প্রশ্নঃ বাংলার প্রাচীনতম জায়গা কোনটি?
[ বিসিএস ২০তম ]
প্রাচীন যুগে বাংলায় অখণ্ড কোনো রাজ্য ছিল না। ভিন্ন ভিন্ন নামে খণ্ডে খণ্ডে বিভিন্ন জনপদে বিভক্ত ছিল সমগ্র বাংলা। বাংলার প্রাচীনতম জনপদ বগুড়া জেলায় অবস্থিত, যার নাম মহাস্থানগড় (পুণ্ড্রনগর)। বগুড়া শহর থেকে ১০ কি.মি. উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে এর অবস্থান।
Related MCQ
প্রশ্নঃ ‘মাৎস্যন্যায়’ বাংলার কোন সময়কাল নির্দেশ করে?
[ বিসিএস ৪১তম ]
'মাৎস্যন্যায়' বাংলার ইতিহাসে একটি অন্ধকার ও অরাজকতাময় সময়কালকে নির্দেশ করে। এটি মূলত সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।
এই সময়ে বাংলায় কোনো স্থায়ী ও শক্তিশালী কেন্দ্রীয় শাসন ছিল না। ফলে ছোট ছোট আঞ্চলিক শক্তি নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জন্য ক্রমাগত সংঘর্ষে লিপ্ত থাকত। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে এবং সমাজে জোর যার মুল্লুক তার নীতি প্রচলিত হয়।
'মাৎস্যন্যায়' নামটি এসেছে মাছের জগতের একটি প্রাকৃতিক নিয়ম থেকে, যেখানে বড় মাছ ছোট মাছকে গিলে ফেলে। তেমনিভাবে, এই সময়ে শক্তিশালী ব্যক্তি ও গোষ্ঠী দুর্বলদের উপর অত্যাচার করত এবং তাদের সম্পদ লুণ্ঠন করত। প্রজারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি ব্যাহত হয়েছিল।
ঐতিহাসিকরা এই সময়কালকে বাংলার ইতিহাসে একটি বিপর্যয়পূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করেন। পরবর্তীতে পাল রাজবংশের উত্থানের মাধ্যমে বাংলায় স্থিতিশীলতা ফিরে আসে এবং মাৎস্যন্যায়ের অবসান ঘটে।
সেন বংশের শেষ সফল শাসক লক্ষণ সেন হলেও তিনি সেন বংশের সর্বশেষ শাসনকর্তা নন। কেননা বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমনের পর তিনি নদীয়া থেকে বিক্রমপুরে পালিয়ে যান। সেখানে অল্প কিছু দিন শাসনকার্য চালানোর পর ১২০৬ সালে মৃত্যুবরণ করলে যথাক্রমে তাঁর পুত্র বিশ্বরূপ সেন ও কেশব সেন ১২৩০ পর্যন্ত শাসনকার্য পরিচালনা করেন।
প্রশ্নঃ অবিভক্ত বাংলার সর্বপ্রথম রাজা কাকে বলা হয়?
[ বিসিএস ৪১তম ]
অবিভক্ত বাংলার সর্বপ্রথম রাজা অশোক তৃতীয় মৌর্য সম্রাট ছিলেন, যিনি পিতা বিন্দুসারের পর সিংহাসন লাভ করেন এবং ভারতবর্ষের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই সম্রাট দাক্ষিণাত্যের কিছু অংশ ব্যতীত ভারতবর্ষের অধিকাংশ অঞ্চল শাসন করেন। তাঁকে একজন সর্বভারতীয় সম্রাট বলা যায়। তিনি শুধু বর্তমান ভারত ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলো শাসনই করেননি বরং এসব অঞ্চলের সংস্কৃতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন।
প্রশ্নঃ প্রাচীন বাংলায় মৌর্য শাসনের প্রতিষ্ঠাতা কে?
[ বিসিএস ৪০তম ]
প্রাচীন বাংলায় মৌর্য শাসনের বিস্তার খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে ঘটেছিল। মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য নন্দ রাজবংশকে পরাজিত করে মগধে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং ধীরে ধীরে উত্তর ভারত জুড়ে তার সাম্রাজ্য বিস্তার করেন।
বাংলা মৌর্য সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে (২৬৯-২৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)। অশোকের শিলালিপি থেকে জানা যায় যে, পুণ্ড্রবর্ধন (বর্তমান উত্তরবঙ্গ) মৌর্য সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশে পরিণত হয়েছিল এবং এর রাজধানী ছিল পুণ্ড্রনগর (বর্তমান মহাস্থানগড়)।
এছাড়াও, ঐতিহাসিকরা মনে করেন যে মৌর্য শাসন আরও দক্ষিণে, যেমন কর্ণসুবর্ণ (মুর্শিদাবাদ), তাম্রলিপ্ত (হুগলী) এবং সমতট (দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা) অঞ্চলেও বিস্তৃত ছিল।
মৌর্য শাসনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক:
- রাজনৈতিক ঐক্য: মৌর্যরা প্রথম ভারতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে এবং বৃহত্তর বাংলাকে তাদের শাসনের অধীনে নিয়ে আসে।
- প্রশাসন: তারা একটি সুসংহত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিযুক্ত করা হতো এবং বিভিন্ন স্তরের কর্মচারী রাজস্ব আদায় ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করতেন।
- যোগাযোগ: উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিশেষ করে রাস্তাঘাট নির্মাণ মৌর্য শাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল।
- বৌদ্ধ ধর্মের বিস্তার: সম্রাট অশোকের পৃষ্ঠপোষকতায় বৌদ্ধ ধর্ম বাংলায় বিস্তার লাভ করে। মহাস্থানগড়ে প্রাপ্ত ব্রাহ্মী লিপিতে এর প্রমাণ মেলে।
মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর বাংলায় শুঙ্গ ও কন্ব বংশের মতো কিছু ছোট রাজ্যের উত্থান ঘটেছিল।
প্রশ্নঃ সুলতানী আমলে বাংলার রাজধানীর নাম কি?
[ বিসিএস ২৯তম ]
সুলতানী আমলে (১৩৩৮-১৩৫২) খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলার রাজধানী ছিল সোনারাগাঁও আর (১৪১৮-১৫৬৫) খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলার রাজধানী ছিল গৌড়।
প্রশ্নঃ মাৎস্যন্যায় কোন শাসন আমলে দেখা দেয়?
[ প্রা.বি.স.শি. 27-06-2019 ]
'মাৎস্যন্যায়' শব্দটি এমন একটি সময়কে বোঝায় যখন সমাজে আইন-শৃঙ্খলার অভাব এবং বিশৃঙ্খলা বিরাজ করত। এটি বাংলার ইতিহাসে পাল রাজবংশের প্রতিষ্ঠার পূর্ববর্তী সময়ে দেখা দেয়। বিশেষ করে, রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর পর থেকে পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপালের সিংহাসনে আরোহণের পূর্ব পর্যন্ত (প্রায় ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত) এই নৈরাজ্যকর অবস্থা বিরাজমান ছিল
প্রশ্নঃ 'মৎস্যনায়'কোন শাসন আমলে দেখা দেয়?
[ প্রা.বি.স.শি. 26-06-2019 ]
রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর পর (আনুমানিক ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দ) বাংলায় এক দীর্ঘ সময় ধরে অরাজকতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছিল। কোনো শক্তিশালী কেন্দ্রীয় শাসন না থাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জন্য সংঘর্ষে লিপ্ত থাকত। এই সময়কালটিকে ৬৫০ থেকে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ধরা হয় এবং এটিই 'মৎস্যন্যায়' নামে পরিচিত।