১. উপসর্গযুক্ত শব্দ –
[ বিসিএস ৪৬তম ]
"বিদ্রোহী" শব্দে "বিদ-" উপসর্গ যুক্ত হয়েছে, যা "প্রতি" বা "বিরুদ্ধ" অর্থ প্রকাশ করে।
২. ‘অভাব’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে কোন উপসর্গটি?
[ বিসিএস ৪১তম ]
অভাব অর্থে আ উপসর্গ যোগে গঠিত শব্দ: আকাঁড়া, আধোয়া, আলুনি।
৩. কোন উপসর্গটি ভিন্নার্থে প্রযুক্ত?
[ বিসিএস ৩৯তম ]
এখানে "উপ" উপসর্গটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। আসুন দেখি কোনটিতে ভিন্ন অর্থ প্রকাশ পায়:
-
কঃ উপনেতা - এখানে "উপ" অর্থ সহকারী বা প্রধানের চেয়ে অধস্তন (Vice-leader)।
-
খঃ উপভোগ - এখানে "উপ" আগ্রহ বা বিশেষভাবে (to enjoy thoroughly)।
-
গঃ উপগ্রহ - এখানে "উপ" ক্ষুদ্র বা সহকারী (satellite - a smaller body orbiting a planet)। এটি গ্রহের সহকারী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
-
ঘঃ উপসাগর - এখানে "উপ" ক্ষুদ্র বা অংশ (gulf - a large inlet of the sea that cuts into the land)। এটি সাগরের অংশ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
"উপনেতা"-তে "উপ" সহকারী অর্থে ব্যবহৃত হলেও, "উপগ্রহ" এবং "উপসাগর"-এ "উপ" ক্ষুদ্র বা অংশ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। "উপভোগ"-এ "উপ" সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থে, আগ্রহ বা বিশেষভাবে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।
সুতরাং, খঃ উপভোগ শব্দে "উপ" উপসর্গটি ভিন্নার্থে প্রযুক্ত।
৪. ‘কদাকার’ শব্দটি কোন উপসর্গযোগে গঠিত?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
'কদাকার' শব্দটি 'কৎ' উপসর্গযোগে গঠিত।
শব্দটি এসেছে 'কৎ' (মন্দ/কুৎসিত) + 'আকার' থেকে, যার অর্থ কুৎসিত আকার বা বিশ্রী দেখতে। 'কৎ' এখানে একটি বাংলা উপসর্গ।
৫. কোন শব্দটি উপসর্গ দিয়ে গঠিত হয়েছে?
[ বিসিএস ৩৯তম ]
উপসর্গ দিয়ে গঠিত শব্দটি হলো আঘাটা।
এখানে ব্যাখ্যা করা হলো:
-
উপসর্গ: উপসর্গ হলো কিছু অব্যয়সূচক শব্দাংশ যা স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হতে পারে না, কিন্তু শব্দের আগে বসে নতুন শব্দ তৈরি করে বা শব্দের অর্থের পরিবর্তন ঘটায়।
-
আঘাটা: এই শব্দটি গঠিত হয়েছে 'আ' উপসর্গ + 'ঘাটা' (মূল শব্দ) দিয়ে। 'ঘাটা' অর্থ সাধারণত নৌকা বা গাড়ি পারাপারের স্থান, আর 'আ' উপসর্গ যোগ হয়ে এর অর্থ পরিবর্তন করে 'আঘাটা' অর্থাৎ যেখানে সহজে যাওয়া বা ঘাটা যায় না এমন বোঝানো হচ্ছে।
অন্যান্য বিকল্পগুলো উপসর্গ দিয়ে গঠিত হয়নি:
- আনন: এটি একটি মূল শব্দ, যার অর্থ মুখ।
- আষাঢ়: এটি একটি মাসের নাম, মূল শব্দ।
- আয়না: এটি একটি মূল শব্দ, যার অর্থ দর্পণ।
৬. কোন শব্দ গঠনে বাংলা উপসর্গ ব্যবহৃত হয়েছে?
[ বিসিএস ৩২তম ]
এখানে, 'অনাবৃষ্টি' শব্দটি অনা- উপসর্গ দিয়ে গঠিত, যা একটি বাংলা উপসর্গ।
অন্যান্য বিকল্পগুলোতে ব্যবহৃত হয়েছে:
- 'পরাকাষ্ঠা' - পরা (সংস্কৃত উপসর্গ)
- 'অভিব্যক্তি' - অভি (সংস্কৃত উপসর্গ)
- 'পরিশ্রান্ত' - পরি (সংস্কৃত উপসর্গ)
৭. ‘অপ’ কী ধরনের উপসর্গ?
[ বিসিএস ৩১তম ]
বাংলা ভাষায় তিন প্রকার উপসর্গ আছে। বাংলা, তৎসম বা সংস্কৃত এবং বিদেশী উপসর্গ। এর মধ্যে বাংলা উপসর্গ মোট ২১টি এবং তৎসম বা সংস্কৃত উপসর্গ ২০টি। সংস্কৃত উপসর্গগুলো হলো: প্র, পরা অপ, সম্, নি, অনু, অব, নির, দুর, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অতি, অপি, অভি, উপ, আ।
৮. বাংলা ভাষায় কয়টি খাঁটি বাংলা উপসর্গ আছে?
[ বিসিএস ২৭তম ]
বাংলা ভাষায় খাঁটি বাংলা উপসর্গ রয়েছে ২১টি। এগুলো হচ্ছে- অ, অঘা, অজ, অনা, আ, আড়, আব, আন, ইতি, উন, কদ, কু, নি, পাতি, বি, ভর, রাম, স, সা, সু, হা। এবং সংস্কৃত উপসর্গের সংখ্যা ২০টি।
৯. উপসর্গ কোনটি?
[ বিসিএস ২৬তম ]
‘অতি’ একটি সংস্কৃত বা তৎসম উপসর্গ। এটা অধিক, অতিক্রান্ত, অনুচিত ইত্যাদি অর্থে বাক্যে যুক্ত করা হয় । অন্যদিকে থেকে, চেয়ে ও দ্বারা তিনটি অব্যয় পদ।
১০. প্র, পরা, অপ-
[ বিসিএস ২৬তম ]
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত যেসব উপসর্গ সংস্কৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হচ্ছে সেসব উপসর্গকে বলা হয় তৎসম বা সংস্কৃত উপসর্গ। সংস্কৃত উপসর্গ প্রধানত ২০ টি । যথা: প্র, পরা, অপ, সম্, নি, অনু, অব, নির , দুর, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অভি, অতি, অপি, উপ, আ।
১১. উপসর্গের সঙ্গে প্রত্যয়ের পার্থক্য–
[ বিসিএস ২৪তম ]
যেসব অব্যয় শব্দ বা ধাতুর পূর্বে বসে মূল শব্দের অর্থের পরিবর্তন ঘটায় ও নতুন শব্দ গঠন করে তাকে উপসর্গ বলে। যেমন বে + কার = বেকার; এখানে ‘ব’ উপসর্গ। অন্যদিকে যেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ধাতু বা শব্দের পরে বসে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে প্রত্যয় বলে। যেমন কাঁদ্ + অন = কাঁদন, এখানে ‘অন’ প্রত্যয়। সুতরাং উপরিউক্ত প্রশ্নে (গ) -ই যথার্থ উত্তর।
১২. উপসর্গের সঙ্গে প্রত্যয়ের পার্থক্য-
[ বিসিএস ১৭তম ]
কতগুলো বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ধাতু বা শব্দের পূর্বে বসে নতুন শব্দ গঠন করে ও অর্থের পরিবর্তন সাধন করে, এই রূপ বর্ণ বা বর্ণসমষ্টিকে উপসর্গ বলে । ক্রিয়া ও নাম প্রকৃতির সঙ্গে যে ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি যুক্ত হয় তাকে প্রত্যয় বলে। প্রত্যয় শব্দ বা ধাতুর পরে বসে নতুন অর্থবোধক শব্দ গঠন করে।
১৩. ‘লাপাত্তা’ শব্দের ‘লা’ উপসর্গটি বাংলা ভাষায় এসেছে-
[ বিসিএস ১৭তম ]
লা আরবি উপসর্গ। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত বিদেশি উপসর্গগুলো হলো: ফারসি- কার, দর, না, নিম, ফি, বদ, বে, বর, ব, কম; ইংরেজি- হাফ, ফুল, হেড ও সাব; আরবি- আম, খাস, লা, গর; হিন্দি/ উর্দু-হর।
১৪. ‘অচিন’ শব্দের ‘অ’ উপসর্গটি কোন অর্থে ব্যবহৃত?
[ বিসিএস ১৬তম ]
‘অচিন’ শব্দের ‘অ’ উপসর্গটি নঞর্থক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ‘অ’ উপসর্গটি অভাব অর্থে প্রকাশ পেয়েছে অচিন, অজানা, অথৈ শব্দগুলো।
একই উপসর্গ শব্দের সামনে বসে বিভিন্ন রূপ অর্থ প্রকাশ করে। যেমন- অব উপসর্গ অবমূল্যায়ন শব্দে হীনতা অর্থে এবং অবদান শব্দে সম্যক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
১৬. ‘অপমান’ শব্দের ‘অপ’ উপসর্গটি কোন অর্থে ব্যবহৃত?
[ বিসিএস ১৫তম ]
একটি উপসর্গ বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন: অপ উপসর্গ বিপরীত অর্থে: অপমান, অপচয়, অপকার। স্থানান্তর অর্থে: অপহরণ, অপসারণ। নিকৃষ্ট অর্থে: অপসংস্কৃতি, অপকর্ম। বিকৃত অর্থে: অপমৃত্যু।
১৭. কোন শব্দে বিদেশি উপসর্গ ব্যবহৃত হয়েছে?
[ বিসিএস ১২তম | বিসিএস ১০তম ]
নিম ফারসি উপসর্গ। বাংলা ভাষায় মোট ১০ টি ফারসি উপসর্গ ব্যবহৃত হয়- কার, দর, না,নিম, ফি, বদ, বে, বর, ব, কম। অন্যান্য বিদেশি উপসর্গের মধ্যে ইংরেজি- হাফ, ফুল, হেড ও সাব; আরবি- আম, খাস, লা, গর; হিন্দি/ উর্দু-হর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।