প্রশ্নঃ ‘পলল পাখা’ জাতীয় ভূমিরূপ গড়ে উঠে-
[ বিসিএস ৩৮তম ]
'পলল পাখা' (Alluvial Fan) হলো একটি বিশেষ ধরনের ভূমিরূপ যা সাধারণত পাহাড় বা পর্বতের পাদদেশে গঠিত হয়।
এটি যেভাবে গঠিত হয়: যখন কোনো পাহাড় বা পর্বত থেকে নদী বা ঝর্ণার স্রোত হঠাৎ করে সমভূমিতে প্রবেশ করে, তখন এর গতি কমে যায়। গতি কমে যাওয়ার কারণে নদীর বহন ক্ষমতা কমে যায় এবং এটি তার সাথে বয়ে আনা নুড়ি, বালি, কাদা এবং অন্যান্য শিলাচূর্ণ পর্বতের পাদদেশে জমা করতে শুরু করে। এই জমা হওয়া পদার্থগুলো ধীরে ধীরে একটি হাতপাখার (fan) আকৃতি ধারণ করে, যা দেখতে ত্রিভুজাকার বা আধা-বৃত্তাকার হয়। এই ভূমিরূপকেই 'পলল পাখা' বা 'পলল ব্যজনী' বলে।
উদাহরণ: হিমালয় পর্বতমালার পাদদেশে তিস্তা নদীর অববাহিকা অঞ্চলে এরকম অনেক পলল পাখা দেখা যায়। বাংলাদেশের দিনাজপুর ও রংপুর জেলার কিছু অংশ তিস্তা নদীর পলল পাখা দ্বারা গঠিত।
সংক্ষেপে, পলল পাখা হলো নদীর ক্ষয় ও সঞ্চয় কাজের সম্মিলিত ফল, যা নদীর উচ্চগতি থেকে নিম্নগতিতে প্রবেশ করার সময় গঠিত হয়।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের নিম্নলিখিত জেলাসমূহের মধ্যে কোন জেলায় নিচু ভূমির (Low land) পরিমাণ সবচেয়ে বেশি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশের নিম্নলিখিত জেলাসমূহের মধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলায় নিচু ভূমির (Low land) পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
কিশোরগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের হাওর অঞ্চলের একটি প্রধান অংশ। এই জেলার বেশিরভাগ অঞ্চলই নিচু ভূমি, যা মূলত হাওড় ও বাঁওড় এলাকা নিয়ে গঠিত এবং বর্ষাকালে মৌসুমী বায়ু প্রবাহের সময় ১৮০ সেমি থেকে ২৭৫ সেমি পর্যন্ত প্লাবিত হয়। বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, কিশোরগঞ্জে ১২২টি হাওর রয়েছে, যার আয়তন ১,৮২,১০৩ হেক্টর। হবিগঞ্জেও হাওর রয়েছে, তবে কিশোরগঞ্জের তুলনায় এর পরিমাণ কম।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের কোন অঞ্চল বেশি খরাপ্রবণ?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি খরাপ্রবণ অঞ্চল হলো উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল।
এই অঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, দিনাজপুর, বগুড়া এবং কুষ্টিয়া জেলাগুলোকে অতি খরাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম থাকে এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যায়, যা খরার তীব্রতা বাড়ায়।
প্রশ্নঃ নিম্নে উল্লেখিত ভূমিরূপসমূহের মধ্যে কোনটি হিমবাহের ক্ষয় কার্যের দ্বারা গঠিত?
[ বিসিএস ৩৫তম ]
সঠিক উত্তরটি হলো: ঘঃ ইউ-আকৃতির উপত্যকা
- ইউ-আকৃতির উপত্যকা (U-shaped Valley): হিমবাহ যখন পর্বত উপত্যকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন এটি পার্শ্ববর্তী অংশ এবং তলদেশ উভয়কেই ক্ষয় করে একটি চওড়া, অগভীর, এবং ইংরেজি 'U' অক্ষরের মতো আকৃতির উপত্যকা তৈরি করে। এটি হিমবাহের ক্ষয় কার্যের একটি সুস্পষ্ট উদাহরণ।
অন্যান্য বিকল্পগুলো হলো:
- পার্শ্ব গ্রাবরেখা (Lateral Moraine): এটি হিমবাহের ক্ষয় কার্যের মাধ্যমে বাহিত নুড়ি, বালি, কাদা ইত্যাদির স্তূপ যা হিমবাহের দুপাশে জমা হয়। এটি হিমবাহের সঞ্চয় কার্যের ফল, ক্ষয় কার্যের নয়।
- শৈলশিরা (Arete/Ridge): এটি দুটি পাশাপাশি হিমবাহ উপত্যকার মধ্যে অবশিষ্ট থাকা সরু, খাড়া পর্বতশৃঙ্গ বা ধারালো রিজ। এটি হিমবাহের ক্ষয় কার্যের পর অবশিষ্ট ভূমিরূপ, কিন্তু সরাসরি ক্ষয় করে গঠিত নয়। এটি ক্ষয়প্রাপ্ত অঞ্চলের মাঝখানে থাকা অংশ।
- ভি-আকৃতির উপত্যকা (V-shaped Valley): এটি মূলত নদীর ক্ষয় কার্যের দ্বারা গঠিত হয়। নদী যখন পার্বত্য অঞ্চলে তীব্র বেগে প্রবাহিত হয়, তখন এটি তলদেশে ক্ষয় করে একটি V-আকৃতির উপত্যকা তৈরি করে। হিমবাহের ক্ষয় কার্যের সাথে এর সরাসরি সম্পর্ক নেই।