প্রশ্নঃ একই পরিমাণ বৃষ্টিপাত অঞ্চলসমূহকে যে কাল্পনিক রেখার সাহায্যে দেখানো হয় তার নাম-
[ বিসিএস ৪১তম ]
ক. আইসোপ্লিথ
খ. আইসোহাইট
গ. আইসোহ্যালাইন
ঘ. আইসোথার্ম
উত্তরঃ আইসোহাইট
ব্যাখ্যাঃ
আইসোহাইট (Isohyet) হলো ভূপৃষ্ঠের মানচিত্রে অঙ্কিত সেই কাল্পনিক রেখা যা সমান পরিমাণ বৃষ্টিপাতযুক্ত স্থানগুলোকে যুক্ত করে। "আইসো" শব্দের অর্থ "সমান" এবং "হাইয়েট" (hyet) শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ "hyetos" থেকে, যার অর্থ "বৃষ্টি"।
সহজভাবে বললে, কোনো নির্দিষ্ট সময়কালে (যেমন একদিন, এক মাস, এক বছর) যেসব অঞ্চলে একই পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, সেই অঞ্চলগুলোকে একটি রেখা দিয়ে মানচিত্রে যুক্ত করলে যে চিত্র পাওয়া যায়, সেটিই হলো আইসোহাইট।
আইসোহাইটের গুরুত্ব:
- বৃষ্টিপাতের বণ্টন: কোনো একটি অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের বণ্টন কেমন, তা আইসোহাইট রেখার মাধ্যমে সহজে বোঝা যায়। রেখাগুলো ঘন সন্নিবিষ্ট থাকলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণে দ্রুত পরিবর্তন দেখা যায়, আর রেখাগুলো দূরে দূরে থাকলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়।
- জলবায়ু বিশ্লেষণ: আইসোহাইট মানচিত্র কোনো অঞ্চলের জলবায়ু বৈশিষ্ট্য এবং বৃষ্টিপাতের ধরন সম্পর্কে ধারণা দেয়।
- কৃষি পরিকল্পনা: কৃষিকাজের জন্য কোন অঞ্চলে কেমন বৃষ্টিপাত হয়, তা জানার জন্য আইসোহাইট মানচিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে ফসলের নির্বাচন এবং সেচ ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করা সহজ হয়।
- জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা: জলাধার নির্মাণ এবং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জানা অপরিহার্য। আইসোহাইট মানচিত্র এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- ভূ-প্রাকৃতিক গবেষণা: বৃষ্টিপাতের বণ্টন ভূমিক্ষয় এবং অন্যান্য ভূ-প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। আইসোহাইট মানচিত্র এই গবেষণা কাজেও ব্যবহৃত হয়।
বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত বৃষ্টিপাতের ডেটা ব্যবহার করে আইসোহাইট মানচিত্র তৈরি করা হয়। এই ডেটা সাধারণত আবহাওয়া কেন্দ্র এবং বৃষ্টিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।