প্রশ্নঃ সর্বাপেক্ষা ছোট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের বিকিরণ হচ্ছে–
[ বিসিএস ২৭তম ]
তরঙ্গের মধ্যে সমদশায় কম্পনশীল দুটি কণিকার ন্যূনতম দূরত্ব হলো তরঙ্গদৈর্ঘ্য। তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে উচ্চভেদন ক্ষমতাসম্পন্ন আলফা, বিটা ও গামা রশ্মি বিকিরিত হয়। এদের মধ্যে আলফা ও বিটা রশ্মি হচ্ছে মূলত যথাক্রমে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক চার্জযুক্ত কণা, কোনো তরঙ্গ নয়; ফলে এদের কোনো তরঙ্গ দৈর্ঘ্য নেই। গামা ও রঞ্জন রশ্মি হলো তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ যেখানে গামা রশ্মির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য 10^(-11) মি. এর কম এবং রঞ্জন রশ্মির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য 10^11 থেকে 10^8 মি. এর মধ্যে। তাই এখানে সবচেয়ে ছোট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের বিকিরণ হচ্ছে গামা রশ্মি।
Related MCQ
প্রশ্নঃ ফোটন শক্তি ‘E’ এর সমীকরণটি হল-
[ বিসিএস ৪৬তম ]
ফোটনের শক্তি \( E \) এর সমীকরণ হলো:
\[ E = hf \]
এখানে,
- ( E ) = ফোটনের শক্তি
- ( h ) = প্লাঙ্কের ধ্রুবক (Planck's constant)
- ( f ) = আলোর তরঙ্গের কম্পাংক (frequency)
আরো একটি রূপ হলো, যখন তরঙ্গ দৈর্ঘ্য \(( \lambda )\) দেওয়া থাকে:
\[ E = \frac{hc}{\lambda} \]
এখানে,
- ( c ) = আলোর বেগ (প্রায় \( 3 \times 10^8 , \text{m/s} )\)
- \( \lambda \) = তরঙ্গের দৈর্ঘ্য
প্রশ্নঃ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে বেশি গ্যাসটি হল –
[ বিসিএস ৪৫তম ]
বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে বেশি গ্যাসটি হলো হাইড্রোজেন (H₂)।
মহাবিশ্বের মোট ভরের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই হাইড্রোজেন। এটি সবচেয়ে হালকা এবং সবচেয়ে প্রাচুর্যপূর্ণ রাসায়নিক উপাদান। মহাবিশ্বের সৃষ্টির সময় বিগ ব্যাং-এর পর প্রথম যে মৌলটি গঠিত হয়েছিল, সেটি হলো হাইড্রোজেন। নক্ষত্র এবং গ্যাসীয় নীহারিকাগুলোর প্রধান উপাদান এটি।
এরপর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে হিলিয়াম। অন্যান্য গ্যাস এবং পদার্থের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
প্রশ্নঃ ফটোগ্রাফিক প্লেটে আবরণ থাকে –
[ বিসিএস ৪৪তম ]
সঠিক উত্তর হলো কঃ সিলভার ব্রোমাইডের।
ফটোগ্রাফিক প্লেটে আলোক সংবেদী উপাদান হিসেবে সিলভার ব্রোমাইডের (AgBr) আবরণ থাকে। আলো যখন এই আবরণের উপর পড়ে, তখন রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে এবং একটি সুপ্ত চিত্র তৈরি হয়। পরবর্তীতে ডেভেলপিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই সুপ্ত চিত্রটি দৃশ্যমান হয়।
অন্যান্য বিকল্পগুলো ফটোগ্রাফিক প্লেটে আবরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় না:
- সিলভার ক্লোরাইড (AgCl) এবং সিলভার ফ্লোরাইড (AgF) আলোক সংবেদী হলেও সাধারণত ফটোগ্রাফিক প্লেটে ব্যবহৃত হয় না।
- অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (NH₄Cl) ফটোগ্রাফিতে অন্য কাজে ব্যবহৃত হতে পারে, তবে এটি আলোক সংবেদী আবরণ নয়।
উত্তর: কঃ সিলভার ব্রোমাইডের
প্রশ্নঃ আইনস্টাইন নোবেল পুরস্কার পান-
[ বিসিএস ৪১তম ]
আলবার্ট আইনস্টাইন ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান।
তিনি "তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে তাঁর অবদানের জন্য, এবং বিশেষভাবে ফোটো-ইলেকট্রিক প্রভাবের সূত্র আবিষ্কারের জন্য" এই পুরস্কার লাভ করেন।
প্রশ্নঃ ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত গামা বিকিরণের উৎস কি?
[ বিসিএস ৪০তম ]
ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত গামা বিকিরণের প্রধান উৎস হলো তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ কোবাল্ট-৬০ (Cobalt-60)।
কোবাল্ট-৬০ একটি কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ যা নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরে সাধারণ কোবাল্টকে নিউট্রন দ্বারা আঘাত করে তৈরি করা হয়। এটি তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের মাধ্যমে গামা রশ্মি নির্গত করে। এই গামা রশ্মি ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করার জন্য অত্যন্ত কার্যকর।
ক্যান্সার চিকিৎসায় গামা বিকিরণ বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- গামা রশ্মি থেরাপি (Gamma Ray Therapy): একটি নির্দিষ্ট উৎস থেকে গামা রশ্মি টিউমারের দিকে направিত করা হয়, যা ক্যান্সার কোষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করে তাদের বৃদ্ধি বন্ধ করে এবং ধ্বংস করে।
- গামা নাইফ রেডিওসার্জারি (Gamma Knife Radiosurgery): এটি কোনো কাটারির ব্যবহার ছাড়াই অত্যন্ত নির্ভুলভাবে মস্তিষ্কের ছোট টিউমার এবং অন্যান্য অস্বাভাবিকতা নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে অনেকগুলো ছোট গামা রশ্মির উৎস একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যস্থলে একত্রিত করে উচ্চ মাত্রার বিকিরণ প্রদান করা হয়, যা আশেপাশের সুস্থ টিস্যুকে রক্ষা করে।
এছাড়াও, কিছু ক্ষেত্রে অন্যান্য তেজস্ক্রিয় আইসোটোপও গামা বিকিরণের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে, তবে কোবাল্ট-৬০ সবচেয়ে বেশি প্রচলিত।
প্রশ্নঃ ক্যান্সার চিকিৎসায় যে বিকিরণ ব্যবহার করা হয় তা হলো-
[ বিসিএস ৩৮তম ]
সঠিক উত্তর হলো গঃ গামা রেস (gamma rays) এবং ঘঃ এক্স রেস (x-rays)।
ক্যান্সার চিকিৎসায় এই উভয় প্রকার বিকিরণই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তাই, যদি একাধিক সঠিক উত্তর নির্বাচনের সুযোগ থাকে, তবে উভয়ই সঠিক। যদি একটি বিকল্প বেছে নিতে হয় এবং প্রশ্নটি সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি সম্পর্কে হয়, তবে প্রায়শই এক্স-রে এবং গামা রশ্মি (বিশেষ করে কোবাল্ট-৬০ থেকে) উভয়ই প্রধান হিসেবে গণ্য হয়।
- এক্স-রে (X-rays): এটি লিনিয়ার এক্সিলারেটর (LINAC) নামক যন্ত্রের সাহায্যে উৎপন্ন উচ্চ শক্তির বিকিরণ, যা বহুল ব্যবহৃত।
- গামা রেস (Gamma rays): এটি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ যেমন কোবাল্ট-৬০ থেকে নির্গত হয় এবং ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়।
আলফা রেস এবং বিটা রেসও কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে (যেমন কিছু নিউক্লিয়ার মেডিসিন থেরাপিতে) ব্যবহৃত হলেও, সরাসরি রেডিয়েশন থেরাপিতে প্রধানত এক্স-রে এবং গামা রেস ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্নঃ স্টিফেন হকিং একজন-
[ বিসিএস ৩৮তম ]
স্টিফেন উইলিয়াম হকিং (Stephen William Hawking) ছিলেন একজন প্রখ্যাত ইংরেজ তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী, কসমোলজিস্ট (মহাবিশ্বতত্ত্ববিদ) এবং লেখক। তাকে বিংশ ও একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন: তিনি ১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি অক্সফোর্ড, যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা-মা দুজনেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তার বিজ্ঞানের প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল।
শিক্ষা জীবন: হকিং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি হলে কসমোলজি নিয়ে পিএইচডি করার জন্য ভর্তি হন।
অসুস্থতা ও প্রতিকূলতা: ১৯৬৩ সালে, মাত্র ২১ বছর বয়সে, হকিং অ্যামায়োট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস (ALS) বা মোটর নিউরন রোগে আক্রান্ত হন। এটি একটি বিরল প্রগতিশীল স্নায়বিক রোগ, যা ধীরে ধীরে শরীরের পেশী নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়। চিকিৎসকরা তাকে কয়েক বছর বাঁচবেন বলে ধারণা করেছিলেন। কিন্তু তিনি এই মারাত্মক রোগ নিয়েও ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বেঁচে ছিলেন এবং তার গবেষণা চালিয়ে গেছেন। পরবর্তীতে, তিনি তার কণ্ঠস্বরও হারান এবং একটি বিশেষ ভয়েস সিন্থেসাইজার যন্ত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ করতেন, যা তিনি তার গালের পেশীর নড়াচড়া দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতেন।
বৈজ্ঞানিক অবদান: শারীরিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্টিফেন হকিং পদার্থবিজ্ঞানে অসংখ্য যুগান্তকারী অবদান রেখেছেন। তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজগুলো হলো:
- কৃষ্ণগহ্বর (Black Holes): তিনি রজার পেনরোজের সাথে মিলে প্রমাণ করেন যে, আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব অনুসারে মহাবিশ্বের শুরুতে একটি সিঙ্গুলারিটি (singularity) থাকা আবশ্যক, যা বিগ ব্যাং তত্ত্বকে সমর্থন করে।
- হকিং বিকিরণ (Hawking Radiation): এটি তার সবচেয়ে বিখ্যাত তত্ত্বগুলোর মধ্যে অন্যতম। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, কৃষ্ণগহ্বর পুরোপুরি কালো নয়, বরং এটি কণা এবং বিকিরণ নির্গত করে। এই বিকিরণ 'হকিং বিকিরণ' নামে পরিচিত। এই ধারণাটি আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং কোয়ান্টাম মেকানিক্সকে একত্রিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।
- মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও গঠন: তিনি মহাবিশ্বের উৎপত্তি, ব্ল্যাক হোল এবং কোয়ান্টাম মাধ্যাকর্ষণ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছেন।
জনপ্রিয় বইসমূহ: স্টিফেন হকিং বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের কাছে সহজবোধ্য করার জন্য বেশ কিছু জনপ্রিয় বিজ্ঞান বই লিখেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো:
- A Brief History of Time (কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস): এটি ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয় এবং বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
- The Universe in a Nutshell
- The Grand Design
সম্মান ও পুরস্কার: তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লুকাসিয়ান প্রফেসর অফ ম্যাথমেটিক্স পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, যা একসময় স্যার আইজ্যাক নিউটনের পদ ছিল। তার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন, যার মধ্যে রয়েল সোসাইটির ফেলোশিপ এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম উল্লেখযোগ্য।
মৃত্যু: স্টিফেন হকিং ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ ৭৬ বছর বয়সে ক্যামব্রিজে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানপ্রেমী ও সাধারণ মানুষ গভীর শোক প্রকাশ করে। তার জীবন ও কাজ মানুষকে অনুপ্রাণিত করে দেখিয়েছে যে, শারীরিক সীমাবদ্ধতা ইচ্ছাশক্তির কাছে কোনো বাধা হতে পারে না।
প্রশ্নঃ জীবজগতের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর রশ্মি কোনটি?
[ বিসিএস ৩৬তম ]
জীবজগতের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর রশ্মি হলো গামা রশ্মি (Gamma Ray)।
গামা রশ্মি হলো উচ্চ শক্তি সম্পন্ন তড়িৎচৌম্বকীয় বিকিরণ। এর ভেদন ক্ষমতা (penetrating power) অত্যন্ত বেশি, যা আলফা (Alpha) এবং বিটা (Beta) রশ্মির চেয়েও অনেক বেশি। গামা রশ্মি মানবদেহ বা উদ্ভিদ দেহের গভীরে প্রবেশ করে কোষের ডিএনএ (DNA) সহ গুরুত্বপূর্ণ অণুগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যার ফলে ক্যান্সার, বিকলাঙ্গতা এবং অন্যান্য মারাত্মক রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
যদিও অতিবেগুনি রশ্মি (Ultraviolet Ray) ত্বকের ক্ষতি এবং ত্বকের ক্যান্সার ঘটাতে পারে, তবে ভেদন ক্ষমতা এবং কোষীয় ক্ষতির মাত্রার দিক থেকে গামা রশ্মিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর।
প্রশ্নঃ ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত গামা বিকিরণের উৎস হলো–
[ বিসিএস ৩৬তম ]
ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত গামা বিকিরণের প্রধান উৎস হলো তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ (Radioactive Isotope)।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত আইসোটোপটি হলো:
- কোবাল্ট-৬০ (Cobalt-60)
কোবাল্ট-৬০ একটি কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ যা নিউক্লিয়ার চুল্লিতে তৈরি হয়। এটি তার ক্ষয় প্রক্রিয়ায় (decay) শক্তিশালী গামা রশ্মি নির্গত করে, যা ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়। কোবাল্ট-৬০ ছাড়াও, কখনও কখনও সিজিয়াম-১৩৭ (Cesium-137)-ও গামা বিকিরণের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তবে কোবাল্ট-৬০ বেশি প্রচলিত।
প্রশ্নঃ গোয়েন্দা বিভাগে নিম্নের কোন রশ্মি ব্যবহৃত হয়?
[ বিসিএস ৩৫তম ]
X-রশ্মি (X-ray) গোয়েন্দা বিভাগে বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়, যেমন:
- লুকানো বস্তু শনাক্তকরণ: লাগেজের ভেতরে, দেয়ালের আড়ালে বা অন্যান্য বস্তুর মধ্যে লুকানো অস্ত্র, বিস্ফোরক বা চোরাই পণ্য শনাক্ত করতে X-ray স্ক্যানার ব্যবহৃত হয়। বিমানবন্দর, সীমান্ত চেকপোস্ট এবং নিরাপত্তা তল্লাশিতে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।
- ফরেনসিক বিজ্ঞান: হাড়ের আঘাত, বুলেট বা অন্য কোনো বস্তুর অবস্থান নির্ণয় করতে ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় X-ray ব্যবহার করা হয়।
- নকল বা জালিয়াতি সনাক্তকরণ: শিল্পকর্ম, দলিল বা অন্যান্য বস্তুর ভেতরের গঠন পরীক্ষা করে সেগুলোর সত্যতা যাচাই বা জালিয়াতি সনাক্ত করতে X-ray ব্যবহৃত হতে পারে।
অন্যান্য রশ্মিগুলোর ব্যবহার ভিন্ন:
- বেকেরেল রশ্মি: এটি কোনো নির্দিষ্ট রশ্মি নয়, বরং তেজস্ক্রিয়তার একক (Becquerel) বা তেজস্ক্রিয় ক্ষয় থেকে নির্গত কণা (যেমন আলফা, বিটা, গামা) বোঝাতে পারে।
- গামা রশ্মি: এটি উচ্চ শক্তির তড়িৎচৌম্বকীয় বিকিরণ, যা মূলত চিকিৎসা (রেডিওথেরাপি) বা শিল্প ক্ষেত্রে (নন-ডেসট্রাকটিভ টেস্টিং, স্টেরিলাইজেশন) ব্যবহৃত হয়। এর ভেদন ক্ষমতা খুব বেশি হলেও নিরাপত্তা তল্লাশিতে সরাসরি ব্যবহৃত হয় না।
- বিটা-রশ্মি: এটি তেজস্ক্রিয় ক্ষয় থেকে নির্গত ইলেকট্রন বা পজিট্রন। এর ব্যবহার মূলত কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি, শিল্প পরিমাপ বা গবেষণা ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ।
প্রশ্নঃ বিগব্যাঙ তত্ত্বের প্রবক্তা–
[ বিসিএস ৩৩তম ]
বিগ ব্যাং হলো একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব, যা মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও বিবর্তন ব্যাখ্যা করে। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে একটি অতি ঘন এবং উত্তপ্ত বিন্দু থেকে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর এটি দ্রুত সম্প্রসারিত হতে শুরু করে, যা বর্তমানেও চলমান।
মূল ধারণা
- মহা-বিস্ফোরণ: বিগ ব্যাং তত্ত্ব কোনো প্রচলিত বিস্ফোরণ নয়, বরং এটি স্থান ও কালের সম্প্রসারণ। অতি ক্ষুদ্র একটি বিন্দু থেকে স্থান-কাল নিজেই প্রসারিত হতে শুরু করে।
- সম্প্রসারণ: মহাবিশ্ব প্রসারিত হওয়ার সাথে সাথে এটি ঠান্ডা হতে থাকে। এর ফলে মৌলিক কণা, যেমন ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন তৈরি হয়।
- পরবর্তী গঠন: কয়েক লক্ষ বছর পর, এই কণাগুলো একত্রিত হয়ে প্রথম পরমাণু গঠন করে। এরপর মহাকর্ষের প্রভাবে এই পরমাণুগুলো এক হয়ে নক্ষত্র, গ্যালাক্সি এবং অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তু তৈরি করে।
বিগ ব্যাং তত্ত্বের প্রমাণ
- হাবলের সূত্র: এডউইন হাবল পর্যবেক্ষণ করেন যে গ্যালাক্সিগুলো একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এটি মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের ধারণাকে সমর্থন করে।
- মহাজাগতিক মাইক্রোওয়েভ পটভূমি বিকিরণ (Cosmic Microwave Background Radiation - CMB): এটি হলো বিগ ব্যাং-এর সময়কার অবশিষ্টাংশ তাপ বিকিরণ, যা পুরো মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে।
- মৌলিক পদার্থের প্রাচুর্য: হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের মতো হালকা মৌলিক পদার্থের পরিমাণ বিগ ব্যাং তত্ত্বের ভবিষ্যদ্বাণীর সাথে মিলে যায়।
প্রশ্নঃ মহাজাগতিক রশ্মির আবিষ্কারক–
[ বিসিএস ৩৩তম ]
মহাজাগতিক রশ্মি (Cosmic rays) আবিষ্কার করেন অস্ট্রিয়ান-মার্কিন বিজ্ঞানী ভিক্টর ফ্রান্সিস হেস (Victor Francis Hess)।
১৯১২ সালে বেলুনে চড়ে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উচ্চতায় পরীক্ষা চালানোর সময় তিনি দেখতে পান যে, ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে যাওয়া হয়, বিকিরণের মাত্রা ততই বাড়তে থাকে। এই পর্যবেক্ষণ থেকে তিনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, এই বিকিরণ পৃথিবীর বাইরে মহাকাশ থেকে আসছে। এই আবিষ্কারের জন্য তিনি ১৯৩৬ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
বিগব্যাং তত্ত্বের প্রবর্তক জি ল্যামেটার (১৯২৭ সাল)। কিন্তু এ তত্ত্বে আধুনিক তত্ত্বে ব্যখ্যা উপস্থাপন করেন- স্টিফেন হকিং (১৯৪২-২০১৮)। ১৯৮৮ সালে তিনি “A Brief History of Time” গ্রন্থে ‘বিগব্যাং’ তত্ত্বের পক্ষে যুক্তি দেন এবং পদার্থ বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ হতে এর ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন। মহাবিশ্ব নিয়ে প্রকাশিত তার সর্বশেষ বই ‘দ্য গ্রান্ড ডিজাইন’।
প্রশ্নঃ রঙিন টেলিভিশন থেকে ক্ষতিকর রশ্মি বের হয়-
[ বিসিএস ৩১তম ]
দ্রুতগামী ইলেকট্রন ধাতুতে আঘাত করলে রঞ্জন রশ্মি উৎপন্ন হয়। কসমিক রশ্মি মহাশূন্য হতে আসে। বিটা রশ্মি ও গামা রশ্মি তেজস্ক্রিয় বিকিরণে পাওয়া যায়। ক্যাথোড রে টিউব থাকার কারণে রঙিন টেলিভিশন থেকে মৃদু রঞ্জন রশ্মি নির্গত হয়। আধুনিক LED ও LCD রঙিন টেলিভিশন থেকে রঞ্জন রশ্মি (X-ray) বের হয় না।
প্রশ্নঃ স্টিফেন হকিং বিশ্বের একজন অতিশয় বিখ্যাত-
[ বিসিএস ৩১তম ]
ব্রিটিশ তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতজ্ঞ স্টিফেন হকিং ১৯৪২ সালে ৮ জানুয়ারি অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন। মটর নিউরন ডিজিজে আক্রান্ত এ বিজ্ঞানীর লেখা ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম’ একটি আলোচিত গ্রন্থ। ১৪ মার্চ, ২০১৮ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
প্রশ্নঃ রঙিন টেলিভিশন হতে ক্ষতিকর কোন রশ্মি বের হয়?
[ বিসিএস ২৪তম ]
পুরনো মডেলের টেলিভিশন বা কম্পিউটার মনিটরে ক্যাথোড রে টিউব (CRT) ব্যবহার করা হয়। ইলেক্ট্রনসমূহ অতিউচ্চ বিভবে থাকার কারণে এ CRT থেকে খুব সামান্য পরিমাণ এক্স-রে নির্গত হয়। এ এক্স-রে বা রঞ্জন রশ্মি জীব কোষ ধ্বংস করতে সক্ষম। তবে আধুনিক টেলিভিশন থেকে এরূপ এক্স-রে নির্গমন ঘটে না।
প্রশ্নঃ রেডিও আইসোটোপ ব্যবহৃত হয়–
[ বিসিএস ২৩তম ]
রেডিও আইসোটোপ গলগণ্ড রোগ নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।
রেডিও আইসোটোপ এবং গলগণ্ড রোগ:
গলগণ্ড রোগটি থাইরয়েড গ্রন্থির অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে হয়।
রেডিও আইসোটোপ থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা এবং আকার নির্ণয় করতে সাহায্য করে।
আয়োডিন-১৩১ (I-131) একটি রেডিও আইসোটোপ যা থাইরয়েড গ্রন্থি দ্বারা শোষিত হয়।
এই আইসোটোপ ব্যবহার করে থাইরয়েড গ্রন্থির স্ক্যান করা হয়, যা গলগণ্ড রোগ নির্ণয়ে সহায়ক।
রেডিও আইসোটোপ ব্যবহারের সুবিধা:
এটি একটি নিরাপদ এবং কার্যকর পদ্ধতি।
এটি থাইরয়েড গ্রন্থির বিস্তারিত চিত্র প্রদান করে।
* এটি গলগণ্ডের কারণ এবং প্রকার নির্ধারণে সাহায্য করে।
প্রশ্নঃ ফনোগ্রাফ কে আবিষ্কার করেন?
[ বিসিএস ২৩তম ]
‘রন্টজেন’ আবিষ্কার করেন ‘এক্স-রে’, ‘ফ্যারাডে’ আবিষ্কার করেন ‘তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশ’, মার্কনি আবিষ্কার করেন ‘বেতার’ এবং এডিসন আবিষ্কার করেন ‘ফনোগ্রাফ’।
আইনস্টাইন আপেক্ষিক তথ্য ও রাদারফোর্ড আণবিক নিউক্লিয়াসের মতবাদ আবিষ্কার করেন। ভিক্টর ফ্রান্সিস হেস্ মহাজাগতিক রশ্মি আবিষ্কারের জন্য ১৯৩৬ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান।
প্রশ্নঃ রঙিন টেলিভিশন হতে ক্ষতিকর কোন রশ্মি বের হয়?
[ বিসিএস ১৬তম ]
রঙিন টেলিভিশন থেকে মূলত এক্স-রে (X-ray) রশ্মি বের হয়। তবে আধুনিক টেলিভিশনগুলোতে এই রশ্মির পরিমাণ খুবই কম থাকে।
প্রশ্নঃ আলট্রাসনোগ্রাফি কি?
[ বিসিএস ১৫তম ]
স্বাভাবিকভাবে মানুষের কানে শ্রুতিগোচর হয় না এমন শব্দকে আলট্রা সাউন্ড বা অতিশব্দ বলে। অতিশাব্দিক ক্ষুদ্র তরঙ্গের সাহায্যে কোনো বস্তুকে স্ক্যান করে যে সংকেত পাওয়া যায় তা ব্যবহার করে ফটো তোলার প্রক্রিয়ার সাধারণ নাম আলট্রাসনোগ্রাফি। রোগ নির্ণয়, ধাতব বস্তুর ভেতরে কোনো ত্রুটি থাকলে তা ধরা ইত্যাদি নানা কাজে আলট্রাসনোগ্রাফি ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্নঃ পারমাণবিক বোমার আবিষ্কারক কে?
[ বিসিএস ১৩তম ]
পারমাণবিক বোমা তৈরীর লক্ষ্যে ১৯৪২ সালে মার্কিনীরা ‘ম্যানহাটন প্রকল্প’ হাতে নেয়। এ প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন রবার্ট ওপেনহাইমার। ম্যানহাটন প্রকল্পের অংশ হিসেবে মার্কিন সেনাবাহিনী ১৯৪৫ সালের ১৬ জুলাই বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমা ‘ট্রিনিট্রি’ এর সফল বিস্ফোরণ ঘটায়।
প্রশ্নঃ কোন প্রযুক্তিটি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে সম্পৃক্ত নয়?
[ 18th ntrca (স্কুল সমপর্যায়-২) (15-03-2024) ]
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব (Fourth Industrial Revolution বা Industry 4.0) হলো আধুনিক প্রযুক্তির একীভূতকরণ যা ভৌত, ডিজিটাল এবং জৈবিক জগতকে একত্রিত করে। এর বৈশিষ্ট্য হলো উন্নত অটোমেশন, ডেটা এক্সচেঞ্জ এবং উৎপাদন প্রযুক্তিতে সাইবার-ফিজিক্যাল সিস্টেম, ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এর ব্যবহার।
বিকল্পগুলো বিবেচনা করি:
- কঃ টেলিগ্রাফ: টেলিগ্রাফ হলো ১৯ শতকের একটি যোগাযোগ প্রযুক্তি, যা প্রথম বা দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের সাথে সম্পর্কিত। এটি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি নয়।
- খঃ রোবোটিক্স: রোবোটিক্স হলো চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা স্বয়ংক্রিয়তা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে শিল্প ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাচ্ছে।
- গঃ থ্রি-ডি প্রিন্টিং (3D Printing): এটি অ্যাডমিটিভ ম্যানুফ্যাকচারিং নামেও পরিচিত এবং এটি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের একটি মূল প্রযুক্তি, যা কাস্টমাইজড পণ্য তৈরি এবং উৎপাদন প্রক্রিয়াকে পরিবর্তন করছে।
- ঘঃ আইওটি (IoT - Internet of Things): আইওটি হলো চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের একটি প্রধান চালিকা শক্তি, যেখানে দৈনন্দিন বস্তুগুলি ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে ডেটা আদান-প্রদান করে।
সুতরাং, যে প্রযুক্তিটি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে সম্পৃক্ত নয়, সেটি হলো টেলিগ্রাফ।