করি:
* অঞ্চল 1:
যেহেতু
* অঞ্চল 2:
যেহেতু
* অঞ্চল 3:
যেহেতু
সুতরাং, অসমতা
১৬২. দুই অংক বিশিষ্ট একটি সংখ্যা, অংকদ্বয়ের স্থান বিনিময়ের ফলে 54 বৃদ্ধি পায়। অংক দুটির যোগফল 12 হলে সংখ্যাটি কত?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সংখ্যাটির একক স্থানীয় অংক x
" দশক " " y
প্রশ্নমতে
আবার,
(i) + (ii) হতে পাই
(i) এ x এর মান বসাই
১৬৩. হলে, -এর মান-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
লগারিদমের সংজ্ঞা অনুযায়ী, যদি
এই সংজ্ঞা ব্যবহার করে, আমরা প্রদত্ত সমীকরণকে এভাবে লিখতে পারি:
আমরা জানি যে
আমরা আরও জানি যে
এখন
এবার
সুতরাং,
প্রদত্ত তথ্য:
সাধারণ অন্তর (
৬-তম পদ = 52
আমরা জানি, সমান্তর অনুক্রমের
৬-তম পদের জন্য (
এখন,
এখন আমরা অনুক্রমের প্রথম পদ (
১৫-তম পদটি নির্ণয় করতে হবে (
সুতরাং, ১৫-তম পদটি হলো ১৪২।
গুণোত্তর অনুক্রমের
প্রদত্ত তথ্য:
তৃতীয় পদটি (
ষষ্ঠ পদটি (
সূত্রের সাহায্যে পাই:
এখন, সমীকরণ (২) কে সমীকরণ (১) দ্বারা ভাগ করি:
সাধারণ অনুপাত
এখন
সুতরাং, গুণোত্তর অনুক্রমটির প্রথম পদটি হলো ৫।
১৬৬. 17 সে.মি., 15 সে.মি., 8 সে.মি. বাহু বিশিষ্ট ত্রিভুজটি হবে-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
পিথাগোরাসের উপপাদ্য অনুসারে, একটি সমকোণী ত্রিভুজের ক্ষেত্রে, অতিভুজের বর্গ (সবচেয়ে বড় বাহু) অন্য দুই বাহুর বর্গের যোগফলের সমান হয়।
এখানে বাহুগুলো হলো 17 সে.মি., 15 সে.মি., এবং 8 সে.মি.।
সবচেয়ে বড় বাহুটি হলো 17 সে.মি.।
আমরা পরীক্ষা করি:
এখন যোগফল দেখি:
যেহেতু
অতএব, 17 সে.মি., 15 সে.মি., 8 সে.মি. বাহু বিশিষ্ট ত্রিভুজটি হবে একটি সমকোণী ত্রিভুজ।
১৬৭. একটি আয়তক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ্য 15 মি. এবং প্রস্থ 10 মি. হলে আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল কত বর্গমিটার?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ধরি, আয়তক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য
দেওয়া আছে:
প্রস্থ (
কর্ণের দৈর্ঘ্য (
পিথাগোরাসের উপপাদ্য অনুসারে:
মানগুলো বসিয়ে পাই:
এখন, আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করি:
ক্ষেত্রফল = দৈর্ঘ্য
ক্ষেত্রফল =
ক্ষেত্রফল =
ক্ষেত্রফল =
সুতরাং, আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল হলো
১৬৮. 13 সে. মি. ব্যাসার্ধ বিশিষ্ট বৃত্তের একটি জ্যা-এর দৈর্ঘ্য 24 সে.মি. হলে কেন্দ্র থেকে উক্ত জ্যা-এর লম্ব দূরত্ব কত সে. মি.?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রদত্ত তথ্য:
বৃত্তের ব্যাসার্ধ (
জ্যা-এর দৈর্ঘ্য (
আমরা জানি, বৃত্তের কেন্দ্র থেকে জ্যা-এর উপর অঙ্কিত লম্ব জ্যা-কে সমদ্বিখণ্ডিত করে।
ধরি, কেন্দ্র
তাহলে,
এখন,
পিথাগোরাসের উপপাদ্য অনুসারে:
মানগুলো বসিয়ে পাই:
সুতরাং, কেন্দ্র থেকে উক্ত জ্যা-এর লম্ব দূরত্ব হলো ৫ সে.মি.।
সেট A:
অর্থাৎ,
ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যাগুলো হলো:
সুতরাং,
সেট B:
অর্থাৎ,
মৌলিক সংখ্যাগুলো হলো:
সুতরাং,
সেট C:
অর্থাৎ,
যদি
ধনাত্মক মৌলিক সংখ্যাটি হলো ৫।
সুতরাং,
এখন
এখন
যেহেতু
সুতরাং,
১৭০. 10 টি জিনিসের মধ্যে 2 টি এক জাতীয় এবং বাকিগুলো ভিন্ন ভিন্ন জিনিস। জিনিসগুলো থেকে প্রতিবারে 5 টি নিয়ে কত প্রকারে বাছাই করা যায়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
এখানে আমরা দুটি ক্ষেত্র বিবেচনা করতে পারি:
ক্ষেত্র ১: বাছাইকৃত ৫টি জিনিসের মধ্যে এক জাতীয় জিনিস ২টিই আছে।
যদি এক জাতীয় ২টি জিনিস নেওয়া হয়, তাহলে বাকি
এটি করার উপায় হলো:
ক্ষেত্র ২: বাছাইকৃত ৫টি জিনিসের মধ্যে এক জাতীয় কোনো জিনিস নেই (বা এক জাতীয় জিনিস ১টি আছে, যা এক্ষেত্রে ভিন্ন হিসেবে গণ্য হবে না কারণ তারা একই রকম)। অর্থাৎ, ৫টি জিনিসই ভিন্ন ভিন্ন ৮টি জিনিস এবং এক জাতীয় ২টির মধ্যে থেকে ১টি নিয়ে মোট ৯টি ভিন্ন জিনিস থেকে নেওয়া হবে।
এটি আরও সহজভাবে ভাবা যায় যে, এক জাতীয় দুটি জিনিস থেকে ১টি (বা ০টি) নিয়ে এবং বাকি ৮টি ভিন্ন জিনিস থেকে বাকিগুলো নিয়ে।
আসুন অন্যভাবে চিন্তা করি, মোট ১০টি জিনিসকে দুটি ভাগে ভাগ করি:
- এক জাতীয় জিনিস:
(যেখানে এবং একই রকম) - ভিন্ন ভিন্ন জিনিস:
(মোট ৮টি)
আমাদের ৫টি জিনিস বাছাই করতে হবে।
কেস ১: উভয় এক জাতীয় জিনিস বাছাই করা হয়েছে।
যদি
এই বাছাইয়ের উপায়:
কেস ২: এক জাতীয় জিনিস থেকে একটি বাছাই করা হয়েছে।
যদি এক জাতীয় জিনিস থেকে একটি নেওয়া হয় (যেহেতু
এই বাছাইয়ের উপায়:
কেস ৩: কোনো এক জাতীয় জিনিস বাছাই করা হয়নি।
যদি কোনো এক জাতীয় জিনিস না নেওয়া হয়, তাহলে ৫টি জিনিসই বাছাই করতে হবে বাকি ৮টি ভিন্ন জিনিস থেকে।
এই বাছাইয়ের উপায়:
মোট বাছাই করার উপায় = (কেস ১ এর উপায়) + (কেস ২ এর উপায়) + (কেস ৩ এর উপায়)
মোট উপায় =
সুতরাং, জিনিসগুলো থেকে প্রতিবারে ৫টি নিয়ে ১৮২ প্রকারে বাছাই করা যায়।
১৭১. একটি থলিতে 6 টি নীল বল, 8 টি সাদা বল এবং 10 টি কালো বল আছে। দৈবভাবে একটি বল তুললে সেটি সাদা না হবার সম্ভাবনা কত?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রদত্ত তথ্য:
নীল বল = ৬টি
সাদা বল = ৮টি
কালো বল = ১০টি
প্রথমে মোট বলের সংখ্যা নির্ণয় করি:
মোট বল = ৬ + ৮ + ১০ = ২৪টি
এখন, সাদা বল না হওয়ার সম্ভাবনা বের করতে হবে।
এর মানে হলো, বলটি নীল অথবা কালো হবে।
সাদা বলের সংখ্যা = ৮টি
সাদা না হওয়া বলের সংখ্যা = নীল বল + কালো বল = ৬ + ১০ = ১৬টি
সাদা না হওয়ার সম্ভাবনা =
সাদা না হওয়ার সম্ভাবনা =
এই ভগ্নাংশটিকে সরল করি। ১৬ এবং ২৪ উভয়ই ৮ দ্বারা বিভাজ্য:
বিকল্প পদ্ধতি (সাদা হওয়ার সম্ভাবনা বাদ দিয়ে):
সাদা হওয়ার সম্ভাবনা =
সাদা না হওয়ার সম্ভাবনা =
সাদা না হওয়ার সম্ভাবনা =
সুতরাং, দৈবভাবে একটি বল তুললে সেটি সাদা না হবার সম্ভাবনা হলো
১৭২. কোনটি ‘অগ্নি’র সমার্থক শব্দ নয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'অগ্নি'র সমার্থক শব্দ নয় এমন বিকল্পটি হলো প্রজ্বলিত
ব্যাখ্যা:
- পাবক: অগ্নির একটি প্রচলিত সমার্থক শব্দ।
- বহ্নি: এটিও অগ্নির একটি সমার্থক শব্দ।
- হুতাশন: এটিও অগ্নির একটি সমার্থক শব্দ, যা বিশেষ করে যজ্ঞের আগুন অর্থে ব্যবহৃত হয়।
- প্রজ্বলিত: এটি একটি বিশেষণ পদ, যার অর্থ হলো 'জ্বলে উঠেছে' বা 'দীপ্তিমান'। এটি আগুনের অবস্থা বোঝায়, কিন্তু সরাসরি আগুনের নাম বা সমার্থক শব্দ নয়।
প্রাতঃভ্রমণের দিক নির্ণয় করি:
১. বের হওয়ার সময় সূর্য আপনার সামনে ছিল: ভোর বেলায় সূর্য পূর্ব দিকে থাকে। তাই, আপনি বের হওয়ার সময় আপনার মুখ ছিল পূর্ব দিকে।
২. কিছুক্ষণ পরে আপনি বামদিকে ঘুরলেন: আপনি পূর্ব দিকে মুখ করে ছিলেন। এবার বাম দিকে ঘুরলে আপনার মুখ হবে উত্তর দিকে।
৩. কয়েক মিনিট পরে আপনি ডানদিকে ঘুরলেন: আপনি উত্তর দিকে মুখ করে ছিলেন। এবার ডান দিকে ঘুরলে আপনার মুখ হবে পূর্ব দিকে।
সুতরাং, এখন আপনার মুখ পূর্ব দিকে।

১৭৪. একটি মোটা ও একটি চিকন হাতলওয়ালা স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে একই মাপের দুটি স্ক্রু-কে কাঠবোর্ডের ভিতরে সমান গভীরতায় প্রবেশ করাতে চাইলে কোনটি ঘটবে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে স্ক্রু লাগানোর সময় স্ক্রুর ব্যাসার্ধ যাই হোক না কেন স্ক্রু ড্রাইভারের হাতল যতবার ঘুরানো হবে স্ক্রুটি ও ঠিক ততোবার ঘুরবে। স্ক্রুর সরণ তার ঘূর্ণনের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় ভিন্ন ব্যাসার্ধের হাতল ওয়ালা দুটি স্ক্রু ড্রাইভার দ্বারা ২টি সমান স্ক্রুকে সমান সংখ্যাক বার ঘুরালে স্ক্রু ২টি ও সমান সংখ্যক বার ঘুরবে আর ঘূর্ণন সংখ্যা সমান হলে স্ক্রুর সরণও সমান হবে অর্থাৎ ২টি ক্রুই সমান গভীরতায় প্রবেশ করবে।
১৭৫. ৫-এর কত শতাংশ ৭ হবে-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ধরি, ৫-এর
তাহলে,
এখন
সুতরাং, ৫-এর ১৪০ শতাংশ ৭ হবে।
১৭৬.
[ বিসিএস ৩৭তম ]
প্রথমে সংখ্যাগুলোকে গুণ করি দশমিক বিন্দু ছাড়া:
এখন দশমিক বিন্দুর পর মোট কতটি অঙ্ক আছে তা গণনা করি:
মোট =
সুতরাং, গুণফলের ফলাফলে দশমিক বিন্দুর পর ৫টি অঙ্ক থাকতে হবে।
সুতরাং,
১৭৭. কোনো নৌকাকে বেশি গতিতে চালাতে হলে, বৈঠা ব্যবহার করতে হবে-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
কোনো নৌকাকে বেশি গতিতে চালাতে হলে, বৈঠা ব্যবহার করতে হবে উল্টো দিকে (পেছনের দিকে) জোরে টানতে হবে এবং পানিকে পেছনের দিকে ঠেলতে হবে।
এটি নিউটনের তৃতীয় সূত্র (প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে) দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়:
- ক্রিয়া: আপনি বৈঠা দিয়ে পানিকে পেছনের দিকে ঠেলছেন।
- প্রতিক্রিয়া: পানি নৌকাকে সামনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যার ফলে নৌকা এগিয়ে যায়।
যত বেশি শক্তি দিয়ে আপনি পানিকে পেছনের দিকে ঠেলবেন, তত বেশি প্রতিক্রিয়া বল সামনের দিকে তৈরি হবে এবং নৌকা তত বেশি গতিতে চলবে।
১৭৮. Telephone : Cable :: Radio:?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
এখানে সম্পর্কটি হলো: প্রথমটি (Telephone) দ্বিতীয়টির (Cable) মাধ্যমে সংযুক্ত হয়, এবং দ্বিতীয়টি (Radio) কিসের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়?
- Telephone (টেলিফোন) যোগাযোগের জন্য Cable (তার)-এর উপর নির্ভরশীল।
- Radio (রেডিও) যোগাযোগের জন্য Wireless (বেতার)-এর উপর নির্ভরশীল।
অতএব, সঠিক উত্তর হলো:
খঃ Wireless
আমাদের ঐ বছরের ১ অক্টোবর কী বার ছিল তা বের করতে হবে।
প্রথমে ২৮ আগস্ট থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত মোট দিন সংখ্যা হিসাব করি:
- আগস্ট মাস: আগস্ট মাস ৩১ দিনে হয়। ২৮ আগস্ট চলে গেছে, তাই আগস্ট মাসে বাকি আছে
দিন। - সেপ্টেম্বর মাস: সেপ্টেম্বর মাস ৩০ দিনে হয়।
- অক্টোবর মাস: অক্টোবরের ১ তারিখ পর্যন্ত। তাই ১ দিন।
মোট দিন সংখ্যা = ৩ (আগস্ট) + ৩০ (সেপ্টেম্বর) + ১ (অক্টোবর) = ৩৪ দিন।
এখন, এই ৩৪ দিনকে ৭ দিয়ে ভাগ করে অবশিষ্ট দিন সংখ্যা বের করি:
২৮ আগস্ট যদি শুক্রবার হয়, তাহলে ৬ দিন পর যে বার হবে, সেটাই হবে ১ অক্টোবর।
শুক্রবার + ৬ দিন = বৃহস্পতিবার।
(শুক্রবার + ১ দিন = শনিবার)
(শুক্রবার + ২ দিন = রবিবার)
(শুক্রবার + ৩ দিন = সোমবার)
(শুক্রবার + ৪ দিন = মঙ্গলবার)
(শুক্রবার + ৫ দিন = বুধবার)
(শুক্রবার + ৬ দিন = বৃহস্পতিবার)
সুতরাং, ঐ বছরের ১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ছিল।
তাহলে, প্রাথমিক ক্ষেত্রফল
ব্যাসার্ধ ২০% কমে গেলে, নতুন ব্যাসার্ধ হবে:
এখন, নতুন ক্ষেত্রফল
ক্ষেত্রফল কমেছে =
শতকরা কমার হার =
সুতরাং, উক্ত বৃত্তের ক্ষেত্রফল ৩৬% কমবে।
১৮১. Find out the correct synonym of ‘TENUOUS’–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
শব্দটি "TENUOUS" (টেনুয়াস) এর অর্থ হল খুব সামান্য, দুর্বল, বা ভঙ্গুর; যার সারবত্তা বা শক্তি সামান্য।
বিকল্পগুলো দেখি:
- কঃ Vital (ভাইটাল / অত্যাবশ্যক): অত্যাবশ্যকীয় বা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। (এটি বিপরীত অর্থ)
- খঃ Thin (থিন / পাতলা): যার পুরুত্ব বা সারবত্তা কম। (এটি কাছাকাছি অর্থ)
- গঃ Careful (কেয়ারফুল / সতর্ক): সতর্কতা অবলম্বনকারী। (অসংশ্লিষ্ট)
- ঘঃ Dangerous (ডেঞ্জারাস / বিপজ্জনক): ঝুঁকি জড়িত; বিপজ্জনক। (অসংশ্লিষ্ট)
"TENUOUS" এর সবচেয়ে কাছাকাছি প্রতিশব্দ হলো "Thin"।
সুতরাং, সঠিক উত্তর হলো খঃ Thin (পাতলা)।
ছবিটি দেখে নিচের প্রশ্নের উত্তর দাও:

১৮২. ২য় বৃত্তের মধ্যে সঠিক সংখ্যাটি কত হবে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
এবং
২য় বৃত্তে
এবং
২য় বৃত্তে
এবং
১৮৩. কোন বানানটি শুদ্ধ?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
এখানে শুদ্ধ বানানটি হলো:
গঃ Achievement
"Achievement" শব্দটির বাংলা অর্থ হলো:
- কৃতিত্ব
- সাফল্য
- অর্জন
- সিদ্ধি
- সম্পাদন
এটি সাধারণত কোনো লক্ষ্য অর্জন করা, কোনো কিছু সফলভাবে সম্পন্ন করা, বা উল্লেখযোগ্য কিছু করে দেখানোকে বোঝায়।
১৮৪. If LOYAL is coded as ‘JOWAJ’, then PRONE is coded as–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
LOYAL কে ‘JOWAJ’ হিসেবে কোড করা হয়েছে।
প্রতিটি অক্ষরের পরিবর্তন দেখি (বর্ণমালার অবস্থান অনুসারে):
L (১২তম)
O (১৫তম)
Y (২৫তম)
A (১ম বা ২৭তম)
L (১২তম)
প্যাটার্নটি হলো: প্রতিটি বিকল্প অক্ষরের জন্য -২ এবং বাকি অক্ষরের জন্য +০ (কোনো পরিবর্তন নেই)।
অর্থাৎ, প্রথম অক্ষর -২, দ্বিতীয় অক্ষর +০, তৃতীয় অক্ষর -২, চতুর্থ অক্ষর +০, পঞ্চম অক্ষর -২, ইত্যাদি।
এবার এই প্যাটার্নটি 'PRONE' শব্দটির উপর প্রয়োগ করি:
P (১৬তম)
R (১৮তম)
O (১৫তম)
N (১৪তম)
E (৫ম)
সুতরাং, PRONE কে কোড করলে হবে NRMNC।
বিকল্পগুলির মধ্যে, ঘঃ NRMNC সঠিক উত্তর।
১৮৫. একটি লন রোলারকে যদি দুইজন ব্যক্তির একজন টেনে নেয় ও একজন ঠেলে নেয় তবে কার বেশি কষ্ট হবে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
একটি লন রোলারকে যদি দুইজন ব্যক্তির একজন টেনে নেয় ও একজন ঠেলে নেয়, তবে ঠেলে নেওয়া ব্যক্তির বেশি কষ্ট হবে।
এর কারণ ব্যাখ্যা:
বল এবং ভেক্টরের নীতির ওপর ভিত্তি করে এটি ব্যাখ্যা করা যায়:
১. টেনে নেওয়া (Pulling): যখন একজন ব্যক্তি রোলারটি টেনে নেয়, তখন সে যে বল প্রয়োগ করে (F), তার একটি অংশ উল্লম্বভাবে উপরের দিকে কাজ করে। এর ফলে রোলারের কার্যকর ওজন কিছুটা কমে যায়। রোলারের ওজন যেহেতু কম অনুভব হয়, তাই ভূমি এবং রোলারের মধ্যে ঘর্ষণ বলও কিছুটা কমে যায়। কম ঘর্ষণ মানে রোলারকে সামনে সরাতে কম বলের প্রয়োজন হয়, যার ফলে টেনে নেওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ হয়।
২. ঠেলে নেওয়া (Pushing): যখন একজন ব্যক্তি রোলারটি ঠেলে নেয়, তখন সে যে বল প্রয়োগ করে (F), তার একটি অংশ উল্লম্বভাবে নিচের দিকে কাজ করে। এর ফলে রোলারের কার্যকর ওজন কিছুটা বেড়ে যায়। রোলারের ওজন বেড়ে যাওয়ায় ভূমি এবং রোলারের মধ্যে ঘর্ষণ বলও বেড়ে যায়। বেশি ঘর্ষণ মানে রোলারকে সামনে সরাতে বেশি বলের প্রয়োজন হয়, যার ফলে ঠেলে নেওয়া তুলনামূলকভাবে বেশি কঠিন বা কষ্টকর হয়।
সহজভাবে বলতে গেলে, টেনে নেওয়ার সময় বলের ঊর্ধ্বমুখী উপাংশ রোলারের ওজনকে কিছুটা প্রশমিত করে, আর ঠেলে নেওয়ার সময় বলের নিম্নমুখী উপাংশ রোলারের ওজনকে আরও বাড়িয়ে দেয়। এই কারণে ঠেলে নেওয়া বেশি কষ্টকর হয়।
১৮৬. বিভা : কিরণ :: সুবলিত :
[ বিসিএস ৩৭তম ]
এখানে যে সম্পর্কটি স্থাপন করা হয়েছে তা হলো সমার্থক শব্দ (Synonym)।
- বিভা শব্দের অর্থ হলো কিরণ (আলো বা রশ্মি)।
- একইভাবে, সুবলিত শব্দের অর্থ হলো সুগঠিত বা ভালোভাবে গঠিত।
অতএব, সঠিক উত্তরটি হলো:
খঃ সুগঠিত
১৮৭. একজন যোগ্য প্রশাসক ও ব্যবস্থাপকের অত্যাবশকীয় মৌলিক গুণাবলির মধ্যে শ্রেষ্ঠ গুণ কোনটি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
একজন যোগ্য প্রশাসক ও ব্যবস্থাপকের মৌলিক গুণাবলির মধ্যে শ্রেষ্ঠ গুণ হচ্ছে নৈতিকতা। নৈতিকতা (Ethics) একটি ব্যাপক ধারণা, যা মানুষের বাহ্যিক আচরণের পাশাপাশি মানব চিন্তাকেও নিয়ন্ত্রণ করে। আর দায়িত্বশীলতা, দক্ষতা, সরলতা, কর্বত্যপরায়ণতা, ন্যায়নিষ্ঠা প্রভৃতি নৈতিকতা থেকেই উদ্ভূত।
১৮৮. আমাদের চিরন্তন মূল্যবোধ কোনটি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
আমাদের চিরন্তন মূল্যবোধ হলো যা সব সময়, সব সমাজে এবং সব পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ও অনুসরণীয় বলে বিবেচিত হয়।
প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে, সঠিক উত্তরটি হলো সত্য ও ন্যায়
ব্যাখ্যা:
- সত্য ও ন্যায়: এগুলো মানবজাতির জন্য সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত এবং মৌলিক নৈতিক মূল্যবোধ। সত্যবাদিতা এবং ন্যায়বিচার সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা এবং অগ্রগতি নিশ্চিত করে। এগুলো সভ্যতার ভিত্তি এবং চিরকাল ধরে মানুষ এগুলোর কদর করে আসছে।
- সার্থকতা: এটি ব্যক্তিগত অর্জন বা সাফল্যের সাথে সম্পর্কিত, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হতে পারে, কিন্তু এটি সত্য বা ন্যায়ের মতো চিরন্তন নৈতিক মূল্যবোধ নয়।
- শঠতা: এটি অসৎ বা প্রতারণামূলক আচরণকে বোঝায়, যা একটি নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য এবং কোনোভাবেই মূল্যবোধ হতে পারে না।
- অসহিষ্ণুতা: এটি ভিন্ন মত, বিশ্বাস বা সংস্কৃতির প্রতি অশ্রদ্ধা বা বিরোধিতাকে বোঝায়, যা একটি নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য এবং সামাজিক সংহতির পরিপন্থী।
সুতরাং, সত্য ও ন্যায় হলো চিরন্তন মূল্যবোধ।
১৮৯. রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ কাকে বলা হয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হলো গণমাধ্যম (Media)।
ঐতিহ্যগতভাবে, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভ হলো: ১. আইনসভা (Legislature): আইন প্রণয়ন করে। ২. শাসন বিভাগ (Executive): আইন প্রয়োগ করে। ৩. বিচার বিভাগ (Judiciary): আইন ব্যাখ্যা করে এবং বিচার নিশ্চিত করে।
গণমাধ্যমকে "চতুর্থ স্তম্ভ" বলা হয় কারণ এটি সরকারের উপর নজরদারি রাখে, জনমত তৈরি করে, তথ্য সরবরাহ করে এবং জনগণের কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করে, যা একটি সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। এটি সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৯০. সরকারি সিদ্ধান্ত প্রণয়নে কোন মূল্যবোধটি গুরুত্বপূর্ণ নয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সরকারি সিদ্ধান্ত প্রণয়নে নিম্নলিখিত মূল্যবোধগুলির মধ্যে সৃজনশীলতা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতটা অন্যান্যগুলো।
ব্যাখ্যা:
-
কঃ বিশ্বস্ততা (Trustworthiness): সরকারি সিদ্ধান্তে বিশ্বস্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ যেন সরকারের ওপর আস্থা রাখতে পারে এবং সরকারি সিদ্ধান্তগুলো নির্ভরযোগ্য হয়, সে জন্য এটি অপরিহার্য।
-
গঃ নিরপেক্ষতা (Impartiality): সিদ্ধান্ত প্রণয়নে নিরপেক্ষতা অত্যাবশ্যক। পক্ষপাতহীন সিদ্ধান্ত সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে।
-
ঘঃ জবাবদিহিতা (Accountability): সরকারি সিদ্ধান্তের জন্য জবাবদিহিতা একটি মৌলিক মূল্যবোধ। এর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা তাদের কাজের জন্য দায়বদ্ধ থাকেন এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়।
-
খঃ সৃজনশীলতা (Creativity): সৃজনশীলতা নতুন ধারণা বা সমাধানের জন্য সহায়ক হতে পারে এবং নীতি নির্ধারণ বা সমস্যা সমাধানে এর ভূমিকা থাকতে পারে। তবে, এটি সিদ্ধান্ত প্রণয়নের মৌলিক মূল্যবোধ হিসাবে বিশ্বস্ততা, নিরপেক্ষতা বা জবাবদিহিতার মতো সরাসরি গুরুত্বপূর্ণ নয়। সরকারি সিদ্ধান্ত প্রায়শই আইন, নিয়ম, প্রবিধান এবং বিদ্যমান নীতির কাঠামোর মধ্যে থেকে নেওয়া হয়, যেখানে সৃজনশীলতার চেয়ে সঠিকতা, ধারাবাহিকতা এবং ন্যায়পরায়ণতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত সৃজনশীলতা কখনো কখনো প্রটোকল বা প্রতিষ্ঠিত মান থেকে বিচ্যুতি ঘটাতে পারে।
সুতরাং, বিশ্বস্ততা, নিরপেক্ষতা এবং জবাবদিহিতা হলো সরকারি সিদ্ধান্ত প্রণয়নের জন্য অপরিহার্য মৌলিক মূল্যবোধ, যেখানে সৃজনশীলতা একটি সহায়ক গুণ হলেও সরাসরি সিদ্ধান্তের মূল স্তম্ভ নয়।
১৯১. UNDP সুশাসন নিশ্চিতকরণে কয়টি উপাদান উল্লেখ করেছে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
১৯৯৭ সালে ইউএনডিপি (UNDP) সুশাসন নিশ্চিতকরণে আটটি (8টি) উপাদানের কথা উল্লেখ করেছে।
এই উপাদানগুলো হলো: ১. অংশগ্রহণ (Participation) ২. আইনের শাসন (Rule of Law) ৩. স্বচ্ছতা (Transparency) ৪. সাড়া দান (Responsiveness) ৫. ঐকমত্য অভিমুখিতা (Consensus Orientation) ৬. সমতা ও অন্তর্ভুক্তি (Equity and Inclusiveness) ৭. কার্যকারিতা ও দক্ষতা (Effectiveness and Efficiency) ৮. জবাবদিহিতা (Accountability)
১৯২. কোনটি ন্যায়পরায়ণতার নৈতিক মূলনীতি নয়?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
নৈতিক মূলনীতি নয় এমন বিকল্পটি হলো সুশাসনের জন্য উচ্চ শিক্ষিত কর্মকর্তা নিয়োগ
ব্যাখ্যা:
-
কঃ পুরস্কার ও শাস্তির ক্ষেত্রে সমতার নীতি প্রয়োগ: এটি ন্যায়পরায়ণতার একটি মৌলিক নীতি। এর অর্থ হলো, যোগ্যতা ও অপরাধ নির্বিশেষে সকল ক্ষেত্রে সমানভাবে আইন প্রয়োগ করা।
-
খঃ আইনের শাসন: ন্যায়পরায়ণতার অন্যতম ভিত্তি হলো আইনের শাসন। এর মানে হলো সকল নাগরিক আইনের অধীন এবং আইন সবার জন্য সমান।
-
ঘঃ অধিকার ও সুযোগের ক্ষেত্রে সমতার নিশ্চিতকরণ: এটিও ন্যায়পরায়ণতার একটি মূলনীতি, যা নিশ্চিত করে যে সমাজের সকল সদস্যের মৌলিক অধিকার এবং সুযোগের ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য থাকবে না।
-
গঃ সুশাসনের জন্য উচ্চ শিক্ষিত কর্মকর্তা নিয়োগ: উচ্চ শিক্ষিত কর্মকর্তা নিয়োগ সুশাসনের জন্য সহায়ক হতে পারে এবং এটি একটি বাস্তবসম্মত প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। তবে, এটি সরাসরি ন্যায়পরায়ণতার নৈতিক মূলনীতি নয়। ন্যায়পরায়ণতার মূলনীতিগুলো আদর্শগত এবং সর্বজনীন ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত (যেমন সমতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা, নিরপেক্ষতা), যেখানে উচ্চ শিক্ষা একটি গুণগত যোগ্যতা মাত্র। একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি নৈতিক বা ন্যায়পরায়ণ নাও হতে পারেন।
১৯৩. সরকারি চাকরিতে সততার মাপকাঠি কি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
সরকারি চাকরিতে সততার মাপকাঠি হিসেবে যে গুণগুলো উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা হলো নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে অর্পিত দায়িত্ব যথাবিধি সম্পন্ন করা
ব্যাখ্যা:
- কঃ যথা সময়ে অফিসে আগমন ও অফিস ত্যাগ করা: এটি শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার অংশ, কিন্তু কেবল এটিই সততার সম্পূর্ণ মাপকাঠি নয়। একজন ব্যক্তি সময় মেনে অফিসে এলেও কাজের ক্ষেত্রে অসৎ হতে পারেন।
- খঃ দাপ্তরিক কাজে কোনো অবৈধ সুবিধা গ্রহণ না করা: এটি সততার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অবৈধ সুবিধা গ্রহণ না করা অবশ্যই সততার লক্ষণ, তবে এটি সততার একটি দিক মাত্র। সততা এর চেয়েও ব্যাপক।
- গঃ নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে অর্পিত দায়িত্ব যথাবিধি সম্পন্ন করা: এটি সততার সবচেয়ে ব্যাপক এবং সঠিক মাপকাঠি।
- নির্মোহ: মানে হলো ব্যক্তিগত স্বার্থ, লোভ বা আসক্তি থেকে মুক্ত থাকা।
- নিরপেক্ষভাবে: মানে হলো কোনো রকম পক্ষপাতিত্ব ছাড়া, সবার প্রতি সমান আচরণ করা।
- অর্পিত দায়িত্ব যথাবিধি সম্পন্ন করা: মানে হলো সঠিকভাবে, নিয়ম মেনে এবং সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে নিজের কর্তব্য পালন করা। এই তিনটি উপাদান একত্রিত হয়েই একজন সরকারি কর্মকর্তার সম্পূর্ণ সততাকে প্রকাশ করে।
- ঘঃ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যে কোনো নির্দেশ প্রতিপালন করা: এটিও শৃঙ্খলা ও চেইন অব কমান্ডের অংশ। তবে, ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ যদি অনৈতিক বা অবৈধ হয়, তবে তা প্রতিপালন করা সততার পরিপন্থী হতে পারে। একজন সৎ কর্মকর্তা অনৈতিক নির্দেশ মানতে পারেন না।
সুতরাং, নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে অর্পিত দায়িত্ব যথাবিধি সম্পন্ন করা হলো সরকারি চাকরিতে সততার সবচেয়ে ব্যাপক ও সঠিক মাপকাঠি।
১৯৪. নৈতিক শক্তির প্রধান উপাদান কি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
নৈতিক শক্তির প্রধান উপাদান হলো: সততা ও নিষ্ঠা
ব্যাখ্যা:
- সততা ও নিষ্ঠা: নৈতিক শক্তির মূলে রয়েছে সত্যের প্রতি অবিচল থাকা (সততা) এবং নিজের আদর্শ বা লক্ষ্যের প্রতি অবিচল আনুগত্য ও একাগ্রতা (নিষ্ঠা)। একজন ব্যক্তি যখন সৎ এবং তার কাজে নিষ্ঠাবান হন, তখন তার নৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী হয়। এটি তাকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও সঠিক পথে থাকতে এবং দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে সাহায্য করে।
অন্যান্য বিকল্পগুলিও নৈতিকতার অংশ হতে পারে, তবে সততা ও নিষ্ঠা হলো নৈতিক শক্তির মৌলিক ভিত্তি:
- কর্তব্যপরায়ণতা: দায়িত্ববোধ ও কর্তব্য পালনের মানসিকতা। এটি সততা ও নিষ্ঠার একটি ফল, কিন্তু এর মূল উৎস হলো সততা।
- মায়া ও মমতা: স্নেহ, ভালোবাসা ও সহানুভূতি। এগুলো মানবিক গুণাবলী, যা নৈতিক আচরণের জন্ম দিতে পারে, কিন্তু সরাসরি নৈতিক শক্তির মূল উপাদান নয়।
- উদারতা: মহত্ব ও দানশীলতা। এটি একটি মূল্যবান নৈতিক গুণ, তবে এটিও সততা ও নিষ্ঠার মতো মৌলিক উপাদান নয়।
সুতরাং, সততা ও নিষ্ঠা-ই নৈতিক শক্তির প্রধান উপাদান।
১৯৫. “সুশাসন বলতে রাষ্ট্রের সঙ্গে সুশীল সমাজের, সরকারের সঙ্গে শাসিত জনগণের, শাসকের সঙ্গে শাসিতের সম্পর্ক বোঝায়”-উক্তিটি কার?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
ঐ উক্তিটি ম্যাককরনি (MacCorney)-এর।
তিনি সুশাসনকে রাষ্ট্র ও সুশীল সমাজ, এবং সরকার ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, যেখানে সকলের অংশগ্রহণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়।
১৯৬. জনগণ, রাষ্ট্র ও প্রশাসনের সাথে ঘনিষ্ঠ প্রত্যয় হলো-
[ বিসিএস ৩৭তম ]
জনগণ, রাষ্ট্র ও প্রশাসনের সাথে ঘনিষ্ঠ প্রত্যয় হলো সুশাসন (Good Governance)।
সুশাসন এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে সরকার এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, আইনের শাসন এবং জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় বিষয়াদি পরিচালনা করে। এটি সরকার, জনগণ এবং প্রশাসনের মধ্যে কার্যকর ও ইতিবাচক সম্পর্ক স্থাপন করে।
১৯৫৪ সালের পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট একতরফা বিজয় লাভ করেছিল।
-
গঠন: এই যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল মূলত চারটি প্রধান রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে: ১. আওয়ামী মুসলিম লীগ (পরে আওয়ামী লীগ) - যার নেতা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। ২. কৃষক শ্রমিক পার্টি - যার নেতা ছিলেন শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক। ৩. নেজামে ইসলাম পার্টি। ৪. গণতন্ত্রী দল।
-
নির্বাচনী ইশতেহার: যুক্তফ্রন্ট ২১-দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল, যা জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। এই ২১-দফার মূল বিষয়গুলো ছিল পূর্ব পাকিস্তানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করা, জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ, পাট শিল্প জাতীয়করণ ইত্যাদি।
-
ফলাফল: এই নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ভূমিধস বিজয় অর্জন করে। তারা ৩০০টি মুসলিম আসনের মধ্যে ২২৩টি (কিছু সূত্রে ২২৩ বা ২৩৬টি) আসনে জয়লাভ করে, যেখানে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ মাত্র ৯টি আসনে (কিছু সূত্রে ৭ থেকে ১০টি) জয়লাভ করে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়।
এই নির্বাচনটি পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে একটি যুগান্তকারী ঘটনা ছিল এবং এটি বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের পথকে আরও সুগম করেছিল।