প্রশ্নঃ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে এক ব্যক্তি দম্ভোক্তি করে, যা বলেছিল নিম্নরূপ: ‘লোকটি এবং তার দল পাকিস্তানের শত্রু, এবার তারা শাস্তি এড়াতে পারবে না।’- এ দম্ভোক্তিকারী ব্যক্তি কে ছিল?
[ বিসিএস ২০তম ]
জেনারেল ইয়াহিয়া খান ছিলেন সামরিক শাসক ও পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট। পাকিস্তানের প্রথম সামরিক শাসক জেনারেল আইয়ুব খান ১৯৬৯ সালের ২৪ মার্চ ইয়াহিয়া খানের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে পদত্যাগ করেন। জেনারেল টিক্কা খান পাকিস্তান আমলে ১৯৭১ সালে বাংলার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
Related MCQ
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা শহর ২ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন প্রথমে মেজর খালেদ মোশাররফ এবং পরবর্তীতে মেজর এ.টি.এম. হায়দার। ২ নম্বর সেক্টরের আওতাধীন এলাকা ছিল ঢাকা, কুমিল্লা ও ফরিদপুরের কিছু অংশ।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে কতজন মুক্তিযােদ্ধাকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়?
[ বিসিএস ৪৪তম ]
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৭৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এই খেতাব প্রদান করা হয়।
প্রশ্নঃ মুজিবনগর সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী কে ছিলেন?
[ বিসিএস ৪৪তম ]
মুজিবনগর সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী ছিলেন এ এইচ এম কামরুজ্জামান।
অন্যান্য পদাধিকারীগণ ছিলেন:
- তাজউদ্দিন আহমেদ: প্রধানমন্ত্রী
- সৈয়দ নজরুল ইসলাম: উপ-রাষ্ট্রপতি (রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি)
- এম মনসুর আলী: অর্থমন্ত্রী
উত্তর: এ এইচ এম কামরুজ্জামান।
প্রশ্নঃ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার গ্রাম’ – জাতির পিতা কবে এই ঘােষণা দেন?
[ বিসিএস ৪৪তম ]
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ এই ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন। তিনি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) প্রায় ১০ লক্ষ লোকের বিশাল জনসভায় এই ঘোষণা দেন।
প্রশ্নঃ মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ (Concert for Bangladesh) কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল?
[ বিসিএস ৪৪তম ]
মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ (Concert for Bangladesh) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
এটি ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট দুটি পর্যায়ে (দুপুর ও সন্ধ্যায়) অনুষ্ঠিত হয়। জর্জ হ্যারিসন এবং রবি শঙ্কর এই কনসার্টের আয়োজন করেন, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন শরণার্থীদের জন্য তহবিল সংগ্রহ এবং বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরি করা।
মুজিবনগর সরকারের অর্থনীতি বিষয়ক ও পরিকল্পনা বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন এম. মনসুর আলী। তিনি মুজিবনগর সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো পরিচালনা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিলেন।
প্রশ্নঃ ল্যান্স নায়েক নূর মােহাম্মদ শেখ কোন সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন?
[ বিসিএস ৪৩তম ]
ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব ও আত্মত্যাগের জন্য তাকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব প্রদান করা হয়।
এখানে তার সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হলো:
- জন্ম ও প্রাথমিক জীবন: তিনি ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল জেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মাতার নাম জেন্নাতুন্নেসা।
- পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান: নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৫৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদান করেন এবং ল্যান্স নায়েক পদে উন্নীত হন।
- মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ: ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তিনি ৮ নম্বর সেক্টরের অধীনে বিভিন্ন সম্মুখযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
- বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধ ও শাহাদাত: ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে যশোর জেলার গোয়ালহাটি গ্রামে পাক হানাদারদের সাথে সম্মুখযুদ্ধে তিনি অসাধারণ বীরত্ব দেখান। শত্রুদের মেশিনগান পোস্টে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তাদের প্রতিরোধ ভেঙে দেন। এ সময় তিনি গুরুতর আহত হন। সহযোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে আহত অবস্থায়ও যুদ্ধ চালিয়ে যান এবং শেষ পর্যন্ত শহীদ হন। তার এই অসীম সাহস ও আত্মত্যাগ মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বৃদ্ধি করে।
- বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব: মুক্তিযুদ্ধে তার বীরত্ব ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব "বীরশ্রেষ্ঠ" প্রদান করে।
- স্মৃতিস্তম্ভ: তার স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য নড়াইল এবং গোয়ালহাটিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।
দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ ছিল ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত দুটি বেনিফিট কনসার্ট। এই কনসার্ট দুটি আয়োজন করেছিলেন বিখ্যাত ভারতীয় সেতারবাদক রবিশঙ্কর এবং প্রাক্তন বিটলস সদস্য জর্জ হ্যারিসন।
উদ্দেশ্য:
কনসার্টটির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ১৯৭১ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ভোলা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (তৎকালীন বাংলাদেশ) শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং ত্রাণ তহবিল সংগ্রহ করা।
আয়োজক:
রবিশঙ্করই প্রথম জর্জ হ্যারিসনকে এই বিষয়ে অবগত করেন এবং একটি কনসার্ট আয়োজনের প্রস্তাব দেন। জর্জ হ্যারিসন এই উদ্যোগে সাড়া দেন এবং বন্ধু ও অন্যান্য বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীদের একত্রিত করে এই ঐতিহাসিক কনসার্টের আয়োজন করেন।
অংশগ্রহণকারী শিল্পী:
কনসার্টে সঙ্গীত পরিবেশন করেন:
- জর্জ হ্যারিসন
- রবিশঙ্কর
- বব ডিলান
- রিঙ্গো স্টার
- এরিক ক্ল্যাপটন
- বিলি Preston
- লিওন রাসেল
- ব্যাডফিঙ্গার
সঠিক উত্তর হলো কঃ জয় বাংলা।
১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকার কর্তৃক প্রকাশিত পত্রিকার নাম ছিল জয় বাংলা। এটি মুক্তিযুদ্ধের সময় জনগণের মনোবল চাঙ্গা রাখতে এবং মুক্তিযুদ্ধের বার্তা ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রশ্নঃ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?
[ বিসিএস ৪২তম ]
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও এর পেছনের ইতিহাসকে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে নির্মিত একটি জাদুঘর। এটি ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত।
প্রতিষ্ঠা ও ইতিহাস:
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর একটি বেসরকারি উদ্যোগ। আটজন ট্রাস্টির উদ্যোগে ১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ ঢাকার সেগুনবাগিচায় একটি ভাড়া করা বাড়িতে এর যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে, ২০১৭ সালের ১৬ই এপ্রিল জাদুঘরটি আগারগাঁওয়ে তার নিজস্ব নবনির্মিত ভবনে স্থানান্তরিত হয়। এই জাদুঘরটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম।
সংগ্রহ:
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বহু দুর্লভ নিদর্শন ও স্মারক সংগৃহীত আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো:
- মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত অস্ত্র ও সরঞ্জাম
- শহীদদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র
- মুক্তিযুদ্ধের সময়ের আলোকচিত্র ও প্রামাণ্য দলিল
- তৎকালীন পত্রপত্রিকা ও পোস্টার
- মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত চিঠি ও ডায়েরি
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দলিল
- আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন ও সংহতির নিদর্শন
জাদুঘরের গ্যালারিগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট, ২৫শে মার্চের গণহত্যা, প্রতিরোধ যুদ্ধ, মুজিবনগর সরকার, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধকালীন জীবন, বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং চূড়ান্ত বিজয়সহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর শুধু একটি সংগ্রহশালা নয়, এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জীবন্ত প্রতীক এবং নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।
প্রশ্নঃ কোন বীরশ্রেষ্ঠের দেহাবশেষ বাংলাদেশে এনে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়?
[ বিসিএস ৪১তম ]
সিপাহী হামিদুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত সাত জন শহীদের একজন।
তাঁর সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- জন্ম: ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩
- জন্মস্থান: খোর্দ্দ খালিশপুর, মহেশপুর, ঝিনাইদহ
- পিতা: আক্কাস আলী মন্ডল
- মাতা: কায়দুন্নেছা
- মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ: ১৯৭১ সালে, মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি ৪ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সি কোম্পানির সৈনিক ছিলেন।
- বীরত্ব: ১৯৭১ সালের ২৮শে অক্টোবর মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই সীমান্ত ফাঁড়িতে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে তিনি শহীদ হন। যুদ্ধে তিনি অসীম সাহস ও বীরত্বের পরিচয় দেন। শত্রুদের মেশিনগানের গুলিবৃষ্টি উপেক্ষা করে তিনি একা দুটি এলএমজি পোস্ট দখল করে নেন এবং দলের বাকি মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন রক্ষা করেন।
- বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব: মুক্তিযুদ্ধে তার অসামান্য বীরত্ব ও আত্মত্যাগের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করে।
- সমাধি: প্রথমে তার মরদেহ ত্রিপুরা রাজ্যের আমসার হাতিমেরছড়া গ্রামে সমাহিত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে, দীর্ঘ ৩৪ বছর পর, ২০০৭ সালের ১০ই ডিসেম্বর তার দেহাবশেষ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং ১১ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
সিপাহী হামিদুর রহমান তার অসীম সাহস ও দেশপ্রেমের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
প্রশ্নঃ কে বীরশ্রেষ্ঠ নন?
[ বিসিএস ৪১তম ]
বীরশ্রেষ্ঠ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ এই খেতাব প্রদান করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে এই খেতাবে ভূষিত করা হয়েছে।
এই সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ হলেন:
১. ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর: ৭ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন এবং চাপাইনবাবগঞ্জে শহীদ হন। ২. ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান: বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ছিলেন এবং পাকিস্তান থেকে একটি বিমান ছিনতাই করে আসার সময় শহীদ হন। ৩. সিপাহী হামিদুর রহমান: ৪ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন এবং মৌলভীবাজারে শহীদ হন। ৪. ল্যান্স নায়েক মুন্সি আবদুর রউফ: ৮ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন এবং রাঙামাটিতে শহীদ হন। ৫. ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ: ৮ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন এবং নড়াইলে শহীদ হন। ৬. সিপাহী মোস্তফা কামাল: ২ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শহীদ হন। ৭. রুহুল আমিন: নৌবাহিনীর আর্টিলারি অফিসার ছিলেন এবং খুলনায় শহীদ হন।
এই সাতজন বীর তাদের জীবন উৎসর্গ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তাদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগ চিরকাল বাঙালি জাতির হৃদয়ে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় থাকবে।
বাংলাদেশ বাহিনী প্রথমে ৪ এপ্রিল ১৯৭১ সালে বেসরকারিভাবে গঠিত হয়। এরপর ১১ এপ্রিল এ বাহিনীকে সম্প্রসারণ করে পুনর্গঠন করা হয়। ১২ এপ্রিল ১৯৭১ সালে লেফটেন্যান্ট কর্ণেল এম. এ. রব-কে চিফ অব স্টাফ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাহিনীর কার্যক্রম শুরু করা হয় এবং একই সাথে কলকাতার ৮, থিয়েটার রোডে বাংলাদেশ বাহিনীর সদর দপ্তর স্থাপিত হয়।
পাকিস্তান ১৯৭৪ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
ঐ বছর লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-এর দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের পূর্বে পাকিস্তান এই স্বীকৃতি প্রদান করে। এর ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐ সম্মেলনে যোগ দিতে পেরেছিলেন এবং বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ওআইসির সদস্যপদ লাভ করে।
প্রশ্নঃ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘে কোন দেশ বাংলাদেশের পক্ষে ‘ভেটো’ প্রদান করেছিল?
[ বিসিএস ৪০তম ]
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘে বাংলাদেশের পক্ষে সোভিয়েত ইউনিয়ন (তৎকালীন ইউএসএসআর) ভেটো প্রদান করেছিল।
ডিসেম্বর মাসের শুরুতে, যখন ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সাথে যোগ দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অভিযানে নামে, তখন পাকিস্তান এবং তাদের মিত্ররা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করে। এই প্রস্তাবের উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় ও মুক্তিবাহিনীর অগ্রগতি থামানো এবং পাকিস্তানের দখলদারিত্ব বজায় রাখা।
সোভিয়েত ইউনিয়ন এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এবং ৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম ভেটো প্রদান করে। এর ফলে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়।
পরবর্তীতে, ৫ ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে একই বিষয়ে আরেকটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হলে সোভিয়েত ইউনিয়ন আবারও দ্বিতীয় ভেটো প্রদান করে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের এই ভেটো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এর কারণে জাতিসংঘে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হতে পারেনি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পথ আরও সুগম হয়েছিল।
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের সংবিধানের সপ্তম তফসিলে সংযোজন করা হয়েছে।
সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল তারিখে মুজিবনগর সরকার কর্তৃক জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এই সংবিধানের সপ্তম তফসিলে বর্ণিত রয়েছে।
প্রশ্নঃ মুজিবনগর সরকার কখন গঠিত হয়?
[ বিসিএস ৩৯তম ]
মুজিবনগর সরকার, যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নামেও পরিচিত, ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গঠিত অস্থায়ী সরকার। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়।
এখানে মুজিবনগর সরকার সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হলো:
-
গঠন: ১০ এপ্রিল, ১৯৭১।
-
শপথ গ্রহণ: ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১। এই দিনে মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে (যা পরবর্তীতে মুজিবনগর নামে পরিচিত হয়) আনুষ্ঠানিকভাবে এই সরকার শপথ গ্রহণ করে।
-
রাজধানী: অস্থায়ী রাজধানী ছিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আম্রকানন, যা পরে 'মুজিবনগর' নামকরণ করা হয়।
-
গঠনের কারণ: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনার জন্য একটি বৈধ ও কার্যকরী প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করা এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় করা।
-
নেতৃবৃন্দ:
- রাষ্ট্রপতি: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (কারাগারে থাকায় তাঁর অনুপস্থিতিতে উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন)।
- উপরাষ্ট্রপতি: সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
- প্রধানমন্ত্রী: তাজউদ্দীন আহমদ।
- অর্থমন্ত্রী: এম. মনসুর আলী।
- স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী: এ. এইচ. এম. কামারুজ্জামান।
- পররাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী: খন্দকার মোশতাক আহমেদ।
- সেনাবাহিনীর প্রধান: কর্ণেল এম. এ. জি. ওসমানী (পরবর্তীতে জেনারেল)।
-
ভূমিকা: এই সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে সফলভাবে নেতৃত্ব দেয়। এটি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে, মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের সংগঠিত করে, আন্তর্জাতিক বিশ্বের সমর্থন আদায়ে কাজ করে এবং স্বাধীনতার চূড়ান্ত বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে।
মুজিবনগর সরকার বাংলাদেশের প্রথম সরকার হিসেবে স্বীকৃত এবং এটি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জনে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রশ্নঃ মুক্তিযুদ্ধের সময় নৌ-কমান্ড গঠিত হয় কোন সেক্টর নিয়ে?
[ বিসিএস ৩৯তম ]
মুক্তিযুদ্ধের সময় নৌ-কমান্ডো গঠিত হয় ১০ নম্বর সেক্টর নিয়ে।
যদিও ১০ নম্বর সেক্টরের কোনো নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমানা ছিল না, এটি সমগ্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথ এবং সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা নিয়ে গঠিত হয়েছিল। এই সেক্টরের প্রধান কাজ ছিল জলপথে শত্রু পাকিস্তানি বাহিনীর চলাচল ব্যাহত করা এবং নৌ অভিযান পরিচালনা করা। 'অপারেশন জ্যাকপট' ছিল নৌ-কমান্ডোদের অন্যতম সফল অভিযান।
প্রশ্নঃ মুজিবনগর সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী কে ছিলেন?
[ বিসিএস ৩৮তম ]
১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল গঠিত এবং ১৭ই এপ্রিল শপথ গ্রহণকারী মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদে এ. এইচ. এম কামারুজ্জামান ছিলেন ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী।
অন্যান্য মন্ত্রীদের তালিকা:
- ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী: অর্থমন্ত্রী
- তাজউদ্দীন আহমদ: প্রধানমন্ত্রী
- খন্দকার মোশতাক আহমদ: পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী
প্রশ্নঃ বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী প্রথম অনারব মুসলিম দেশ কোনটি?
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশ কে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম দেশ ভুটান, প্রথম ইউরোপের দেশ পূর্ব জার্মানি। প্রথম অনারব মুসলিম দেশ সেনেগাল, প্রথম আরব দেশ ইরাক।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে মর্যাদা অনুসারে ৩য় বীরত্বসূচক খেতাব–
[ বিসিএস ৩৭তম ]
বাংলাদেশে মর্যাদা অনুসারে তৃতীয় বীরত্বসূচক খেতাব হলো: বীরবিক্রম
বাংলাদেশের বীরত্বসূচক খেতাবসমূহের ক্রম
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ মোট চারটি সামরিক খেতাব প্রদান করা হয়। এগুলোর মর্যাদার ক্রম নিম্নরূপ:
১. বীরশ্রেষ্ঠ: এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব। ২. বীরউত্তম: এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব। ৩. বীরবিক্রম: এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব। ৪. বীরপ্রতীক: এটি চতুর্থ ও সর্বনিম্ন সামরিক খেতাব।
প্রশ্নঃ ২৬ মার্চ, ১৯৭১-এর স্বাধীনতা ঘোষণা বঙ্গবন্ধু জারী করেন-
[ বিসিএস ৩৬তম ]
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী 'অপারেশন সার্চলাইট' নামে নিরস্ত্র বাঙালির উপর গণহত্যা শুরু করলে, সেই রাতেই (২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা করেন।
এই ঘোষণাটি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছিল:
- ওয়্যারলেসের মাধ্যমে: ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে বঙ্গবন্ধু একটি ক্ষুদে বার্তা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে চট্টগ্রামে প্রেরণ করেন। সেই বার্তায় তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যার যা কিছু আছে, তা নিয়ে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
- অন্যান্য মাধ্যমে প্রচার: পরবর্তীতে এই ঘোষণাটি চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে এম. এ. হান্নান এবং পরবর্তীতে মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে পাঠ করেন, যা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীনতার ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই ঘোষণার দিনটি, অর্থাৎ ২৬ মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে বুদ্ধিজীবীদের ওপর ব্যাপক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
যদিও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ 'অপারেশন সার্চলাইট' শুরু হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বুদ্ধিজীবী নিধন শুরু করে, তবে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক আগে, বিশেষ করে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এই হত্যাযজ্ঞ ব্যাপক আকার ধারণ করে। পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর আল-বদর, আল-শামস ও রাজাকার বাহিনী দেশের বুদ্ধিজীবীদের একটি তালিকা তৈরি করে এবং তাদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে, যাতে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা লাভের পর মেধাশূন্য হয়ে পড়ে।
এই দিনটিকে বাংলাদেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশেকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম ইউরোপীয় দেশ কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম ইউরোপীয় দেশ হলো পূর্ব জার্মানি (East Germany)।
পূর্ব জার্মানি ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
প্রশ্নঃ ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর প্রতিবাদে কোন উপাচার্য পদত্যাগ করেছিলেন?
[ বিসিএস ৪১তম ]
১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর প্রতিবাদে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী উপাচার্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।
২৫শে মার্চ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যা চালালে এর প্রতিবাদে তিনি জেনেভায় অবস্থানকালে উপাচার্যের পদ ত্যাগ করেন।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক কে ছিলেন?
[ বিসিএস ৩৫তম ]
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
যদিও জেনারেল এম. এ. জি. ওসমানী ছিলেন মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি (Commander-in-Chief), সাংবিধানিকভাবে এবং যুদ্ধের রাজনৈতিক নেতৃত্ব হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন সর্বাধিনায়ক (Supreme Commander)। মুজিবনগর সরকারের ঘোষণাপত্রে রাষ্ট্রপতিকে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করা হয়েছিল।
প্রশ্নঃ দ্য ব্লাড টেলিগ্রাম (The Blood Telegram) গ্রন্থটির লেখক-
[ বিসিএস ৩৫তম ]
দ্য ব্লাড টেলিগ্রাম (The Blood Telegram) গ্রন্থটির লেখক হলেন গ্যারি জে. বাস (Gary J. Bass)।
এই বইটি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার ওপর রচিত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গবেষণামূলক গ্রন্থ।
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়।
তবে, এই সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে এবং কার্যক্রম শুরু করে ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ তারিখে, মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা গ্রামে (যা পরবর্তীতে মুজিবনগর নামে পরিচিতি লাভ করে)।
প্রশ্নঃ মুজিবনগর কোন জেলায় অবস্থিত?
[ বিসিএস ৩৩তম ]
মুজিবনগর মেহেরপুর জেলায় অবস্থিত।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের জাতীয় দিবস কবে?
[ বিসিএস ৩৩তম ]
বাংলাদেশের জাতীয় দিবস ২৬শে মার্চ। এটি স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
প্রশ্নঃ বাংলদেশের প্রথম প্রধান সেনাপতি কে ছিলেন?
[ বিসিএস ৩৩তম ]
মুক্তিযুদ্ধের সময় অর্থাৎ ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ কোনটি?
[ বিসিএস ২৯তম ]
বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ ছিল ভুটান। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পর ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটান বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দেয়। এর পরেই অন্যান্য দেশগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিতে শুরু করে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি কে ছিলেন?
[ বিসিএস ২৯তম ]
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগরে গঠিত বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তক্রমে ১১ এপ্রিল ১৯৭১ জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীকে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়।
জেনারেল এম. এ. জি ওসমানী আনুষ্ঠানিকভাবে সশস্ত্র বাহিনী এবং মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার সামরিক কৌশল হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সমগ্র ভৌগোলিক এলাকাকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করেন।
প্রশ্নঃ স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখার জন্য কতজন মহিলাকে বীরপ্রতীক উপাধিতে ভূষিত করা হয়?
[ বিসিএস ২৭তম ]
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখার জন্য ২ জন নারীকে "বীর প্রতীক" উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। তারা হলেন:
1. ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম (সেনাবাহিনী, ২ নম্বর সেক্টর) 2. মোসাম্মৎ তারামন বেগম (গণবাহিনী, ১১ নম্বর সেক্টর)
তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় অসাধারণ সাহস ও অবদানের জন্য এই বীরত্বসূচক খেতাবে ভূষিত হন।
প্রশ্নঃ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কোন সনে গঠিত হয়?
[ বিসিএস ২৬তম ]
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠিত হয় ২৩ অক্টোবর ২০০১। সংবিধানের ৫৫(৬) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি ২০০১ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ নামে এ মন্ত্রণালয়টি গঠন করেন।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য কতজনকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়?
[ বিসিএস ২৪তম ]
মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ৪টি রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রদান করা হয় ৬৭৬ জনকে। তার মধ্যে বীরশ্রেষ্ঠ ৭ জন, বীর উত্তম ৬৮ জন, বীর বিক্রম ১৭৫ জন, বীর প্রতীক ৪২৬ জন। ৬ জুন ২০২১ চারজনের খেতাব বাতিল করা হয়। যার মধ্যে ১ জন বীর উত্তম, ১ জন বীর বিক্রম ও ২ জন বীর প্রতীক।
প্রশ্নঃ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের কবর এই জেলায়-
[ বিসিএস ২৪তম ]
বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ১৯৪৮ সালে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহিমগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাত নম্বর সেক্টরে মুক্তিবাহিনী সাব সেক্টর কমান্ডার হিসেবে তিনি দায়িত্বরত ছিলেন। ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ তিনি পাকবাহিনীর সাথে সরাসরি যুদ্ধে শহীদ হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক গৌড়ের ছোট সোনা মসজিদ প্রাঙ্গণে তাকে সমাহিত করা হয়।
প্রশ্নঃ মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশকে কয়টি সেক্টরে ভাগ করা হয়?
[ বিসিএস ২৩তম | বিসিএস ২২তম ]
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ৪ এপ্রিল মুক্তিফৌজ নামে মুক্তিবাহিনী গঠিত হয় এবং ৯ এপ্রিল এর নামকরণ করা হয় মুক্তিবাহিনী। পরবর্তীতে জেনারেল এম.এ.জি. ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলে তিনি এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ বাংলাদেশকে যুদ্ধ পরিচালনার সুবিধার্থে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করেন।
প্রশ্নঃ ছয়-দফা দাবি প্রথম কোথায় উত্থাপন করা হয়?
[ বিসিএস ২২তম ]
পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধিকার প্রশ্নে ১৯৬৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলগুলোর এক মহাসম্মেলনে বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছয়-দফা দাবি উত্থাপন করেন। এটাই ইতিহাসে 'ছয় দফা কর্মসূচি' নামে পরিচিত।
প্রশ্নঃ মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের দিন আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন কে?
[ বিসিএস ২২তম ]
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয়ের দিন আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার। উল্লেখ্য, এ সময় পাকিস্তান বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীর প্রধান জেনারেল এ কে নিয়াজির সাথে পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের দলিলে যৌথ বাহিনীর পক্ষে স্বাক্ষর করেন তৎকালীন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা।
প্রশ্নঃ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র কবে জারি করা হয়?
[ বিসিএস ২২তম ]
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর থেকে জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয়।
প্রশ্নঃ কোন আরব দেশ সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে?
[ বিসিএস ২২তম ]
আরব ভূখণ্ডের দেশ হিসেবে প্রথম ইরাক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে ৮ জুলাই, ১৯৭২ এবং প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে সেনেগাল ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭২ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। মিশর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৩ কুয়েত স্বীকৃতি দেয় ৪ নভেম্বর, ১৯৭৩ । উল্লেখ্য, বাংলাদেশেকে স্বীকৃতিদানকারী প্রথম দেশ ভুটান (৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১)।
প্রশ্নঃ মুজিবনগর কোথায় অবস্থিত?
[ বিসিএস ২০তম ]
মুজিবনগর, খুলনা বিভাগের মেহেরপুর জেলায় অবস্থিত। এখানেই ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’ শপথ গ্রহণ করে। উল্লেখ্য, বৈদ্যনাথতলা ইউনিয়নের ভবের পাড়া গ্রামের নাম পরিবর্তন করেই মুজিবনগর রাখা হয়।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনী ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পন করে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৪ এপ্রিল সিলেটে মুক্তিফৌজ গঠিত হয় এবং ৯ এপ্রিল এর নামকরণ করা হয় মুক্তিবাহিনী। পরবর্তী জুলাই মাসে সেনাপতি এম.এ.জি ওসমানী প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের পরামর্শে সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টর ও ৩টি ব্রিগেডে ভাগ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ৪টি রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রদান করা হয় ৬৭৬ জনকে। তার মধ্যে বীরশ্রেষ্ঠ ৭ জন, বীর উত্তম ৬৮ জন, বীর বিক্রম ১৭৫ জন, বীর প্রতীক ৪২৬ জন। উল্লেখ্য মোট বীর উত্তম ৬৯ জন। জুন, ২০২১ এ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে ১ জন বীর উত্তম, ১ জন বীর বিক্রম ও ২ জন বীর প্রতীক এর খেতাব বাতিল করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস-
[ বিসিএস ১৯তম ]
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিদের জয় নিশ্চিত দেখে পাকবাহিনী ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নির্বিচারে বহু বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। তাই তাদের স্মরণে ১৪ ডিসেম্বরকে ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ হিসাবে পালন করা হয়।
প্রশ্নঃ দ্য লিবারেশন অব বাংলাদেশ’ গ্রন্থের রচয়িতা-
[ বিসিএস ১৯তম ]
১৯৭৮ সালে প্রকাশিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল সুখওয়ান্ত সিং ইংরেজি ভাষার ‘The Liberation of Bangladesh’ গ্রন্হটি রচনা করেন।