প্রশ্নঃ ‘নির্বাণ’ ধারণাটি কোন ধর্মবিশ্বাসের সাথে সংশ্লিষ্ট?
[ বিসিএস ৪৩তম ]
সঠিক উত্তর হল খঃ বৌদ্ধধর্ম।
'নির্বাণ' বৌদ্ধধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। এটি দুঃখ ও পুনর্জন্মের চক্র থেকে মুক্তিলাভের চূড়ান্ত অবস্থাকে বোঝায়।
প্রশ্নঃ নঁওগা জেলার অবস্থিত সোমপুর বিহার এর প্রতিষ্ঠাতা কে?
[ বিসিএস ৪২তম ]
সোমপুর বিহার:
- অবস্থান: সোমপুর বিহার বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামে অবস্থিত। এর অন্য নাম পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বা সোমপুর মহাবিহার।
- প্রতিষ্ঠাতা ও সময়কাল: পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপাল দেব (৭৮১-৮২১ খ্রিষ্টাব্দ) অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তবে, কিছু তিব্বতীয় ইতিহাস অনুসারে দেবপাল (৮১০-৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ) এটি নির্মাণ করেন।
- আবিষ্কার: ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম এই বিশাল স্থাপনা আবিষ্কার করেন।
- ঐতিহাসিক তাৎপর্য:
- এটি এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম বৌদ্ধ বিহারগুলোর মধ্যে অন্যতম।
- প্রায় ৩০০ বছর ধরে এটি বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্ম শিক্ষাদান কেন্দ্র ছিল। শুধু উপমহাদেশ নয়, চীন, তিব্বত, মায়ানমার, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকেও বৌদ্ধরা এখানে জ্ঞান অর্জনের জন্য আসতেন।
- খ্রিস্টীয় দশম শতকে এই বিহারের আচার্য ছিলেন বিখ্যাত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান।
- এটি পাল যুগের বৌদ্ধ স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন, যা পরবর্তীতে বার্মা, কম্বোডিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার স্থাপত্যে প্রভাব ফেলেছিল।
- স্থাপত্য:
- বিহারটি একটি বিশাল আয়তক্ষেত্রাকার কাঠামো, যার উত্তর-দক্ষিণে ৯২২ ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৯১৯ ফুট।
- এর চারদিকে উঁচু প্রাচীর এবং অভ্যন্তরে সারিবদ্ধ ছোট ছোট কক্ষ ছিল। ভিক্ষুদের বসবাসের জন্য ১৭৭টি কক্ষ ছিল এবং প্রায় ৮০০ ভিক্ষু এখানে বাস করতে পারতেন।
- বিহারের কেন্দ্রে একটি শূন্যগর্ভ চতুষ্কোণ কক্ষ রয়েছে, যা মন্দিরের ভিত্তি থেকে চূড়া পর্যন্ত বিস্তৃত।
- দেয়ালের বাইরের দিকে বুদ্ধমূর্তি, হিন্দুদের দেব-দেবী মূর্তি ও পোড়ামাটির ফলকচিত্র দেখা যায়, যেখানে সাধারণ মানুষের জীবনগাথা চিত্রিত হয়েছে।
- বর্তমান অবস্থা: কালের বিবর্তনে এই বিহারটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। তবে এর ধ্বংসাবশেষ আজও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
সোমপুর বিহার শুধু একটি প্রাচীন স্থাপত্য নয়, এটি এক সময়ের জ্ঞানচর্চা ও সংস্কৃতির কেন্দ্র ছিল এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
প্রশ্নঃ কে বাংলার সাল গণনা শুরু করেন?
[ বিসিএস ৩১তম ]
বাংলা সনের প্রবর্তক সম্রাট আকবর রাজস্ব মন্ত্রী টোডরমলের পরামর্শে ৯৬৩ হিজরিকে ৯৬৩ সাল ধরে গণনা শুরু করে। কৃষিকাজের সুবিধার্থে মোগল সম্রাট আকবর ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০/১১ মার্চ বাংলা সন প্রবর্তন করেন এবং ১৫৫৬ সালের ৫ নভেম্বর আকবর পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে হিমুকে পরাজিত করে। তার সিংহাসনে আরোহণের সময় থেকে কার্যকর হয়। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌরসনকে ভিত্তি করে বাংলা সন প্রবর্তিত হয়।
প্রশ্নঃ গৌড়ের সোনা মসজিদ কার আমলে নির্মিত হয়?
[ বিসিএস ২৯তম ]
গৌড়ের সোনা মসজিদ নির্মিত হয় হোসেন শাহ-এর আমলে। তার পুরো নাম আলাউদ্দিন হোসেন শাহ। তিনি হোসেন শাহী বংশের শাসক ছিলেন।
প্রশ্নঃ বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ চালু করেছিলেন–
[ বিসিএস ২৬তম ]
কৃষিকাজের সুবিধার্থেই মুঘল সম্রাট আকবর ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০/১১ মার্চ বাংলা সন প্রবর্তন করেন এবং তা ১৫৫৬ সালের ৫ নভেম্বর তার সিংহাসনে আরোহণের সময় থেকে কার্যকর হয়। হিজরি চান্দ্রাসন ও বাংলা সৌরসনকে ভিত্তি করে বাংলা সন প্রবর্তিত হয়। আর বাংলা নববর্ষ পালন শুরু করেন সম্রাট আকবরই।
প্রশ্নঃ বাংলায় ইউরোপীয় বণিকদের মধ্যে কারা প্রথম এসেছিল?
[ বিসিএস ১৬তম ]
পঞ্চদশ শতকের শেষভাগে পর্তুগিজ দেশীয় নাবিক ভস্কো-দা-গামা আফ্রিকার পশ্চিম পূর্ব উপকূল ঘুরে বরাবর সমুদ্রপথে ভারতবর্ষে আসার পথ আবিষ্কার করেন। ১৫১৪ খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগিজ বণিকগণ উড়িষ্যার অন্তর্গত পিপলি নামক স্থানে সর্বপ্রথম বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে । উল্লেখ্য, ১৬০২ সালে ওলন্দাজরা, ১৬০০ সালে ইংরেজরা এবং ১৬৬৪ সালে ফরাসিরা বাংলায় আগমন করেন।
প্রশ্নঃ চীন থেকে ভারতবর্ষে আসা প্রথম পর্যটকের নাম কি?
[ প্রা.বি.স.শি. 02-02-2024 ]
চীন থেকে ভারতবর্ষে আসা প্রথম পর্যটকের নাম ফা-হিয়েন (Fa-Hien)। তিনি একজন চীনা বৌদ্ধ ভিক্ষু ছিলেন, যিনি ৩৯৯-৪১৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের শাসনামলে ভারত ভ্রমণ করেন।
প্রশ্নঃ অসমাপ্ত 'অদ্ভুত সাগর' গ্রন্থটি কে সমাপ্ত করেন?
[ প্রা.বি.স.শি. 21-06-2019 ]
অসমাপ্ত 'অদ্ভুত সাগর' গ্রন্থটি লক্ষ্মণ সেনের পুত্র অনন্ত ভট্ট সমাপ্ত করেন।
বল্লাল সেন 'অদ্ভুত সাগর' গ্রন্থটির রচনা শুরু করেছিলেন, কিন্তু তিনি এটি সমাপ্ত করতে পারেননি। পরবর্তীতে তার পুত্র লক্ষ্মণ সেনের আদেশে অনন্ত ভট্ট এই কাজটি সম্পন্ন করেন।
প্রশ্নঃ কার পৃষ্ঠোপাষকতায় 'নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়' জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠে?
[ প্রা.বি.স.শি. 21-06-2019 ]
ধর্মপাল (৮ম-৯ম শতক) পাল রাজবংশের একজন বিশিষ্ট শাসক ছিলেন। তিনি নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনঃসংস্কার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, যা তখনকার সময়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে।