আমাদের স্কুল

সেটিং

বহুনির্বাচনি প্রশ্নের দেখানোর অপশনঃ
শুধুমাত্র উত্তর 2 অপশন
3 অপশন 4 অপশন
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের অপশন প্রদর্শনঃ
রো আকারে কলাম আকারে
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরঃ
লুকান বোল্ড করুন
দেখান দেখান ও বোল্ড করুন
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের ব্যাখ্যাঃ
দেখান লুকান নিচে লুকান
থিম নির্বাচন করুনঃ
ফন্ট সাইজঃ
16

ক. নৈতিকতা-নিরপেক্ষ ক্রিয়া
খ. সামাজিক ক্রিয়া
গ. ঐচ্ছিক ক্রিয়া
ঘ. ইচ্ছা-নিরপেক্ষ ক্রিয়া
ব্যাখ্যাঃ

নীতিবিদ্যার আলোচ্য বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত ক্রিয়া হলো ঐচ্ছিক ক্রিয়া (Voluntary action)।

নীতিবিদ্যা মানুষের আচরণের ভালো-মন্দ, উচিত-অনুচিত নিয়ে আলোচনা করে। মানুষের যে কাজগুলো স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং যেগুলোর জন্য মানুষ দায়ী থাকে, সেগুলোই নীতিবিদ্যার মূল আলোচ্য বিষয়। অনৈচ্ছিক বা বাধ্যবাধকতামূলক কাজ নীতিবিদ্যার আওতায় পড়ে না, কারণ সেসব কাজের ক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজস্ব নৈতিক বিচার বা পছন্দের সুযোগ থাকে না।

ক. মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ
খ. জি. সি. দেব
গ. আরজ আলী মাতুব্বর
ঘ. আব্দুল মতীন
ব্যাখ্যাঃ

বাংলাদেশের 'নব্য-নৈতিকতার' প্রবর্তক হিসেবে সাধারণত ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব-কে গণ্য করা হয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন এবং তাঁর দার্শনিক চিন্তাভাবনায় নব্য-নৈতিকতার ধারণা বিশেষভাবে স্থান পায়।

তবে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরজ আলী মাতুব্বর-কেও এই ধারণার প্রবর্তক হিসেবে উল্লেখ করা হয়, বিশেষ করে তাঁর ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে যুক্তিবাদী এবং বিজ্ঞানভিত্তিক নৈতিকতার অনুসন্ধানের জন্য।

সুতরাং, প্রশ্নে যদি নির্দিষ্ট একজনের নাম উল্লেখ করতে হয়, ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব অধিক পরিচিত এবং সাধারণভাবে স্বীকৃত। তবে আরজ আলী মাতুব্বরের অবদানও এক্ষেত্রে আলোচনার যোগ্য।

ক. বার্কলে
খ. জন লক
গ. ডেকার্ট
ঘ. প্লেটো
ব্যাখ্যাঃ

‘Republic’ গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন প্লেটো (Plato)।

এটি প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর সবচেয়ে বিখ্যাত কাজগুলির মধ্যে একটি। গ্রন্থটিতে ন্যায়বিচার, আদর্শ রাষ্ট্র এবং একজন ন্যায়বান মানুষের চরিত্র নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সক্রেটিসের মুখ দিয়ে প্লেটো তাঁর দার্শনিক চিন্তাভাবনা তুলে ধরেছেন।

ক. শুদ্ধাচার
খ. মূল্যবোধ
গ. মানবিকতা
ঘ. সফলতা
ব্যাখ্যাঃ

নৈতিকতা ও সততা দ্বারা প্রভাবিত আচরণগত উৎকর্ষকে কঃ শুদ্ধাচার বলে।

শুদ্ধাচার একটি ব্যাপক ধারণা যা নীতি, নৈতিকতা ও সততার সমন্বয়ে গঠিত এবং এর মাধ্যমে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের আচরণে উন্নত নৈতিক মান প্রতিফলিত হয়।

ক. জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল অনুসারে ‘শুদ্ধাচার’ হচ্ছে-
খ. সরকারী কর্মকর্তাদের আচরণের মানদণ্ড
গ. সততা ও নৈতিকতা দ্বারা প্রভাবিত আচরণগত উৎকর্ষ
ঘ. দৈনন্দিন কার্যক্রমে অনুসৃতব্য মানদণ্ড
ব্যাখ্যাঃ

জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল অনুসারে ‘শুদ্ধাচার’ হচ্ছে গঃ সততা ও নৈতিকতা দ্বারা প্রভাবিত আচরণগত উৎকর্ষ

জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলে শুদ্ধাচারকে ব্যাপক অর্থে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এটি কেবল সরকারি কর্মকর্তাদের আচরণের মানদণ্ড নয়, বরং সমাজের সকল স্তরের মানুষের সততা, নৈতিক মূল্যবোধ এবং ন্যায়পরায়ণতার সমন্বিত রূপ। শুদ্ধাচার একটি জীবনবোধ এবং চর্চা, যা ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত জীবনে সততা, নীতিবোধ ও কল্যাণকর আচরণকে উৎসাহিত করে।

ক. আইনের প্রয়ােগের অভাব
খ. নৈতিকতা ও মূল্যবােধের অভাব
গ. দুর্বল পরিবীক্ষণ ব্যবস্থা
ঘ. অসৎ নেতৃত্ব
ব্যাখ্যাঃ

আমার বিবেচনায়, রাষ্ট্র ও সমাজে দুর্নীতিপ্রবণতার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী খঃ নৈতিকতা ও মূল্যবােধের অভাব

যদিও আইনের প্রয়োগের অভাব (ক), দুর্বল পরিবীক্ষণ ব্যবস্থা (গ), এবং অসৎ নেতৃত্ব (ঘ) - এই কারণগুলো দুর্নীতি বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, তবে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অভাব এদের ভিত্তি তৈরি করে।

কারণগুলো বিশ্লেষণ করা যাক:

  • নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অভাব: যদি মানুষের মধ্যে সততা, ন্যায়পরায়ণতা, দায়িত্ববোধ এবং অন্যের প্রতি শ্রদ্ধার মতো মৌলিক নৈতিক মূল্যবোধের অভাব থাকে, তবে আইন, পরিবীক্ষণ বা নেতৃত্বের পরিবর্তন করেও দুর্নীতি সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা কঠিন। নৈতিক অবক্ষয় সমাজের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতিকে স্বাভাবিক করে তোলে।

  • আইনের প্রয়ােগের অভাব: দুর্বল আইন প্রয়োগ দুর্নীতিবাজদের শাস্তি এড়াতে এবং আরও দুর্নীতি করতে উৎসাহিত করে। তবে, শক্তিশালী আইন থাকলেও যদি মানুষের মধ্যে নীতিবোধ না থাকে, তবে আইনের ফাঁক খুঁজে বের করা বা আইনকে প্রভাবিত করার প্রবণতা দেখা যেতে পারে।

  • দুর্বল পরিবীক্ষণ ব্যবস্থা: কার্যকর পরিবীক্ষণের অভাবে দুর্নীতি সহজে ধরা পড়ে না এবং দুর্নীতিবাজরা তাদের অপকর্ম চালিয়ে যেতে সাহস পায়। তবে, কঠোর পরিবীক্ষণ ব্যবস্থা থাকলেও যদি কর্মকর্তাদের মধ্যে সততার অভাব থাকে, তবে তারা পরিবীক্ষণ ফাঁকি দেওয়ার নতুন উপায় বের করতে পারে।

  • অসৎ নেতৃত্ব: দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্ব একটি সমাজে দুর্নীতির সংস্কৃতি তৈরি করে। নেতারা দুর্নীতিতে জড়িত থাকলে অধীনস্থরাও উৎসাহিত হয় এবং জবাবদিহিতা দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে, সৎ নেতৃত্বও যদি নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন অনুসারী না পায়, তবে দুর্নীতি সম্পূর্ণরূপে রোধ করা কঠিন হতে পারে।

পরিশেষে বলা যায়, দুর্নীতি একটি জটিল সমস্যা যার মূলে রয়েছে নৈতিক অবক্ষয়। নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অভাবই সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতিকে বিস্তার লাভ করার সুযোগ করে দেয়। অন্যান্য কারণগুলো এই মূল কারণের প্রভাবকে আরও বাড়িয়ে তোলে। তাই, দীর্ঘমেয়াদীভাবে দুর্নীতি মোকাবিলা করতে হলে নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধের বিকাশের উপর জোর দেওয়া অপরিহার্য।

ক. ইমানুয়েল কান্ট
খ. টমাস হবস্
গ. জন স্টুয়ার্ট মিল
ঘ. জেরেমি বেন্থাম
ব্যাখ্যাঃ

‘On Liberty’ গ্রন্থের লেখক হলেন জন স্টুয়ার্ট মিল (John Stuart Mill)। এটি ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত একটি বিখ্যাত দার্শনিক রচনা, যেখানে ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং সমাজের কর্তৃত্বের সীমা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

ক. ইমানুয়েল কান্ট
খ. হার্বার্ট স্পেন্সার
গ. বার্ট্রান্ড রাসেল
ঘ. অ্যারিস্টটল
ব্যাখ্যাঃ

‘কর্তব্যের জন্য কর্তব্য’ (Duty for duty's sake) - এই বিখ্যাত ধারণাটির প্রবর্তক হলেন ইমানুয়েল কান্ট (Immanuel Kant)

তিনি একজন জার্মান দার্শনিক এবং তাঁর নীতিশাস্ত্রের এই ধারণাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কান্ট মনে করতেন যে কোনো কাজ নৈতিকভাবে সঠিক হতে হলে, সেটি কেবল কর্তব্যের খাতিরেই করতে হবে, অন্য কোনো উদ্দেশ্য বা ফলাফলের জন্য নয়।

ক. প্লেটো
খ. রুসাে
গ. বার্ট্রান্ড রাসেল
ঘ. জন স্টুয়ার্ট মিল
ব্যাখ্যাঃ

‘Human Society in Ethics and Politics’ গ্রন্থটির লেখক হলেন বারট্রান্ড রাসেল (Bertrand Russell)

এটি ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে রাসেল তার নৈতিক এবং রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আলোচনা করেছেন, যেখানে তিনি রাজনীতি ও ধর্ম উভয়কেই স্পর্শ করেছেন। তিনি যুক্তি দেন যে মানুষের মধ্যে বুদ্ধি এবং প্রবৃত্তির দ্বন্দ্বের কারণে নৈতিকতার প্রয়োজন। মানুষের প্রবৃত্তি এবং আকাঙ্ক্ষা সামাজিক এবং ব্যক্তিগত উভয়ই হতে পারে। রাজনীতি এবং নৈতিকতা হলো সেই মাধ্যম যার দ্বারা আমরা সমাজ এবং ব্যক্তি হিসেবে সামাজিকভাবে উদ্দেশ্যপূর্ণ এবং নৈতিক নিয়মাবলী ধারণ করি।

ক. আত্মস্বার্থবাদ
খ. পরার্থবাদ
গ. পূর্ণতাবাদ
ঘ. উপযােগবাদ
ব্যাখ্যাঃ

সঠিক উত্তর হলো ঘঃ উপযোগবাদ (Utilitarianism)

উপযোগবাদ একটি নৈতিক তত্ত্ব যা কর্মের সঠিকতা বা ভুলতা নির্ধারণ করে তার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে। এই তত্ত্ব অনুসারে, সেই কাজটি নৈতিকভাবে সঠিক যা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি সুখ (greatest happiness) বয়ে আনে। জন স্টুয়ার্ট মিল এবং জেরেমি বেন্থাম এই তত্ত্বের প্রধান প্রবক্তা।

অন্যান্য নৈতিক মানদণ্ডগুলো:

  • আত্মস্বার্থবাদ (Egoism): এই নৈতিক মানদণ্ড ব্যক্তির নিজের সুখ ও স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।
  • পরার্থবাদ (Altruism): এটি অন্যের কল্যাণ ও সুখকে নিজের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়।
  • পূর্ণতাবাদ (Perfectionism): এই নৈতিক মানদণ্ড মানুষের ব্যক্তিগত গুণাবলী ও সম্ভাবনার পূর্ণ বিকাশের উপর জোর দেয়।
ক. হ্যারল্ড উইলসন
খ. এডওয়ার্ড ওসবর্ন উইলসন
গ. জন স্টুয়ার্ট মিল
ঘ. ইমানুয়েল কান্ট
ব্যাখ্যাঃ

ইমানুয়েল কান্ট (Immanuel Kant) কর্তব্যের নৈতিকতার ধারণা প্রবর্তন করেন।

কান্টের নৈতিক দর্শন, যা কর্তব্যভিত্তিক নীতিশাস্ত্র (Deontological Ethics) নামেও পরিচিত, কর্মের ফলাফলের পরিবর্তে কর্তব্যের উপর ভিত্তি করে নৈতিকতাকে বিচার করে। কান্টের মতে, একটি কাজ নৈতিকভাবে সঠিক কিনা তা নির্ধারণ করে সেই কাজের অন্তর্নিহিত নিয়ম বা কর্তব্য, পরিণতি নয়।

তার বিখ্যাত ধারণা Categorical Imperative (নিঃশর্ত আদেশ) এই নীতির মূল ভিত্তি। এর মাধ্যমে কান্ট এমন নীতি নির্ধারণের চেষ্টা করেছেন যা সার্বজনীনভাবে প্রযোজ্য এবং যা বুদ্ধিভিত্তিক যুক্তির মাধ্যমেই মানুষ উপলব্ধি করতে পারে।

ক. সুশাসন
খ. রাষ্ট্র
গ. নৈতিকতা
ঘ. সমাজ
ব্যাখ্যাঃ

সঠিক উত্তর হলো সমাজ

যদিও সুশাসন, রাষ্ট্র এবং নৈতিকতাও সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, তবে সমাজ হলো সেই ভিত্তি যার উপর একটি সভ্যতা গড়ে ওঠে এবং বিকশিত হয়। সমাজ ছাড়া সভ্যতার ধারণা অর্থহীন।

একটি সভ্যতা মূলত মানুষের একটি সংগঠিত গোষ্ঠী, যারা একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে বসবাস করে, নিজস্ব সংস্কৃতি, রীতিনীতি, প্রযুক্তি এবং সামাজিক কাঠামো তৈরি করে। এই অর্থে, সমাজ হলো সভ্যতার প্রাথমিক এবং অপরিহার্য প্রতিচ্ছবি।

ক. মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ
খ. জি.সি দেব
গ. আরজ আলী মাতুব্বর
ঘ. আবদুল মতীন
ব্যাখ্যাঃ

বাংলাদেশে ‘নব-নৈতিকতা’র প্রবর্তক হিসেবে ডক্টর গোবিন্দ চন্দ্র দেব (জি.সি. দেব)-কে বিবেচনা করা হয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।

অধ্যাপক জি.সি. দেব ঐতিহ্যবাহী নৈতিক ধারণার পরিবর্তে বিজ্ঞানভিত্তিক এবং মানবতাবাদী একটি নতুন নৈতিক framework প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে যুক্তি, বিজ্ঞান এবং মানুষের কল্যাণের উপর ভিত্তি করে একটি আধুনিক নৈতিকতা গড়ে তোলা প্রয়োজন।

তবে, কেউ কেউ আরজ আলী মাতুব্বরকেও এই ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন বলে মনে করেন, যিনি ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারমুক্ত একটি যুক্তিবাদী নৈতিকতার কথা বলেছিলেন।

সুতরাং, প্রশ্নে যদি নির্দিষ্ট কোনো একজনের নাম উল্লেখ করতে হয়, সেক্ষেত্রে ডক্টর গোবিন্দ চন্দ্র দেব নামটিই সাধারণত প্রথম আসে।

ক. সব
খ. কিছুই না
গ. সর্বজনীন
ঘ. কিছু
ব্যাখ্যাঃ

শূন্যবাদ (Nihilism) শব্দটি ল্যাটিন শব্দ "nihil" থেকে উদ্ভূত।

"nihil" শব্দের অর্থ হলো: "কিছুই না" বা "nothing"

এই শব্দ থেকেই শূন্যবাদের ধারণাটি এসেছে, যা জীবনের অর্থ, নৈতিকতা, জ্ঞান বা অস্তিত্বের মূল্য সম্পর্কে কোনো কিছুরই চূড়ান্ত ভিত্তি বা উদ্দেশ্য নেই বলে মনে করে।

ক. আইন
খ. প্রতীক
গ. ভাষা
ঘ. মূল্যবোধ
ব্যাখ্যাঃ

পৃথিবীতে সর্বজনীন সংস্কৃতি বলে কিছু নেই। কেননা এক সমাজ ও রাষ্ট্রে যা সংস্কৃতি অন্য সমাজ ও রাষ্ট্রে তা অপ-সংস্কৃতি। এরপরেও সংস্কৃতির সাধারণ উপাদান আছে, যা সকল দেশে একই। যেমন - ভাষা, প্রতীক, আদর্শ, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, প্রথা, শিল্পকলা ইত্যাদি। তবে সংস্কৃতির উপাদান হিসেবে অনেকে সমাজতাত্ত্বিক আইনকে গ্রহণ করেছেন আবার কেউ তা বর্জন করেছেন।

ক. জার্মানি
খ. ফ্রান্স
গ. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ঘ. যুক্তরাজ্য
ব্যাখ্যাঃ

জেরেমি বেন্থাম (Jeremy Bentham) একজন প্রভাবশালী ইংরেজ দার্শনিক, আইনতত্ত্ববিদ এবং সমাজ সংস্কারক ছিলেন। তাকে আধুনিক উপযোগবাদের (Utilitarianism) জনক হিসেবে গণ্য করা হয়।

তার সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে দেওয়া হলো:

  • জন্ম ও মৃত্যু: তিনি ১৭৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৩২ সালের ৬ জুন মৃত্যুবরণ করেন।
  • উপযোগবাদ (Utilitarianism): এটি তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দার্শনিক অবদান। এই তত্ত্ব অনুসারে, একটি কাজ তখনই নৈতিকভাবে সঠিক যখন এটি সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের জন্য সর্বাধিক সুখ (greatest happiness for the greatest number) নিশ্চিত করে। তিনি 'সুখ' এবং 'দুঃখ' কে মানুষের প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে দেখেছিলেন এবং বিশ্বাস করতেন যে আইন ও নীতির উদ্দেশ্য হওয়া উচিত সমাজে সামগ্রিক সুখ বৃদ্ধি করা।
  • হিউডোনিক ক্যালকুলাস (Hedonic Calculus): বেন্থাম সুখ ও দুঃখের পরিমাণ পরিমাপ করার জন্য একটি পদ্ধতি প্রস্তাব করেছিলেন, যা হিউডোনিক ক্যালকুলাস বা ফেলিসিফিক ক্যালকুলাস নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন কাজের সম্ভাব্য সুখ বা দুঃখের পরিমাণ নির্ণয় করার চেষ্টা করেছিলেন।
  • সংস্কারের প্রস্তাবনা: তিনি শুধুমাত্র দার্শনিক ছিলেন না, একজন সক্রিয় সংস্কারকও ছিলেন। তিনি সংসদ, আইনি কোড, বিচার বিভাগ এবং কারাগার ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি আইন, শিক্ষা এবং সামাজিক নীতিতে তার উপযোগবাদী নীতিগুলি প্রয়োগ করতে চেয়েছিলেন।
  • প্যানোপটিকন (Panopticon): বেন্থাম একটি মডেল কারাগার, প্যানোপটিকন, এর নকশা করেছিলেন। এই নকশার উদ্দেশ্য ছিল সর্বনিম্ন সংখ্যক পর্যবেক্ষক দ্বারা সর্বাধিক সংখ্যক বন্দিকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব করা। যদিও এটি কখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি, তবে এটি নজরদারি এবং কারাগার ব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
  • অন্যান্য অবদান: তিনি ব্যক্তি স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, রাষ্ট্র থেকে ধর্ম পৃথকীকরণ, বাক স্বাধীনতা, নারীর সমান অধিকার, তালাকের অধিকার, এবং এমনকি সমকামীতাকে অপরাধের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার মতো বিষয়গুলিরও পক্ষে ছিলেন। তিনি দাসপ্রথা, মৃত্যুদণ্ড এবং শারীরিক শাস্তির (শিশুদের ক্ষেত্রেও) বিলোপের পক্ষে যুক্তি দিয়েছিলেন। তাকে পশু অধিকারের প্রথম দিকের প্রবক্তাদের একজন হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।
  • ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (UCL): তিনি ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (UCL) প্রতিষ্ঠায় পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছিলেন, যা ছিল ইংল্যান্ডের প্রথম প্রতিষ্ঠান যেখানে জাতি, শ্রেণি বা ধর্ম নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীকে এবং নারীদেরকে পুরুষের সমান শর্তে ভর্তি করা হয়েছিল।
  • অটো-আইকন (Auto-Icon): তার ইচ্ছানুযায়ী, মৃত্যুর পর তার দেহকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য দান করা হয় এবং পরবর্তীতে তার দেহাবশেষকে একটি "অটো-আইকন" হিসেবে সংরক্ষণ করে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে প্রদর্শন করা হয়, যা আজও সেখানে রয়েছে।

সংক্ষেপে, জেরেমি বেন্থাম ছিলেন একজন দূরদর্শী চিন্তাবিদ যার ধারণাগুলি নৈতিকতা, আইন, রাজনীতি এবং সামাজিক সংস্কারের ক্ষেত্রে গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছিল।

ক. দায়িত্বশীলতা
খ. নৈতিকতা
গ. দক্ষতা
ঘ. সরলতা
ব্যাখ্যাঃ

একজন যোগ্য প্রশাসক ও ব্যবস্থাপকের মৌলিক গুণাবলির মধ্যে শ্রেষ্ঠ গুণ হচ্ছে নৈতিকতা। নৈতিকতা (Ethics) একটি ব্যাপক ধারণা, যা মানুষের বাহ্যিক আচরণের পাশাপাশি মানব চিন্তাকেও নিয়ন্ত্রণ করে। আর দায়িত্বশীলতা, দক্ষতা, সরলতা, কর্বত্যপরায়ণতা, ন্যায়নিষ্ঠা প্রভৃতি নৈতিকতা থেকেই উদ্ভূত।

ক. সত্য ও ন্যায়
খ. সার্থকতা
গ. শঠতা
ঘ. অসহিষ্ণুতা
ব্যাখ্যাঃ

আমাদের চিরন্তন মূল্যবোধ হলো যা সব সময়, সব সমাজে এবং সব পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ও অনুসরণীয় বলে বিবেচিত হয়।

প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে, সঠিক উত্তরটি হলো সত্য ও ন্যায়

ব্যাখ্যা:

  • সত্য ও ন্যায়: এগুলো মানবজাতির জন্য সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত এবং মৌলিক নৈতিক মূল্যবোধ। সত্যবাদিতা এবং ন্যায়বিচার সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা এবং অগ্রগতি নিশ্চিত করে। এগুলো সভ্যতার ভিত্তি এবং চিরকাল ধরে মানুষ এগুলোর কদর করে আসছে।
  • সার্থকতা: এটি ব্যক্তিগত অর্জন বা সাফল্যের সাথে সম্পর্কিত, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হতে পারে, কিন্তু এটি সত্য বা ন্যায়ের মতো চিরন্তন নৈতিক মূল্যবোধ নয়।
  • শঠতা: এটি অসৎ বা প্রতারণামূলক আচরণকে বোঝায়, যা একটি নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য এবং কোনোভাবেই মূল্যবোধ হতে পারে না।
  • অসহিষ্ণুতা: এটি ভিন্ন মত, বিশ্বাস বা সংস্কৃতির প্রতি অশ্রদ্ধা বা বিরোধিতাকে বোঝায়, যা একটি নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য এবং সামাজিক সংহতির পরিপন্থী।

সুতরাং, সত্য ও ন্যায় হলো চিরন্তন মূল্যবোধ।

ক. সততা ও নিষ্ঠা
খ. কর্তব্যপরায়ণতা
গ. মায়া ও মমতা
ঘ. উদারতা
ব্যাখ্যাঃ

নৈতিক শক্তির প্রধান উপাদান হলো: সততা ও নিষ্ঠা

ব্যাখ্যা:

  • সততা ও নিষ্ঠা: নৈতিক শক্তির মূলে রয়েছে সত্যের প্রতি অবিচল থাকা (সততা) এবং নিজের আদর্শ বা লক্ষ্যের প্রতি অবিচল আনুগত্য ও একাগ্রতা (নিষ্ঠা)। একজন ব্যক্তি যখন সৎ এবং তার কাজে নিষ্ঠাবান হন, তখন তার নৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী হয়। এটি তাকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও সঠিক পথে থাকতে এবং দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে সাহায্য করে।

অন্যান্য বিকল্পগুলিও নৈতিকতার অংশ হতে পারে, তবে সততা ও নিষ্ঠা হলো নৈতিক শক্তির মৌলিক ভিত্তি:

  • কর্তব্যপরায়ণতা: দায়িত্ববোধ ও কর্তব্য পালনের মানসিকতা। এটি সততা ও নিষ্ঠার একটি ফল, কিন্তু এর মূল উৎস হলো সততা।
  • মায়া ও মমতা: স্নেহ, ভালোবাসা ও সহানুভূতি। এগুলো মানবিক গুণাবলী, যা নৈতিক আচরণের জন্ম দিতে পারে, কিন্তু সরাসরি নৈতিক শক্তির মূল উপাদান নয়।
  • উদারতা: মহত্ব ও দানশীলতা। এটি একটি মূল্যবান নৈতিক গুণ, তবে এটিও সততা ও নিষ্ঠার মতো মৌলিক উপাদান নয়।

সুতরাং, সততা ও নিষ্ঠা-ই নৈতিক শক্তির প্রধান উপাদান।

ক. নৈতিক শক্তি
খ. নৈতিক বিধি
গ. নৈতিক আদর্শ
ঘ. সবগুলোই
ব্যাখ্যাঃ

নৈতিকভাবে বলা হয় মানবজীবনের নৈতিক আদর্শ

এটি বোঝায় যে, মানবজীবনকে নৈতিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে তার একটি নির্দিষ্ট আদর্শ বা মূল্যবোধ অনুসরণ করা উচিত।

ক. ম্যাকিয়াভেলি
খ. হবস
গ. লক
ঘ. রাসেল
ব্যাখ্যাঃ

'Power : A New Social Analysis' গ্রন্থটি ১৯৩৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এবং এটি লিখেছেন নোবেল বিজয়ী ব্রিটিশ দার্শনিক ও গণিতবিদ বার্ট্রান্ড রাসেল (Bertrand Russell)

এই বইটি ক্ষমতা (Power) এবং সমাজের উপর তার প্রভাব নিয়ে একটি গভীর বিশ্লেষণ। রাসেল বইটিতে ক্ষমতাকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পরীক্ষা করেছেন – যেমন রাজনৈতিক ক্ষমতা, অর্থনৈতিক ক্ষমতা, ধর্মীয় ক্ষমতা এবং সামরিক ক্ষমতা। তিনি দেখিয়েছেন যে কিভাবে ক্ষমতা মানুষের সম্পর্ক, রাষ্ট্র এবং সামাজিক কাঠামোকে প্রভাবিত করে।

রাসেল ক্ষমতার উৎস, এর বিভিন্ন রূপ এবং এটি কিভাবে সমাজে ব্যবহৃত হয়, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে ক্ষমতা, যেমন সম্পদ বা জ্ঞানের মতো, নৈতিকভাবে নিরপেক্ষ নয় এবং এর ব্যবহার মানবজাতির জন্য কল্যাণকর বা ধ্বংসাত্মক হতে পারে। বইটি ক্ষমতাকে একটি মৌলিক সামাজিক শক্তি হিসেবে দেখে যা মানব ইতিহাস এবং সমাজের বিবর্তনকে চালিত করে।

ক. গাণিতিক মধ্যমান
খ. দুটি চরমপন্থার মধ্যবর্তী পন্থা
গ. সম্ভাব্য সব ধরনের কাজের মধ্যমান
ঘ. একটি দার্শনিক সম্প্রদায়ের নাম
ব্যাখ্যাঃ

'সুবর্ণ মধ্যক' (Golden Mean) হলো একটি দার্শনিক ধারণা, যা মূলত প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল তার নীতিশাস্ত্র (Ethics) আলোচনায় তুলে ধরেছেন।

এই ধারণা অনুযায়ী, নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব বা গুণাবলী হলো দুটি চরম প্রান্তের মধ্যবর্তী একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা, যা অতিরিক্ত বা অভাব থেকে মুক্ত। অর্থাৎ, কোনো গুণের বা আচরণের অতি বেশি বা অতি কম থাকা উভয়ই ত্রুটিপূর্ণ, আর তার মাঝামাঝি একটি সঠিক ও পরিমিত অবস্থানই হলো 'সুবর্ণ মধ্যক'।

সহজভাবে বললে:

  • এটি বাড়াবাড়ি বা কমতি এড়িয়ে চলাকে বোঝায়।
  • এটি বিচক্ষণতা, পরিমিতি এবং ভারসাম্যের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে।
  • এটি বিশ্বাস করে যে, প্রতিটি গুণ বা মহৎ কর্মের একটি 'সঠিক' পরিমাণ আছে, যা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ:

  • সাহস (Courage) হলো 'সুবর্ণ মধ্যক'। এর অভাব হলো ভীরুতা (Cowardice) এবং এর বাড়াবাড়ি হলো বেপরোয়া সাহস (Rashness)
  • উদারতা (Generosity) হলো 'সুবর্ণ মধ্যক'। এর অভাব হলো কৃপণতা (Stinginess) এবং এর বাড়াবাড়ি হলো অপচয় (Prodigality)

অ্যারিস্টটল মনে করতেন যে, এই 'সুবর্ণ মধ্যক' খুঁজে বের করা এবং সে অনুযায়ী জীবনযাপন করাই হলো সার্থক ও নৈতিক জীবনযাপনের চাবিকাঠি। এটি কোনো গাণিতিক মধ্যবিন্দু নয়, বরং বিচক্ষণতার মাধ্যমে অর্জিত একটি পরিস্থিতিগত সঠিকতা।

ক. মৌলিক মূল্যবোধ সংক্রান্ত সাধারন বচন যা সংগঠনের পেশাগত ভূমিকাকে সংজ্ঞায়িত করে
খ. বাস্তবতার নিরিখে নির্দিষ্ট আচরণের মানদণ্ড নির্ধারণ সংক্রান্ত আচরণবিধি
গ. দৈনন্দিন কার্যকলাপ ত্বরান্বিত করণে প্রণীত নৈতিক নিয়ম, মানদণ্ড বা আচরণবিধি
ঘ. উপরের তিনটিই সঠিক
ব্যাখ্যাঃ

নৈতিক আচরণবিধি (Code of Ethics) বলতে সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট পেশা, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীর সদস্যদের জন্য নির্ধারিত নীতিমালা ও মানদণ্ডগুলোর একটি লিখিত দলিলকে বোঝায়, যা তাদের আচরণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নৈতিক নির্দেশনা প্রদান করে।

এর মূল উদ্দেশ্য হলো:

১. সদস্যদের আচরণের মান নির্ধারণ: এটি সদস্যদের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে বলে দেয় কোন আচরণগুলো নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য এবং কোনগুলো নয়। ২. সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা: প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বা পেশাগত অনুশীলনে সততা, ন্যায্যতা এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। ৩. দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি: সদস্যদের তাদের পেশাগত এবং সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। ৪. নৈতিক দ্বিধা সমাধানে সহায়তা: যখন সদস্যরা কোনো নৈতিক দোটানায় পড়েন, তখন এই আচরণবিধি তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পথনির্দেশ করে। ৫. বিশ্বাস ও আস্থা তৈরি: গ্রাহক, ক্লায়েন্ট, সহকর্মী এবং বৃহত্তর সমাজের মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থা তৈরি করতে সাহায্য করে। ৬. পেশাগত মান বজায় রাখা: এটি পেশার মর্যাদা ও মানকে উন্নত ও বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সংক্ষেপে, নৈতিক আচরণবিধি হলো একটি পথনির্দেশিকা যা সদস্যদের সঠিক ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে উৎসাহিত করে এবং অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখে। এটি শুধু আইনগত বাধ্যবাধকতার বাইরে গিয়ে নৈতিক শ্রেষ্ঠত্বের উপর জোর দেয়।

ক. মানুষের আচরণের মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা প্রদান
খ. মানুষের জীবনের সফলতার দিকগুলো আলোচনা
গ. সমাজে বসবাসকারী মানুষের আচরণ ব্যাখ্যা
ঘ. সমাজে বসবাসকারী মানুষের আচরণের আলোচনা ও মূল্যায়ন
ব্যাখ্যাঃ

নীতিবিদ্যা (Ethics) দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা, যা মানুষের নৈতিক আচরণ, মূল্যবোধ এবং নীতির যৌক্তিক ও মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ নিয়ে আলোচনা করে। নীতিবিদ্যার প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলো হলো:

১. আচরণ: নীতিবিদ্যার মূল আলোচ্য বিষয় হলো মানুষের স্বেচ্ছাকৃত কর্ম বা ঐচ্ছিক ক্রিয়া। এটি মানুষের এমনসব কাজ নিয়ে আলোচনা করে, যা মানুষ স্বাধীনভাবে ও বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করে সম্পন্ন করে। অনিচ্ছাকৃত বা বাধ্যতামূলক কাজ নীতিবিদ্যার আওতায় পড়ে না।

২. নৈতিক আদর্শ: নীতিবিদ্যা বিভিন্ন নৈতিক আদর্শ নিয়ে আলোচনা করে, যা মানুষের আচরণের ভালোত্ব বা মন্দত্ব বিচার করার ভিত্তি তৈরি করে। এটি চরম নৈতিক আদর্শ (যেমন - সত্য, মঙ্গল, সুন্দর) এবং কীভাবে এই আদর্শগুলো মানুষের জীবনে প্রয়োগ করা উচিত, তা নিয়ে অনুসন্ধান করে।

৩. নৈতিক বিচার: মানুষের আচরণের নৈতিক বিচার কী, কীভাবে এই বিচার করা হয়, এবং এই বিচারের ভিত্তি কী—এসব বিষয় নিয়ে নীতিবিদ্যা আলোচনা করে। নৈতিক বিচার প্রক্রিয়ায় উদ্দেশ্য, অভিপ্রায়, এবং ফলাফলের ভূমিকাও নীতিবিদ্যার আলোচ্য বিষয়।

৪. নৈতিক বাধ্যতাবোধ: কোন কাজ করা উচিত বা অনুচিত, তা নিয়ে মানুষের মনে যে বাধ্যতাবোধ বা তাগিদ কাজ করে, নীতিবিদ্যা তার স্বরূপ নির্ণয় করে। সৎকাজ করার এবং অসৎকাজ থেকে বিরত থাকার পেছনে কী ধরনের নৈতিক অনুভূতি কাজ করে, তা নিয়েও এটি আলোচনা করে।

৫. ইচ্ছার স্বাধীনতা, বুদ্ধি ও বিচারশক্তি, এবং ব্যক্তিত্ব: নৈতিক বিচারের জন্য মানুষের মধ্যে কিছু পূর্বস্বীকৃত গুণ থাকা প্রয়োজন। যেমন - ইচ্ছার স্বাধীনতা (freedom of will), বুদ্ধি ও বিচারশক্তি (intellect & reason), এবং ব্যক্তিত্ব (personality)। নীতিবিদ্যা এই বিষয়গুলোর স্বরূপ ও গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করে।

৬. কর্তব্য ও অধিকার: ব্যক্তি ও সমাজের সম্পর্কের ভিত্তিতে মানুষের কর্তব্য (duties) এবং অধিকার (rights) কী হওয়া উচিত, তা নীতিবিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

৭. নৈতিক ভাবাবেগ ও বিবেক: সৎকাজ করলে মানুষের মনে যে সন্তোষ বা নৈতিক গৌরব আসে এবং অসৎকাজ করলে যে অনুশোচনা বা অসন্তোষ আসে, তা নৈতিক ভাবাবেগের অংশ। বিবেক (conscience) কীভাবে নৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখে, সেটিও নীতিবিদ্যার আলোচ্য বিষয়।

সংক্ষেপে, নীতিবিদ্যা হলো একটি আদর্শনিষ্ঠ বিজ্ঞান যা সমাজে বসবাসকারী মানুষের নৈতিক আচরণ, তার ভালো-মন্দ, উচিত-অনুচিত এবং ন্যায়-অন্যায়ের বিচার ও বিশ্লেষণ করে।

ক. ঐচ্ছিক ক্রিয়া
খ. অনৈচ্ছিক ক্রিয়া
গ. ইচ্ছা নিরপেক্ষ ক্রিয়া
ঘ. ক ও গ নামক ক্রিয়া
ব্যাখ্যাঃ

মানুষের যে ক্রিয়া নীতিবিদ্যার আলোচ্য বিষয় তা হলো কঃ ঐচ্ছিক ক্রিয়া

নীতিবিদ্যা শুধুমাত্র মানুষের স্বেচ্ছাকৃত কর্ম বা ঐচ্ছিক ক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে, কারণ এগুলোর পেছনে ব্যক্তির স্বাধীন ইচ্ছা ও বিচারবুদ্ধি কাজ করে এবং এগুলোর নৈতিক মূল্যায়ন সম্ভব। অনৈচ্ছিক বা ইচ্ছা নিরপেক্ষ ক্রিয়া, যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস বা প্রতিবর্ত ক্রিয়া, মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকায় নীতিবিদ্যার আওতায় পড়ে না।