আমাদের স্কুল

সেটিং

বহুনির্বাচনি প্রশ্নের দেখানোর অপশনঃ
শুধুমাত্র উত্তর 2 অপশন
3 অপশন 4 অপশন
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের অপশন প্রদর্শনঃ
রো আকারে কলাম আকারে
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরঃ
লুকান বোল্ড করুন
দেখান দেখান ও বোল্ড করুন
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের ব্যাখ্যাঃ
দেখান লুকান নিচে লুকান
থিম নির্বাচন করুনঃ
ফন্ট সাইজঃ
15

প্রশ্নঃ দুই বা ততোধিক প্রতিদ্বন্দ্বী বৃহৎ শক্তিসমূহের মাঝখানে অবস্থিত দেশকে বলা হয় :

[ বিসিএস ৩৮তম ]

ক. স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র
খ. নিরপেক্ষ রাষ্ট্র
গ. বাফার রাষ্ট্র
ঘ. জিরো সাম রাষ্ট্র
উত্তরঃ বাফার রাষ্ট্র
ব্যাখ্যাঃ

ভূ-রাজনীতিতে বাফার রাষ্ট্র (Buffer State) বলতে এমন একটি দেশকে বোঝায় যা দুটি বা তার বেশি প্রতিদ্বন্দ্বী বা সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ বৃহৎ শক্তির মাঝে অবস্থিত থাকে। এই রাষ্ট্রগুলো মূলত এই বৃহৎ শক্তিগুলোর মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ প্রতিরোধ করার জন্য একটি 'কুশন' বা 'মধ্যবর্তী অঞ্চল' হিসেবে কাজ করে।

বাফার রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য:

  • অবস্থান: এটি সাধারণত দুটি বড় ও শক্তিশালী রাষ্ট্রের সীমান্তে অবস্থিত হয়।
  • ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব: এর ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত কৌশলগত হয়।
  • স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা (অনেক সময়): বাফার রাষ্ট্রগুলো প্রায়শই তুলনামূলকভাবে দুর্বল হয় এবং তাদের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখার চেষ্টা করে, যাতে তারা কোনো একটি বৃহৎ শক্তির পক্ষ নিয়ে অন্যটির সাথে সংঘাতে জড়িয়ে না পড়ে। তারা নিরপেক্ষতা বজায় রাখার চেষ্টা করে।
  • বৃহৎ শক্তির স্বার্থ: বৃহৎ শক্তিগুলো এই বাফার রাষ্ট্রগুলোকে তাদের নিজেদের মধ্যে সরাসরি সংঘাত এড়াতে ব্যবহার করে থাকে। একটি বাফার রাষ্ট্রের টিকে থাকা উভয় প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তির জন্যই স্বার্থগত হতে পারে, কারণ এটি সরাসরি সীমান্ত সংঘর্ষের ঝুঁকি কমায়।
  • দুর্বলতা: বাফার রাষ্ট্রগুলো তুলনামূলকভাবে সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়, যা তাদের বৃহৎ প্রতিবেশীদের প্রভাব বলয় থেকে পুরোপুরি মুক্ত থাকতে বাধা দেয়।
  • ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: ঔপনিবেশিক যুগে এবং স্নায়ুযুদ্ধের সময়কালে বাফার রাষ্ট্রের ধারণাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

উদাহরণ:

ঐতিহাসিকভাবে এবং আধুনিক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাফার রাষ্ট্রের কিছু উদাহরণ হলো:

  • আফগানিস্তান: ১৯শ শতাব্দীর 'গ্রেট গেম'-এ (Great Game) ব্রিটিশ সাম্রাজ্য (ভারত) এবং রাশিয়ান সাম্রাজ্যের মধ্যে আফগানিস্তান একটি বাফার রাষ্ট্র হিসেবে কাজ করেছিল।
  • নেপাল ও ভুটান: ভারত ও চীনের মতো দুটি বৃহৎ শক্তির মাঝে অবস্থিত নেপাল ও ভুটানকে বাফার রাষ্ট্র হিসেবে দেখা হয়।
  • বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবার্গ: ঐতিহাসিকভাবে এই দেশগুলো জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে বাফার হিসেবে কাজ করেছে।
  • মঙ্গোলিয়া: চীন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি বাফার রাষ্ট্র।

বাফার রাষ্ট্রের কার্যকারিতা: একটি বাফার রাষ্ট্র বৃহৎ শক্তিগুলোর মধ্যে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে, কারণ এটি সরাসরি সীমান্ত বিরোধ এবং আকস্মিক সামরিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা হ্রাস করে। তবে, বাফার রাষ্ট্রের অবস্থান প্রায়শই ভঙ্গুর হয় এবং বৃহৎ শক্তিগুলোর স্বার্থের সংঘাতে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বা এর নিরপেক্ষতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।