জমিদার নিজাম শাহের পৃষ্ঠপােষকতা দৌলত উজির বাহরাম খান সাহিত্যসৃষ্টিতে লাভ করেন। তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের জাফরাবাদের শাসনকর্তা। নিজাম শাহের পৃষ্ঠপোষকতায় বাহরাম খান পারসিয়ান কবি জামির আরবি লোকগাথা অবলম্বনে বাংলায় ‘লায়লী-মজনু’ অনুবাদ করেন।
প্রশ্নঃ বাংলা সাহিত্যে ‘কালকূট’ নামে পরিচিত কোন লেখক?
[ বিসিএস ৪১তম ]
সমরেশ বসু বাংলা সাহিত্যে 'কালকূট' নামে পরিচিত। এটি ছিল তার ছদ্মনাম। এই ছদ্মনামে তিনি বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সাহিত্য রচনা করেছেন।
প্রশ্নঃ পাঁচালিকার হিসেবে সর্বাধিক খ্যাতি কার ছিল?
[ বিসিএস ৪১তম ]
পাঁচালিকার হিসেবে সর্বাধিক খ্যাতি ছিল কঃ দাশরথি রায়-এর।
তিনি উনিশ শতকের একজন বিখ্যাত পাঁচালী কবি ও গায়ক ছিলেন। তার রচিত পালাগানগুলি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল এবং তিনি পাঁচালির জগতে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন।
প্রশ্নঃ চারণকবি হিসেবে বিখ্যাত কে?
[ বিসিএস ৪১তম ]
চারণকবি হিসেবে বিখ্যাত মুকুন্দদাস।
মুকুন্দদাস ছিলেন একজন বিখ্যাত চারণকবি এবং যাত্রা নাট্যকার। তিনি স্বদেশপ্রেমমূলক গান ও নাটক রচনা করে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগিয়ে তুলেছিলেন। তার গান ও নাটক ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই কারণেই তিনি 'চারণকবি' হিসেবে পরিচিত।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে ‘গ্রাম থিয়েটার’-এর প্রবর্তক কে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশে 'গ্রাম থিয়েটার' একটি গুরুত্বপূর্ণ নাট্য আন্দোলন, যা গ্রামীণ সংস্কৃতি ও নাট্যচর্চাকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে শুরু হয়েছিল।
এর প্রধান দিকগুলো হলো:
-
প্রতিষ্ঠাতা ও স্বপ্নদ্রষ্টা: বাংলাদেশে গ্রাম থিয়েটার আন্দোলনের স্বপ্নদ্রষ্টা হলেন নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন। তার সাথে নাসির উদ্দীন ইউসুফও এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
-
প্রতিষ্ঠা: ২০ জানুয়ারি ১৯৮২ সালে (৬ মাঘ ১৩৮৮ বঙ্গাব্দ) ঢাকা থিয়েটারের তত্ত্বাবধানে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার তালুকনগর গ্রামে 'বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার' যাত্রা শুরু করে। তালুকনগর গ্রামের শাহ আজহার ওরফে আজাহার বয়াতীর মাঘী মেলাকে কেন্দ্র করে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছিল।
-
উদ্দেশ্য ও দর্শন: গ্রাম থিয়েটারের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলার ঐতিহ্যবাহী নাট্যরীতি ও পরিবেশনাকে নাগরিক মঞ্চের বাইরে এনে গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং গ্রামীণ সমাজের নিজস্ব জীবন, সংস্কৃতি ও সমস্যা নিয়ে নাটক তৈরি ও পরিবেশন করা। এর মূলনীতি হলো "হাতের মুঠোয় হাজার বছর আমরা চলেছি সামনে"। এটি নাগরিক ও গ্রামীণ সংস্কৃতির ব্যবধান ঘোচাতে চেয়েছিল এবং ঐতিহ্যবাহী নাট্য আঙ্গিকগুলোকে আধুনিক জীবনে উপযোগী করে তুলতে চেয়েছিল।
-
বৈশিষ্ট্য:
- বর্ণনাত্মক নাট্যরীতি: ঢাকা থিয়েটার ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার বর্ণনাত্মক নাট্যরীতি ও বর্ণনাত্মক অভিনয় রীতি উদ্ভাবন ও প্রচলনে ভূমিকা রাখে।
- খোলা মঞ্চ: বৃত্তাকার ও চৌকোণ খোলা মঞ্চের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
- গ্রামীণ কর্মী সৃষ্টি: গ্রামীণ নাট্যকর্মী তৈরি করা এবং গ্রামে গ্রামে গ্রাম থিয়েটার সংগঠন গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হয়।
-
প্রভাব: গ্রাম থিয়েটার আন্দোলন বাংলাদেশের নাট্যচর্চায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং গ্রামীণ জনপদে নাটকের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। এটি শুধু বিনোদন নয়, সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবেও কাজ করেছে। সেলিম আল দীনের অনেক নাটক, যেমন 'কিত্তনখোলা', এই গ্রাম থিয়েটার আন্দোলনের দর্শনের সাথে সম্পর্কিত।
সংক্ষেপে, বাংলাদেশে গ্রাম থিয়েটার সেলিম আল দীন ও নাসির উদ্দীন ইউসুফের নেতৃত্বে গঠিত একটি আন্দোলন যা গ্রামীণ নাট্যচর্চা এবং বাঙালির নিজস্ব নাট্যশৈলীকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে।
প্রশ্নঃ ‘পূর্ববঙ্গ গীতিকা’র লোকপালাসমূহের সংগ্রাহক কে?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'পূর্ববঙ্গ গীতিকা'র লোকপালাসমূহের প্রধান সংগ্রাহক হলেন চন্দ্রকুমার দে।
ড. দীনেশচন্দ্র সেনের অনুপ্রেরণায় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় চন্দ্রকুমার দে পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসব লোকপালা সংগ্রহ করেন। পরে ড. দীনেশচন্দ্র সেন সেগুলো সম্পাদনা করে 'পূর্ববঙ্গ গীতিকা' নামে প্রকাশ করেন।
প্রশ্নঃ ‘রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ গ্রন্থটির প্রণেতা–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
'রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র' গ্রন্থটির প্রণেতা হলেন রামরাম বসু।
এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুদ্রিত মৌলিক গদ্যগ্রন্থ (১৮০১ সালে প্রকাশিত)। যদিও এটিকে আধুনিক অর্থে 'গদ্যসাহিত্য' বলা যায় না, কারণ এতে সাধু গদ্যের পাশাপাশি পদ্যের প্রভাব ছিল, তবুও বাংলা গদ্যের বিকাশে এর একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। বইটি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ছাত্রদের বাংলা শেখানোর উদ্দেশ্যে রচিত হয়েছিল।
প্রশ্নঃ কোনটি শওকত ওসমানের রচনা নয়?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
শওকত ওসমানের উল্লেখযোগ্য রচনাগুলো নিচে সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো:
শওকত ওসমানের রচনা তালিকা:
-
উপন্যাস:
- জননী (প্রথম উপন্যাস)
- চৌরসন্ধি
- ক্রীতদাসের হাসি
- সমাগম
- রাজা উপাখ্যান
- পতঙ্গ পিঞ্জর
- আর্তনাদ
- রাজসাক্ষী
- মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস: জাহান্নম হইতে বিদায়, দুই সৈনিক, নেকড়ে অরণ্য, জলাঙ্গী
-
গল্পগ্রন্থ:
- পিঁজরাপোল
- জুনু আপা ও অন্যান্য গল্প
- জন্ম যদি তব বঙ্গে
- ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী
- ভেজাল
-
নাটক:
- আমলার মামলা
- পূর্ণ স্বাধীনতা চূর্ণ স্বাধীনতা
- তস্কর ও লস্কর
- কাঁকরমণি
- বাগদাদের কবি
-
প্রবন্ধগ্রন্থ:
- মন্তব্য মৃগয়া
- সংস্কৃতির চড়াই উৎরাই
- মুসলিম মানসের রূপান্তর
প্রশ্নঃ ‘বাংলা সাহিত্যের জনক’ হিসেবে কার নাম চির স্মরণীয়?
[ বিসিএস ৩৪তম ]
বাংলা সাহিত্যের জনক বলে কেউ নেই। ‘বাংলা গদ্যের জনক’ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। বাংলা উপন্যাসের জনক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। মাইকেল মধুসূদন দত্ত আধুনিক বাংলা কবিতার জনক। রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠাতা।
প্রশ্নঃ ‘দিবারাত্রির কাব্য’ কার লেখা উপন্যাস?
[ বিসিএস ৩২তম ]
প্রশ্নঃ বাংলা সাহিত্যে কখন গদ্যের সূচনা হয়?
[ বিসিএস ২৮তম ]
গবেষকদের মতে, ষোল থেকে আঠারো শতক অবধি বাংলা গদ্যের নিদর্শন প্রধানত চিঠিপত্রে ও দলিল-দস্তাবেজে আবদ্ধ ছিল। কিন্তু বাংলা সাহিত্যে গদ্যের সূচনা হয় উনিশ শতকে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে ‘বাংলা গদ্যের জনক’ বলা হয়।
প্রশ্নঃ কোনটি দীনবন্ধু মিত্রের রচনা?
[ বিসিএস ২৬তম ]
দীনবন্ধু মিত্র (১৮৩০-১৮৭৩ খ্রি) বাংলা সাহিত্যের একজন প্রখ্যাত নাট্যকার। তার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘নীলদর্পণ’ (১৮৬০), ‘সধবার একাদশী’ (১৮৬৬), ‘কমলে কামিনী’ (১৮৭৩), ‘নবীন তপস্বিনী’ (১৮৬৩), ইত্যাদি। ‘ভদ্রার্জুন’ হলো তারাচরণ শিকদার রচিত নাটক, যা বাঙালি লিখিত প্রথম মৌলিক নাটক হিসেবে স্বীকৃত। রামনারায়ণ তর্করত্নের চক্ষুদান প্রহসন মূলক গ্রন্থ।