প্রশ্নঃ ‘ভিক্টোরিয়া ডিজার্ট’ কোথায় অবস্থিত?
[ বিসিএস ৪৫তম ]
‘ভিক্টোরিয়া ডিজার্ট’ অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত।
এটি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত একটি বৃহৎ মরুভূমি।
Related MCQ
প্রশ্নঃ কোন ধরনের শিলায় জীবাশ্ম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে?
[ বিসিএস ৪৪তম ]
জীবাশ্ম থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি পাললিক শিলায় (Sedimentary rocks)।
এর প্রধান কারণগুলো হলো:
-
গঠন প্রক্রিয়া: পাললিক শিলা গঠিত হয় মূলত পানির নিচে পলি, বালি, কাদা, মৃত জীবজন্তুর দেহাবশেষ এবং উদ্ভিদের অংশ স্তরে স্তরে জমা হওয়ার মাধ্যমে। সময়ের সাথে সাথে এই স্তরগুলো চাপের ফলে জমাট বেঁধে শিলায় পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়ায় জীবজন্তুর দেহাবশেষ বা উদ্ভিদের অংশ চাপা পড়ে জীবাশ্মে রূপান্তরিত হওয়ার সুযোগ পায়।
-
কম তাপ ও চাপ: আগ্নেয় শিলা (Igneous rocks) গঠিত হয় গলিত ম্যাগমা বা লাভা ঠান্ডা ও জমাট বাঁধার মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়ায় অত্যাধিক তাপমাত্রার কারণে কোনো জীবজন্তু বা উদ্ভিদের দেহাবশেষ টিকে থাকতে পারে না। অন্যদিকে, রূপান্তরিত শিলা (Metamorphic rocks) উচ্চ তাপ ও চাপের প্রভাবে গঠিত হয়, যা জীবাশ্মকে ধ্বংস করে ফেলতে পারে বা বিকৃত করে ফেলতে পারে।
তাই, জীবাশ্ম অনুসন্ধানের জন্য পাললিক শিলাস্তর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বেলেপাথর (Sandstone), কাদাপাথর (Shale), চুনাপাথর (Limestone) ইত্যাদি পাললিক শিলার উদাহরণ এবং এগুলোতে জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের ছয় ঋতুর সঠিক অনুক্রম কোনটি?
[ বিসিএস ৪২তম ]
বাংলাদেশে মূলত ছয়টি ঋতু বিদ্যমান, যদিও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এদের বৈশিষ্ট্য এবং সময়কালে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহ্যগতভাবে এই ছয়টি ঋতু হলো:
১. গ্রীষ্ম (Summer):
- সময়কাল: বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাস (মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য জুন)
- বৈশিষ্ট্য: এটি বছরের উষ্ণতম ঋতু। এই সময়ে তাপমাত্রা বেশ বেশি থাকে এবং আবহাওয়া শুষ্ক ও গরম থাকে। মাঝে মাঝে কালবৈশাখী ঝড়ও দেখা যায়।
২. বর্ষা (Monsoon/Rainy Season):
- সময়কাল: আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস (মধ্য জুন থেকে মধ্য আগস্ট)
- বৈশিষ্ট্য: এটি বৃষ্টির ঋতু। এই সময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং আর্দ্রতা খুব বেশি থাকে। নদ-নদী পানিতে পরিপূর্ণ থাকে এবং পরিবেশ সবুজ ও সতেজ হয়ে ওঠে।
৩. শরৎ (Autumn):
- সময়কাল: ভাদ্র ও আশ্বিন মাস (মধ্য আগস্ট থেকে মধ্য অক্টোবর)
- বৈশিষ্ট্য: বর্ষার পর এই ঋতু আসে। আকাশ পরিষ্কার ও নীল থাকে, হালকা শীতল বাতাস অনুভূত হয় এবং চারদিকে মনোরম পরিবেশ বিরাজ করে। এটি উৎসবের ঋতু হিসেবেও পরিচিত।
৪. হেমন্ত (Late Autumn):
- সময়কাল: কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস (মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য ডিসেম্বর)
- বৈশিষ্ট্য: এটি শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে। আবহাওয়া ধীরে ধীরে শীতল হতে শুরু করে এবং সকালে হালকা কুয়াশা দেখা যায়। ধান কাটার মৌসুম হওয়ায় কৃষকের ঘরে নতুন ফসল ওঠে।
৫. শীত (Winter):
- সময়কাল: পৌষ ও মাঘ মাস (মধ্য ডিসেম্বর থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারি)
- বৈশিষ্ট্য: এটি বছরের শীতলতম ঋতু। এই সময়ে তাপমাত্রা বেশ কম থাকে এবং উত্তর দিক থেকে শীতল বাতাস বয়। দেশের উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহও দেখা যায়।
৬. বসন্ত (Spring):
- সময়কাল: ফাল্গুন ও চৈত্র মাস (মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্য এপ্রিল)
- বৈশিষ্ট্য: শীতের শেষ এবং গ্রীষ্মের শুরুর এই সময়ে আবহাওয়া মনোরম থাকে। গাছে নতুন পাতা ও ফুল ফোটে এবং প্রকৃতি নতুন রূপে সেজে ওঠে। হালকা উষ্ণ বাতাস এবং পাখির কলকাকলিতে চারদিক মুখরিত থাকে।
এই ছয়টি ঋতু বাংলাদেশের প্রকৃতি ও জনজীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের জীবনযাত্রা, ফসল উৎপাদন এবং প্রকৃতির রূপও পরিবর্তিত হয়।
প্রশ্নঃ নিম্নের কোনটি পাললিক শিলা?
[ বিসিএস ৪০তম ]
কয়লা পাললিক শিলার উদাহরণ। এটি মূলত উদ্ভিদ এবং অন্যান্য জৈব পদার্থের স্তূপীকরণের মাধ্যমে গঠিত হয়।
অন্যান্য শিলাগুলোর শ্রেণীবিভাগ নিচে দেওয়া হলো:
- মার্বেল: রূপান্তরিত শিলা (চুনাপাথর থেকে রূপান্তরিত)।
- গ্রানাইট: আগ্নেয় শিলা (ভূগর্ভের ম্যাগমা জমাট বেঁধে তৈরি)।
- নিস: রূপান্তরিত শিলা (বিভিন্ন ধরনের শিলা থেকে উচ্চ তাপ ও চাপে রূপান্তরিত)।
প্রশ্নঃ ‘V-20’ গ্রুপ কিসের সাথে সম্পর্কিত?
[ বিসিএস ৪০তম ]
‘V-20’ গ্রুপ হলো Vulnerable Twenty Group-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের প্রতি বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি দেশের একটি সহযোগিতা উদ্যোগ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ২০১৫ সালের অক্টোবরে পেরুর লিমায় ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের অধীনে এই জোটটি গঠিত হয়।
বর্তমানে এই গ্রুপে ৬৮টি সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে, যারা সম্মিলিতভাবে বিশ্বের প্রায় ২০% জনসংখ্যার প্রতিনিধিত্ব করে এবং প্রায় ৫% বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই দেশগুলো বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগের সম্মুখীন হয়, যেমন - সুপার সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস, খরা, দুর্ভিক্ষ, খাদ্য সংকট, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, বন্যা, ভূমিধস, মরুকরণ এবং তাপপ্রবাহ।
V-20 গ্রুপের প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হলো:
- সরকারি ও বেসরকারি জলবায়ু অর্থায়নের mobilization বৃদ্ধি করা।
- জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সর্বোত্তম অনুশীলন ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা।
- নতুন অর্থায়ন পদ্ধতি তৈরি করা।
- জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে advocacy করা।
এই জোটটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল যোগানের উপর জোর দেয়।
ভূতাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন ভূমিরূপ গঠিত হয় টারশিয়ারী যুগে। এই অঞ্চলের টারশিয়ারি যুগের শিলাসমূহ মূলত দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল (পার্বত্য চট্টগ্রাম), উত্তর-পূর্বাঞ্চল (সিলেট-মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ অঞ্চল) এবং ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর গড়ের কিছু অংশে বিদ্যমান। এগুলো মূলত ভাঁজ করা পাহাড় ও উচ্চভূমি।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের জলবায়ু কী ধরনের?
[ বিসিএস ৩৮তম ]
বাংলাদেশের জলবায়ু মূলত ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু (Tropical Monsoon Climate) প্রকৃতির। এর কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য নিচে তুলে ধরা হলো:
১. উষ্ণ ও আর্দ্র গ্রীষ্মকাল এবং শুষ্ক শীতকাল:
- গ্রীষ্মকাল (মার্চ-মে): এই সময় উষ্ণ ও আর্দ্র থাকে। গড় তাপমাত্রা সাধারণত ২৫-৩৫° সেলসিয়াস থাকে, তবে কখনো কখনো ৪০° সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। এ সময়ে কালবৈশাখী ঝড় দেখা যায়।
- বর্ষাকাল (জুন-অক্টোবর): দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে এই সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এটি বাংলাদেশের কৃষির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত প্রায় ২০৩ সেন্টিমিটার। সিলেট অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়।
- শীতকাল (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি): শীতকাল শুষ্ক ও তুলনামূলকভাবে মৃদু হয়। গড় তাপমাত্রা সাধারণত ১৮-২৫° সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। উত্তর দিক থেকে আসা হিমালয়ের বাতাস দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত না হওয়ায় (হিমালয় পর্বতমালা উত্তর দিক থেকে ঠাণ্ডা বাতাসকে আটকে রাখে) শীতকাল খুব তীব্র হয় না।
২. মৌসুমী বায়ুর প্রভাব: বাংলাদেশের জলবায়ুর প্রধান নিয়ন্ত্রক হলো মৌসুমী বায়ু। গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু সমুদ্র থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প নিয়ে আসে, যার ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু স্থলভাগ থেকে প্রবাহিত হয় বলে শুষ্ক থাকে।
৩. ভৌগোলিক অবস্থান:
- কর্কটক্রান্তি রেখা: বাংলাদেশের মাঝ বরাবর কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করায় এটি ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত।
- বঙ্গোপসাগরের প্রভাব: দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের অবস্থান এবং উপকূলীয় অঞ্চলের কাছাকাছি হওয়ায় সমুদ্রের প্রভাব দেখা যায়, যা জলবায়ুকে কিছুটা সমভাবাপন্ন রাখে। অর্থাৎ, চরম উষ্ণ বা চরম শীতল অবস্থা খুব বেশি দেখা যায় না।
- হিমালয় পর্বতমালার ভূমিকা: উত্তরে অবস্থিত হিমালয় পর্বতমালা শীতকালে সাইবেরিয়া থেকে আসা শীতল বায়ুকে বাংলাদেশে প্রবেশে বাধা দেয়, ফলে শীতকাল ততটা তীব্র হয় না।
৪. ঋতু বৈচিত্র্য: মৌসুমী জলবায়ুর কারণে বাংলাদেশে স্পষ্ট ঋতু বৈচিত্র্য দেখা যায়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে ছয়টি ঋতু (গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্ত) প্রচলিত, জলবায়ুগতভাবে প্রধানত তিনটি ঋতু (গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত) বেশি স্পষ্ট।
৫. প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা: বাংলাদেশের জলবায়ু প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য সংবেদনশীল। প্রতি বছরই বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, খরা এবং নদী ভাঙনের মতো দুর্যোগ দেখা যায়। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়গুলি বিশেষ করে বর্ষা ও বর্ষা পরবর্তী সময়ে উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি করে।
৬. জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব: বর্তমানে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, অতিবৃষ্টি ও খরার মতো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, যা দেশের কৃষি, পরিবেশ ও জনজীবনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সংক্ষেপে, বাংলাদেশের জলবায়ু উষ্ণ, আর্দ্র ও সমভাবাপন্ন ক্রান্তীয় মৌসুমী প্রকৃতির, যা কৃষি ও জীবনযাত্রার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
প্রশ্নঃ নিচের কোন জেলাতে প্লাইস্টোসিন চত্বরভূমি রয়েছে?
[ বিসিএস ৩৮তম ]
ভূগোল ও ভূ-প্রকৃতি অনুসারে, প্লাইস্টোসিন চত্বরভূমি (Pleistocene Terraces) হলো বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চল। এগুলো মূলত প্লাইস্টোসিন যুগে (প্রায় ২৫,০০০ বছর পূর্বে) গঠিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই সময়ে আন্তঃবরফ গলা পানিতে প্লাবনের সৃষ্টি হয়ে এসব চত্বরভূমি গঠিত হয়েছিল। এখানকার মাটির রঙ সাধারণত লালচে বা ধূসর হয় এবং মাটি নুড়ি, বালি ও কাঁকর মিশ্রিত।
বাংলাদেশের প্লাইস্টোসিন চত্বরভূমিকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:
১. বরেন্দ্রভূমি (Barind Tract):
- অবস্থান: এটি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে অবস্থিত।
- বিস্তৃতি: রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া, জয়পুরহাট এবং রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত।
- বৈশিষ্ট্য: এটি প্লাবন সমভূমি থেকে প্রায় ৬ থেকে ১২ মিটার উঁচু।
২. মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় (Madhupur and Bhawal Tract):
- অবস্থান: এটি বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত।
- বিস্তৃতি: ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর এবং ঢাকা জেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত।
- বৈশিষ্ট্য: এটিও তুলনামূলকভাবে উঁচু এবং বনাঞ্চলে আচ্ছাদিত।
৩. লালমাই পাহাড় (Lalmai Hills):
- অবস্থান: এটি কুমিল্লা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত।
- বিস্তৃতি: কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে লালমাই থেকে ময়নামতি পর্যন্ত বিস্তৃত।
- বৈশিষ্ট্য: এটি তুলনামূলকভাবে ছোট আয়তনের একটি নিচু পাহাড়ী এলাকা।
এই প্লাইস্টোসিন চত্বরভূমিগুলো বাংলাদেশের অন্যান্য সমভূমি অঞ্চলের থেকে কিছুটা উঁচু এবং এদের মাটি ও গঠন প্রকৃতি ভিন্ন। কৃষি ও বসতি স্থাপনার ক্ষেত্রে এগুলোর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
প্রশ্নঃ আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলকে কী নামে অভিহিত করা হয়?
[ বিসিএস ৩৮তম ]
আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলকে মূলত সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা (Sub-Saharan Africa) নামেই অভিহিত করা হয়। এটি সাহারা মরুভূমির দক্ষিণে অবস্থিত আফ্রিকা মহাদেশের বৃহৎ অংশকে বোঝায়।
এছাড়াও, কখনও কখনও একে কৃষ্ণ আফ্রিকা (Black Africa) নামেও উল্লেখ করা হয়, বিশেষ করে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে, কারণ এই অঞ্চলের অধিকাংশ জনগোষ্ঠী কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান।
তবে, একটি সুনির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চল হিসেবে, সাহারা মরুভূমির দক্ষিণে অবস্থিত একটি পরিবর্তনশীল তৃণভূমি অঞ্চলকে সাহেল (Sahel) নামে অভিহিত করা হয়, যা সাব-সাহারা আফ্রিকার একটি অংশ। সাহেল উত্তরের মরুভূমি এবং দক্ষিণের ক্রান্তীয় অঞ্চলের মধ্যবর্তী একটি শুষ্ক থেকে আধা-শুষ্ক ক্রান্তীয় সাভানা বায়োম।
প্রশ্নঃ কোনটি জলবায়ুর উপাদান নয়?
[ বিসিএস ৩৮তম ]
জলবায়ুর উপাদান নয় সমুদ্রস্রোত।
-
জলবায়ুর উপাদান (Elements of Climate): জলবায়ুর উপাদান বলতে সেই ভৌত বৈশিষ্ট্যগুলিকে বোঝায় যা একটি নির্দিষ্ট স্থানের আবহাওয়া ও জলবায়ুকে সংজ্ঞায়িত করে। এগুলি সরাসরি পরিমাপযোগ্য এবং সময়ের সাথে সাথে তাদের গড় পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করে জলবায়ু বোঝা যায়। প্রধান উপাদানগুলো হলো:
- উষ্ণতা (Temperature): বাতাসের উষ্ণতা জলবায়ুর একটি মৌলিক উপাদান।
- আর্দ্রতা (Humidity): বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ, যা বৃষ্টিপাত এবং আর্দ্রতা নির্ধারণ করে।
- বায়ুপ্রবাহ (Wind/Airflow): বাতাসের গতি ও দিক, যা উষ্ণতা, আর্দ্রতা এবং মেঘের চলাচলকে প্রভাবিত করে।
- বৃষ্টিপাত (Precipitation): বৃষ্টি, তুষার, শিলাবৃষ্টি ইত্যাদি।
- বায়ুচাপ (Atmospheric Pressure): বায়ুমণ্ডলের চাপ।
-
জলবায়ু নিয়ন্ত্রক (Factors/Controls of Climate): অন্যদিকে, জলবায়ু নিয়ন্ত্রক হলো সেই ভৌগোলিক বা পরিবেশগত কারণগুলি যা জলবায়ুর উপাদানগুলিকে প্রভাবিত করে। সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents) হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু নিয়ন্ত্রক, কারণ এটি উপকূলীয় অঞ্চলের তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতকে প্রভাবিত করে। উদাহরণস্বরূপ, উষ্ণ সমুদ্রস্রোত কাছাকাছি স্থলভাগে উষ্ণতা নিয়ে আসে এবং শীতল সমুদ্রস্রোত শীতলতা নিয়ে আসে।
সুতরাং, উষ্ণতা, আর্দ্রতা এবং বায়ুপ্রবাহ সরাসরি জলবায়ুর উপাদান, কিন্তু সমুদ্রস্রোত জলবায়ুর উপাদান নয়, বরং এটি একটি জলবায়ু নিয়ন্ত্রক।
বাংলাদেশে বার্ষিক সর্বোচ্চ গড় বৃষ্টিপাত সিলেটের লালখালে রেকর্ড করা হয়।
লালখাল (লালাখাল) মূলত সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত, যা ভারতের মেঘালয় সীমান্তের খুব কাছে। এই অঞ্চলের পাশেই পৃথিবীর অন্যতম বৃষ্টিবহুল স্থান চেরাপুঞ্জি অবস্থিত হওয়ায় এখানেও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।
একটি অঞ্চলের বা দেশের জলবায়ু নির্ধারণ করে না এমন নিয়ামকটি হলো: দ্রাঘিমারেখা
জলবায়ু নির্ধারণকারী নিয়ামকসমূহ:
- অক্ষরেখা (Latitude): এটি সূর্যরশ্মির পতন কোণকে প্রভাবিত করে, যা একটি অঞ্চলের তাপমাত্রাকে সরাসরি প্রভাবিত করে। নিরক্ষরেখার কাছাকাছি অঞ্চলগুলো উষ্ণ এবং মেরু অঞ্চলের কাছাকাছি অঞ্চলগুলো শীতল হয়।
- উচ্চতা (Altitude/Elevation): উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুর ঘনত্ব এবং তাপমাত্রা হ্রাস পায়। পর্বত শিখরগুলো সংলগ্ন নিম্নভূমির চেয়ে শীতল হয়।
- সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents): উষ্ণ বা শীতল সমুদ্রস্রোত উপকূলীয় অঞ্চলের তাপমাত্রাকে প্রভাবিত করে। উষ্ণ স্রোত উপকূলীয় অঞ্চলকে উষ্ণ রাখে, আর শীতল স্রোত শীতল করে।
- দূরত্ব (Distance from Sea/Continentality): সমুদ্রের নিকটবর্তী অঞ্চলে তাপমাত্রা চরমভাবাপন্ন হয় না (অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে খুব বেশি গরম বা শীতকালে খুব বেশি ঠান্ডা হয় না), কারণ সমুদ্রের জল ধীরে ধীরে গরম হয় এবং ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়। মহাদেশের অভ্যন্তরভাগে তাপমাত্রা চরমভাবাপন্ন হয়।
- বায়ুপ্রবাহ (Prevailing Winds): বায়ুপ্রবাহের দিক এবং উৎপত্তি স্থল একটি অঞ্চলের তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতকে প্রভাবিত করে।
- পাহাড় ও পর্বতের অবস্থান (Relief/Mountain Barriers): পর্বতমালা বায়ুর গতিপথ পরিবর্তন করে এবং একপাশে বৃষ্টিপাত ঘটায় (Windward side) এবং অন্যপাশে শুষ্ক পরিবেশ সৃষ্টি করে (Leeward side)।
দ্রাঘিমারেখা (Longitude) পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিম অবস্থান নির্দেশ করে এবং এটি মূলত সময় অঞ্চল নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়। এটি সরাসরি কোনো অঞ্চলের জলবায়ু নির্ধারণে ভূমিকা রাখে না। জলবায়ু মূলত অক্ষরেখা, উচ্চতা, সমুদ্রের নৈকট্য, বায়ুপ্রবাহ এবং সমুদ্রস্রোত দ্বারা প্রভাবিত হয়।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের উষ্ণতম স্থানের নাম কি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশের উষ্ণতম স্থান নিয়ে বিভিন্ন সময়ে রেকর্ডকৃত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এবং চলমান তাপপ্রবাহের ভিত্তিতে কিছু স্থানকে উষ্ণতম হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
ঐতিহাসিকভাবে, বাংলাদেশের উষ্ণতম স্থান হিসেবে নাটোরের লালপুর-কে উল্লেখ করা হয়, যেখানে দেশের সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাতও রেকর্ড করা হয়।
তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এপ্রিল-মে মাসে তীব্র তাপপ্রবাহের সময় চুয়াডাঙ্গা, যশোর, রাজশাহী এবং পাবনার ঈশ্বরদী অঞ্চলে তাপমাত্রা প্রায়শই ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায় এবং অনেক সময় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এই স্থানগুলোতে রেকর্ড করা হয়।
অতএব, যদিও ঐতিহাসিকভাবে নাটোরের লালপুর উষ্ণতম স্থান হিসেবে পরিচিত, সাম্প্রতিক সময়ে চুয়াডাঙ্গা এবং যশোর-ও দেশের অন্যতম উষ্ণতম অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে প্রায়শই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে কালবৈশাখির ঝড় কখন হয়?
[ বিসিএস ৩৫তম ]
বাংলাদেশে কালবৈশাখীর ঝড় হয় প্রাক-মৌসুমী বায়ু ঋতুতে।
ব্যাখ্যা:
- প্রাক-মৌসুমী বায়ু ঋতু: এই সময়কাল সাধারণত মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই সময়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং বায়ুমণ্ডলে অস্থিরতা দেখা দেয়, যা কালবৈশাখী ঝড় সৃষ্টির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। বাংলাদেশে এই সময়েই বজ্রসহ তীব্র ঝড়-বৃষ্টি হয়, যা কালবৈশাখী নামে পরিচিত।
- মৌসুমী বায়ু ঋতু (বর্ষাকাল): এটি জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত চলে। এই সময়ে নিয়মিত বৃষ্টিপাত হলেও, কালবৈশাখীর মতো তীব্র ও হঠাৎ ঝড় সাধারণত হয় না।
- শীতকাল: এটি নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চলে। এই সময়ে আবহাওয়া শুষ্ক ও ঠান্ডা থাকে এবং কালবৈশাখী হয় না।
- মৌসুমী বায়ু ঋতুর পরবর্তী সময়ে: এটি সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বর মাসকে বোঝায়। এই সময়ে আবহাওয়া স্থিতিশীল হতে শুরু করে এবং কালবৈশাখী দেখা যায় না।
প্রশ্নঃ জমির লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করে কোনটি?
[ বিসিএস ৩৪তম ]
প্রশ্নঃ গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়া এই দেশের জন্য ভয়াবহ আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে–
[ বিসিএস ২২তম ]
গ্রিন হাউসের প্রভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধিকারী গ্যাসের পরিমাণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাবে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। ফলে বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের অধিকাংশ নিমজ্জিত হবে।
প্রশ্নঃ যে ভূমিতে ফসল জন্মায় না-
[ বিসিএস ১৫তম ]
পতিত – যা ফেলে রাখা হয়েছে। অনুর্বর- যে জমির উর্বরতা শক্তি নেই। ঊষর – যে জমিতে ফসল হয় না। বন্ধ্যা – যে নারীর সন্তান হয় না।
প্রশ্নঃ বাতাসের নাইট্রোজেন কিভাবে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে?
[ বিসিএস ১৫তম ]
উদ্ভিদ বাতাসের নাইট্রোজেন সরাসরি গ্রহণ করতে পারে না। বাতাসের নাইট্রোজেন বজ্রবৃষ্টির সময় বৃষ্টির পানির সাথে মিশে নাইট্রিক এসিড রূপে ভূ- পৃষ্ঠে পতিত হয়। পরবর্তীতে তা নাইট্রেট রূপে বিশ্লেষিত হয়ে উদ্ভিদের গ্রহণোপযোগী হয়। তবে শীম জাতীয় উদ্ভিদের মূলে Rahizobium নামক ব্যাকটেরিয়া নাইট্রোজেনকে নাইট্রেটে পরিণত করতে পারে।
প্রশ্নঃ কোন অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়কে হ্যারিকেন নামে অভিহিত করা হয়?
[ প্রা.বি.স.শি. 22-04-2022 ]
আটলান্টিক মহাসাগর এবং উত্তর-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে হ্যারিকেন নামে অভিহিত করা হয়।
এই ঘূর্ণিঝড়গুলো সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, কিউবা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোতে আঘাত হানে।