আমাদের স্কুল

সেটিং

বহুনির্বাচনি প্রশ্নের দেখানোর অপশনঃ
শুধুমাত্র উত্তর 2 অপশন
3 অপশন 4 অপশন
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের অপশন প্রদর্শনঃ
রো আকারে কলাম আকারে
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরঃ
লুকান বোল্ড করুন
দেখান দেখান ও বোল্ড করুন
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের ব্যাখ্যাঃ
দেখান লুকান নিচে লুকান
থিম নির্বাচন করুনঃ
ফন্ট সাইজঃ
15

 রামাই পণ্ডিত
 হলায়ূধ মিশ্র
 কাহ্নপা
 কুক্কুরীপা
ব্যাখ্যাঃ

‘শূন্যপূরাণ’-এর রচয়িতা হলেন কঃ রামাই পণ্ডিত

‘শূন্যপূরাণ’ মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কিত গ্রন্থ, যা সহজিয়া বৌদ্ধ ধর্মতত্ত্বের ধারণা তুলে ধরে। রামাই পণ্ডিত ছিলেন একজন বিশিষ্ট কবি, যিনি এই রচনা দ্বারা বৌদ্ধধর্মের দার্শনিক ও সামাজিক দিকগুলোকে উপস্থাপন করেছেন।

অন্য বিকল্পগুলোর বিশ্লেষণ:

  • হলায়ূধ মিশ্র → তিনি ছিলেন একজন সংস্কৃত পণ্ডিত ও ব্যাকরণবিদ।
  • কাহ্নপা → তিনি ছিলেন এক সহজিয়া বৌদ্ধ সাধক, তবে ‘শূন্যপূরাণ’ রচয়িতা নন।
  • কুক্কুরীপা → তিনি বৌদ্ধ যোগী ছিলেন, তবে এই গ্রন্থের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না।
 শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মস্থান
 বড়ু চণ্ডীদাসের জন্মস্থান
 চর্যাপদের প্রাপ্তিস্থান
 শ্রীকৃষ্ণকীর্ত্তন কাব্যের প্রাপ্তিস্থান
ব্যাখ্যাঃ

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে কাঁকিল্যা গ্রাম উল্লেখযোগ্য কারণ এখানেই শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের পুঁথি আবিষ্কৃত হয়েছিল।

  • ১৯০৯ সালে বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামের একটি গোয়ালঘর থেকে এই কাব্যের খণ্ডিত পুঁথিটি উদ্ধার করেন।
  • পরে ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
  • শ্রীকৃষ্ণকীর্তন মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাব্য, যা রাধা-কৃষ্ণের প্রেমকাহিনি নিয়ে রচিত।
 নূরনামা
 নসিহতনামা
 মধুমালতী
 ইউসুফ-জুলেখা
ব্যাখ্যাঃ

এই বিখ্যাত কবিতাংশটি আবদুল হাকিম রচিত ‘নূরনামা’ কাব্যের অন্তর্গত।

আবদুল হাকিম সপ্তদশ শতাব্দীর একজন গুরুত্বপূর্ণ কবি ছিলেন। তার ‘নূরনামা’ কাব্যটি মাতৃভাষার প্রতি গভীর অনুরাগ এবং যারা বাংলায় জন্মগ্রহণ করেও বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞা করে তাদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে। এই কবিতাংশটি বাংলা ভাষার প্রতি কবির গভীর ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

 পঞ্চদশ
 ষোড়শ
 সপ্তদশ
 অষ্টাদশ
ব্যাখ্যাঃ

আলাওল ছিলেন সপ্তদশ শতাব্দীর কবি।

তার জন্ম আনুমানিক ১৬০৭ সালে এবং মৃত্যু ১৬৮০ সালে। তিনি মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ কবি হিসেবে পরিচিত। আরাকান রাজসভায় তিনি সাহিত্যচর্চা করতেন।

৫. চন্ডীচরণ মুন্সী কে?

[ বিসিএস ৪৬তম ]

 শ্রীরামপুর মিশনের লিপিকর
 ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের পণ্ডিত
 কেরী সাহেবের মুন্সী গ্রন্থের রচয়িতা
 সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার সম্পাদক
ব্যাখ্যাঃ

চণ্ডীচরণ মুন্সী ছিলেন অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ এবং উনিশ শতাব্দীর শুরুতে ব্রিটিশ ভারতের একজন বাঙালি লেখক। তিনি ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। তার জন্মতারিখ সঠিকভাবে জানা না গেলেও, কোনো কোনো সূত্রে অনুমান করা হয় যে তিনি ১৭৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা ভাষার অধ্যাপকদের মধ্যে একজন ছিলেন। এই কলেজে বাংলা ভাষার পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল।

চণ্ডীচরণ মুন্সীর উল্লেখযোগ্য কাজ হলো 'তোতা ইতিহাস', যা কাদির বখশ রচিত ফার্সি গল্পগ্রন্থ 'তুতিনামা'-র বঙ্গানুবাদ। তিনি ১৮০৪ সালে এই অনুবাদ সম্পন্ন করেন এবং এটি ১৮০৫ সালে গ্রন্থাকারে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়। 'তোতা ইতিহাস' বাংলা গদ্য সাহিত্যের প্রাথমিক নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হয়।

এছাড়াও, ভাগবদ্গীতাও ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা শিক্ষাক্রমে তার রচিত গ্রন্থ হিসেবে পাঠ্য ছিল।

 দ্বারকানাথ ঠাকুর
 দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
 রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর
 প্রমথ চৌধুরী
ব্যাখ্যাঃ

স্বর্ণকুমারী দেবীর পিতার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি ছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর নামেই পরিচিত।

 সুকুমার রায়
 রমেশচন্দ্র মজুমদার
 শিবনারায়ণ রায়
 হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
ব্যাখ্যাঃ

‘তৈল’ প্রবন্ধটি লিখেছেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী

এই প্রবন্ধে তিনি সমাজের বিভিন্ন স্তরে তৈল বা চাটুকারিতার প্রভাব ব্যঙ্গাত্মকভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে তৈলমর্দন বা তোষামোদ সমাজে সুবিধা অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হয়ে উঠেছে। তাঁর লেখায় কৌতুকরসের মাধ্যমে বাস্তবতার গভীর বিশ্লেষণ পাওয়া যায়।

 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
 বিষ্ণু দে
 অমিয় চক্রবর্তী
 প্রেমেন্দ্র মিত্র
ব্যাখ্যাঃ

"নাম রেখেছি কোমল গান্ধার" কাব্যের রচয়িতা হলেন বিষ্ণু দে

বিষ্ণু দে ছিলেন একজন বিশিষ্ট কবি, প্রাবন্ধিক ও চিত্রসমালোচক। তাঁর সাহিত্যকর্মে আধুনিকতা, শিল্পচেতনা ও গভীর দার্শনিক ভাবনার প্রতিফলন দেখা যায়।

 শশাঙ্কদেবের
 লক্ষ্মণ সেনের
 যশোবর্মনের
 হর্ষবর্ধনের
ব্যাখ্যাঃ

‘গীতগোবিন্দ’ কাব্যের রচয়িতা জয়দেব গৌড়ের রাজা লক্ষণ সেন-এর সভাকবি ছিলেন। লক্ষণ সেন ছিলেন দ্বাদশ শতাব্দীর শেষার্ধের এবং ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের বাংলার সেন রাজবংশের তৃতীয় রাজা। তিনি শিল্প ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এবং তার সভাতে অনেক বিখ্যাত কবি ও পণ্ডিতের সমাগম ঘটেছিল। জয়দেব ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম এবং সবচেয়ে বিখ্যাত।

 ব্রজবুলি
 বাংলা
 সংস্কৃত
 হিন্দি
ব্যাখ্যাঃ

কবি যশোরাজ খান মূলত ব্রজবুলি ভাষায় বৈষ্ণব পদ রচনা করেন।

ব্রজবুলি হলো মৈথিলি ও বাংলা ভাষার মিশ্রণে সৃষ্ট একটি কৃত্রিম সাহিত্যিক ভাষা। প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের প্রথম ব্রজবুলি পদ রচনার কৃতিত্ব যশোরাজ খানের। তিনি সম্ভবত হোসেন শাহের রাজত্বকালের কবি ছিলেন।

 ১৮৫৮ সালে
 ১৯৭৮ সালে
 ১৮৪৮ সালে
 ১৮৬৮ সালে
ব্যাখ্যাঃ

প্যারীচাঁদ মিত্রের ‘আলালের ঘরের দুলাল’ প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৮৫৮ সালে

এটি প্রথম ১৮৫৪ সাল থেকে প্যারীচাঁদ মিত্র ও রাধানাথ শিকদার সম্পাদিত 'মাসিক পত্রিকা'-য় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল।

 জগন্নাথ
 বিষ্ণু
 প্রজাপতি
 শিব
ব্যাখ্যাঃ

চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের উপাস্য চণ্ডী হলেন শিবের স্ত্রী। তাঁর অপর নাম পার্বতী.

চণ্ডীমঙ্গল কাব্য মূলত চণ্ডীদেবীর মাহাত্ম্য প্রচারের জন্য রচিত হয়েছিল। এটি বাংলা মঙ্গলকাব্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেখানে দেবী চণ্ডীর পূজা ও তাঁর অলৌকিক ক্ষমতার বর্ণনা রয়েছে।

 নেপালের রাজদরবার থেকে
 গোয়ালঘর থেকে
 পাঠশালা থেকে
 কান্তজীর মন্দির থেকে
ব্যাখ্যাঃ

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য ১৯০৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল।

বাংলা সাহিত্যের গবেষক বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘরের মাচার ওপর অযত্ন অবস্থায় পুঁথিটি খুঁজে পান। পুঁথিটির সঙ্গে প্রাপ্ত চিরকুট থেকে জানা যায়, আড়াইশো বছর আগে এটি বিষ্ণুপুরের রাজগ্রন্থশালায় রাখা ছিল।

 ভবানন্দের
 ভাঁড়ুদত্তের
 ঈশ্বরী পাটুনীর
 ফুল্লরার
ব্যাখ্যাঃ

‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে’—এই মনোবাঞ্ছাটি গঃ ঈশ্বরী পাটুনীর

চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের অন্তর্গত কালকেতু উপাখ্যানে ঈশ্বরী পাটুনী যখন দেবী চণ্ডীর ছলনায় তার নৌকা ডুবতে দেখেন, তখন দেবীর কাছে এই প্রার্থনা করেন।

 পণ্ডিত
 বিদ্যাসাগর
 শাস্ত্রজ্ঞ
 মহামহােপাধ্যায়
ব্যাখ্যাঃ

হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর একাধিক উপাধি ছিল। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপাধি হল মহামহোপাধ্যায়

এছাড়াও তিনি শাস্ত্রী উপাধিও লাভ করেছিলেন, যা তিনি এম.এ. পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর পান। ব্রিটিশ সরকার তাকে কম্পানিয়ন অফ দ্য ইন্ডিয়ান এম্পায়ার (সি.আই.ই.) উপাধিতেও ভূষিত করেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ডি-লিট উপাধি লাভ করেন।

 ‘মনসামঙ্গল’
 ‘মনসাবিজয়’
 ‘পদ্মপুরাণ’
 ‘পদ্মাবতী’
ব্যাখ্যাঃ

মনসামঙ্গলের একজন সর্বাধিক প্রচারিত কবি হিসাবে বিজয়গুপ্ত - এর খ্যাতি। তার মনসামঙ্গল (বা পদ্মাপুরাণ) বাংলার জনপ্রিয় কাব্যগুলির মধ্য অন্যতম। গল্পরস সৃজনে, করুণরস ও হাস্যরসের প্রয়োগে, সামাজিক ও রাষ্ট্রিক জীবনের পরিচয়ে, চরিত্র চিত্রণে এবং পাণ্ডিত্যের গুণে বিজয়গুপ্তের পদ্মাপুরাণ একটি জনপ্রিয় কাব্য। বিজয়গুপ্তের পূর্বে আমরা পাই আদি মঙ্গল কবি কানাহরি দত্ত ও বিপ্রদাস পিপলাইকে।

 চন্দ্রাবতী
 পদ্মাবতী
 মধুমালতী
 লাইলী মজনু
ব্যাখ্যাঃ

সঠিক উত্তর হলো খঃ পদ্মাবতী

মহাকবি আলাওল রচিত বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ হলো পদ্মাবতী। এটি মালিক মুহম্মদ জায়সীর "পদুমাবৎ" কাব্যের অনুবাদ।

অন্যান্য বিকল্পগুলো:

  • চন্দ্রাবতী: এটি মধ্যযুগের মহিলা কবি চন্দ্রাবতীর রচনা।
  • মধুমালতী: এটি মধ্যযুগের কবি মুহম্মদ কবীরের রচনা।
  • লাইলী মজনু: এটি মূলত ফার্সি ভাষার একটি বিখ্যাত প্রণয়োপাখ্যান, যা বিভিন্ন কবি বাংলায় অনুবাদ করেছেন, তবে আলাওলের একক রচনা নয়।
 ময়মনসিংহ গীতিকা
 ইউসুফ জুলেখা
 পদ্মাবতী
 লাইলী মজনু
ব্যাখ্যাঃ

উল্লিখিত রচনাগুলোর মধ্যে ময়মনসিংহ গীতিকা পুঁথি সাহিত্যের অন্তর্গত নয়

ময়মনসিংহ গীতিকা লোকসাহিত্যের একটি অমূল্য সম্পদ। এটি উনিশ শতকের শেষভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত পূর্ব ময়মনসিংহ অঞ্চলে প্রচলিত লোকগাথাগুলোকে সংগ্রহ করে সংকলিত হয়েছে। এর ভাষা ও আঙ্গিক পুঁথি সাহিত্যের থেকে ভিন্ন।

অন্যদিকে, ইউসুফ জুলেখা, পদ্মাবতী, এবং লাইলী মজনু মধ্যযুগের জনপ্রিয় প্রণয়োপাখ্যান এবং এগুলো মূলত পুঁথি সাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত। এসকল কাহিনী দীর্ঘ কবিতা আকারে রচিত এবং জনসাধারণের মধ্যে পাঠ ও শ্রবণের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।

 ফকির গরীবুল্লাহ
 নরহরি চক্রবর্তী
 বিপ্রদাস পিপিলাই
 বৃন্দাবন দাস
ব্যাখ্যাঃ

জীবনীকাব্য রচনার জন্য বিখ্যাত হলেন বৃন্দাবন দাস

বৃন্দাবন দাস চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনী অবলম্বনে বিখ্যাত গ্রন্থ "চৈতন্যভাগবত" রচনা করেন। এটি বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ জীবনীকাব্য।

অন্যান্য লেখকদের উল্লেখযোগ্য কাজ:

  • ফকির গরীবুল্লাহ: তিনি পুঁথি সাহিত্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ কবি এবং তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা হলো "আমির হামজা"।
  • নরহরি চক্রবর্তী: তিনি বৈষ্ণব পদাবলী ও জীবনী সাহিত্য রচনা করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ "ভক্তিরত্নাকর"।
  • বিপ্রদাস পিপিলাই: তিনি মনসামঙ্গল কাব্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ কবি।
 সন্ধ্যাভাষা
 অধিভাষা
 ব্রজবুলি
 সংস্কৃত ভাষা
ব্যাখ্যাঃ

বৈষ্ণব পদাবলীর সঙ্গে ব্রজবুলি ভাষা সম্পর্কিত।

ব্রজবুলি হলো এক প্রকার কৃত্রিম সাহিত্যিক ভাষা। এটি মূলত মৈথিলী ভাষার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে এবং এতে বাংলা, ওড়িয়া এবং অন্যান্য ভারতীয় ভাষার কিছু শব্দ ও ব্যাকরণগত প্রভাব রয়েছে। বৈষ্ণব পদাবলীর কবি যেমন বিদ্যাপতি, গোবিন্দদাস কবিরাজ প্রমুখ এই ভাষাতেই তাদের পদ রচনা করেছেন। এই ভাষার মাধুর্য ও সঙ্গীতময়তা পদাবলী সাহিত্যকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছে।

 পদাবলি
 ধামালি
 প্রেমগীতি
 নাটগীতি (নাট্যগীতি)
ব্যাখ্যাঃ

'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্যটি মূলত নাটগীতি বা আখ্যানধর্মী ও সংলাপের আকারে রচিত কাব্য

গঠনরীতিতে 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্যের বৈশিষ্ট্য:

'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্যটি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন এবং এর গঠনরীতিতে কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে:

  • সংলাপধর্মিতা ও নাটকীয়তা: এই কাব্যের প্রধান তিনটি চরিত্র হলো রাধা, কৃষ্ণ এবং বড়াই। তাদের মধ্যে যে কথোপকথন বা উক্তি-প্রত্যুক্তি রয়েছে, তা এটিকে একটি নাটকীয় রূপ দিয়েছে। প্রতিটি খণ্ড যেন একটি ছোট নাটকের মতো, যেখানে চরিত্রের মনোভাবের ঘাত-প্রতিঘাত সংলাপের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই কারণে অনেক গবেষক এটিকে 'নাটগীতি' বা 'চিত্রনাটগীতি' নামে অভিহিত করেন, অর্থাৎ গান এবং নাটকের মিশ্রণ।

  • খণ্ড বিভক্ত: কাব্যটি মোট ১৩টি খণ্ডে বিভক্ত। এই খণ্ডগুলো হলো: জন্মখণ্ড, তাম্বূলখণ্ড, দানখণ্ড, নৌকাখণ্ড, ভারখণ্ড, ছত্রখণ্ড, বৃন্দাবনখণ্ড, কালীয়দমনখণ্ড, বস্ত্রহরণখণ্ড, হারখণ্ড, বাণখণ্ড, বংশীখণ্ড ও রাধাবিরহ। প্রতিটি খণ্ডের বিষয়বস্তু রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলার এক একটি পর্যায়কে তুলে ধরে।

  • আখ্যানধর্মী: এটি একটি আখ্যানধর্মী কাব্য, অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট কাহিনিকে কেন্দ্র করে এর পদগুলো রচিত হয়েছে। রাধা-কৃষ্ণের প্রণয়লীলা, তাদের মান-অভিমান, বিরহ এবং মিলনই এর মূল উপজীব্য।

  • ধামালি: কাব্যের অনেক অংশে ধামালি নামক এক প্রকার রঙ্গরস বা পরিহাস বাক্যের ব্যবহার দেখা যায়। এটি মধ্যযুগের বাংলা কাব্যের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য, যা কৌতুক এবং ঠাট্টা-তামাশার মাধ্যমে কাহিনিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

  • পদাবলির পূর্বসূরি: যদিও এটি পদাবলি সাহিত্যের সম্পূর্ণ রূপ নয়, এর গঠন ও বিষয়বস্তু পরবর্তীকালের বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের জন্য পথ তৈরি করে দিয়েছিল। রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা বর্ণনার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

  • সংস্কৃত শ্লোকের ব্যবহার: কাব্যে কিছু সংস্কৃত শ্লোকেরও ব্যবহার দেখা যায়, যা এর প্রাচীনত্ব এবং তৎকালীন সাহিত্যের উপর সংস্কৃতের প্রভাব নির্দেশ করে।

সব মিলিয়ে, 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্যটি তার সংলাপভিত্তিক, আখ্যানধর্মী এবং নাটকীয় ভঙ্গির জন্য মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য স্থান দখল করে আছে।

 ফরিদপুর
 সিলেট
 কৃষ্ণনগর
 চট্টগ্রাম
ব্যাখ্যাঃ

দৌলত উজির বাহরাম খান ছিলেন মধ্যযুগের একজন গুরুত্বপূর্ণ বাঙালি কবি, যিনি ষোড়শ শতকে (আনুমানিক ১৫৪০-১৬০০ খ্রিস্টাব্দ) সক্রিয় ছিলেন।

পরিচয় ও পৃষ্ঠপোষকতা

তার প্রকৃত নাম ছিল আসাউদ্দীন। তিনি চট্টগ্রামের ফতেয়াবাদ অথবা জাফরাবাদ অঞ্চলের অধিবাসী ছিলেন। তার পিতা মোবারক খান ছিলেন চট্টগ্রামের তৎকালীন শাসক নেজাম শূর-এর (বা নেজাম শাহ) উজির (মন্ত্রী)। পিতার মৃত্যুর পর নেজাম শূর তাকেও 'উজির' পদে নিযুক্ত করেন এবং তাকে 'দৌলত উজির' উপাধি দেন। এই কারণেই তিনি 'দৌলত উজির বাহরাম খান' নামে পরিচিতি লাভ করেন। তার পূর্বপুরুষ হামিদ খান গৌড়ের সুলতান হুসেন শাহের প্রধান অমাত্য ছিলেন।

সাহিত্যকর্ম

দৌলত উজির বাহরাম খানের প্রধান সাহিত্যকর্মগুলো হলো:

  • লায়লী-মজনু: এটিই তার সবচেয়ে বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। এটি ফারসি কবি জামির (এবং সম্ভবত নিজামী গঞ্জভীর) আরবি লোকগাথা 'লায়লা ওয়া মজনুন' অবলম্বনে রচিত একটি প্রণয়োপাখ্যান। এটি বাংলা ভাষায় প্রথম 'লায়লী-মজনু' কাব্য। যদিও এটি একটি অনুবাদ কাব্য, বাহরাম খান এতে তার নিজস্ব কল্পনা ও বাঙালি জীবনধারার চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।
  • ইমাম-বিজয়: এটি মার্সিয়া সাহিত্য ধারার একটি কাব্য। এর বিষয়বস্তু হলো কারবালার যুদ্ধকাহিনি এবং ইমাম হোসাইন (রা.) এর শাহাদাত।
  • জঙ্গনামা (বা মক্তুল হোসেন): এটিও কারবালার ঘটনা নিয়ে লেখা একটি কাব্য এবং তার রচিত প্রথম কাব্য বলে মনে করা হয়।

অবদান

দৌলত উজির বাহরাম খান মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান এবং মুসলিম ঐতিহ্যের ধারায় বিশেষ অবদান রেখেছেন। তিনি আরবি ও ফারসি ভাষার পাশাপাশি ইসলামী ধর্মশাস্ত্র এবং হিন্দু ধর্মশাস্ত্র ও সংস্কৃতেও পারদর্শী ছিলেন, যার প্রতিফলন তার কাব্যে দেখা যায়। তার 'লায়লী-মজনু' কাব্য মানবীয় প্রেমবোধকে প্রাধান্য দিয়ে রচিত হয়েছিল এবং এটি পরবর্তীকালের রোমান্টিক আখ্যানকাব্যগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

২৩. ‘চন্দ্রাবতী’ কী?

[ বিসিএস ৩৮তম ]

 নাটক
 কাব্য
 পদাবলী
 পালাগান
ব্যাখ্যাঃ

কোরেশী মাগন ঠাকুর রচিত 'চন্দ্রাবতী' কাব্য

আরাকান রাজসভার অমাত্য ও কবি কোরেশী মাগন ঠাকুর সপ্তদশ শতকে 'চন্দ্রাবতী' নামে একটি রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান কাব্য রচনা করেন।

এই কাব্যের মূল কাহিনি হলো ভদ্রাবতী নগরের রাজপুত্র বীরভানের সরন্দ্বীপের রাজকন্যা অপূর্বসুন্দরী চন্দ্রাবতীকে লাভ করার বৃত্তান্ত। এই কাব্যটি বাঙালি রূপকথার কাহিনি অবলম্বনে রচিত হয়েছে এবং এর মধ্য দিয়ে মাগন ঠাকুরের মৌলিক প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি কবি আলাওলের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক হিসেবেও পরিচিত।

 ভাবরস
 মধুর রস
 প্রেমরস
 লীলারস
ব্যাখ্যাঃ

শৃঙ্গার রসকে বৈষ্ণব পদাবলিতে মধুর রস বলা হয়।

বৈষ্ণব পদাবলির মূল বিষয়ই হলো রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা, যা এই মধুর রসের প্রকাশ। এটি কেবল জাগতিক প্রেম নয়, বরং ঈশ্বরের প্রতি ভক্তের গভীর প্রেম, ভক্তি ও আকুতিকে বোঝায়।

 শৈবধর্ম
 বৌদ্ধ সহজযান
 নাথধর্ম
 কোনোটি নয়
ব্যাখ্যাঃ

'গোরক্ষ বিজয়' কাব্যটি নাথধর্ম মতের কাহিনি অবলম্বনে লেখা।

এটি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাব্যগ্রন্থ, যা শেখ ফয়জুল্লাহ রচনা করেন। এই কাব্যের মূল বিষয়বস্তু হলো নাথ বিশ্বাস-জাত যোগের মহিমা এবং গুরু মৎস্যেন্দ্রনাথকে তার শিষ্য গোরক্ষনাথের কদলী রাজ্য থেকে উদ্ধারের কাহিনী। নাথধর্ম মূলত শৈবধর্ম এবং বৌদ্ধ সহজযানের মিশ্রণে গঠিত একটি যোগ-তান্ত্রিক ধর্মমত।

 রামনিধি গুপ্ত
 দাশরথি রায়
 এন্টনি ফিরিঙ্গি
 রামপ্রসাদ সেন
ব্যাখ্যাঃ

শাক্ত পদাবলির জন্য বিখ্যাত হলেন প্রধানত রামপ্রসাদ সেন

তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট বাঙালি শাক্ত কবি ও সাধক। তার রচিত কালীবিষয়ক গানগুলো 'রামপ্রসাদী' বা 'শ্যামা সঙ্গীত' নামে পরিচিত, যা বাংলা শাক্ত পদাবলির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

রামপ্রসাদ সেন ছাড়াও, কমলাকান্ত ভট্টাচার্য শাক্ত পদাবলির আরেকজন উল্লেখযোগ্য কবি। তিনি রামপ্রসাদ সেনের পরেই শাক্ত পদাবলীতে বিশেষভাবে স্মরণীয়।

 শ্রীচৈতন্যদেব
 শ্রীকৃষ্ণ
 আদিনাথ
 মনোহর দাশ
ব্যাখ্যাঃ

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে যার প্রভাব অপরিসীম, তিনি হলেন শ্রীচৈতন্যদেব (চৈতন্য মহাপ্রভু)

পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকে ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত তাঁর ভক্তি আন্দোলন (বৈষ্ণব ধর্ম আন্দোলন) বাংলা সাহিত্যে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। তাঁর আবির্ভাবে বৈষ্ণব পদাবলি, চৈতন্যজীবনী কাব্য, বৈষ্ণব ধর্মতত্ত্ব বিষয়ক গ্রন্থ এবং অন্যান্য ভক্তিমূলক রচনার বিপুল সমাহার ঘটে। তাঁর জীবন ও প্রেমধর্ম বাংলা সাহিত্যের এক বিশাল অংশ জুড়ে স্থান করে নেয়।

 ১৭৫৬
 ১৭৫২
 ১৭৬০
 ১৭৬২
ব্যাখ্যাঃ

ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর কে সাধারণত বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের শেষ এবং শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে গণ্য করা হয়।

তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীর একজন প্রখ্যাত কবি ছিলেন। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ হলো 'অন্নদামঙ্গল কাব্য', যা 'বিদ্যার সুন্দর' নামেও পরিচিত। এই কাব্যের জন্যই তিনি 'রায়গুণাকর' উপাধি লাভ করেন।

তাঁর গুরুত্ব:

  • যুগসন্ধিক্ষণের কবি: ভারতচন্দ্র এমন এক সময়ে কাব্যচর্চা করেছেন যখন মধ্যযুগের প্রভাব শেষ হয়ে আধুনিক যুগের আগমনী বার্তা শোনা যাচ্ছিল। তাঁর রচনায় মধ্যযুগের ঐতিহ্য যেমন ছিল, তেমনি আধুনিক রচনার কিছু বৈশিষ্ট্যও লক্ষ করা যায়।
  • ভাষা ও ছন্দের মুন্সিয়ানা: তিনি ভাষার ব্যবহারে অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। তাঁর লেখায় শব্দের গাঁথুনি, ছন্দের মাধুর্য এবং রসবোধ ছিল অতুলনীয়। সংস্কৃত, ফারসি এবং দেশীয় শব্দের চমৎকার মিশেল ঘটিয়ে তিনি এক বিশেষ ভাষারীতি তৈরি করেছিলেন।
  • আর্টের জন্য শিল্প: তাঁর রচনায় কেবল ধর্মীয় বা পৌরাণিক বিষয়বস্তু নয়, বরং কাব্যিক সৌন্দর্য এবং শিল্পের প্রতিও জোর দেওয়া হয়েছিল, যা মধ্যযুগের ধর্ম-কেন্দ্রিক সাহিত্যের থেকে একটি ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য ছিল।

তাঁর মৃত্যুর (১৭৬০ খ্রিস্টাব্দ) পরেই বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার সূত্রপাত হয়, বিশেষ করে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রমুখের হাত ধরে। এই কারণে তাঁকে মধ্যযুগের সমাপ্তি রেখা হিসেবে ধরা হয়।

 দৌলত কাজী
 মাগন ঠাকুর
 সাবিরিদ খান
 আলাওল
ব্যাখ্যাঃ

'তোহফা' কাব্যটি রচনা করেন আলাওল

এটি মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি আলাওলের একটি নীতি কাব্য। এই কাব্যে তিনি সুফি দর্শন, নীতি ও ধর্মীয় উপদেশমূলক কথা তুলে ধরেছেন।

 কবিগান
 পুঁথি সাহিত্য
 নাথ সাহিত্য
 বৈষ্ণব পদ সাহিত্য
ব্যাখ্যাঃ

এন্টনি ফিরিঙ্গি ছিলেন কবিগানশ্যামাসংগীত জাতীয় সাহিত্যের রচয়িতা।

তিনি ছিলেন একজন পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত বাঙালি কবিয়াল (কবিওয়ালা)। তার আসল নাম ছিল অ্যান্টনি ডি সুজা। তিনি বাংলা ভাষায় কবিগান রচনা ও পরিবেশনের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তার রচিত গানগুলিতে একদিকে যেমন প্রেম, ভক্তি ও ঈশ্বরতত্ত্বের কথা থাকত, তেমনি অন্যদিকে সামাজিক দিকও উঠে আসত। তিনি বহু শ্যামাসংগীত (দেবী কালীর স্তুতিমূলক গান) রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

সুতরাং, তার রচনার প্রধান ধারা ছিল কবিগান এবং শ্যামাসংগীত

 ঠোঁটের পরশে পান লাল হল
 পানের পরশে ঠোঁট লাল হল
 অস্তাচলগামী সূর্যের আভায় মুখ রক্তিম দেখা গেল
 অস্তাচলগামী সূর্য ও মুখ একই রকম লাল হয়ে গেল
ব্যাখ্যাঃ

উদ্ধৃত চরণটি মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ কবি আলাওলের শ্রেষ্ঠ কাব্য ‘পদ্মাবতী’ এর রূপ-বর্ণন খণ্ড থেকে গৃহীত। ‘পদ্মাবতী’ তার প্রথম ও শ্রেষ্ঠ রচনা। হিন্দি কবি মালিক মুহম্মদ জায়সীর ‘পদুমাবৎ’ অবলম্বনে আলাওল গ্রন্থটি রচনা করেন।

 সৈয়দ আলাওল
 জৈনুদ্দিন
 দীনবন্ধু মিত্র
 অমিয় দেব
ব্যাখ্যাঃ

আরাকান বা রোসাঙ্গ রাজসভার অন্যতম প্রধান সভাকবি ছিলেন মহাকবি আলাওল। তিনি আনুমানিক ১৬০৭ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারি থানার জোবরা গ্রামে মতান্তরে ফরিদপুরের ফতেহাবাদ পরগনায় জন্মগ্রহণ করেন। মাগন ঠাকুরের প্রেরণায় তিনি কাব্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলি হলো- ‘পদ্মাবতী’, ‘সয়ফুলমুলুক-বদিউজ্জামাল’, ‘সিকান্দারনামা’, ‘হপ্তপয়কর’, ‘তোহফা বা তত্ত্বোপদেশ’, ‘রাগতালনামা’ এবং দৌলত কাজীর অসমাপ্ত ‘সতীময়না-লোর-চন্দ্রানী’। তাঁর ‘হপ্তপয়কর’ কাব্যটি পারস্য কবি নিজামী গঞ্জভীর কাব্যের ভাবানুবাদ।

 কানাহরি দত্ত
 মানিক দত্ত
 ভারতচন্দ্র
 দাশু রায়
ব্যাখ্যাঃ

দাশু রায়মঙ্গলকাব্যের কবি নন।

ব্যাখ্যা:

  • কানাহরি দত্ত, মানিক দত্ত এবং ভারতচন্দ্র—এই তিনজনেই মঙ্গলকাব্যের ধারার উল্লেখযোগ্য কবি। কানাহরি দত্ত মনসামঙ্গলের আদি কবিদের একজন, মানিক দত্ত চণ্ডীমঙ্গলের কবি, এবং ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর তাঁর 'অন্নদামঙ্গল' কাব্যের জন্য বিখ্যাত।
  • দাশু রায় (দাশরথি রায়) ছিলেন একজন বিখ্যাত পাঁচালী রচয়িতা এবং গায়ক। তিনি মধ্যযুগের শেষ ভাগ ও আধুনিক যুগের শুরুর দিকের কবি ছিলেন, এবং তাঁর রচনা মঙ্গলকাব্যের মতো হলেও, সেগুলো পাঁচালী গান হিসেবেই বেশি পরিচিত, সরাসরি মঙ্গলকাব্যের ধারার কবি হিসেবে নয়।

৩৪. দ্রৌপদী কে?

[ বিসিএস ৩৫তম ]

 রামায়ণে সীতার সহচরী
 মহাভারতে দুর্যোধনের স্ত্রী
 রামায়ণে লক্ষ্মণের প্রণয়প্রার্থী নারী
 মহাভারতে পাঁচ ভাইয়ের একক স্ত্রী
ব্যাখ্যাঃ

দ্রৌপদী হলেন হিন্দু মহাকাব্য মহাভারত-এর একজন কেন্দ্রীয় এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র।

তাঁর পরিচয় সংক্ষেপে নিচে দেওয়া হলো:

  • পাঁচ পাণ্ডবের পত্নী: তিনি পাণ্ডবদের (যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন, নকুল ও সহদেব) পঞ্চপত্নী হিসেবে পরিচিত। এটি মহাভারতের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দিক।
  • দ্রুপদ কন্যা: তিনি পাঞ্চালরাজ দ্রুপদের কন্যা ছিলেন। তাঁর আসল নাম ছিল কৃষ্ণা, তবে দ্রুপদরাজার কন্যা হওয়ায় তিনি 'দ্রৌপদী' নামে পরিচিত।
  • যজ্ঞসেনী: তিনি যজ্ঞাগ্নি থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তাই তাঁকে 'যজ্ঞসেনী' নামেও ডাকা হয়।
  • নিয়তি ও মর্যাদার প্রতীক: কুরুসভায় তাঁর বস্ত্রহরণের ঘটনা মহাভারত যুদ্ধের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল। চরম অপমানের মুখেও তিনি তাঁর মর্যাদা ও আত্মসম্মান ধরে রেখেছিলেন এবং নারীশক্তির এক প্রতীক হিসেবে পরিচিত।

এক কথায়, দ্রৌপদী মহাভারতের এক দৃঢ়চেতা, বুদ্ধিমতী এবং মহৎ চরিত্রের নারী, যিনি পাণ্ডবদের স্ত্রী হিসেবে পরিচিত এবং মহাভারতের কাহিনীতে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম।

 শ্রীচৈতন্যদেব
 কাহ্নপা
 বিদ্যাপতি
 রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব
ব্যাখ্যাঃ

বাংলা জীবনী সাহিত্যের ধারা মূলত শ্রীচৈতন্যদেবকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে।

ষোড়শ শতাব্দীতে শ্রীচৈতন্যের জীবন ও কর্মকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জীবনীগ্রন্থ রচিত হয়েছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের ‘চৈতন্য ভাগবত’, কৃষ্ণদাস কবিরাজের ‘চৈতন্য চরিতামৃত’ এবং লোচন দাস ঠাকুরের ‘চৈতন্য মঙ্গল’। এই গ্রন্থগুলো কেবল শ্রীচৈতন্যের জীবনকথা নয়, বরং তৎকালীন সমাজ, ধর্ম ও সংস্কৃতি সম্পর্কেও মূল্যবান তথ্য প্রদান করে। তাই, বাংলা জীবনী সাহিত্যের প্রাথমিক এবং গুরুত্বপূর্ণ ধারাটি শ্রীচৈতন্যদেবকে কেন্দ্র করেই বিকশিত হয়েছিল।

 জয়নন্দী
 বড়ু চণ্ডীদাস
 গোবিন্দ দাস
 জ্ঞান দাস
ব্যাখ্যাঃ

মধ্যযুগের কবি নন কঃ জয়নন্দী

  • জয়নন্দী ছিলেন পাল যুগের একজন কবি এবং তিনি ছিলেন চর্যাপদ এর একজন পদকর্তা। চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের নিদর্শন।
  • বড়ু চণ্ডীদাস, গোবিন্দ দাস এবং জ্ঞান দাস তিনজনই বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রখ্যাত কবি। বড়ু চণ্ডীদাস শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের রচয়িতা এবং গোবিন্দ দাস ও জ্ঞান দাস ছিলেন বৈষ্ণব পদাবলীর গুরুত্বপূর্ণ কবি।
 ১১৯৯-১২৫০ পর্যন্ত
 ১২০১-১৩৫০ পর্যন্ত
 ১২৫০-১৩৫০ পর্যন্ত
 ১২৫০-১৪৫০ পর্যন্ত
ব্যাখ্যাঃ

বাংলা সাহিত্যে অন্ধকার যুগ বলতে ১২০১-১৩৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে বোঝায়।

এই সময়কালে তুর্কি আক্রমণের ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলার কারণে সাহিত্যচর্চায় এক ধরনের স্থবিরতা দেখা গিয়েছিল। এই সময়ের খুব বেশি সাহিত্যিক নিদর্শন পাওয়া যায় না, তাই এটিকে "অন্ধকার যুগ" বলা হয়।

 আঠারো শতকের শেষার্ধে ও উনিশ শতকের প্রথমার্ধে
 ষোড়শ শতকের শেষার্ধে ও সপ্তদশ শতকের প্রথমার্ধে
 সপ্তদশ শতকের শেষার্ধে ও আঠারো শতকের প্রথমার্ধে
 উনিশ শতকের শেষার্ধে ও বিংশ শতকের প্রথমার্ধে
ব্যাখ্যাঃ

কবিওয়ালা এবং শায়ের—এই দুই ধরনের লোককবির উদ্ভব হয়েছে মূলত মধ্যযুগে, তবে তারা জনপ্রিয়তা লাভ করে ঊনবিংশ শতাব্দীর (১৯শ শতক) দিকে এসে।

কবিওয়ালা:

  • কবিগান বাংলার এক জনপ্রিয় লোকসংগীতধর্মী নাট্যরূপ, যা মূলত প্রতিযোগিতামূলক কবিতা পাঠ বা গান
  • কবিগানের সূচনা হয় ১৮শ শতকের শেষভাগে, তবে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পায় ১৯শ শতকে
  • প্রধান কবি যিনি গান করেন তাকে বলা হতো কবিওয়ালা
  • বিখ্যাত কবিওয়ালাদের মধ্যে আছেন: রাম বসু, নিত্যানন্দ পাল, ভূতেরাম, ইত্যাদি।

শায়ের:

  • “শায়ের” শব্দটি মূলত উর্দু ভাষার “শায়েরি” বা কবিতার সঙ্গে যুক্ত।
  • বাংলায় শায়ের বা শায়েরি চর্চা শুরু হয় মুসলিম নবজাগরণের সময়, বিশেষত ১৮শ–১৯শ শতকে
  • উর্দু ও ফারসি কবিতার ছায়ায় বাংলার মুসলিম কবিরা শায়েরি রচনায় মনোনিবেশ করেন।
  • শায়ের বলতে সাধারণত সেই কবিকে বোঝায়, যিনি ছোট, তীব্র অনুভূতিময় কবিতা বা গজল লেখেন।
 রামাই পণ্ডিত
 শ্রীকর নন্দী
 বিজয় গুপ্ত
 লোচন দাস
ব্যাখ্যাঃ

‘শূন্যপুরাণ’ হলো মধ্যযুগের একটি বাংলা সাহিত্যকর্ম। এটি মূলত ধর্মীয় গ্রন্থ, যা বৌদ্ধ ধর্ম থেকে উদ্ভূত ধর্মঠাকুরের পূজা ও মাহাত্ম্য বর্ণনা করে। এই গ্রন্থটির রচয়িতা রামাই পণ্ডিত

'শূন্যপুরাণ'-এ বৌদ্ধ ধর্মের শূন্যবাদ এবং হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন দেবদেবীর ধারণার মিশ্রণ দেখা যায়। এই গ্রন্থটি ধর্মঠাকুরের মহিমা প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

 আত্মজীবনী
 প্রণয়কাব্য
 নীতিকাব্য
 জঙ্গনামা
ব্যাখ্যাঃ

আলাওলের ‘তোহফা’ হলো একটি বিখ্যাত নীতিকাব্য।

মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি আলাওল ১৭ শতকে আরাকান রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতায় এই কাব্যটি রচনা করেন। ‘তোহফা’ কাব্যে তিনি প্রধানত নৈতিক উপদেশ ও ধর্মীয় আদর্শের কথা তুলে ধরেছেন। এতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রশংসা এবং ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার নীতি ও আদর্শের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

 গোবিন্দ দাস
 কায়কোবাদ
 কাহ্ন পা
 ভুসুকু পা
ব্যাখ্যাঃ

‘আজি ভুসুকু বঙ্গালী ভইলী/নিঅ ঘরিণী চণ্ডালেঁ লেলী।’ ভুসুকু পার এ উক্তিকে প্রমাণস্বরূপ হিসেবে তাকে বাঙালি মনে করা হয়। তার রচিত ৮টি পদ চর্যাপদ গ্রন্থে সংগৃহীত হয়েছে, যা চর্যাগীতি রচনায় সংখ্যাধিক্যে দ্বিতীয়। ভুসুকু নামটিকে ছদ্মনাম বলে মনে করা হয়। তার প্রকৃত নাম শান্তিদেব।

 ১৮৪৭-১৯১১
 ১৮৫২-১৯১২
 ১৮৫৭-১৯১১
 ১৮৪৭-১৯১২
ব্যাখ্যাঃ

ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক মীর মশাররফ হোসেন ১৩ নভেম্বর ১৮৪৭ সালে কুষ্টিয়ার লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মীর মোয়াজ্জেম হোসেন। মুসলিম রচিত আধুনিক বাংলা সাহিত্যের সমন্বয়ধর্মী ধারার প্রতীক হিসেবে খ্যাত মীর মশাররফ হোসেন ১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন এবং পদমদীতে সমাহিত হন।

 জ্ঞানদাস
 দীন চণ্ডীদাস
 বড়ু চণ্ডীদাস
 দীনহীন চণ্ডীদাস
ব্যাখ্যাঃ

‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ মধ্যযুগের প্রথম কাব্য এবং বড়ু চণ্ডীদাস মধ্যযুগের আদি কবি। তিনি ভগবতের কৃষ্ণলীলা সম্পর্কিত কাহিনি অবলম্বনে ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্য রচনা করেন। ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের প্রধান চরিত্র তিনটি; কৃষ্ণ, রাধা ও বড়াই। এ কাব্যের মোট ১৩টি খণ্ড আছে।

 ফরিদপুরের সুরেশ্বর
 চট্টগ্রামের জোব্রা
 বার্মার আরাকান
 চট্টগ্রামের পটিয়া
ব্যাখ্যাঃ

মহাকবি আলাওলের জন্মস্থান নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, কবি আলাওলের জন্ম ফরিদপুরের ফতেহাবাদ পরগনায়। অধিকাংশ পণ্ডিত এ মত গ্রহণ করেছেন। ড. মুহম্মদ এনামুল হকের মতে কবি আলাওল আনুমানিক ১৬০৭ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার জোবরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

 বিজয়গুপ্ত
 ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর
 মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
 কানাহরি দত্ত
ব্যাখ্যাঃ

বাংলা সাহিত্যের সময়কালকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে মধ্যযুগ বলতে ১২০১ থেকে ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে বোঝায়। ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের জীবনকাল ১৭১২ থেকে ১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দ। তিনি আঠারো শতকের মঙ্গলকাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি। তিনি ছিলেন নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভাকবি। তার শ্রেষ্ঠ কীর্তি ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্য (১৭৫২-৫৩) রচনা। তাকে মধ্যযুগের শেষ বড় কবি বলা হয়।

 নবদ্বীপের
 মিথিলার
 বৃন্দাবনের
 বর্ধমানের
ব্যাখ্যাঃ

মিথিলার কবি বিদ্যাপতি (১৩৭৪-১৪৬০) বৈষ্ণব সহজিয়া সাধকদের নবরসিকের অন্যতম। তিনি বাংলায় একটি পঙ্‌ক্তি না লিখেও বাঙালিদের কাছে একজন শ্রদ্ধেয় কবি। ‘মৈথিলী কোকিল’ ও ‘অভিনব জয়দেব’ নামে খ্যাত বিদ্যাপতি বৈষ্ণব কবি ও পদসঙ্গীত ধারার রূপকার। তিনি মিথিলার সীতাময়ী মহকুমার বিসফি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর কবিখ্যাতি মূলত “ব্রজবুলি” ভাষায় রচিত রাধাকৃষ্ণের প্রণয়নমূলক পদ (পদাবলী) এর জন্য। তবে তিনি মৈথিলী, অবহটঠ ও সংস্কৃত ভাষায়ও পদ রচনা করেন। তাঁর বিখ্যাত পঙক্তি- “এ সখি হামারি দুখের নাহি ওর। এ ভরা বাদর মাহ ভাদর শূন্য মন্দির মোর।।”

 শ্রী রাধার ননদিনী
 শ্রী রাধার শাশুড়ি
 রাধাকৃষ্ণের প্রেমের দূতী
 জনৈক গোপবালা
ব্যাখ্যাঃ

মধ্যযুগের আদি কবি বড়ু চণ্ডীদাস লোকসমাজে প্রচলিত রাধাকৃষ্ণ প্রেম-সম্পর্কিত গ্রাম্য গল্প অবলম্বনে ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্য রচনা করেন। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্য গ্রামের এক গৃহস্থ বাড়ির গোয়ালঘর থেকে পুঁথি আকারে অযত্নে রক্ষিত এ কাব্য আবিষ্কার করেন। ১৯১৬ সালে বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় গ্রন্হটি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত হয়। পুরো কাব্যটি আবর্তিত হয়েছে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমনিবেদন, দেহসম্ভোগ, দুঃখভোগ ইত্যাদির মধ্য দিয়ে। আর বড়াই চরিত্রটিকে কবি সৃষ্টি করেছেন রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের সংবাদ আদান-প্রদানকারিণী বা দূতী হিসেবে।

 চণ্ডিদাস
 জ্ঞানদাস
 বিদ্যাপতি
 লোচনদাস
ব্যাখ্যাঃ

চৈতন্য পরবর্তী বৈষ্ণব পদাবলীর কবি জ্ঞানদাস (ষোড়শ শতাব্দী) রচিত উক্ত পদটি কৃষ্ণানুরাগ বিষয়ক বিখ্যাত পদ। তার রচিত পদের স্বাভাবিক সৌন্দর্য; মাধুর্য ও সূক্ষ্মতা একমাত্র চণ্ডীদাসের পদের সাথেই তুলনা হতে পারে। আক্ষেপানুরাগ, রূপানুরাগ ও মাথুরবিষয়ক পদ রচনায় তিনি অসাধারণ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন।

 আরাকান রাজসভা
 কৃষ্ণনগর রাজসভা
 রাজা গণেশের রাজসভা
 লক্ষ্মণ সেনের রাজসভা
ব্যাখ্যাঃ

ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর আঠারো শতকের বাংলা মঙ্গলকাব্য ধারার অন্যতম কবি। তিনি নবদ্বীপাধিপতি মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভায় ‘সভাকবি’ নিযুক্ত হন। কৃষ্ণচন্দ্রের আদেশে তিনি ‘অন্নদামঙ্গল’ (১৭৫২) কাব্যটি রচনা করেন। পরবর্তীতে এ রচনা তাকে মহারাজ কর্তৃক ‘রায়গুণাকর’ উপাধি লাভ করিয়ে দেয়। তিনিই মধ্যযুগের শেষ কবি।

 ভাঁড়ুদত্ত
 চাঁদ সওদাগর
 ঈশ্বরী পাটনী
 নলকুবের
ব্যাখ্যাঃ

অষ্টাদশ শতকের শ্রেষ্ঠ কবি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর (আনুমানিক ১৭০৭-১৭৬০ খ্রি.) রচিত ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যে ঈশ্বরী পাটনী, হীরা মালিনী প্রভৃতি চরিত্র একান্ত বাস্তব হয়ে ফুটে উঠেছে। আলোচ্য উক্তিটির মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের অমর চরিত্র ঈশ্বরী পাটনী অন্নদা (চণ্ডী) দেবীর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন।

 শ্রীচৈতন্য
 বিদ্যাপতি
 চণ্ডীদাস
 জ্ঞানদাস
ব্যাখ্যাঃ

বাংলা ভাষায় বৈষ্ণব পদাবলীর আদি রচয়িতা কবি চণ্ডীদাস (আনুমানিক ১৩৭০-১৪৩৩ খ্রি.)। মিথিলার কবি বিদ্যাপতি (১৩৮০-১৪৬০ খ্রি.; মতান্তরে ১৩৯০-১৪৯০খ্রি.) ছিলেন বাঙালি বৈষ্ণবের গুরুস্থানীয়, বাঙালির শ্রদ্ধেয় কবি, বৈষ্ণব সহজিয়া সাধকদের নবরসিকের অন্যতম। চৈতন্যপরবর্তী কবি জ্ঞানদাস ছিলেন আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীর কবি এবং চণ্ডীদাসের ভাবশিষ্য।

 লাচাড়ী ছন্দে রচিত পদ্য বা কবিতাবলী
 পদ্যাকারে রচিত দেবস্তুতিমূলক রচনা
 বাউল বা মরমী গীতি
 বৌদ্ধ বা বৈষ্ণবীয় ধর্মের গূঢ় বিষয়ের বিশেষ সৃষ্টি
ব্যাখ্যাঃ

পদ বা পদাবলী বলতে সাধারণত শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীচৈতন্যের লীলাকথা নিয়ে গান করার জন্য রচিত কমনীয় কবিতাকে বুঝায়। দ্বাদশ শতকে জয়দেব ‘গীতগোবিন্দ’ কাব্যে ‘পদাবলী’ শব্দটি ব্যবহার করেন। এটি একাধারে সাহিত্য ও সাধানার অবলম্বন। উপনিষদে যে ব্রাহ্মকে রসস্বরূপ বলা হয়েছে এবং প্রিয়রূপে উপাসনা করতে উপদেশ দেয়া হয়েছে, সেই অনন্তরসের আধার শ্রীকৃষ্ণকে আস্বাদন করার ও করানোর জন্য পদাবলী রচিত হয়েছে। উল্লেখ্যযোগ্য পদাবলী সংকলনের মধ্যে সপ্তদশ শতকের শেষভাগে বিশ্বনাথ চক্রবর্তী সংকলিত ‘ক্ষণদাগীতচিন্তামনি’ কে প্রাচীনতম বলে মনে করা হয়। পদাবলীর বৃহত্তম ও অধিক প্রচারিত সংকলন বৈষ্ণবদাস ওরফে গোকুলানন্দ সেনের 'পদকল্পগুরু' (৩১০১টি পদ)।

 ব্রজধামে কথিত ভাষা
 এক রকম কৃত্রিম কবিভাষা
 বাংলা ও হিন্দির যোগফল
 মৈথিলি ভাষার একটি উপভাষা
ব্যাখ্যাঃ

‘ব্রজবুলি’ হলো মৈথিলী ও বাংলা ভাষার মিশ্রণে গঠিত এক প্রকার কৃত্রিম কবিভাষা। এই ভাষায় বৈষ্ণব পদ রচনা করেছেন অনেক কবি, যাদের মধ্যে গোবিন্দদাস, বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস ও জ্ঞানদাস অন্যতম। উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও ব্রজবুলি ভাষায় ‘ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী’ নামে কাব্য রচনা করেন।

 চণ্ডীদাস
 বিদ্যাপতি
 রামকৃষ্ণ পরমহংস
 বিবেকানন্দ
ব্যাখ্যাঃ

এই অমর উক্তিটি করেছেন মধ্যযুগের প্রখ্যাত কবি বাংলা ভাষায় বৈষ্ণব পদাবলীর আদি রচিয়তা চণ্ডীদাস। উল্লেখ্য, পদাবলীতে ভিন্ন ভিন্ন চণ্ডীদাসের নাম (চণ্ডীদাস দ্বিজ, চণ্ডীদাস দীন, চণ্ডীদাস আদি ইত্যাদি।) জানা যায়। তবে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চণ্ডীদাস তিনজন- বড়ু চণ্ডীদাস, দ্বিজ চণ্ডীদাস এবং দীন চণ্ডীদাস। যাদের মধ্যে বড়ু চণ্ডীদাস শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের রচয়িতা এবং দ্বিজ ও দীন পদাবলীর কবি।

 দৌলত উজীর বাহরাম খান
 সৈয়দ সুলতান
 আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ
 আলাওল
ব্যাখ্যাঃ

আলাওল ছিলেন আরাকান রাজসভার শ্রেষ্ঠ কবি । তার শ্রেষ্ঠ রচনা পদ্মাবতী। এটি হিন্দি কবি মালিক মোহাম্মদ জায়সীর ‘পদুমাবৎ’ অবলম্বনে রচিত। আলাওল রচিত ‘পদ্মাবতী’ কাব্যটি সম্পাদনা করেন আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ।

 মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
 ভারতচন্দ্র রায়
 মদন মোহন তর্কালঙ্কার
 কামিনী রায়
ব্যাখ্যাঃ

ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর ছিলেন মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও মঙ্গল কাব্যধারার শেষ কবি। তাকে মধ্যযুগের শেষ বড় কবি এবং নাগরিক কবি হিসেবেও অভিহিত করা হয়। তার রচিত ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যের একটি বিখ্যাত উক্তি এটি। উক্তিটি করেছিল ঈশ্বরী পাটনী। ভারতচন্দ্র নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভাকবি ছিলেন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তার কাব্যপ্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে তাকে রায়গুণাকর উপাধি দেন।

 শাহ মুহম্মদ সগীর
 সাবিরিদ খান
 শেখ ফয়জুল্লাহ
 মুহাম্মদ কবীর
ব্যাখ্যাঃ

বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রাচীনতম মুসলমান কবি শাহ মুহম্মদ সগীর। তার বিখ্যাত কাব্য ‘ইউসুফ জুলেখা’। তিনি পারস্য কবি আবদুর রহমান জামি রচিত ‘ইউসুফ ওয়া জুলায়খা’ থেকে কাহিনি গ্রহণ করেছেন।

 ইউসুফ জুলেখা
 রসুল বিজয়
 নূরনামা
 শবে মেরাজ
ব্যাখ্যাঃ

বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রাচীনতম মুসলমান কবি শাহ মুহম্মদ সগীর। তিনি আনুমানিক পঞ্চদশ শতাব্দীর কবি। ‘ইউসুফ-জুলেখা’ তার বিখ্যাত রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান। তিনি পারস্য কবি আবদুর রহমান জামি রচিত ‘ইউসুফ ওয়া জুলায়েখা’ থেকে কাহিনি গ্রহণ করেছেন।