প্রশ্নঃ বাংলাদেশে বন গবেষণা কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত?
[ বিসিএস ৪৫তম ]
বাংলাদেশের বন গবেষণা কেন্দ্র বা বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট (BFRI) চট্টগ্রামে অবস্থিত। এটি ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং দেশের বনসম্পদ সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও গবেষণার জন্য কাজ করে।
প্রশ্নঃ কোন বনাঞ্চল প্রতিনিয়ত লবণাক্ত পানি দ্বারা প্লাবিত হয়?
[ বিসিএস ৪৩তম ]
সঠিক উত্তর হলো ম্যানগ্রোভ বনভূমি (Mangrove forests)।
ম্যানগ্রোভ বনভূমি উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত পানিতে জন্মে এবং প্রতিনিয়ত জোয়ার-ভাটার লবণাক্ত পানি দ্বারা প্লাবিত হয়। এই বনভূমি লবণাক্ত পরিবেশের সাথে বিশেষভাবে অভিযোজিত এবং সমুদ্র উপকূলকে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও ভাঙন থেকে রক্ষা করে। সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনভূমির একটি উদাহরণ।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান কী ধরণের বনভূমি?
[ বিসিএস ৪০তম ]
বাংলাদেশের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান মূলত ক্রান্তীয় চিরহরিৎ এবং আধা-চিরহরিৎ বনভূমির অন্তর্ভুক্ত।
এই বনভূমিতে নিরক্ষীয় অঞ্চলের চিরহরিৎ বর্ষাবনের কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং সূর্যের আলোর জন্য প্রতিযোগিতা করে গাছপালা খুব উঁচু হয়ে থাকে, যার ফলে বনের ভেতরের মাটি পর্যন্ত আলো পৌঁছাতে পারে না। এই কারণে বন বেশ ঘন হয়ে থাকে।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অবশিষ্ট চিরহরিৎ বনগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উদাহরণ।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের কোন বনভূমি শালবৃক্ষের জন্য বিখ্যাত?
[ বিসিএস ৪০তম ]
বাংলাদেশের ভাওয়াল ও মধুপুরের বনভূমি শালবৃক্ষের জন্য বিখ্যাত। এই বনভূমি মূলত গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলায় বিস্তৃত। শাল এখানকার প্রধান বৃক্ষ এবং এই বনকে শালবন নামেও অভিহিত করা হয়।
প্রশ্নঃ নিচের কোন উদ্ভিদ কেবল ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে দেখা যায়?
[ বিসিএস ৩৮তম ]
সঠিক উত্তর হলো নিপা পাম (Nipa Palm)।
নিপা পাম (Nypa fruticans), যা সাধারণত নিপা বা গোলপাতা নামে পরিচিত, এটি একটি বিশেষ ধরনের পাম গাছ যা শুধুমাত্র ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে বা লবণাক্ত ও স্বাদু জলের সংমিশ্রণের জোয়ার-ভাটা প্রভাবিত কাদা মাটিতে জন্মে। সুন্দরবন এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে এটি প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়।
অন্যান্য পাম গাছগুলো (যেমন খেজুর পাম, সাগু পাম, তাল পাম) সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ভূমিতে জন্মাতে পারে এবং ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ নয়।
সুন্দরবন বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট এবং পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলাজুড়ে বিস্তৃত। এ বনভূমির মোট আয়তন ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার, যার মধ্যে বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার। অর্থাৎ শতকরা হিসেবে তা ৬০% -এর একটু বেশি।
প্রশ্নঃ ম্যানগ্রোভ কি?
[ বিসিএস ৩৫তম ]
ম্যানগ্রোভ হলো এক ধরনের লবণাক্ত সহনশীল বৃক্ষ বা গুল্ম যা উপকূলীয় লবণাক্ত বা নোনা জলের পরিবেশে, যেমন জোয়ার-ভাটার খাঁড়ি, নদীর মোহনা বা সমুদ্র উপকূলে জন্মায়।
এদের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে যা এদেরকে এই প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে সাহায্য করে:
- শ্বাসমূল: এদের কিছু মূল মাটির উপরে উঠে আসে এবং বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে, যা 'শ্বাসমূল' নামে পরিচিত।
- ঠেসমূল: অনেক ম্যানগ্রোভ গাছের কাণ্ড থেকে এক ধরনের ঠেস বা খুঁটির মতো মূল নেমে আসে, যা গাছকে কাদা মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকতে সাহায্য করে।
- জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম: এদের বীজ গাছে থাকা অবস্থাতেই অঙ্কুরিত হয় এবং চারা তৈরি হয়, যা মাটি বা পানিতে পড়ার সাথে সাথে দ্রুত নতুন স্থানে বেড়ে উঠতে পারে।
ম্যানগ্রোভ বন উপকূলীয় পরিবেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরা ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলকে রক্ষা করে, ভূমি ক্ষয় রোধ করে এবং বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশের সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন।
প্রশ্নঃ আমাদের দেশে বনায়নের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ–
[ বিসিএস ২২তম ]
গাছ বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে একটা ভারসাম্য অবস্থা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের অন্তর্গত সুন্দরবনের আয়তন কত?
[ বিসিএস ২০তম ]
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনভূমি হলো সুন্দরবন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের এলাকা মিলিয়ে এর আয়তন ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। তবে বাংলাদেশ অংশের আয়াতন ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার বা ২৪০০ বর্গমাইল (তথ্য : বন অধিদপ্তর )। উল্লেখ্য, ইউনেস্কোর বিশ্বসম্পদ ও ঐতিহ্য কমিটি ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর সুন্দরবনকে ৭৯৮তম ‘বিশ্ব ঐতিহ্য’ হিসেবে ঘোষণা করে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মত অনুসারে, যেকোনো দেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য মোট ভূমির ২৫% বনভূমি থাকা আবশ্যক। বর্তমানে বাংলাদেশে বনভূমির পরিমাণ সরকারি হিসাব অনুযায়ী ১৭.০৮% (প্রায়)। FAO-এর মতে বাংলাদেশে বনভূমি রয়েছে মোট ভূমির ১১% (প্রায়)।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের বনাঞ্চলের পরিমাণ মোট ভূমির কত শতাংশ?
[ বিসিএস ১৯তম ]
বাংলাদেশে বনাঞ্চলের পরিমাণ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের তথ্য পাওয়া যায়। মূলত বনের প্রকারভেদের উপর নির্ভর করে এই হিসাবগুলো বিভিন্ন রকম হয়। তবে সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বনের পরিমাণ মোট ভূমির ১৫.৫৮ শতাংশ।
বাংলাদেশে মূলত তিন ধরণের বনভূমি দেখা যায়:
- ক্রান্তীয় চিরহরিৎ ও আধা-চিরহরিৎ বন
- ক্রান্তীয় পর্ণমোচী বন
- উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ বন
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় একটি দেশের মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। সেই হিসেবে বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় পরিমাণ বনভূমি নেই।
প্রশ্নঃ সুন্দরবনের আয়তন প্রায় কত বর্গ কিলোমিটার?
[ বিসিএস ১৩তম ]
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনভূমি হলো সুন্দরবন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের এলাকা মিলিয়ে এর আয়তন ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। তবে বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬০১৭ বর্গ কিলোমিটার।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের কোন বনভূমি শালবৃক্ষের জন্য বিখ্যাত?
[ বিসিএস ১১তম ]
ভাওয়াল ও মধুপুরের বনভূমি গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলায় অবস্থিত। এ বনে প্রচুর শালগাছ রয়েছে। উল্লেখ্য, অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশের বৃহত্তম বনভূমি চট্টগ্রাম-রাঙামাটি বনভূমি এবং একক হিসেবে বৃহত্তম সুন্দরবন।