প্রশ্নঃ বড় > বড্ড – এটি কোন ধরনের পরিবর্তন?
[ বিসিএস ৪৩তম ]
‘বড় > বড্ড’ – এটি গঃ ব্যঞ্জনদ্বিত্ব ধরনের পরিবর্তন।
এখানে, ‘ড়’ ব্যঞ্জনধ্বনিটি দ্বিত্ব (দুবার) হয়েছে। মূল শব্দ ‘বড়’-এর ‘ড়’ ধ্বনিটি পরবর্তী শব্দে ‘ড’ এবং ‘ড’ রূপে দুইবার উচ্চারিত হচ্ছে। এই প্রক্রিয়াকে ব্যঞ্জনদ্বিত্ব বলা হয়।
অন্যান্য বিকল্পগুলো কেন সঠিক নয়:
- কঃ বিষমীভবন: যখন দুটি সমবর্ণ ব্যঞ্জনধ্বনির মধ্যে একটি পরিবর্তিত হয়ে ভিন্ন ব্যঞ্জনধ্বনি হয়, তখন তাকে বিষমীভবন বলে। এখানে এমন কিছু ঘটেনি।
- খঃ সমীভবন: যখন দুটি ভিন্ন ব্যঞ্জনধ্বনি একে অপরের প্রভাবে সামান্য বা সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়ে একই রকম হয়, তখন তাকে সমীভবন বলে। এখানে ভিন্ন ব্যঞ্জনধ্বনি একই রকম হয়নি।
- ঘঃ ব্যঞ্জন-বিকৃতি: যখন কোনো ব্যঞ্জনধ্বনি সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়ে অন্য ব্যঞ্জনধ্বনিতে রূপান্তরিত হয়, তখন তাকে ব্যঞ্জন-বিকৃতি বলে। এখানে ‘ড়’ ধ্বনিটি বিকৃত হয়নি, বরং দ্বিত্ব হয়েছে।
‘ডেকে ডেকে হয়রান হচ্ছি।’-এ বাক্যে ‘ডেকে ডেকে’ ঘঃ পৌনঃপুনিকতা অর্থ প্রকাশ করে।
পৌনঃপুনিকতা মানে হলো কোনো কাজ বারবার করা বা পুনরাবৃত্তি হওয়া। এখানে ‘ডেকে ডেকে’ বোঝানো হচ্ছে যে কাজটি বার বার করা হয়েছে, যার ফলে বক্তা হয়রান বা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।
অন্যান্য বিকল্পগুলো এই বাক্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়:
- কঃ অসহায়ত্ব: বাক্যটিতে অসহায়ত্বের ভাব থাকতে পারে, তবে ‘ডেকে ডেকে’ সরাসরি সেই অর্থ প্রকাশ করে না।
- খঃ বিরক্তি: কাজটি বারবার করার ফলে বক্তার মধ্যে বিরক্তি সৃষ্টি হতে পারে, কিন্তু ‘ডেকে ডেকে’ শব্দবন্ধটি বিরক্তির মূল অর্থ বহন করে না।
- গঃ কালের বিস্তার: ‘ডেকে ডেকে’ সময়ের দীর্ঘতা বোঝাতে পারে বটে, তবে এর প্রধান অর্থ হলো কাজটি বারবার করা।
প্রশ্নঃ আমার জ্বর জ্বর লাগছে এখানে জ্বর জ্বর কোন প্রকারের শব্দ?
[ বিসিএস ৪২তম ]
এখানে "জ্বর জ্বর" কঃ দ্বিরুক্ত শব্দ।
ব্যাকরণে, একই শব্দ বা ধ্বনি দুইবার ব্যবহৃত হয়ে বিশেষ অর্থ প্রকাশ করলে তাকে দ্বিরুক্ত শব্দ বলে। "জ্বর জ্বর" বলার মাধ্যমে সামান্য বা অল্প জ্বরের ভাব প্রকাশ পাচ্ছে, যা দ্বিরুক্ত শব্দের একটি উদাহরণ।
যদিও "শব্দদিত্ব" (ঘ) অপশনটিও কাছাকাছি অর্থ বহন করে, ব্যাকরণগতভাবে "দ্বিরুক্ত শব্দ" হলো এই ধরনের পুনরাবৃত্তির সাধারণ ও বহুল ব্যবহৃত পারিভাষিক শব্দ। "শব্দদিত্ব" দ্বিরুক্ত শব্দের একটি প্রকারভেদ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যেখানে একই শব্দের সরাসরি পুনরাবৃত্তি ঘটে। তবে, মূল শ্রেণীবিভাগ হলো "দ্বিরুক্ত শব্দ"।
যে শব্দ অব্যক্ত রব, শব্দ বা ধ্বনির অনুকরণে গঠিত হয় তাকে অনুকার বা ধ্বন্যাত্মক শব্দ বলে। যেমন: কুহু কুহু (কোকিলের রব), টাপুর টুপুর (বৃষ্টির পতনের শব্দ), হু হু (বাতাস প্রবাহের শব্দ)।
প্রশ্নঃ কোন দ্বিরুক্ত শব্দজুটি বহুবচন সংকেত করে?
[ বিসিএস ১০তম ]
নরম নরম হাত: তীব্রতা বা সঠিকতা বোঝাতে। উড়ু উড়ু মন: সামান্যতা বোঝাতে। ছি ছি, কি করছ: ভাবের গভীরতা বোঝাতে। বহুবচন নির্দেশক অন্যান্য দ্বিরুক্তি শব্দের ব্যবহার হলো- কে কে এলো? কেউ কেউ বলে।
প্রশ্নঃ ধ্বনিজ্ঞাপক দ্বিরুক্ত শব্দ কোনটি?
[ প্রা.বি.স.শি. 26-06-2019 ]
সঠিক উত্তর হলো গঃ কড়কড়।
ধ্বনিজ্ঞাপক দ্বিরুক্ত শব্দ সেইগুলো, যা কোনো নির্দিষ্ট ধ্বনির অনুকরণে তৈরি হয় এবং দ্বিরুক্তির মাধ্যমে সেই ধ্বনির তীব্রতা বা পৌনঃপুনিকতা বোঝায়।
⇒ মরমর: এটি হালকা ঘষা লাগার বা শুকনো পাতার আওয়াজ বোঝাতে পারে, তবে সরাসরি কোনো স্পষ্ট ধ্বনির প্রতিলিপি নয়।
⇒ নড়নড়: এটি কোনো কিছুর অস্থির বা দুর্বল নড়াচড়া বোঝায়, সরাসরি কোনো ধ্বনির অনুকরণ নয়।
⇒ কড়কড়: এটি কোনো শক্ত জিনিস ভাঙার বা মচমচ করার স্পষ্ট ধ্বনিকে বোঝায়। ⇒ দরদর: এটি জল পড়ার বা ঘাম ঝরার একটানা শব্দ বোঝায়।
সুতরাং, "কড়কড়" একটি স্পষ্ট ধ্বনির অনুকরণে গঠিত দ্বিরুক্ত শব্দ।