প্রশ্নঃ প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা কার কর্তৃত্বে প্রযুক্ত হয়?
[ বিসিএস ৩৯তম ]
'প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা' বলতে বোঝায় একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকার পরিচালনার সর্বোচ্চ ক্ষমতা এবং সেই ক্ষমতা প্রয়োগের প্রক্রিয়া। এটি রাষ্ট্রের তিনটি প্রধান ক্ষমতার (আইন প্রণয়ন ক্ষমতা, নির্বাহী ক্ষমতা এবং বিচারিক ক্ষমতা) অন্যতম।
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা সংক্রান্ত বিধানগুলো নিম্নরূপ:
১. নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী:
- সংবিধানের ৫৫(১) অনুচ্ছেদ: "প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি মন্ত্রিসভা থাকিবে এবং প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীগণকে লইয়া এই মন্ত্রিসভা গঠিত হইবে।"
- সংবিধানের ৫৫(২) অনুচ্ছেদ: "গণপ্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অথবা তাঁহার কর্তৃত্বে প্রযুক্ত হইবে।"
এর অর্থ হলো, সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হলেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি যদিও রাষ্ট্রের প্রধান, তবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করেন (কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্র ছাড়া, যেমন প্রধান বিচারপতির নিয়োগ)।
২. নির্বাহী ক্ষমতার প্রয়োগ:
- নির্বাহী ক্ষমতা বলতে আইন প্রয়োগ, প্রশাসন পরিচালনা, সরকারি নীতি বাস্তবায়ন, বিদেশি রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপন, প্রতিরক্ষা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যক্রম তদারকি ইত্যাদি বিষয়গুলো বোঝায়।
- এই ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী এবং তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। প্রতিটি মন্ত্রী নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
৩. জবাবদিহিতা:
- বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাহী বিভাগ তাদের কাজের জন্য সংসদের কাছে সম্মিলিতভাবে ও পৃথকভাবে দায়ী থাকে।
- সংবিধানের ৫৫(৩) অনুচ্ছেদ: "প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীগণ সম্মিলিতভাবে সংসদের নিকট দায়ী থাকিবেন।"
৪. রাষ্ট্রপতির ভূমিকা:
- রাষ্ট্রপতি হলেন রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক প্রধান (Head of State)।
- সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ: "প্রধানমন্ত্রী ব্যতীত রাষ্ট্রপতি তাহার অন্যান্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর সহিত পরামর্শ করিবেন।" এর মানে হলো, অধিকাংশ নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিতে বাধ্য। তবে, প্রধান বিচারপতির নিয়োগ এবং প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগের মতো কিছু বিষয়ে রাষ্ট্রপতির নিজস্ব ক্ষমতা রয়েছে, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিতে বাধ্য নন।
সংক্ষেপে, বাংলাদেশের প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার হাতে ন্যস্ত এবং তারা তাদের কাজের জন্য সংসদের কাছে জবাবদিহি করেন। রাষ্ট্রপতি মূলত আনুষ্ঠানিক প্রধান হিসেবে কাজ করেন, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে তার নিজস্ব ক্ষমতা বিদ্যমান।
Related MCQ
প্রশ্নঃ মুজিবনগর সরকারকে গার্ড অব অনার নেতৃত্ব দেন কে?
[ বিসিএস ৪৬তম ]
মুজিবনগর সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদানকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন ⎯ মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম।
প্রশ্নঃ অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রের কোন অংশের কর্মকর্তা?
[ বিসিএস ৪৬তম ]
অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তা।
তিনি রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এবং সরকারের আইনি পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেন। সংবিধানের ৬৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হওয়ার যোগ্য কোনো ব্যক্তিকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেন।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি কে?
[ বিসিএস ৪৬তম ]
বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে ১৯৭২ সালের ১১ই জানুয়ারি পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন।
প্রশ্নঃ কোনটি বিচার বিভাগের কাজ নয়?
[ বিসিএস ৪৫তম ]
সঠিক উত্তর হলো ঘঃ সংবিধান প্রণয়ন।
সংবিধান প্রণয়ন বিচার বিভাগের কাজ নয়। সংবিধান প্রণয়নের দায়িত্ব আইন বিভাগ বা গণপরিষদের উপর ন্যস্ত থাকে।
বিচার বিভাগের প্রধান কাজগুলো হলো:
- কঃ আইনের প্রয়োগ: বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনা করা এবং অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া।
- খঃ আইনের ব্যাখ্যা: আইনের অস্পষ্টতা দূর করে এর সঠিক অর্থ ব্যাখ্যা করা।
- গঃ সংবিধানের ব্যাখ্যা: সংবিধানের কোনো ধারা বা উপধারা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলে তার ব্যাখ্যা দেওয়া এবং সংবিধানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন আইন বাতিল করা।
সুতরাং, সংবিধান তৈরি বা প্রণয়নের কাজটি বিচার বিভাগের আওতাভুক্ত নয়।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের সরকার পদ্ধতি-
[ বিসিএস ৪৪তম ]
সঠিক উত্তর হল কঃ এককেন্দ্রিক।
বাংলাদেশের সরকার পদ্ধতি এককেন্দ্রিক। এর অর্থ হল, দেশের সকল প্রশাসনিক ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত থাকে এবং প্রদেশ বা অঞ্চলের কোনো স্বতন্ত্র বা নিজস্ব সরকার থাকে না। বাংলাদেশে কোনো যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নেই।
বাংলাদেশের সংবিধানের প্রথম ভাগের ১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: "বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র, যাহা ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত হইবে।"
এবং দ্বিতীয় ভাগের ৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: "এই সংবিধানের মূলনীতিসমূহ হইবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা - এই নীতিসমূহ হইতে উদ্ভূত নীতি।"
এই অনুচ্ছেদগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে বাংলাদেশ একটি এককেন্দ্রিক এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। এখানে যুক্তরাষ্ট্রীয়, রাজতান্ত্রিক বা রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার ব্যবস্থার কোনো স্থান নেই। বর্তমানে বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান, যেখানে প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান এবং রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপ্রধানের ভূমিকা পালন করেন।
প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় খঃ বিরােধী দল-কে সাধারণত ‘বিকল্প সরকার’ (Shadow Government বা Alternative Government) বলা হয়।
এর কারণ হল:
- সরকারের বিকল্প নীতি: বিরোধী দল সরকারের নীতি ও কর্মসূচির একটি বিকল্প রূপরেখা জনগণের সামনে তুলে ধরে। তারা বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের নিজস্ব প্রস্তাবনা এবং সমাধান উপস্থাপন করে।
- সরকারের জবাবদিহিতা: একটি শক্তিশালী বিরোধী দল সংসদে এবং জনসমক্ষে সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা ও পর্যবেক্ষণ করে, যা সরকারকে আরও বেশি জবাবদিহি করতে বাধ্য করে।
- ভবিষ্যতের সরকার: জনগণের সমর্থন পেলে বিরোধী দল ভবিষ্যতে সরকার গঠনের এবং তাদের নীতি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা রাখে। তাই তারা নিজেদেরকে একটি সম্ভাব্য বিকল্প সরকার হিসেবে প্রস্তুত করে।
অন্যান্য বিকল্পগুলো:
- ক্যাবিনেট: এটি সরকারের নির্বাহী বিভাগের মূল অংশ, যা প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত।
- সুশীল সমাজ: এটি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, বুদ্ধিজীবী এবং সচেতন নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত, যারা বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে জনমত গঠন ও সরকারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।
- লােকপ্রশাসন বিভাগ: এটি সরকারের প্রশাসনিক কাঠামো, যা সরকারের নীতি বাস্তবায়নে নিয়োজিত।
প্রশ্নঃ ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র কে ছিলেন?
[ বিসিএস ৪৩তম ]
ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র ছিলেন মােহাম্মদ হানিফ। তিনি ১৯৯৪ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবার ন্যূনতম বয়স কত?
[ বিসিএস ৩৯তম ]
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ এবং ৭২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। প্রধানমন্ত্রীকে প্রথমে সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়।
সংসদ সদস্য (এমপি) হওয়ার যোগ্যতা (যা প্রধানমন্ত্রীর জন্যও প্রযোজ্য):
১. নাগরিকত্ব: তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ২. বয়স: তার বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হতে হবে। ৩. মানসিক সুস্থতা: তাকে আদালতের ঘোষণা অনুযায়ী অপ্রকৃতিস্থ হওয়া যাবে না। ৪. দেউলিয়াত্ব: তাকে দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায়মুক্ত না হয়ে থাকলে চলবে না। ৫. অপরাধ: নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যুন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং তার মুক্তির পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকলে তিনি অযোগ্য বিবেচিত হবেন। ৬. বিদেশী নাগরিকত্ব: বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন বা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলে তিনি অযোগ্য হবেন। (দ্বৈত নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম থাকতে পারে, বিশেষ করে যদি আইন দ্বারা নির্দিষ্ট করা হয়)। ৭. সরকারি পদ: প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকা যাবে না (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, যেমন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ইত্যাদি)। ৮. অন্যান্য নির্বাচনী আইন: সংসদ কর্তৃক প্রণীত কোনো আইনের দ্বারা সংসদ সদস্য হওয়ার অযোগ্য বলে ঘোষিত না হওয়া।
প্রধানমন্ত্রীর পদে নিয়োগের অতিরিক্ত শর্ত (সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদ):
উপরিউক্ত সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতার পাশাপাশি, সংবিধানের ৫৬(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য তাকে সংসদ সদস্য হতে হবে এবং সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন হতে হবে।
প্রশ্নঃ কোনটি স্থানীয় সরকার নয়?
[ বিসিএস ৩৮তম ]
সঠিক উত্তর হলো পল্লী বিদ্যুৎ।
ব্যাখ্যা:
-
স্থানীয় সরকার (Local Government): স্থানীয় সরকার বলতে দেশের নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকায় স্থানীয় জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত এমন প্রতিষ্ঠানকে বোঝায়, যা স্থানীয় উন্নয়ন, প্রশাসন ও সেবাকার্য পরিচালনা করে। এদের নিজস্ব বাজেট ও কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষমতা থাকে।
-
পৌরসভা: এটি একটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান যা শহরাঞ্চলে কাজ করে।
-
সিটি কর্পোরেশন: এটি বৃহৎ শহরাঞ্চলে কাজ করা একটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান।
-
উপজেলা পরিষদ: এটি গ্রামীণ প্রশাসনিক ইউনিট (উপজেলা) এর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান।
-
পল্লী বিদ্যুৎ (Rural Electrification Board - REB) বা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি: এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত বা আধা-সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এর মূল কাজ হলো গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বিতরণ করা। এটি সরাসরি স্থানীয় জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নয়, বরং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত একটি সংস্থা। যদিও এটি গ্রামীণ এলাকায় সেবা দেয়, এটি স্থানীয় সরকার কাঠামোর অংশ নয়।
প্রশ্নঃ সমাজের শিক্ষিত শ্রেণির যে অংশ সরকার বা কর্পোরেট গ্রুপে থাকে না, কিন্তু সকলের উপর প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা রাখে
[ বিসিএস ৩৮তম ]
সুশীল সমাজ (Civil Society) বলতে সমাজের সেই অংশকে বোঝায় যেখানে শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, পরিবেশবাদী, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সদস্য এবং অন্যান্য পেশাজীবীরা থাকেন যারা সরাসরি সরকার বা কর্পোরেট কাঠামোর অংশ নন। তারা বিভিন্ন সেবামূলক, প্রচারণামূলক বা অ্যাডভোকেসি কার্যক্রমের মাধ্যমে জনমত গঠন করে, সরকারের নীতি ও সিদ্ধান্তের উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজ করে। তারা সাধারণত অরাজনৈতিক ও অলাভজনক উদ্দেশ্যে কাজ করে থাকে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হবার ন্যূনতম বয়স ৩৫ (পঁয়ত্রিশ) বছর।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদের ৪ দফায় রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে:
"কোন ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি– (ক) পঁয়ত্রিশ বৎসরের কম বয়স্ক হন; (খ) সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য না হন; কিংবা (গ) কখনও এই সংবিধানের অধীন অভিশংসিত হইয়া রাষ্ট্রপতি পদ হইতে অপসারিত হইয়া থাকেন।"
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা হলো এমন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যা কোনো দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ করার লক্ষ্যে গঠিত হয়। এই সরকার নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে নতুন সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত সীমিত সময়ের জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিচালনা করে। এর প্রধান কাজ থাকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা।
বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ইতিহাস:
- প্রবর্তন: বাংলাদেশে ১৯৯০-এর দশকে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনের মুখে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার ষষ্ঠ জাতীয় সংসদে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এই ব্যবস্থাকে সাংবিধানিক বৈধতা দেয়। এর মাধ্যমে প্রতি সংসদ নির্বাচনের আগে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিধান যুক্ত করা হয়।
- উদ্দেশ্য: এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবমুক্ত একটি পরিবেশ তৈরি করা, যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে এবং একটি বিতর্কহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
- পরিচালনা: এই সরকার সাধারণত একজন প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত হতো, যিনি সাধারণত সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হতেন। তাঁর অধীনে অনির্বাচিত কয়েকজন উপদেষ্টা মিলে মন্ত্রিসভার কাজ পরিচালনা করতেন। এই সরকারের ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের মতো ব্যাপক ছিল না; এটি কেবল রুটিন কাজ এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখভাল করত।
- যেসব নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছিল: ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল:
- বাতিলের কারণ: ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) অবৈধ ঘোষণা করা হয়। আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী হিসেবে উল্লেখ করে। যদিও আদালত জনস্বার্থে পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিল, সরকার তা গ্রহণ করেনি।
- পঞ্চদশ সংশোধনী: এই রায়ের পর ২০১১ সালের ৩০ জুন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। এই সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধানে নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচনের বিধান ফিরে আসে।
- বিতর্ক: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ ও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বিরোধী দলগুলো নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে, অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল এটিকে অসাংবিধানিক বলে প্রত্যাখ্যান করছে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতির নাম কি?
[ বিসিএস ২৯তম ]
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার অবর্তমানে রাষ্ট্রপতি এবং সশস্ত্র বাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক করে সরকার গঠন করা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি। তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী। ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ছিলেন মুজিবনগর সরকারের অর্থমন্ত্রী।
প্রশ্নঃ কতজন ব্যক্তি নিয়ে গ্রাম সরকার গঠিত?
[ বিসিএস ২৬তম ]
একজন সরকারপ্রধান, একজন উপদেষ্টা ও ১৩ জন সদস্যের সমন্বয়ে মোট ১৫ জন ব্যক্তি নিয়ে গ্রাম সরকার গঠিত। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য সরকারপ্রধান এবং মহিলা সদস্য গ্রাম সরকারের উপদেষ্টা সদস্য হবেন। অবশিষ্ট ১৩ জন সদস্য গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণীর লোকদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন। উল্লেখ্য, ৬ এপ্রিল ২০০৯ জাতীয় সংসদে গ্রাম সরকার (রহিতকরণ) বিল পাস হওয়ার মাধ্যমে গ্রাম সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়ে যায়।
বাংলাদেশে বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে তিন স্তরবিশিষ্ট স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা চালু আছে- প্রথম স্তর: ইউনিয়ন পরিষদ, দ্বিতীয় স্তর: উপজেলা পরিষদ ও তৃতীয় স্তর: জেলা পরিষদ। আর শহরাঞ্চলে রয়েছে দুই স্তরবিশিষ্ট স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা- প্রথম স্তর: পৌরসভা, দ্বিতীয় স্তর: সিটি কর্পোরেশন।
প্রশ্নঃ প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের বাইরে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ব্যতীত কোন কাজ এককভাবে করতে পারেন?
[ বিসিএস ২১তম ]
[অনুচ্ছেদ ৯৫(১)] প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি। সংবিধানের ৪৮ (৩) দফা অনুসারে দুটি কাজ রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পূর্ব পরামর্শ ছাড়া করতে পারেন। যেমন: ক. প্রথমত, রাষ্ট্রপতি ৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুসারে প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে স্বাধীন। খ. দ্বিতীয়, রাষ্ট্রপতি ৯৫ নম্বর অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে স্বাধীন।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে একজন ভোটারের সর্বনিম্ন বয়স কত?
[ বিসিএস ১৯তম ]
বাংলাদেশের সংবিধানের ১২২(২) (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের ভোটার হওয়ার সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর। বাংলাদেশে সংসদ সদস্য হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর এবং রাষ্ট্রপতি হওয়ার ন্যূনতম বয়স ৩৫ বছর।
| রাষ্ট্রপতি হওয়ার ন্যূনতম বয়স | ৩৫ বছর |
| প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ন্যূনতম বয়স | ২৫ বছর |
| ভোটাধিকার হওয়ার ন্যূনতম বয়স | ১৮ বছর |
বাংলাদেশে বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে মোট তিন স্তরের স্থানীয় সরকার কাঠামো রয়েছে- প্রথম স্তর : ইউনিয়ন পরিষদ, দ্বিতীয় স্তর : উপজেলা পরিষদ ও তৃতীয় স্তর : জেলা পরিষদ। আর শহরাঞ্চলে রয়েছে দুই ধরনের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা- ১. পৌরসভা ২. সিটি কর্পোরেশন।
প্রশ্নঃ প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন কে?
[ প্রা.বি.স.শি. 22-04-2022 ]
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন। সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শ করিয়া রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করিবেন।”
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার গঠিত হয় -
[ প্রা.বি.স.শি. 21-06-2019 ]
বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার গঠিত হয় ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল। এই সরকার মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত।
এই সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি তখন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমানে মুজিবনগর) এই সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে।
প্রশ্নঃ কোন সাময়িকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এশিয়ার আয়রন লেডি খেতাবে ভূষিত করে?
[ 18th ntrca (স্কুল পর্যায়) (15-03-2024) ]
ব্রিটিশ সাময়িকী 'দ্য ইকোনমিস্ট' প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এশিয়ার আয়রন লেডি (লৌহমানবী) খেতাবে ভূষিত করে। তারা একটি সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই উপাধি ব্যবহার করে।