প্রশ্নঃ সর্বপ্রথম বাংলা ভাষার ব্যাকরণ রচনা করেন কে?
[ বিসিএস ৪৫তম ]
সর্বপ্রথম বাংলা ভাষার ব্যাকরণ রচনা করেন ম্যানুয়েল দা আসসুম্পসাঁও (Manuel da Assumpção)।
তিনি একজন পর্তুগিজ মিশনারি ছিলেন এবং ১৭৩৪ সালে "Vocabulario em idioma Bengalla, e Portuguez dividido em duas partes" নামক একটি গ্রন্থ রচনা করেন। এই বইটির দ্বিতীয় অংশে বাংলা ব্যাকরণের একটি প্রাথমিক রূপ দেওয়া হয়েছিল। যদিও এটি সম্পূর্ণরূপে বাংলা ভাষায় রচিত ব্যাকরণ ছিল না, তবে এটিই বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ হিসেবে ধরা হয়।
সাধু ও চলিত ভাষার মূল পার্থক্য ক্রিয়া ও সর্বনাম পদে বেশি বেশি দেখা যায়।
এছাড়াও, কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ্য ও অব্যয় পদেও পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়, তবে ক্রিয়া ও সর্বনামের পার্থক্য তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি স্পষ্ট এবং নিয়মিত।
ক্রিয়া পদের পার্থক্য:
- সাধু: করিয়াছি, খাইতেছি, যাইব, বলিয়াছিল
- চলিত: করেছি, খাচ্ছি, যাব, বলেছিল
সর্বনাম পদের পার্থক্য:
- সাধু: তাহারা, ইহাদের, তাহাকে, যিনি
- চলিত: তারা, এদের, তাকে, যিনি (কিছু ক্ষেত্রে অপরিবর্তিত থাকে)
বিশেষ্য ও অব্যয় পদে পার্থক্য তুলনামূলকভাবে কম এবং অনেক ক্ষেত্রে সাধু ও চলিত রূপে একই শব্দ ব্যবহৃত হয়। তবে কিছু উদাহরণ:
বিশেষ্য পদের পার্থক্য:
- সাধু: হস্তী
- চলিত: হাতি
অব্যয় পদের পার্থক্য:
- সাধু: অদ্য
- চলিত: আজ
সুতরাং, সাধু ও চলিত ভাষার মূল পার্থক্য মূলত ক্রিয়া ও সর্বনাম পদেই সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে।
প্রশ্নঃ বাংলা ভাষায় প্রথম ব্যাকরণ রচনা করেন কে?
[ বিসিএস ২৯তম ]
১৮২৬ সালে রাজা রামমোহন রায় ইংরেজিতে বাংলা ব্যাকরণ লেখেন। এরপর তিনি স্কুল বুক সোসাইটির জন্য ঐ গ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ করে নাম দেন ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ যা প্রকাশ হয় ১৮৩৩ সালে। আর এ গ্রন্থটি বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম বাংলা ব্যাকরণ গ্রন্থ।
প্রশ্নঃ বাংলা ছন্দ কত রকমের?
[ বিসিএস ২৫তম ]
বাক্য পরম্পরায় ভাষাগত ধ্বনি প্রবাহের সুসামঞ্জস্য, সঙ্গীত-মধুর ও তরঙ্গ-ঝঙ্কৃত ভঙ্গি রচনা করা হয় যে পরিমিত পদবিন্যাস রীতিতে তাকেই বলে ছন্দ। বাংলাছন্দকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়-মাত্রাবৃত্ত ছন্দ (Moric Metre), স্বরবৃত্ত ছন্দ (Stressed Metre) এবং অক্ষরবৃত্ত ছন্দ (Mixed or composite Metre)।
প্রশ্নঃ সাধু ভাষা সাধারণত কোথায় অনুপযোগী?
[ বিসিএস ১৮তম ]
সাধুরীতির বৈশিষ্ট্য হলো : ১. এ ভাষারীতি সুনির্ধারিত ব্যাকরণ নিয়ম অনুসারে চলে এবং এর পদবিন্যাস সুনিয়ন্ত্রিত ও সুনির্দিষ্ট । ২. এ ভাষারীতি গুরুগম্ভীর ও তৎসম শব্দবহুল। ৩. এ রীতি নাটক, সংলাপ ও বক্তৃতায় অনুপযোগী। ৪. এ রীতিতে সর্বনাম ও ক্রিয়াপদ বিশেষ গঠন পদ্ধতি মেনে চলে।
প্রশ্নঃ ‘সন্ধি’ ব্যাকরণের কোন অংশের আলোচ্য বিষয়?
[ বিসিএস ১৮তম ]
ধ্বনিতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়: সন্ধি, ণ-ত্ব বিধান, ষ-ত্ব বিধান, ধ্বনির উচ্চারণস্থান, উচ্চারণপ্রণালি ইত্যাদি। শব্দতত্ত্ব/ রূপতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়: শব্দ, প্রত্যয়, পুরুষ, উপসর্গ, কারক ও বিভক্তি, বচন, সমাস, লিঙ্গ ইত্যাদি। বাক্যতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়: পদবিন্যাস, বাক্যরীতি, বাক্য বিন্যাস, বাচ্য পরিবর্তন, বাগধারা, বাক্য সংকোচন, বিরাম চিহ্ন ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ ‘ব্যাকরণ’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ কী?
[ প্রা.বি.স.শি. 20-05-2022 ]
ব্যাকরণ শব্দটি বিশ্লেষণ করলে এর ব্যুৎপত্তিগত অর্থ দাঁড়ায় বিশেষভাবে বিশ্লেষণ করা।
সংস্কৃত 'বি' (বিশেষ) + 'আ' (সম্যক) + √'কৃ' (করা) + 'অনট' (প্রত্যয়) - এই উপাদানগুলো মিলিত হয়ে 'ব্যাকরণ' শব্দটি গঠিত হয়েছে। এর আক্ষরিক অর্থ হলো ভাষাকে বিশেষভাবে বিশ্লেষণ করে তার নিয়মকানুন নির্ধারণ করা।
সুতরাং, 'ব্যাকরণ' শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হলো বিশেষভাবে বিশ্লেষণ।
প্রশ্নঃ "সকল শিক্ষকগণ আজ উপস্থিত" বাক্যটি কোন দোষে দুষ্ট?
[ প্রা.বি.স.শি. 21-06-2019 ]
"সকল শিক্ষকগণ আজ উপস্থিত" বাক্যটি বাহুল্য দোষে দুষ্ট।
বাংলা ব্যাকরণে "সকল" এবং "-গণ" একই অর্থে বহুবচন নির্দেশ করে। তাই এই দুটি শব্দ একই সাথে ব্যবহার করা বাহুল্য বা অতিরিক্ত।
সঠিক বাক্যটি হবে:
→ সকল শিক্ষক আজ উপস্থিত
অথবা
→ শিক্ষকগণ আজ উপস্থিত
উভয় বাক্যই ব্যাকরণগতভাবে শুদ্ধ এবং একই অর্থ প্রকাশ করে। "সকল" এবং "-গণ" এর দ্বৈত ব্যবহারের কারণে প্রথম বাক্যটি বাহুল্য দোষে দুষ্ট হয়েছে।
প্রশ্নঃ সাধু ও চলিত রীতির শব্দ একই বাক্যে ব্যবহার করলে তাকে কি বলে?
[ 18th ntrca (স্কুল সমপর্যায়-২) (15-03-2024) ]
সাধু ও চলিত রীতির শব্দ একই বাক্যে ব্যবহার করলে তাকে গুরুচণ্ডালী দোষ বলে।
এটি বাংলা ভাষার একটি প্রধান ব্যাকরণগত ত্রুটি হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এটি ভাষার স্বাভাবিক প্রবাহকে ব্যাহত করে এবং লেখায় বা বক্তব্যে অসঙ্গতি তৈরি করে। সাধু রীতি এবং চলিত রীতি পৃথকভাবে নিজস্ব ব্যাকরণ মেনে চলে, তাই এদের মিশ্রণ করা উচিত নয়।