আমাদের স্কুল

সেটিং

বহুনির্বাচনি প্রশ্নের দেখানোর অপশনঃ
শুধুমাত্র উত্তর 2 অপশন
3 অপশন 4 অপশন
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের অপশন প্রদর্শনঃ
রো আকারে কলাম আকারে
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরঃ
লুকান বোল্ড করুন
দেখান দেখান ও বোল্ড করুন
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের ব্যাখ্যাঃ
দেখান লুকান নিচে লুকান
থিম নির্বাচন করুনঃ
ফন্ট সাইজঃ
15

প্রশ্নঃ বাংলাদেশের জলবায়ু কী ধরনের?

[ বিসিএস ৩৮তম ]

ক. ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় জলবায়ু
খ. ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু
গ. উপক্রান্তীয় জলবায়ু
ঘ. আর্দ্র ক্রান্তীয় জলবায়ু
উত্তরঃ ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু
ব্যাখ্যাঃ

বাংলাদেশের জলবায়ু মূলত ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু (Tropical Monsoon Climate) প্রকৃতির। এর কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য নিচে তুলে ধরা হলো:

১. উষ্ণ ও আর্দ্র গ্রীষ্মকাল এবং শুষ্ক শীতকাল:

  • গ্রীষ্মকাল (মার্চ-মে): এই সময় উষ্ণ ও আর্দ্র থাকে। গড় তাপমাত্রা সাধারণত ২৫-৩৫° সেলসিয়াস থাকে, তবে কখনো কখনো ৪০° সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। এ সময়ে কালবৈশাখী ঝড় দেখা যায়।
  • বর্ষাকাল (জুন-অক্টোবর): দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে এই সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এটি বাংলাদেশের কৃষির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত প্রায় ২০৩ সেন্টিমিটার। সিলেট অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়।
  • শীতকাল (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি): শীতকাল শুষ্ক ও তুলনামূলকভাবে মৃদু হয়। গড় তাপমাত্রা সাধারণত ১৮-২৫° সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। উত্তর দিক থেকে আসা হিমালয়ের বাতাস দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত না হওয়ায় (হিমালয় পর্বতমালা উত্তর দিক থেকে ঠাণ্ডা বাতাসকে আটকে রাখে) শীতকাল খুব তীব্র হয় না।

২. মৌসুমী বায়ুর প্রভাব: বাংলাদেশের জলবায়ুর প্রধান নিয়ন্ত্রক হলো মৌসুমী বায়ু। গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু সমুদ্র থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প নিয়ে আসে, যার ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু স্থলভাগ থেকে প্রবাহিত হয় বলে শুষ্ক থাকে।

৩. ভৌগোলিক অবস্থান:

  • কর্কটক্রান্তি রেখা: বাংলাদেশের মাঝ বরাবর কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করায় এটি ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত।
  • বঙ্গোপসাগরের প্রভাব: দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের অবস্থান এবং উপকূলীয় অঞ্চলের কাছাকাছি হওয়ায় সমুদ্রের প্রভাব দেখা যায়, যা জলবায়ুকে কিছুটা সমভাবাপন্ন রাখে। অর্থাৎ, চরম উষ্ণ বা চরম শীতল অবস্থা খুব বেশি দেখা যায় না।
  • হিমালয় পর্বতমালার ভূমিকা: উত্তরে অবস্থিত হিমালয় পর্বতমালা শীতকালে সাইবেরিয়া থেকে আসা শীতল বায়ুকে বাংলাদেশে প্রবেশে বাধা দেয়, ফলে শীতকাল ততটা তীব্র হয় না।

৪. ঋতু বৈচিত্র্য: মৌসুমী জলবায়ুর কারণে বাংলাদেশে স্পষ্ট ঋতু বৈচিত্র্য দেখা যায়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে ছয়টি ঋতু (গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্ত) প্রচলিত, জলবায়ুগতভাবে প্রধানত তিনটি ঋতু (গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত) বেশি স্পষ্ট।

৫. প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা: বাংলাদেশের জলবায়ু প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য সংবেদনশীল। প্রতি বছরই বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, খরা এবং নদী ভাঙনের মতো দুর্যোগ দেখা যায়। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়গুলি বিশেষ করে বর্ষা ও বর্ষা পরবর্তী সময়ে উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি করে।

৬. জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব: বর্তমানে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, অতিবৃষ্টি ও খরার মতো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, যা দেশের কৃষি, পরিবেশ ও জনজীবনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

সংক্ষেপে, বাংলাদেশের জলবায়ু উষ্ণ, আর্দ্র ও সমভাবাপন্ন ক্রান্তীয় মৌসুমী প্রকৃতির, যা কৃষি ও জীবনযাত্রার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।